যাহা-কিছু ছিল সব দিনু শেষ করে ডালাখানি ভরে — কাল কী আনিয়া দিব যুগল চরণে তাই ভাবি মনে । বসন্তে সকল ফুল নিঃশেষে ফুটায়ে নিয়ে তরু তার পরে এক দিনে দীনহীন , শূন্যে দেবতার পানে চাহে রিক্তকরে । আজি দিন শেষ হলে যদি মোর গান হয় অবসান , কাল প্রাতে এ গানের স্মৃতিসুখলেশ রবে না কি শেষ । শূন্য থালে মৌনকণ্ঠে নতমুখে আসি যদি তোমার সম্মুখে , তখন কি অগৌরবে চাহিবে না একবার ভকতের মুখে । দিই নি কি প্রাণপূর্ণ হৃদিপদ্মখানি পাদপদ্মে আনি ? দিই নি কি কোনো ফুল অমর করিয়া অশ্রুতে ভরিয়া । এত গান গাহিয়াছি , তার মাঝে নাহি কি গো হেন কোনো গান আমি চলে গেলে তবু বহিবে যে চিরদিন অনন্ত পরান । সেই কথা মনে করে দিবে না কি নব বরমাল্য তব — ফেলিবে না আঁখি হতে একবিন্দু জল করুণাকোমল , আমার বসন্তশেষে রিক্তপুষ্প দীনবেশে নীরবে যেদিন ছলছল-আঁখিজলে দাঁড়াইব সভাতলে উপহারহীন ।