লা নুই বেঙ্গলী – ১৫

১৫

দিনের পর দিন আমি একটা চাকরির খোঁজে পোর্ট কমিশনার্স অফিস এবং অন্যান্য জায়গায় হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াতে লাগলাম।.. কথা দিয়েছিল ফ্রেঞ্চ কনস্যুলেটে ট্রানশ্লেটরের চাকরি করে দেবে, সেটাও পাওয়া গেল না। আমার সম্বল বলতে আর শত টাকার বেশি কিছুই নেই, অথচ এখানে থাকতে গেলে আমার কিছু রোজগারের ব্যবস্থা চাইই। এই বিপদের সময়ও হ্যারল্ড আমার প্রতি প্রচণ্ড দুর্ব্যবহার করলো। আমি তাকে বলেছিলাম আমায় কটা দিন তার ঘরে থাকতে দিতে –আমি ১৫ তারিখেই তার বাসা ছেড়ে দেবো, কিন্তু সে আমার কথা রাখতে অস্বীকার করলো একটা বাজে অজুহাতে, যাতে আমি বিপদে পড়ি সে বললো, আমি নাকি আর খ্রীস্টান নই, কাজেই একজন পৌত্তলিকের সঙ্গে সে একঘরে শুতে পারবে না। আসল কথাটা হলো, সে আমার অবস্থাটা পুরোই জানতো। সে জানতো, আমার কাছে আর বিশেষ টাকা নেই, আর আমার এখুনি একটা ভালো মাইনের চাকরিরও সম্ভাবনা নেই। মাদাম রিবেইরো এই সুযোগে ভুলেই গেল আমি তার জন্য কতটা করেছি। সে কেবল হ্যারল্ডের ঘরে আমাকে নেহাৎ দেখে ফেলে, অনেক কষ্টে এক কাপ চা খাওয়াতে চাইলো মাত্র আমার আর বিক্রি করে পেট চালানোর মত অবশিষ্টও কিছুই নেই। খুব ভেঙে পড়লাম। বড় অসহায় অবস্থায় দিন কাটছে বড় হতাশায়, বড় কষ্টে।

আমি আবার খোকার সঙ্গে দেখা করলাম। সে আমায় মৈত্রেয়ীর আর একটা চিঠি দিলো। আমি সেটা নিতে অস্বীকার করলাম। সে আমায় মনে করিয়ে দিলো যে আমি ইঞ্জিনিয়ার মশাইকে আমার ওয়ার্ড অফ অনার দিয়েছিলাম। আমি কি সত্যই কোনো কথা দিয়েছিলাম? আমার তো মনে পড়ছে না। খোকা এমন ভাণ করলো, যেন মৈত্রেয়ীই বারবার তাগিদ দিচ্ছে আমাকে একদিন ভবানীপুরের পার্কে কিংবা সিনেমাহলে দেখা করার জন্য। মৈত্রেয়ী নাকি আমায় টেলিফোন করতে চেয়েছিল। আমি ফিরিয়ে দিলাম, সত্যি বলতে কি একটু রূঢ়ভাবেই সব অস্বীকার করলাম। যখন বোকার মতো মাথা খারাপ করে চোখের জলে সব কিছু শেষ করে দিতে হচ্ছে তখন আবার কোথা থেকে শুরু করবো?

—ওকে বলে দিও, ও যেন তার অ্যালেনকে ভুলে যায়। সে মরে গেছে। কেউ যেন আর তার জন্য অপেক্ষা না করে।

আমি আমার ভেতরটা হাতড়ে বেড়াতে লাগলাম, আর কি আমার ক্ষমতা আছে আবার নতুন করে শুরু করার মতো! মৈত্রেয়ী কি সত্যিই আমার ওপর চিরকালের জন্য নির্ভর করে থাকতে পারবে? কিন্তু আমি কোনো উত্তরই খুঁজে পেলাম না, কিছুই বুঝে উঠতে পারলাম না। ওকে যদি নিয়ে যেতেই হয়, হ্যাঁ তাই,… কিন্তু কী নিয়ে পালাবো? কী করে আবার ভবানীপুরের বাড়িতে ঢুকবো, কী করে মিঃ সেনের শ্যোনদৃষ্টি এড়াবো? হয়তো আবার নানা রকমের ঝামেলা বাধবে, হয়তো আমার বোধের কেউ মূল্যই দেবে না! হয়তো ও নিজেই আর আমায় বুঝবে না আমার ওপর ভরসা করতে পারবে না। আমি জানি না, –আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। আমার এখন কেবল একটাই ইচ্ছে, ও আমায় ভুলে যাক, ও যেন আমার জন্য কষ্ট না পায়!

আমাদের ভালোবাসা চিরজন্মের মত শেষ হয়ে গেছে।

কাল ভোর থেকে টেলিফোনটা বেজেই চলেছে। কেবল একই কথা ভেসে আসছে, ‘অ্যালেন কোথায়? আমি একটু ওর সঙ্গে কথা বলতে চাই। ওকে একটু বলে দিন, ব্যাপারটা খুবই জরুরি, …ওর বান্ধবী মৈত্রেয়ী ফোন করছে….।’ শেষ পর্যন্ত আমার ধৈর্যের বাঁধ ভাঙলো ফোন ধরতেই ও বললো, ‘অ্যালেন, এখুনি চলে এসে এই কালামুখীর সঙ্গে তোমার এতদিনের সমস্ত সম্পর্ক শেষ করে দিয়ে যাও।

আমার ইচ্ছে করতে লাগলো, এক্ষণি ছুটে চলে যাই, ওর বুকে নিজেকে আছড়ে ফেলি, কিন্তু না আমি কেবল মৃদু হাসলাম মাত্র। একটা বুনো অভিমান যেন আমায় পেয়ে বসেছে আমার যন্ত্রণা ক্রমশ তুঙ্গে উঠছে আর ও তুঙ্গে উঠুক যতক্ষণ তা আমার সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে না যায়। তারপর হাঁটু গেড়ে বসে বলবো—ভগবান! যথেষ্ট হয়েছে!

আজ আমি যখন ব-এর সঙ্গে টেলিফোনে কথা শেষ করছি, হঠাৎ রিসিভারের মধ্যে দিয়ে কানে এলো আর একটা গলার স্বর। আমি সঙ্গে সঙ্গে বুঝতে পারলাম, মৈত্রেয়ীর গলা। কত ভয়ে, কত সন্তর্পণে বলছে,—অ্যালেন, তুমি কেন চাইছো না যে আমি তোমার সঙ্গে কথা বলি? তুমি আমায় ভুলে গেছো….?

আমি নিঃশব্দে টেলিফোনটা রেখে দিলাম। আশ পাশের টেবিল-আলমারি ধরে টলতে টলতে নিজের ঘরে এসে পৌঁছলাম। ওঃ ভগবান, কেন, কেন আমি ওকে ভুলতে পারছি না! কেন এই যন্ত্রণার আগুন কিছুতেই নিভছে না?….আমি এমন একটা কিছু করতে চাই, মৈত্রেয়ী আমাকে ভুল বোঝে, আমার ওপর বিরক্ত হয়, যা জোর করে ওকে আমায় ভোলার সুযোগ করে দেবে। আমি আর একটা মেয়ের সঙ্গে মিশবো ঠিক করেছি, সে গারতি এবং আমি ভবানীপুরে খোকার সঙ্গে দেখা করে কথাটা বলেও এলাম…..

বার্মা অয়েল কোম্পানির সঙ্গে কথাবার্তা অনেক এগিয়েছে।ওরা একজন এজেন্ট চাইছে। মনে হচ্ছে আমি পোস্টটা পেয়ে যাবো। আমার পাওয়াটাও খুবই দরকার। সেদিন সারা দুপুর ও বিকেলটা টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটের লাইব্রেরিতে ফ্লুভিয়্যাল এজেন্টে কাজকর্ম সম্পর্কে প্রচুর পড়াশোনা করলাম। এদিকে পুলিশও আমার ব্যাপারে এই নিয়ে দুবার খোঁজ খবর করেছে। ইওরোপীয়ান বেকারদের এখান থেকে ধরে ধরে আবার দেশে চালান করে দিচ্ছে। আমাকেও যদি দেয়, তাহলে তা হবে আমার পক্ষে নিষ্ঠুরতম পরাজয়……

আজ আমার কাগজপত্রগুলো ঘাঁটতে ঘাঁটতে হঠাৎ মৈত্রেয়ীর একটা চিঠি বেরিয়ে পড়লো চিঠিটা অজ্ঞাতনামা কেউ লিখিছিল ওকে, ওর জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে, সঙ্গে একটা বিশাল ফুলের তোড়াও ছিল, চিঠিটা পড়ার এক অদম্য ইচ্ছে আমায় পেয়ে বসলো। কিন্তু আমি এখনও বাংলায় বড় কাঁচা, তাই চিঠিখানা পাশের ডাক্তারখানার এক ভদ্রলোককে দিয়ে পড়িয়ে নিলাম। ওটায় লেখা—’…ওগো আমার চির-না-ভোলা, চির জাগরূপ দীপশিখা, আজ আমি তোমায় দেখতে যেতে পারছি না আজ তোমায় একান্ত একা, একান্ত আমার করে তো পাবো না, যেমন করে সেদিন তোমায় সম্পূর্ণ আমার করে আশ্লেষে পেয়েছিলাম, আর সেদিন তো…..’

ওঃ আর পড়া অসম্ভব! আমার ভেতর এক প্রচণ্ড ঈর্ষা অমানুষিক যন্ত্রণায় ধক ধক করে জ্বলে উঠলো। আমি আমার টেবিলে কাঠ দুহাতে প্রাণপণে চেপে ধরে নিজেকে সামলাতে লাগলাম। তা হলে আর আজিও আমাকে ফোন করা কেন? এ কী তামাশা! ওঃ ভগবান! আমি যে বড় ভালোবেসে ছিলাম, বডড ভালোবেসে ফেলেছিলাম! তা হলে কি সবটাই আমার ভুল? কোথায় আমার ভুল, কোথায় আমার গলদ? নাকি, বিপক্ষে সকলেরই অনেক, অনেক কিছু বলার রয়ে গেছে?

আজকাল আমি আর ডায়েরিতে সব ঘটনার কথা লিখি না আশা করছি, খুব শিগগরই ভারতবর্ষের সঙ্গে আমার সমস্ত সম্পর্ক শেষ হবে! আমার চাকরির ব্যবস্থা হয়ে গেছে। যদি ও এখনও পাকা হয়নি, তবু আমি নিশ্চিত যে, এ চাকরিটা আমার হবেই, এবং আমায় সিঙ্গাপুরে গিয়ে যোগ দিতে হবে, ওরা আমার যাওয়ার খরচ পাঠিয়ে দিয়েছে আমার চারপাশে আমাকে কিছু বলার মতো কেউ নেই। আমি নিজেই উৎসাহিত ও চাঙ্গা করে তুলেছি যাতে কাজটা পেয়ে যাই….।

হ্যারন্ডের সঙ্গে আমার বিচ্ছেদ অনিবার্য হয়ে উঠেছে নেহাৎ ক্লারা যদি না থাকতো তাহলে এতদিন হয়েই যেতো কিছু একটা। ওর ওপর একটা ভয়ঙ্কর রাগ চেপে বসেছে আমার মনে। ব্যাপারটা নিয়ে একদিন গারতির ঘরেই সঙ্গে ক্লারার তুমুল ঝগড়া হয়ে গেছে। তারপর থেকে আমি গারতির ঘরেই আছি আর দুনিয়া শুদ্ধ লোকে আমাদের সবচেয়ে সুখী পরিবার বলে ধরে নিয়েছে। লোকে ভাবছে আমার দুজনে বুঝি গোপনে বিয়েটা সেরে নিয়েছি। গারতি আসল সত্যটা ভালো করেই জানে আমি মৈত্রেয়ীর প্রেমে পাগল হয়ে আছি আর ওর সঙ্গে ঘুরলেই মৈত্রয়ী আমার ওপর ক্ষেপে দূরে সরে যেতে পারে।

খোকা নানা ছুতোয় আমাকে ধরবে বলে ঘুরে বেড়াচ্ছে। সে আমায় যত চিঠি পাঠাচ্ছে আমি তার অর্ধেকও পড়ে দেখছি না। সেগুলো ন্যক্কারজনক ইংরেজীতে লেখা। সে বার বার আমায় লিখেই চলেছে যে মৈত্রেয়ী সেই মারাত্মক ভুলটা করবে বলে ঠিকই করে ফেলেছে, আর তার ফলে লোকে তাকে খোঁজাখুঁজি করবে। আর সবচেয়ে বড় কথা, মৈত্রেয়ী নাকি আমার কাছেই এসে উঠবে। তার এই মতলবের কথা পড়ে আমি মনে মনে বেশ শঙ্কিতই বোধ করলাম। কিন্তু আমি তাকে আমার এই ভাবনার কথা ঘুণাক্ষরেও জানতে দিলাম না বরং খুব রূঢ় ভাবেই এ সব ব্যাপার এবং যা সে আমায় আগে বলেছিল, সব কিছু পুরোপুরিই উড়িয়ে দিলাম। খোকা আমায় প্রায় ভয় দেখিয়েই জানিয়ে দিয়েছে যে আমায় খুঁজে বার করার জন্য মৈত্রয়ী কোনো বাধাকেই গ্রাহ্য করবে না নাটক একেবারে….।

সিঙ্গাপুর। আমার সঙ্গে মিসেস সেনের ভাইপো জ- এর সঙ্গে দেখা হয়ে গেল।ও এখানকার একটা প্রিন্টিং ওয়ার্কসে কাজ করে। অপার আনন্দে দুজনে দুজনকে জড়িয়ে ধরলাম, কত পুরনো দিনের কথা হলো। ও-ই আমার প্রথম পরিচিত ব্যক্তি। আমি ওকে লাঞ্চে নেমন্তন্ন করলাম। খাওয়ার পর সিগারেট খেতে খেতে ও সরাসরি আমার চোখের দিকে তাকিয়ে রইলো, তারপর ওর স্বভাবসিদ্ধ গম্ভীর গলায় বললো, অ্যালেন,তুমি কি জানো, মৈত্রেয়ী তোমায় কতো ভালোবাসে? তোমাদের এই সম্পর্ক সকলেই জেনে গেছে….।

আমি নিজেকে সামলাতে চেষ্টা করলাম। যদি ব্যাপারটা আমার পক্ষে গ্রহণযোগ্য না হয়। তাহলে আমি আর এ -নিয়ে কথা বাড়াতে চাই না। কোনো উৎকণ্ঠা প্রকাশ, বা অন্য কিছু না আমি জানি সকলে মিলে ব্যাপারটাকে নিয়ে অনেক জল ঘোলা করেছে ইতিমধ্যে। সত্যি, লোকের কি আর খেয়েদেয়ে কাজ নেই?

কিন্তু জ….আমাকে পীড়াপিড়ি করতে লাগলো।

শোন, আমায় বলতে দাও, তোমার জন্যে আর একটা নতুন দুঃসংবাদ আছে।

-অন্ততঃপক্ষে সে মরেনি নিশ্চয়ই। আমি প্রায় আর্তস্বরে বলে ফেললাম। ব্যাপারটা জানার আগেই।আমার মনে হতে লাগলো ও এখুনি যা বলবে তা আমি আমার মন প্রাণ, অন্তর দিয়েই জানি, ও নিশ্চয়ই মৈত্রেয়ীর মৃত্যুর খবর দেবে। আমার মনে হলো আমার চোখের সামনে থেকে মৈত্রেয়ী অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে….।

—মরলেতো ঢুকেই যেতো। ও যা করেছে, সেটা তার চেয়ে ঘৃণ্য কাজ। ও ঐ ফলওয়ালাটার সঙ্গে পালিয়েছে….।

আমার মনে হলো চিৎকার করে কেদেঁ উঠি, দাপাদাপি করি, প্রচণ্ড হাসিতে ফেটে পড়ি। আমি টেবিলের কোণ দুটো চেপে ধরে নিজেকে কোনো রকমে সামলালাম মনে হচ্ছিল, চোখের সামনে অন্ধকার, আমি অজ্ঞান হয়ে পড়ে যাবো। জ….আমার করুণ অবস্থা দেখে আমায় সান্ত্বনা দিতে লাগলো।

—সত্যিই, ও যা করেছে, তা আমাদের সকলের কাছেই মৈত্রেয়ীকে ধরে মেদিনীপুরে আটকে রাখা হয়েছে ব্যাপারটা গোপন রাখার চেষ্টাই হয়েছিল। তবে তখন প্রায় সবাইই জেনে গেছে।

আমি ওকে জিজ্ঞেস করলাম, ওরা ওর ওপর খুব অত্যাচার করছে কিনা।

—মিঃ সেন তো ঠিক করেছেন ওকে আর ও-বাড়ির দরজা ডিঙোতে দেবেন না। বলছেন, মৈত্রেয়ীর পালানোর জন্য যে দায়ী, তাকে পেলে উনি টুকরো করে ফেলবেন। সকলে চেয়েছিল ও পড়াশোনা করবে। বিশেষ করে একটি বিষয়ে উপর জোর দেবে আমি ঠিক জানি না। বোধ হয় ফিলজফি। …ওরা ব্যাপারটা চেপে রাখতেই চেয়েছিল। কিন্তু এখন তো সবাই জেনে ফেলেছে … কে ওকে ঘরে নেবে? ….মৈত্রেয়ী খুব চিৎকার চোঁচামেচি না করেছে—আমায় কুকুরের মুখে ফেলে দিলে না কেন? রাস্তায় বার করে দিলে না কেন? যাচ্ছেতাই ব্যাপার। …আমি জানি, এটা মৈত্রেয়ী খুবই ভুল করেছে কিন্তু এ ছাড়া ও আর কিই বা করতে পারতো?

ঘন্টার পর ঘন্টার আমি ভেবেই চললাম। কিন্তু ভেবে কিছুই ঠিক করতে পারলাম না। আমি কি নরেন্দ্র সেনকে টেলিগ্রাম করবো? মৈত্রেয়ীকে লিখবো?

আমি বুঝতে পারছিলাম মৈত্রয়ী এই ভুলটা আমার জন্যই করেছে! খোকা যে চিঠিগুলো আমায় এনে দিয়েছিল, সেগুলো সব যদি খুটিয়ে পড়ে দেখতাম! হয়তো তার মধ্যে ওর কোনো প্ল্যান লেখা ছিল! আমার ভেতরটা জ্বলে যাচ্ছে, ছিড়ে টুকরো টুকরো হয়ে যাচ্ছে….। আমি সব কিছু লিখে রাখবো, সমস্ত কিছু।

….উত্তেজনার বশে আমি কোথাও একটা বিরাট ভুল করে বসিনি তো? আমার ভালোবাসার মূল্যবোধ নিয়ে আমায় কেউ বোকা বানায়নি তো? কেন আমি বিচার বিবেচনা না করে সবকিছু বিশ্বাস করতে গেলাম! কী জানি আমি কতদূর জানি?

আমার প্রচণ্ড ইচ্ছে করতে রাগলো মৈত্রেয়ীকে একবার অন্তত চোখের দেখা দেখি, কিন্তু……

***

জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি ১৯৩৩

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *