গ্রন্থভূক্ত কবিতা (কাব্যগ্রন্থ)
গান
অগ্রন্থিত কবিতা
গল্প
চলচ্চিত্র কাহিনী ও চিত্রনাট্য
সম্পাদকীয়, গদ্য ও বক্তৃতা
সাক্ষাৎকার
1 of 2

সম্পাদকীয়-১

সম্পাদকীয়-১

অন্য চোখ আছে বোলেই অনামিকা তোর বুকের উত্তপ্ত সোঁদা ঘ্রানে চিরকাল বুনবো প্রেমের বীজ আমি তুখোড় তুমুল জারজ।

একুশ তুই আর আসিস না

ক্যানো আসবি, কার কাছে আসবি? তোর বুকের গরোম রক্তের স্পর্শে একদিন নিষিদ্ধ বিক্ষোভ হোয়েছি। অপ্রতিরোধ্য ব্যারিকেড গোড়েছি। কৃষ্ণচুড়ার বিক্ষুব্ধ লাল ছুঁড়ে দিয়েছি.তোর সুনিল করতলে। কিন্তু আজ তোর খোঁপায় রজনীগন্ধা অথবা স্মিত হাসি ভালো লাগে না আর। আমরা তোর অন্তর্বাসে হাত দিয়েছি। কী কোরবো বল কিছুই পাই নি যে আমরা। মেনড্রাক্স আজ একমাত্র সংগী— সম্বল এক বুক জারজ স্মৃতির বিষ। তোর মর্যাদা দেবার মতো কিছুই নেই।

আর আসিস নে হতভাগী। সত্যি বোলছি এবার এলে নিশ্চয়ই তুই সতীত্ব হারাবি।

উপলব্ধির সাদা কালো

নিশ্চয়ই। যদি কিছু ভুল দৃষ্ট হয় তীব্র সমালোচনা করুন। উৎসাহ পাবো উদ্দীপনা বাড়বে। অনর্থক শিশুসুলভ স্নেহের প্রত্যাশী নই। নিশ্চয়ই চোখে পোড়বে অনেক স্থানেই অশ্লীল’ শব্দ ব্যবহৃত হোয়েছে। কী কোরবো বলুন। আমরা সকলেই যে ভদ্রবেশী অশ্লীলতার পরোম পূজারী। অস্বীকার কোরতে পারবেন? সাহিত্যে অশ্লীলতা অনাবশ্যক বোলে তর্কো কোরতে পারেন কিন্তু জাগতিক জীবনে কি অশ্লীলতা নিষিদ্ধ কোরতে পারবেন? যেহেতু জীবন এবং জগৎ বাদ দিয়ে সাহিত্য অসম্ভব তাই সাহিত্যে অশ্লীলতা অনাবশ্যক নয় বরং জীবনকে বেঁধে রাখার নিপুন প্রয়াস।

হয়তো প্রতিবাদ কোরবেন অনাবশ্যক দুঃশ্চিন্তায় নরোকগামী হোচ্ছি। তবে স্বীকার আপনাকে কোরতেই হবে যে গতানুগতিকতার চিরশত্রু ব্যতিক্রমধর্মী আমরা স্পষ্টতই অসম্ভব দুঃসাহসী।

আবহমান এই বাংলায় একদিন স্বাচ্ছন্দ্যের স্বচ্ছ বাতাস ছিলো। সোনালী সম্ভবনার সবুজ পাল তুলে ভেসে যেতো দৈনন্দিন জীবন আশার রূপোলী নদীতে। শালিকের ধুসর চোখ কাকের মসৃন পালোক আশ্বিনের ভরা ক্ষেত বৈশাখের মাতাল বাতাস আর অনংগ বধুর সিঁথির সিঁদুর নিয়ে একটি নিবিড় সংসার পেতেছিলো আজীবন দুঃখিনী এক মা।

হঠাৎ একদিন আকাশে মেঘ উঠলো সমস্ত সবুজ ওরা কেড়ে নিতে চাইলো। আমরা চিৎকার কোরলাম নিজস্ব কণ্ঠে। ওরা শেকল দ্যাখালো। আমরা কারাগার চিনলাম। বিক্ষোভের লাল ঠোঁটে চুমু খেলাম। মৃত্যুর সাথে সংগম কোরলাম আজন্ম সম্পর্কে তাই মেঘ গাঢ় কালো হোলো। আর মেঘের ভেতোর সঞ্চিত হোতে থাকলো বিক্ষুব্ধ বজ্ৰ। আসন্ন ভাংগোনের সম্ভাবনা।

মেঘে ঢাকা সূর্য মুক্ত হোলো। কিন্তু তখোন সমস্ত সবুজগুলো পুড়ে গ্যাছে। সে নিবিড় সংসারে অভাবের টর্নেডো সমস্যার মহামারী আর যন্ত্রনার শ্মশান হোলো। বুকের কাছাকাছি কবর শিয়রে জেগে আছে।

অনামিকার অন্য চোখ এবং চুয়াত্তোরের প্রসব যনত্রনা, ঢাকা, ফেব্রুয়ারি ১৯৭৪

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *