৫. শ্বাস নিতে পারছি না

শ্বাস নিতে পারছি না! গলায় হাত দিয়ে ঢোক গিলতে লাগল মুসা। দম আটকে যাচ্ছে আমার! নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে।

সব তোমার কল্পনা, দ্রুত গিয়ে ট্রেলারের দরজার পাল্লা হাঁ করে খুলে দিল। কিশোর অক্টোবর রাতের তাজা বাতাস ঢোকার জন্যে। আকাশের অনেক উঁচুতে উঠে গিয়ে বুমম করে ফাটল দুটো বাজি।

এগুলো সাফ করতে কয়েক বছর লেগে যাবে! গুঙিয়ে উঠে ছড়ানো জিনিসপত্রগুলো দেখাল রবিন।

তা না হয় করলাম, কিশোর বলল। সেটা নিয়ে ভাবি না। ভাবছি আমাদের সমস্ত গোপন ফাইল দেখে গেল ব্যাটারা!

আসলে, রবিন বলল, এই হেডকোয়ার্টারে আর চলবে না আমাদের। বহু বছর তো কাটালাম পুরানো জায়গায়। এভাবে আর চলবে না। নতুন জয়িগায় নতুন নতুন যন্ত্রপাতি বসাতে হবে আমাদের, চোর-ডাকাত ঠেকানর ব্যবস্থা। রাখতে হবে…

 হাঁসফাস করতে করতে মুসা বলল, কিছুই করতে হত না! ট্রেলারটা যেমন লুকান ছিল তেমনি থাকলেই ভাল হত! এত বছর তো আরামেই ছিলাম,

ছিলাম, রবিন বলল, আমাদের বয়েস কম ছিল, সেটা একটা কারণ। তেমন। মাথা ঘামাত না কেউ। ভাবত, ছেলেমানুষের খেয়াল। এখন আর আমাদেরকে দেখলে সেটা মনে করে না কেউ। সিরিয়াসলি নেয়। বড় হওয়ার এই এক যন্ত্রণা…

ব্যাটারা জানল কি করে এই কেসে কাজ করছি আমরা?

চুপ করে ভাবছে কিশোর। জবাব দিল, নিশ্চয় কিডন্যাপাররা ছবিটার সঙ্গে জড়িত সবার ওপর নজর রেখেছে। তুমিও বাদ যাওনি।

পুরানো একটা ধাতব ফাইল কেবিনেট তুলে সোজা করে রাখতে কিশোরকে সাহায্য করল মুসা। বিশ্বাস করতে পারছি না! র‍্যানসম নোটটা আজকেই এল। ভাবতেই পারিনি, আমাকেও ফলো করতে আরম্ভ করবে।

ঘরটাকে আগে গুছিয়ে ফেলি, কিশোর বলল। তারপর ভালমত আলোচনা করতে বসব কার চোখ পড়ল আমাদের ওপর।

শুধু আলোচনায় তো কাজ হবে না, রবিন বলল, ওদেরকে বের করতে হবে। কি করে করবে?

পরে ভাবব। এখন জরুরী, ভিডিও সিকিউরিটি সিসটেমটা দেখা।

 ঠিক! তুড়ি বাজাল মুসা। ক্যামেরা! লোকগুলোর ছবি নিশ্চয় উঠে গেছে ভিডিও টেপে!

তাহলে তো কাজই হবে, রবিন বলল। কিন্তু টেপ কি অতটা লম্বা ছিল? ওরা যখন এসেছে তখনও রেকর্ড করছিল?

দেখাই যাক না। টেপ রিউইণ্ড করার বোতাম টিপে দিল কিশোর। দুই সহকারীকে জানাল, সারাক্ষণ চলার মত করে সিসটেমটা তৈরি করিনি। ওই পদ্ধতি ভাল না। অন্য ব্যবস্থা করেছি। বাইরে একটা ইলেকট্রিক আই লাগিয়েছি। হেডকোয়ার্টারের কাছাকাছি কেউ এলে চোখে পড়ে যাবে যন্ত্রটার, চালু হয়ে যাবে ভিডিও রেকর্ডার। লোকটা চলে গেলেই অফ হয়ে যাবে ক্যামকর্ডার। আবার কেউ এলে আবার চালু হয়ে যাবে..

প্লে বাটন টিপে দিল কিশোর। মনিটরের দিকে তাকিয়ে রয়েছে তিন জোড়া চোখ। ছবি ফুটতেই আরও ভাল করে দেখার জন্যে গা ঘেঁষাঘেঁষি করে এল ওরা। ছবি দেখে ছিটকে পেছনে সরে গেল আবার।

লম্বা, পাতলা একটা মূর্তি ঝিলমিল করতে করতে বেরিয়ে এল অন্ধকার থেকে, ভরে দিল পর্দা। ট্রেলারের দিকে এগিয়ে আসছে যেন ভেসে ভেসে, হেঁটে নয়। লম্বা কালো আলখেল্লার কোণ ধরে টানছে বাতাস, বাদুড়ের ডানার মত ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে।

পঅজ বাটনটা টিপে দিল কিশোর। স্থির হয়ে গেল মূর্তি। ভয়াবহ মুখটার দিকে মন্ত্রমুগ্ধের মত তাকিয়ে রইল সে।

মুখের রঙ ফসফরাসের মত সবুজ, তেমন করেই জ্বলে। লাল চোখ। গলার কাছে কালো গর্ত। প্রচণ্ড যন্ত্রণায় যেন অস্থির, দেহের ভেতরের সমস্ত যন্ত্রপাতি বেরিয়ে আসতে চাইছে, সেই ব্যথারই ছাপ পড়েছে মুখে।

খাইছে! নিচু গলায় বলল মুসা। জোরে বলার সাহস হারিয়েছে।

পঅজ রিলিজ করে দিল কিশোর। পেছনে, আশেপাশে তাকাতে লাগল মূর্তিটা। কয়েকবার করে তাকিয়ে যখন নিশ্চিত হল তাকে কেউ লক্ষ করছে না, তখন একটা পা তুলে জোরে এক লাথি মারল ট্রেলারের দরজায়। ঝটকা দিয়ে খুলে গেল দরজা। ভেতরে ঢুকল লোকটা। ক্যামেরার চোখ থেকে সরে যাওয়ায় দেখা গেল না তাকে। কয়েক মিনিট পর বেরিয়ে আলখেল্লার কোণ উড়িয়ে হারিয়ে গেল অন্ধকারে।

লোকটা কে? রবিনের প্রশ্ন।

মানুষ তো? মুসার প্রশ্ন।

কয়েকবার করে টেপটা চালিয়ে দেখল ওরা। প্রতিবারেই নতুন কিছু না কিছু চোখে পড়ল।

ব্যাটার শ্বদন্ত আছে, রবিন বলল।

 ডান হাতের আঙুলে একটা আঙটি, বলল কিশোর। বড় একটা পাথর বসান।

অদ্ভুত মূর্তিটার সব কিছুই যখন দেখা হয়ে গেল, আর কিছুই বাকি রইল না, যন্ত্রটা অফ করে দিল কিলোর।

চালাকিটা ভালই করেছে, মুসা মন্তব্য করল। হ্যালোউইনের রাতে ভ্যাম্পায়ারের সাজ সেজে এসেছে, কেউই লক্ষ্য করবে না ব্যাপারটা। আজকের রাতে ওরকম ছদ্মবেশ পরে খুন করেও পার পাওয়া যাবে, ধরা পড়তে হবে না।

 এবার একটা প্ল্যান করা দরকার, কিশোর বলল। মুসা, কাল আমাদেরকে স্টুডিওতে নিয়ে যাবে তুমি। লোকের সঙ্গে কথা বলে দেখব, ডিলনকে কে বেশি চেনে। শেষ কে দেখেছিল, জানব। বোঝার চেষ্টা করব, কার কার নাম সন্দেহের তালিকায় ফেলতে হবে।

পরদিন স্কুল শেষ করে স্টুডিওতে গিয়ে প্রথম যে মানুষটার সামনে পড়ল তিন গোয়েন্দা, তিনি মুসার বাবা রাফাত আমান। ভয়ঙ্কর একটা মুখোশ পরে স্টুডিও লট ধরে হেঁটে চলেছেন।

তোমরা? একেবারে সময়মত এসেছ, আমান বললেন। আমার ইফেক্টগুলো কেমন আসবে, দেখতে যাচ্ছি। দেখার ইচ্ছে আছে? ডেইলি।

না বলার কোনই কারণ নেই। আমানের পিছু পিছু একটা প্রাইভেট স্ক্রিনিং রুমের দিকে চলল ওরা। রবিন জিজ্ঞেস করল, ডেইলিটা কি? দৈনিক কোন ব্যাপার না তো?

তা-ই। শুটিং করা প্রতিদিনকার অংশকে ডেইলি বলে ফিল্মের লোকেরা, বাবার হয়ে জবাবটা দিল মুসা। দিয়ে গর্বিত হলো, রবিনের চেয়ে এ ব্যাপারে বেশি জানে বলে। এডিট করা হয় না তখনও, প্রচুর ভুলভাল থেকে যায়।

স্ক্রিনিং রুমটাকে খুদে একটা সিনেমা হলই বলা চলে। ছয় সারি সীট। লাল মখমলে মোড়া গদি। সামনের সারির প্রতিটি সীটের ডান হাতলে রয়েছে। ইনটারকমের বোতাম। ওখানকার একটা সীটে বসে বোম টিপে দিলেন আমান। প্রেজেকশনিস্টকে ছবি চালাতে বললেন।

হলের আলো কমিয়ে দিয়ে ছবি চালানো হলো।

আগের হপ্তায় ভোলা স্পেশাল ইফেক্টের ছবিগুলো দেখতে লাগল তিন গোয়েন্দা। প্রতিটি দৃশ্যেই জ্যাক রিডারের ছাপ স্পষ্ট, ভয়ঙ্কর বীভৎস করে তোলার যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন।

একটা দৃশ্যে একটা বাচ্চা ছেলে বার বার হেঁচকি তুলছে।

কি করে সারাতে হয় জানি আমি, বলল বাচ্চাটার মা, স্বাভাবিক মানুষ নেই। আর, জোম্বি হয়ে গেছে। ভয় দেখাতে হবে। আর কোন উপায় নেই।

বলেই একটানে বাচ্চাটার একটা হাত ছিঁড়ে ফেলল। ব্যথায় চেঁচিয়ে উঠল ছেলেটা। কাঁধের কাছের ছেঁড়া জায়গা থেকে ফিনকি দিয়ে রক্ত ছুটল।

দেখলে তো? হেঁচকি বন্ধ।

কাট! শোনা গেল রিডারের কণ্ঠ, ক্যামেরার চোখের বাইরে থেকে। আর কবে শিখবে? কিছুই তো বলতে পারো না।

আরেকটা দৃশ্যে নাকে রুমাল চেপে হাঁচি দিল একটা লোক। তারপর আতঙ্কিত চোখে তাকিয়ে রইল রুমালের দিকে, হাচির চোটে তার নিজের মগজই নাক দিয়ে বেরিয়ে এসে রুমালে লেগে গেছে।

রবিনের দিকে কাত হয়ে তার কানে কানে কিশোর বলল, জ্যাক রিডার একটা চরিত্র বটে!

স্যাডিস্ট! ফিসফিসিয়ে জবাব দিল রবিন।

তারপর বেন ডিলনের অভিনীত কয়েকটা দৃশ্য চলল। সে নিজেই জোম্বিতে পরিণত হল, চোখের কোণে কালো দাগ পড়ল। রঙ দিয়ে করা হয়েছে ওগুলো।

বাবা, পর্দায় বলছে ডিলন, তুমি আমাকে হার্ভার্ডে পাঠাতে চাও তো। যেতে ইচ্ছে করে না। আমার ভাল লাগে লোকের গলা কামড়ে ছিঁড়ে মাথা আলাদা করতে।

স্ক্রিপ্ট লিখেছে কে? জোরে জোরেই বলল মুসা, মাথায় খালি কুৎসিত চিন্তা…

চুপ, থামিয়ে দিলেন ওকে আমান। আমার চাকরিটা খাবে নাকি?

নতুন আরেকটা দৃশ্যে দেখা গেল ডিলন আর একজন সুন্দরী অভিনেত্রীকে। মেয়েটা খাট, কোঁকড়া কালো চুল, চোখের পাপড়িও কোকড়া।

অ্যাঞ্জেলা ডোভার না? সামনে ঝুঁকে আমানকে জিজ্ঞেস করল কিশোর।

হ্যাঁ। এই ছবির সহ-অভিনেত্রী। তবে অনেক দেখান হয় ওকে, শুরুতেই টানা বিশ মিনিট। ডেটিং করে ডিলনের সঙ্গে। এই দৃশ্যে দেখান হবে নিরীহ, গোবেচারা, ভালমানুষ, কিছুটা বোকাও। ভাবতেই পারেনি ওপরতলা থেকে দুটো। মানুষের বাচ্চাকে খেয়ে এসেছে ডিলন।

বিশ্বাস কর, ডানা, ডিলন বলছে, কেমন জানি হয়ে গেছি আমি। অদ্ভুত অনুভূতি। দম নিতে কষ্ট হয়। মনে হয়, কবরে শুয়ে আছি, বেলচা দিয়ে মাটি ছিটান হচ্ছে আমার ওপর, ঢেকে দেয়ার জন্যে। মনে হয়, একের পর এক মানুষ খুন করি।

বেন, ডিলনের বাহুতে থেকে বলল ডানা, ওসব কিছু না। শুধুই কল্পনা। একটা মাছি মারারও ক্ষমতা নেই তোমার।

কাট! চেঁচিয়ে উঠলেন রিডার, অ্যাঞ্জেলা, ওকে বেন বলছ কেন?

 শিওর, এ ছবি থ্যাঙ্কসগিভিডের দিনে মুক্তি দেয়া হবে, রবিন বলল।

 কেন? মুসার প্রশ্ন।

তখন খেতে ব্যস্ত থাকবে সবাই। এই ঘোড়ার ডিমের দিকে নজর থাকবে না। এ একটা দেখার জিনিস হলো!

হাসতে শুরু করল কিশোর আর মুসা।

এতই খারাপ? জিজ্ঞেস করলেন আমান।

রবিন আর মুসা চুপ করে রইল। ভাবছে, জবাবটা কিশোরই দিক। কিশোরের বুদ্ধি বেশি, সিনেমার ব্যাপারে জ্ঞান বেশি, ঠিক জবাব সে-ই দিতে পারবে।

স্ক্রিপ্টের কোন হাতমাথা নেই, ডিরেক্টরের হয়ে আছে মাথা গরম, কিশোর বলল। রিডারের মত কম দামি পরিচালক বেশি বাজেটের ছবিতে হাত দিতে গেলে হবেই এরকম। মাথা গরম হয়ে গেছে লোকটার। মণ্ডে এসোই এখনও মাথা– থেকে নামেনি। ওই একই কাণ্ড করছে। আঙ্কেল, আপনি সত্যি কথাটা শুনতে চাইলেন, তাই বললাম।

ভাবনায় ফেলে দিলে আমাকে তুমি, কিশোর, আমান বললেন। কিশোর বুঝল, ভাবনায় তিনি আগেই পড়েছেন, তার সঙ্গে আলোচনা করে নিজের ধারণাগুলো মিলিয়ে দেখলেন আরকি।

সবগুলো ডেইলি দেখার পর উঠে দাঁড়াল তিন গোয়েন্দা। বাইরে গিয়ে লোকের সঙ্গে আলাপ করে ডিলন অপহরণ কেসের সূত্র খোঁজার ইচ্ছে। আটকালেন ওদেরকে আমান।

আজ সকালে ব্রাউন অলিংগার ফোন করেছিলেন, বললেন তিনি। তিনি ভয়। পাচ্ছেন, তোমরা তদন্ত করতে গিয়ে ডিলনের বিপদ বাড়িয়ে দেবে।

বাবা…

জানি, তোমরা খুব ভাল গোয়েন্দা, আমান বললেন বাধা দিয়ে, আমার চেয়ে তো আর বেশি জানে না কেউ। কিন্তু অলিংগার কিডন্যাপারদের নির্দেশ মেনে চলতে চান। তিনি বলেছেন টাকা গেলে তার যাবে, বাইরের কেউ, মানে তোমরা যাতে এতে নাক না গলাও। তোমাদেরকে চলে যেতে বলছি আমি। সরি।

কোন প্রতিবাদেই আর কাজ হবে না। রাজি করাতে পারবে না ওরা রাফাত আমানকে। অলিংগারের ওপরই রাগ হতে লাগল ওদের। গটমট করে বেরিয়ে এসে গাড়িতে উঠে রওনা হল মুসার গাড়িতে করে। সমস্ত লস অ্যাঞ্জেলেসে লাল আলো লেপ্টে দিয়েছে যেন অস্তমিত সূর্য। অন্ধকারের দেরি নেই।

ড্রাইভিং হুইলে বসেছে মুসা, রবিন তার পাশে, হাতে রেডিও, আর পেছনের সিটে বসে বকবক করে বলে যাচ্ছে কিশোর, জ্যাক রিডার কি কি ভুল করেছেন।

হঠাৎ করেই বলল, অ্যাঞ্জেলা ডোভারের সঙ্গে ডিলনের অভিনয় তাকে জেলাস করে তুলেছে।

নাকি তুমিই জেলাস হয়ে গেছ? রসিকতা করল রবিন, সেজন্যেই রিডারকে দোষ দিচ্ছ।

রবিনের কথা কানে তুলল না কিশোর। মেয়েটার চোখে ভয়াবহ আলো ফেলে শুটিঙের ব্যবস্থা করেছেন পরিচালক, ভুল অ্যাঙ্গেলে ছবি তোলা হয়েছে।

একটা রেস্টুরেন্টের সামনে গাড়ি রাখল মুসা। রেডিওর ডায়াল ঘোরাচ্ছিল। রবিন, জিজ্ঞেস করল, কি হলো?

খিদে পেয়েছে, বলল মুসা। চলো, কিছু খাই।

রবিন বলল, আমাকে তাড়াতাড়ি বাড়ি যেতে হবে। মা বাইরে যাবে। চলো, বাড়ি গিয়েই খাব।

আধ ঘণ্টা পর রবিনদের বাড়িতে এসে রান্নাঘরে ঢুকল তিন গোয়েন্দা। প্রচুর খাবার রয়েছে টেবিলে। সেগুলোর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ল ওরা।

পেট কিছুটা ঠাণ্ডা হয়ে এলে পকেট থেকে র‍্যানসম নোটের কপিটা বের করে টেবিলে রাখল কিশোর।

সেটা দেখে রবিন বলল, কি মনে হয় তোমার? পরবর্তী নির্দেশ কি পাঠিয়েছে মিস্টার অলিংগারের কাছে?

ঠিক এই সময় রান্নাঘরে ঢুকলেন রবিনের বাবা। ওদেরকে দেখে হাত নেড়ে বললেন, খাও তোমরা। আমি শুধু কফি খাব। কাপ নিতে গিয়ে নোটটার ওপর। চোখ পড়ল তাঁর। জিজ্ঞেস করলেন, এটা কি?

একটা কেসের তদন্ত করছি আমরা, বাবা, রবিন বলল।

কফিতে চুমুক দিতে দিতে নোটটা দেখতে লাগলেন মিলফোর্ড। হঠাৎ বললেন, রবিন, ডেইলি ভ্যারাইটি থেকে কাটা হয়েছে অক্ষরগুলো, বুঝতে পেরেছ?

আপনি শিওর? জিজ্ঞেস করল কিশোর।

নিশ্চয়ই।

কফি শেষ করে উঠে চলে গেলেন মিলফোর্ড।

নিচের ঠোঁটে চিমটি কাটতে আরম্ভ করেছে কিশোর। গভীর চিন্তায় ডুবে গেছে। শান্ত কণ্ঠে আনমনেই বলতে লাগল একসময়, এর মানে জান তো? বেন। ডিলনকে যে কিডন্যাপ করেছে সে ফিল্মের সঙ্গে জড়িত। সাফোকেশন টু-র। কর্মচারী হলেও অবাক হব না।