চলচ্চিত্র কাহিনী
১. পুলিশ পুরো বস্তি ঘিরে ফেলেছে। দুই পক্ষের মধ্যে চলছে গোলাগুলি। পুলিশ অফিসার আরিফের দায়িত্বে অপারেশন চলছে।
২. ডাকাত দলের সর্দার ধলা মিয়া এক সময় বস্তি থেকে পালাতে চেষ্টা করে। আরিফ পিছু ধাওয়া কোরে তাকে ধ’রে ফেলে।
৩. ধলা মিয়াসহ ছয় সাতজনকে থানায় ধ’রে এনে লকাপে ঢোকানো হয়।
৪. এই দলের একজন ফোনে তাদের বস শিল্পপতি সাজ্জাদ হোসেনকে ধলা মিয়া ও দলবলের ধরা পড়ার কাহিনী জানায়। সাজ্জাদ হোসেন এই ব্যক্তিকে আরিফের ছেলেকে হাইজ্যাক করার নির্দেশ দেয়।
৫. নাস্তার টেবিলে আরিফ তার স্ত্রী রোকশানা এবং তাদের ছোট ছেলে বিজয়। দৈনন্দিন আলাপ। বিজয়ের কিছু একটা পাওয়ার জন্যে আবদার এবং আরিফের প্রতিশ্রুতি দান।
৬. আরিফ গাড়িতে কোরে বিজয়কে স্কুলে নামিয়ে দিয়ে তার কার্যালয়ে যায়।
৭. গ্রেফতারকৃত আসামির জবানবন্দি গ্রহন। কিছুটা টর্চার স্বীকারোক্তির জন্যে। কিন্তু ধলা মিয়া নির্বাক। একটি শব্দও সে উচ্চারন করে না।
৮. সাজ্জাদ হোসেনের লোক বিজয়কে স্কুলের টিফিন-এর সময় হাইজ্যাক কোরে নিয়ে যায়। বাচ্চাদের ভয়ে ছোটাছুটি এবং প্রধান শিক্ষিকার থানায় টেলিফোন কোরে সংবাদ জানানো।
৯. থানায় তোড়জোড়। বিজয়কে উদ্ধারের জন্যে তৎপরতা।
১০. আরিফ তার বাসায় টেলিফোনে রোকশানাকে ছেলে হাইজ্যাকের ঘটনা জানায়।
রোকশানা শোকে মুহ্যমান হয় এবং যে কোনোভাবে বিজয়কে উদ্ধার করতে বলে। ১১. সাজ্জাদ হোসেন আরিফকে টেলিফোন করে। জানায় বিজয় এখন তার হাতে।
ধলা মিয়াকে ছেড়ে দিলেই সে বিজয়কে ফিরে পাবে। আরিফের এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান।
১২. আরিফ টেলিফোন এক্সচেঞ্জে জানিয়ে রাখে যাতে এর পরের সব টেলিফোন কত নম্বর থেকে আসছে তা যেন তারা জানায়।
১৩. সাজ্জাদ হোসেনের আবার টেলিফোন। এবং দুই ঘন্টা সময় প্রদান। এর মধ্যে
তার প্রস্তাবে রাজি না হলে বিজয়কে খুন করা হবে। কিন্তু আরিফ তার সিদ্ধান্তে অটল। নিজের সন্তানের মৃত্যুর বিনিময়েও সে আসামি ছাড়তে নারাজ।
১৪. আরিফের শেষ সংলাপ সাজ্জাদ হোসেন ক্যাসেটবন্দি কোরে তা বিজয়কে শোনায়। বিজয় এই কথা শুনে মুষড়ে পড়ে।
১৫. ইতিমধ্যে টেলিফোন বিভাগের চেষ্টা ও পুলিশের তৎপরতায় তারা বিজয়কে কোথায় আটকানো হয়েছে তা জেনে যায়। এবং পুলিশের দল সেখানে ঘেরাও কোরে ফেলে।
১৬. শুরু হয় গোলাগুলি। বিশৃংখলার এক সুযোগে বিজয় পালাতে শুরু করে। কিন্তু চোখে প’ড়ে যায় সাজ্জাদ হোসেনের অন্যতম প্রধান সহকারী আকতারের। তবে বিজয়ের দিকে তাকিয়ে তার মনে দয়া জাগে। সে বিজয়কে নির্বিঘ্নে পালিয়ে যেতে দেয়।
১৭. গোলযোগের মধ্যে সাজ্জাদ হোসেন এবং তর দলবল সবাই পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় গোপন সুড়ঙ্গ পথে। পুলিশ কাউকেই পায় না।
১৮. হতাশ আরিফ বিধ্বস্ত মনে বাড়ি ফিরে এসে দ্যাখে বিজয় বিছানায় ঘুমিয়ে আছে। পাশের ঘরে সে রোকশানার কাছে বৃত্তান্ত শোনে। বিজয়ের মনে আরিফ সম্পর্কে এক ভুল ধারনার জন্ম হয়। আরিফের সেই সংলাপটি বার বার তার কানে বাজে— যা সে টেলিফোনে সাজ্জাদকে বলেছিলো।
১৯. বিজয় পারতপক্ষে এড়িয়ে চলতে চায় তার বাবাকে। নিজে থেকে কোনো কথা বলে না। কিছু জানতে চাইলে বার বার জিগ্যেস করতে হয়। বিজয় কেমন আলাভোলা হয়ে উঠতে থাকে। আরিফ এই পরিস্থিতিতে সিদ্ধান্ত নেয় যে তারা কিছুদিন সাগর সৈকতে বেড়িয়ে আসবে। তাতে হয়তো বিজয়ের মন মানসিকতা বদলাতে পারে।
২০. সাগর সৈকতে একটি গানের দৃশ্যের মধ্যে বিজয় বড়ো হয়ে ওঠে। সে এখন যুবক।
২১. ঘটনাচক্রে আকতারের সাথে বিজয়ের দ্যাখা হয়ে যায়। বিজয় আকতারকে চিনতে পারে। কিন্তু আকতার বিজয়কে চেনে না। বিজয় একটি হোটেলে চাকরির জন্যে ইন্টারভিউ দিতে এসেছিলো। হোটেলে তার চাকরি হয়ে যায়। সমুদ্র সৈকতে অবস্থিত এই হোটেলের মালিক আকতার। সে এখন আর সাজ্জাদ হোসেনের সহকারী নয়। নিজেই সে শিল্পপতি।
২২. হোটেলের নিয়মিত নাচ গানের দৃশ্য। সুন্দরী এবং তরুনী গাইছে এবং নাচছে। বিজয় প্রথম দর্শনেই প্রেমে পড়ে যায় এই মেয়ের। অনুষ্ঠান শেষে পরিচিত হয় মেয়েটির সাথে। মেয়েটিরও ভালো লাগে বিজয়কে। কিন্তু সে কেন জানি এড়িয়ে যেতে চায় তাকে। মেয়েটির নাম নাজমা।
২৩. নাজমা রাতের ট্রেনে কোথাও যাচ্ছে। কামরাটি বেশ খালি খালি। বিজয়ও এই একই কামরার যাত্রী। কিন্তু কেউ কাউকে দ্যাখেনি। এর মধ্যে এক স্টেশনে কিছু বখাটে ছেলে উঠলো এবং নাজমাকে উত্যক্ত করতে লাগলো। এক পর্যায়ে তারা নাজমাকে নিয়ে টানা হেঁচড়া শুরু করলে সে চিৎকার কোরে উঠলো এবং বিজয় তাকে দেখতে পেলো। নাক মুখ ফাটিয়ে বখাটেদের বিজয় চলন্ত ট্রেন থেকে নামিয়ে দিয়ে নাজমাকে উদ্ধার করলো।
২৪. স্টেশনে নেমে নাজমাকে সে বাসায় পৌঁছে দিতে চাইলো। কিন্তু নাজমা রাজি হলো না। পরে নির্জন রাস্তায় একা যেতে হবে এই চিন্তায় বিজয়ের সাথে যেতে রাজি হলো।
২৫. বিজয় নাজমাকে নানা রকম ব্যক্তিগত প্রশ্ন করতে থাকলেও নাজমা প্রায় সবই এড়িয়ে যেতে চাইলো। বাসা থেকে বেশ দূরেই সে তাকে নামিয়ে দিতে বল্লো। বাসাটা চেনালো বটে তবে এই বোলে সতর্ক করলো যে তার বাবা কোনো পুরুষের সঙ্গে তার মেলামেশা পছন্দ করে না।
২৬. বিজয় নাজমাকে খোঁচা দিয়ে বল্লো যে বিপদ থেকে উদ্ধারের কারনে সামান্য সৌজন্য ধন্যবাদ তো তার পাওয়া উচিত ছিলো। উত্তরে কোনো মতে কান্না সামলে নাজমা ছুটে তার বাসায় চ’লে গেল। বিজয় বিস্মিত। হতভম্ব
২৭. বাসায় আরিফ রোকশানার সাথে বিজয়ের বিষয় নিয়ে আলাপ করে। বিজয়ের চলাফেরা, চাকরি, কোনো কিছুকেই সে মেনে নিতে চায় না। এমন সময় বিজয় ঘরে আসে। আরিফ তাকে তার অপছন্দের কথা জানায় এবং বলে, যে-হোটেলে সে চাকরি নিয়েছে তা এক চোরাকারবারির। পুলিশ তাকে ধরার চেষ্টায় আছে। বিজয় বলে যে, সে হোটেলে সৎভাবে চাকরি করছে কাজেই হোটেলের মালিক কি করে না করে তা নিয়ে তার মাথা ব্যথা নেই।
বাবা ও ছেলের বচসা হয়। বিজয় জানায় যে, এই সে ব্যক্তি যে তাকে ছোটবেলায় পালিয়ে আসতে সাহায্য করেছিলো। বচসা তুঙ্গে ওঠে। শেষে রোকশানার হস্তক্ষেপে তা থামে।
২৮. বিজয় বাবা-মার বাড়ি ছেড়ে চ’লে যায়।
২৯. আকতারের সাথে সাজ্জাদ হোসেনের অন্তর্দ্বন্দ্ব চরমে পৌঁছায়।
৩০. সাজ্জাদের লোকেরা আকতারকে তার হোটেলে মারার জন্যে আক্রমন চালায়। কিন্তু বাদ সাধে বিজয়। কৌশলে সে আকতারের জান বাঁচায়। আকতার তার জান বাঁচানোর জন্যে বিজয়কে ধন্যবাদ দেয়। বিজয় এবার তার পরিচয় প্রকাশ করে এবং সে একদিন তাকে পালাতে সাহায্য কোরে তারও প্রান রক্ষা করেছিলো সে জন্য ধন্যবাদ দেয়। বাবা-মার বাড়ি এখন সে থাকে না, একথাও সে বলে।
৩১. এদিকে সাজ্জাদ হোসেনের লোকজন ফিরে গিয়ে তাকে জানায় যে পুলিশ অফিসার আরিফের ছেলে আকতারকে বাঁচিয়েছে। সাজ্জাদ চক্রান্ত পাকাতে থাকে।
৩২. নাজমার বাবা জুয়াড়ি এবং লম্পট। মেয়ের গান গেয়ে আয় করা টাকায় তার জুয়া ও লাম্পট্য চলে। বুড়ো তার বাড়িতেই যুবতী রক্ষিতা রেখেছে। মেয়েকে দিয়ে টাকা আয় করানোই তার একমাত্র ব্যবসা।
৩৩. নাজমা প্রতিবাদ জানায় যে সে আর হোটেলে গান গাইতে যাবে না। তার বাবা বকাঝকা করে। নাজমা তবু অনড়। এবার বুড়ো চাবুক দিয়ে তার মেয়েকে পেটায়। যুবতী রক্ষিতাও বুড়োকে সাহায্য করে।
৩৪. হোটেলের গাড়ি এসে হর্ন বাজায়। ড্রাইভিং সীটে বিজয়। সে-ই আজ নাজমাকে নিতে এসেছে। রক্ষিতা তাকে অপেক্ষা করতে বলে, একসময় নাজমাকে নিয়ে তার বাপ গাড়িতে ওঠে।
৩৫. হোটেলের ফ্লোরে নাজমা নাচ গান করছে। বিজয় তার চাকরির দায়িত্ব পালন করছে। অন্যত্র জুয়ার আড্ডায় অন্যদের সাথে জুয়া খেলছে নাজমার বাপ। ৩৬. মেকআপ রুমে বিজয় ঢুকে দ্যাখে নাজমা কাঁদছে। বিজয় কারন জানতে চায়। নাজমা বলতে চায় না। বিজয় তাকে ভালোবাসার প্রস্তাব দেয়। নাজমার কান্না আরো বাড়ে। এক সময় সে তার সমস্ত কথা খুলে বলে। কিভাবে তার বাবা তাকে দিয়ে টাকা রোজগার কোরে সেই টাকা দিয়ে জুয়া খেলে এবং লাম্পট্য করে। ৩৭. বিজয় তাকে বিয়ে কোরে এই অবস্থা থেকে মুক্ত করবে বলে। কিন্তু নাজমা রাজি হয় না। বলে সে খারাপ মেয়ে। কিন্তু বিজয় যে কোনো মূল্যেই তাকে পেতে চায়। তারা পরস্পর ঘনিষ্ঠ হয়।
৩৮. মেকআপ রুমের দরোজা খুলে এক বদ্ধ মাতাল তাদের আলিঙ্গনাবস্থায় দেখতে পায়। কুৎসিত ভাষায় নাজমাকে তার সঙ্গ দেয়ার প্রস্তাব দেয়। বিজয় তাকে হটানোর চেষ্টা করে কিন্তু মাতালটা এক পর্যায়ে নাজমার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। এবার বিজয় মাতালকে মারতে মারতে হোটেল থেকে বের কোরে দেয়।
৩৯. হোটেলের বাইরে সাজ্জাদের লোক মাতালটাকে খুন করে। পুরো ব্যাপারটা সাজানো। খানিক দূরে অলক্ষ্যে গাড়িতে বসা একজন ঘটনাটা দ্যাখে।
৪০. পুলিশ বিজয়কে গ্রেপ্তার করতে আসে। আকতার বিজয়কে গোপনে সরিয়ে দেয়। পুলিশ খুঁজে পায় না বিজয়কে।
৪১. নাজমার বাসার পেছনের দেয়াল টপকে বিজয় ঢোকে। নাজমা তাকে এ অবস্থায় দেখে তার ঘরে তাকে লুকিয়ে রাখে। গোপনে গোপনে খেতে দেয়। কৌশলে সে তার বাপ ও রক্ষিতাকে তার ঘরে ঢুকতে দেয় না। তাদের ঘনিষ্ঠতা গভীর হয়।
৪২. একদিন বিজয়কে দেখে ফেলে রক্ষিতা। এবং কিছু না বোলে গোপনে থানায় টেলিফোন করে। পুলিশ এসে গ্রেপ্তার করে বিজয়কে। কান্না বিহ্বল নাজমাকে তার বাবার হাতে চাবুকের পিটুনি খেতে হয়। বুড়ো নাজমাকে নিয়ে অন্যত্র চ’লে যায়।
৪৩. বিজয় খুন করেছে এই সংবাদ শোনার পর রোকশানা শয্যা নিয়েছে। আরিফ যে কোনো প্রকারেই হোক তাকে খুঁজে গ্রেপ্তার করবে এরকম প্রতিজ্ঞা করে। রোকশানা বিশ্বাস করতে চায় না যে বিজয় খুন করেছে। টেলিফোনে খবর আসে বিজয়কে ধরা হয়েছে। কয়েক ঘন্টার ভেতর তাকে নিয়ে থানায় পৌঁছবে পুলিশ।
৪৪. পথিমধ্যে পুলিশের জীপ এ্যাক্সিডেন্ট করলো। সুযোগ বুঝে বিজয় পালিয়ে গিয়ে হাজির হলো আকতারের গোপন আস্তানায়। সে যে নির্দোষ তা প্রমানের উপায় ভাবতে লাগলো। আকতার জানালো যে, বিজয়কে খুনি মামলায় ফাঁসানোর মূলে রয়েছে সাজ্জাদ হোসেন।
৪৫. ইতিমধ্যে আকতারের কয়েক ট্রাক মূল্যবান মালামাল সাজ্জাদের লোকেরা ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। আকতার বিজয়কে দায়িত্ব দিলো সে মাল উদ্ধারের।
৪৬. শুরু হলো বিজয়ের গোপন জীবন। নাজমাকে খুঁজতে গিয়ে দেখলো বাসায় অন্য লোক। তারা কেউ সন্ধান দিতে পারলো না। বিজয় সাজ্জাদের গোপন আস্তানার খোঁজে নেমে পড়লো। গঠন করলো ছোট খাটো একটা দল।
৪৭. এদিকে বিজয়ের খোঁজে তন্ন তন্ন করা হচ্ছে শহর। আরিফ নিজেই দায়িত্ব নিয়েছে তাকে ধরিয়ে দেবার। কয়েকবার পুলিশের হাতে পড়তে পড়তে পালাতে পারলো বিজয়।
৪৮. সাজ্জাদ হোসেন উচ্চপদস্থদের মনে আরিফের ব্যাপারে সন্দেহ ঢুকিয়ে দিতে সক্ষম হলো। তারা ভাবলো নিজের ছেলে বোলে আরিফ তাকে ধরতে দিচ্ছে না।
৪৯. ক্ষুব্ধ আরিফ তার উচ্চপদস্থকে জানালো, যদি সাত দিনের মধ্যে সে জীবিত বা মৃত বিজয়কে হাজির করতে না পারে তবে চাকরি থেকে পদত্যাগ করবে।
৫০. দল নিয়ে বিজয় বিভিন্ন জায়গায় হানা দিচ্ছে। কিন্তু না পারছে সে আকতারের মাল উদ্ধার করতে। না জানতে পারছে নাজমার খোঁজ। আর নিজেকে নির্দোষ প্রমানের কোনো প্রমানও তার হাতে আসে নি এখনো। ছদ্মবেশ নিয়েছে বিজয়।
৫১. বন্দরের গাড়ি পাকিং-এ বিজয় ও আরো দুজন গাড়িতে বোসে আছে। সূর্য ডোবে ডোবে। মাল বোঝাই একটি ট্রাক ওদেরকে পাশ কাটিয়ে চ’লে গেল। ট্রাকে ড্রাইভারের পাশের লোকটিকে চিনতে পারলো বিজয়। ফলো করতে শুরু করলো ওরা ট্রাকটিকে। বেশ কিছুদূর গিয়ে নির্জন জায়গায় ট্রাকটি দাঁড়িয়ে পড়লো। অতর্কিত আক্রমন চালিয়ে বিজয়রা কাবু কোরে ফেল্লো ট্রাকের দুজনকে। আচ্ছা মতো পিটিয়ে সাজ্জাদের এই লোকটির কাছ থেকে ওরা জেনে নিলো ট্রাকের গন্তব্য। ওদের বেঁধে নিয়ে পেছনের গাড়িতে তুললো ওরা। বিজয় এবং আর একজন ট্রাকে বোসে ট্রাক ছেড়ে দিলো।
৫২. পুরনো একটি ভাঙা বাড়ির মধ্যে বিশাল গুদাম। গেট খুললে ছদ্মবেশী বিজয়রা ট্রাক ঢোকালো গুদামে। এবং দেখতে পেলো চুরি যাওয়া পাঁচটি মাল বোঝাই ট্রাক সেখানে। ট্রাক থেকে গুলি করতে করতে নামলো বিজয়। তুমুল গোলাগুলি এবং মারামারি শুরু হলো। ইতিমধ্যে বিজয়দের আরো লোক পৌঁছে গেছে। আকতারের চুরি যাওয়া ট্রাকগুলো উদ্ধার হলো।
৫৩. বিজয় চল্লো অভিজাত একটি হোটেলের উদ্দেশ্যে। সে খবর পেয়েছে ওখানে গত রাতে নাজমাকে গান গাইতে দ্যাখা গেছে।
৫৪. হোটেলের বিলাস বহুল একটি হল ঘরে নির্বাচিত কিছু অভিজাত লোক পান করছে। নাজমা গাইছে এবং নাচছে।
৫৫. বেয়ারার পোশাকে বিজয় পানীয়ের ট্রে হাতে নিয়ে ঢুকলো। বিভিন্ন জনকে পানীয় দিতে দিতে সাজ্জাদের কাছাকাছি পৌঁছে গেল। হঠাৎ ট্রেটি উল্টে দিয়ে পিস্তল বের কোরে ঠেকালো সাজ্জাদের মাথায়। নাচ গান থেমে গেল। বিজয়কে চিনে ফেল্লো নাজমা।
৫৬. নাজমার দিকে মনোযোগ দেয়ার সামান্য সুযোগে সাজ্জাদ ঝাঁপিয়ে পড়লো বিজয়ের উপর। শুরু হলো মারামারি। ইতিমধ্যে বিজয়ের দলের লোকজনও ঢুকে পড়েছে।
৫৭. ক্রস ফায়ারে মারা গেল নাজমার বাবা। এবং শেষ পর্যন্ত সাজ্জাদ তার দলের আরো কয়েকজনসহ আটকা পড়লো বিজয়দের হাতে। বন্দিদের নিয়ে বিজয়, নাজমা ও তার দলবলসহ দু তিনটি গাড়ি ছুটে চল্লো।
৫৮. টেলিফোন পেয়ে পুলিশ এসে তারাও ধাওয়া শুরু করলো বিজয়দের। কিন্তু কিছুদূর যাওয়ার পর দেখলো বিজয়ের দল সম্পূর্ন উধাও হয়ে গেছে। ব্যর্থ মনে ফিরে চল্লো আরিফ।
৫৯. আকতারের গোপন আস্তানা। সাজ্জাদ এবং তার দলের লোকদের বেঁধে মারধোর করছে বিজয়। তাকে মিথ্যে মামলায় কেন জড়ানো হয়েছে তারও কৈফিয়ৎ নিচ্ছে সে। সাজ্জাদ স্বীকার করলো যে সে-ই ষড়যন্ত্র কোরে বিজয়কে মিথ্যে মামলায় জড়িয়েছে। বিজয় টেপ রেকর্ডারে তা ক্যাসেটবন্দি করলো।
৬০. আকতারের ইচ্ছা সাজ্জাদের দলবলসহ সবাইকে খুন কোরে লাশ গায়েব কোরে দেবে। কিন্তু বিজয় সে দায়িত্ব নিতে রাজি হলো না। নাজমাকে বিয়ে কোরে সে সৎ মানুষের মতো বাঁচতে চায়। আকতার নাজমাকে বিয়ে করার ব্যাপারে বিজয়কে নিরুৎসাহিত করে। বলে সে খারাপ মেয়ে। কিন্তু বিজয় অনড়।
৬১. আকতারের পুরো আস্তানা পুলিশ ঘেরাও করে। প্রচুর গোলাগুলির পর সবাইকে গ্রেপ্তার করা হয়। মূল ভূমিকা নেয় আরিফ।
৬২. বিজয় নিজেকে নির্দোষ দাবি করে। ক্যাসেটবন্দি সাজ্জাদের স্বীকারোক্তি বাজিয়ে শোনায়। কিন্তু সাজ্জাদ বলে হত্যার ভয় দেখিয়ে তার কাছ থেকে এই স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়েছে।
৬৩. হত্যা, নির্যাতন, চোরাকারবার ইত্যাদির অভিযোগে আদালতে সাজ্জাদ তার দলবল এবং আকতার ও তার দলবল সাজা পায়।
বিজয়েরও সাজা পাওয়া প্রায় নিশ্চিত হয়ে যায়। সৌভাগ্যক্রমে মাতালকে হত্যার একজন প্রত্যক্ষদর্শী আবিষ্কৃত হয়। সে একজন ড্রাইভার। মাতালকে হত্যার সময় সে গাড়িতে বোসে ঘটনাটা সম্পূর্ন প্রত্যক্ষ করে। সাজ্জাদের দলের একজনকে সে হত্যাকারী হিসেবে শনাক্ত করতে সমর্থ হয়।
৬৪. আদালত বেকসুর খালাশ দেয় বিজয়কে। পিতা আরিফ আনন্দচিত্তে বিজয়কে আলিঙ্গন করতে যায়। কিন্তু বিজয় তা প্রত্যাখ্যান করে। আরিফ আইনের নিরপেক্ষতার কথা বলে। প্রেম, স্নেহ, মমতা জাগতিক যে কোনো সম্পর্কের চেয়ে আইন যে উর্ধে এবং আইন প্রয়োগকারীর যে এসব কিছুর উর্ধে থাকতে হয় তা বলে।
৬৫. মা রোকশানা ও তার পিতার অবিচল দায়িত্ব পালনের কথা বলে, সততার কথা বলে। বিজয় অনুতপ্ত হয় এবং পিতার আলিঙ্গনে ধরা দেয়।
৬৬. বিজয় নাজমার কথা তার মাকে জানায় এবং তাকে পুত্রবধু কোরে নিতে বলে। আরিফ, রোকশানা নাজমাকে মেনে নেয়।
৬৭. সৈকতে বিজয় এবং নাজমা অনাবিল আনন্দে নেচে বেড়ায়৷৷