“খুটিনাটি খুনশুটি ও অন্যান্য কবিতা” (১৯৯১) কাব্যগ্রন্থের কবিতা। অসীম সাহা সম্পাদিত “রুদ্র মহম্মদ শহিদুল্লাহর রচনা সমগ্র, দ্বিতীয় খণ্ড” বইতে এই কাব্যগ্রন্থটি আছে, তবে হিমেল বরকত সম্পাদিত, যেটি আমরা লাইব্রেরিতে রেখেছি, সেখানে ‘খুটিনাটি খুনশুটি ও অন্যান্য কবিতা’ নামের কোনও কাব্যগ্রন্থ নেই।
আমি একজন ঈশ্বর
আমায় যদি তুমি বলো ঈশ্বর;
আমি বলব হ্যাঁ আমি তাই।
আমায় যদি বলো পাপী শয়তান।
আমি বলব হ্যাঁ আমি তাই-ই।
কারণ আমার মাঝে যাদের অস্তিত্ব
তার একজন ঈশ্বর; অপরজন শয়তান,
তাই যখন শয়তানের ছবিটি ভাসে
আমার মানব অবয়বে– তখন আমি পাপী।
আর সত্যের পূর্নতায় আমি
মানবের কল্যানে আমার ধর্ম–
ঠিক তখনই আমি ঈশ্বর, কারণ
সত্য, পুন্য আর মানবতাই ঈশ্বর।
যাকে তোমরা বলো ঈশ্বর–
আমি তাকে বলি সত্য, ন্যায়;
অতএব আমার পক্ষে একজন
ঈশ্বর হওয়া বিচিত্র নয়।
ঈশ্বর তুমি পাপী
ঈশ্বর তুমি পাপাচারী শয়তান;
অনাথের শেষ সম্বল কেঁড়ে নিয়ে
তুমি মদের পেয়ালায় রক্ত ঢালো
প্রাসাদের স্বপ্ন-চূড়ায় নির্বিঘ্নে
পান কর; চোখে রকনেশা মেখে।
তুমি নাকি ভগবান!
কল্যানময়; মানবের হিতাকাংখী!
করুনাময় বিশ্বের অধীশ্বর!
এর কৈফিয়ত কে দেবে ঈশ্বর?
কেন, কেন আজ এখনও
কাঙ্গাল অনাহারী বুকের উপর
সোনার তাজমহল গড়ে ওঠে?
কেন বুভুক্ষুর সম্মুখে নিবিড় আনন্দে
ভোদে মত্ত তোমার হাউণ্ড অথবা এ্যালসেসিয়ান
আমরা বাঁচতে চাই, শান্তি চাই–
তাই কি আমরা পাপী?
শয়তান অন্যায়ী আর কেউই নয়–
সে তুমি– মুখোশধারী ঈশ্বর!
তাই এবার আকাশ স্বর্গ থেকে তোমায়
পথে নামিয়ে ছিঁড়ে খাব
তোমার বিলাসিত দেহ।