মানুষের মানচিত্র ০১
আহারে বৃষ্টির রাত, সোহাগি লো, আমি থাকি দূর পরবাসে।
কান্দে না তোমার বুকে এক ঝাঁক বুনো পাখি অবুঝ কৈতর?
কেমনে ফুরায় নিশি? বলো সই, কেমনে বা কাটাও প্রহর?
পরান ছাপায়ে নামে বাউরি বাতাস দারুন বৃষ্টির মাসে।
যে বলে সে বলে কথা, কাছে বসে, হাতে খিলিপান দিয়ে কয়—
এতো জল ঝরে তবু পরান ভেজে না কেন, কওতে মরদ?
দুয়ারে লাগায়ে খিল যদি কেউ থাকে তারে কে দেবে দরোদ!
শরীরের মোহনায় দেখি তার বুনো ঢেউ রক্ত-মাংশময়।
শরীর গুটায়ে রাখি, শামুকের মতো যাই গুটীয়ে ভেতরে।
অন্ধকার চিরে চিরে বিজুলির ধলা দাঁত উপহাসে হাসে,
আমি বলি– ক্ষমা দাও, পরান বন্ধুয়া মোর থাকে। পরবাসে,
দেহের রেকবি খুলে পরানের খিলিপান কে খাওয়াবে তোরে!
গতবার আষাঢ়ও পার হয়ে গেল তা-ও নামে না বাদল,
এবার জোষ্টিতে মাঠে নেমে গেছে কিষানের লাঙল জোয়াল।
আমাদের মাঝে দ্যাখো জমির ভাগের মতো কতো-শতো আল,
এই দূর পরবাস কবে যাবে? জমিনের আসল আদোল
কবে পাবো? কবে পাবো। আলহীন একখন্ড মানব-জমিন?
পরবাস থাকবে না, থাকবে না দূরত্বের এই রীতি-নীতি।
মহুয়ার মদ খেয়ে মত্ত হয়ে থাকা সেই পার্বনের তিথি
কবে পাবো? কবে পাবো শর্তহীন আবাদের নির্বিরোধ দিন ॥
০৮.০২.১৩৮৮ মিঠেখালি মোংলা