পরিশিষ্ট

চিড়িয়াখানা – ১০

দশ

পরদিন সকালে সংবাদপত্র পাঠ শেষ হইলে ব্যোমকেশ নিজের ভাগের কাগজ সযত্নে পাট করিতে করিতে বলিল,—‘কাল চারটি স্ত্রীলোককে আমরা দেখেছি। তার মধ্যে কোন্‌টিকে সবচেয়ে সুন্দরী বলে মনে হয়?’

স্ত্রীলোকের রূপ লইয়া আলোচনা করা ব্যোমকেশের স্বভাব নয়; কিন্তু হয়তো তাহার কোনও উদ্দেশ্য আছে, তাই বলিলাম,—‘দময়ন্তী দেবীকেই সবচেয়ে সুন্দরী বলতে হয়—’

‘কিন্তু—’

চকিত হইয়া বলিলাম,—‘কিন্তু কি?’

‘তোমার মনে কিন্তু আছে।’ ব্যোমকেশ সহসা আমার দিকে তর্জনী তুলিয়া বলিল,—‘কাল রাত্রে কাকে স্বপ্ন দেখেছ?’

এবার সত্যিই ঘাবড়াইয়া গেলাম,—‘স্বপ্ন! কৈ না—’

‘মিছে কথা বোলো না। কাকে স্বপ্ন দেখেছ?’

তখন বলিতে হইল। স্বপ্ন দেখার উপর যদিও কাহারও হাত নাই, তবু লজ্জিতভাবেই বলিলাম,—‘বনলক্ষ্মীকে।’

‘কি স্বপ্ন দেখলে?’

‘দেখলাম, সে যেন হাতছানি দিয়ে আমায় ডাকছে, আর হাসছে। —কিন্তু একটা আশ্চর্য দেখলাম, তার দাঁতগুলো যেন ঠিক তার দাঁতের মত নয়। যতদূর মনে পড়ে তার সত্যিকারের দাঁত বেশ পাটি-মেলানো। কিন্তু স্বপ্নে দেখলাম, কেমন যেন এব্‌ড়ো খেব্‌ড়ো—’

ব্যোমকেশ অবাক হইয়া আমার মুখের পানে চাহিয়া রহিল, তারপর বলিল—‘তোমার স্বপ্নেও দাঁত আছে!’

‘তার মানে? তুমিও স্বপ্ন দেখেছ নাকি? কাকে?’

সে হাসিয়া বলিল,—‘সত্যবতীকে। কিন্তু তার দাঁত নিজের মত নয়, অন্যরকম। তাকে জিগ্যেস করলাম, তোমার দাঁত অমন কেন? সত্যবতী জোরে হেসে উঠল, আর তার দাঁতগুলো ঝর্ ঝর্ করে পড়ে গেল।’

আমিও জোরে হাসিয়া উঠিলাম, বলিলাম,—‘এসব মনঃসমীক্ষণের ব্যাপার। চল, গিরীন্দ্রশেখর বসুকে ধরা যাক, তিনি হয়তো স্বপ্ন-মঙ্গলের ব্যাখ্যা করতে পারবেন।’

এই সময় দ্বারের কড়া নড়িল।

ব্যোমকেশ দ্বার খুলিয়া দিলে ঘরে প্রবেশ করিল বিজয়। ঠোঁট চাটিয়া বলিল,—‘আমি নিশানাথবাবুর ভাইপো—’

ব্যোমকেশ বলিল,—‘পরিচয় দিতে হবে না, বিজয়বাবু, কাল আপনাকে দেখেছি। তা কি খবর?’

বিজয় বলিল,—‘কাকা চিঠি দিয়েছেন। আমাকে বললেন চিঠিখানা পৌঁছে দিতে।’

সে পকেট হইতে একটা খাম বাহির করিয়া ব্যোমকেশকে দিল। বিজয়ের ভাবগতিক দেখিয়া মনে হয় তাহার মন খুব সুস্থ নয়। সে রুমাল দিয়া গলার ঘাম মুছিল, একটা কিছু বলিবার জন্য মুখ খুলিল, তারপর কিছু না বলিয়াই প্রস্থানোদ্যত হইল।

ব্যোমকেশ চিঠি পকেটে রাখিয়া বলিল,—‘বসুন।’

বিজয় ক্ষণকাল ন যযৌ হইয়া রহিল, তারপর চেয়ারে বসিল। অপ্রতিভ হাসিয়া বলিল,—‘কাল আমিও আপনাকে দেখেছিলাম, কিন্তু তখন পরিচয় জানতাম না—’

‘পরিচয় কার কাছে জানলেন?’

‘কাল সন্ধ্যের পর কলোনীতে ফিরে গিয়ে জানতে পারলাম। কাকা আপনাকে কোনও দরকারে ডেকেছিলেন বুঝি?’

ব্যোমকেশ মৃদু হাসিয়া বলিল,—‘একথা আপনার কাকাকে জিগ্যেস করলেন না কেন?’

বিজয়ের মুখ উত্তপ্ত হইয়া উঠিল। সে বলিল,—‘কাকা সব কথা আমাদের বলেন না। তবে ঐ মোটরের টুকরো নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন হয়েছেন তাই বোধহয়—’

‘মোটরের টুকরো সম্বন্ধে আপনার কি ধারণা?’

‘আমার তো মনে হয় একেবারে ছেলেমানুষী। মাইলখানেক দূরে গ্রাম আছে, গ্রামের ছোঁড়ারা প্রায়ই ঐ মোটরগুলোর মধ্যে এসে খেলা করে। আমার বিশ্বাস তারাই বজ্জাতি করে মোটরের টুকরো কলোনীতে ফেলে যায়।’

ব্যোমকেশ বলিল,—‘হুঁ, আচ্ছা ওকথা যাক। প্রফেসর নেপাল গুপ্তর খবর কি?’

বিজয়ের ভ্রূ কুঞ্চিত হইল। সে বলিল,—‘কাল ফিরে গিয়ে শুনলাম নেপালবাবু কাকাকে অপমান করেছে। কাকা তাই সহ্য করলেন, আমি থাকলে—’

‘নেপালবাবু কলোনীতে আছেন এখনও?’

বিজয় অন্ধকার মুখে বলিল,—‘হ্যাঁ। মুকুল এসে কাকিমার হাতে পায়ে ধরেছে। কাকিমা ভালমানুষ, গলে গেছেন, কাকাকে গিয়ে বলেছেন। কাকা কাকিমার কথা ঠেলতে পারেন না—’

‘তাহলে নেপালবাবু রয়ে গেলেন। লোকটি ভাল নয়, গেলেই বোধহয় ভাল হত। আচ্ছা বলুন দেখি, ওঁর মেয়েটি কেমন?’

বিজয় থমকিয়া গেল। একবার বিস্ফারিত চক্ষে ব্যোমকেশের পানে চাহিয়া দ্রুতকণ্ঠে বলিল,—‘মুকুল! বাপের মত নয়—ভালই—তবে। —আচ্ছা, আজ উঠি, দেরি হয়ে গেল—দোকানে যেতে হবে। নমস্কার।’

বিজয় ত্বরিতপদে প্রস্থান করিলে ব্যোমকেশ কিছুক্ষণ ভ্রূ তুলিয়া দ্বারের পানে চাহিয়া রহিল, তারপর ফিরিয়া আসিয়া তক্তপোশে বসিল। ভাবিতে ভাবিতে বলিল,—‘বিজয় সুনয়নার ব্যাপার বোধহয় জানে না, কিন্তু মুকুলের কথায় অমন ভড়কে পালাল কেন?’

আমি বলিলাম,—‘কাল ডাক্তার ভুজঙ্গধরও মুকুল সম্বন্ধে খোলসা কথা বললেন না—’

‘হুঁ। এখন নিশানাথবাবু কি লিখেছেন দেখা যাক। কিন্তু তিনি চিঠি লিখলেন কেন? টেলিফোন করলেই পারতেন।’

খাম ছিঁড়িয়া চিঠি পড়িতে পড়িতে ব্যোমকেশের মুখের ভাব ফ্যাল্‌ফেলে হইয়া গেল। সে বলিল;—‘ও—এই জন্য চিঠি!’

জিজ্ঞাসা করিলাম,—‘কি লিখেছেন নিশানাথবাবু?’

‘পড়ে দেখ’ বলিয়া সে আমার হাতে চিঠি দিল।

ইংরেজি চিঠি, মাত্র কয়েক ছত্র—

প্রিয় ব্যোমকেশবাবু,।

আপনাকে যে কার্যে নিযুক্ত করিয়াছিলাম সে কার্যে আর অগ্রসর হইবার প্রয়োজন নাই। আপনাকে যে টাকা দিয়াছি আপনার পারিশ্রমিক রূপে আশা করি তাহাই যথেষ্ট হইবে। ইতি—

ভবদীয়
নিশানাথ সেন

চিঠি হইতে মুখ তুলিয়া নিরাশ কণ্ঠে বলিলাম,—‘নিশানাথবাবু হঠাৎ মত বদলালেন কেন?’

ব্যোমকেশ বলিল,—‘পাছে এই প্রশ্ন তুলি তাই তিনি টেলিফোন করেননি, চিঠিতে সব চুকিয়ে দিয়েছেন।’

‘কিন্তু কেন?’

‘বোধহয় তাঁর ভয় হয়েছে কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরিয়ে পড়বে। নিশানাথবাবুর জীবনে একটা গুপ্ত রহস্য আছে। শুনলে না, কাল রাগের মাথায় নেপাল গুপ্ত বললেন—ভাঙব নাকি হাটে হাঁড়ি?’

‘তাহলে নেপালবাবু ওঁর গুপ্ত রহস্য জানেন?’

‘জানেন বলেই মনে হয়। এবং হাটে হাঁড়ি ভাঙার ভয় দেখিয়ে ওঁকে blackmail করছেন।’

‘কিন্তু—কাল নিশানাথবাবু তো বেশ জোর দিয়েই বললেন, কেউ তাঁকে blackmail করছে না।’

‘হুঁ—’ বলিয়া ব্যোমকেশ সিগারেট ধরাইল এবং ধূমপান করিতে করিতে চিন্তাচ্ছন্ন হইয়া পড়িল।

সকালবেলাটা মন খারাপের মধ্যে দিয়া কাটিয়া গেল। একটা বিচিত্র রহস্যের সংস্পর্শে আসিয়াছিলাম, অনেকগুলা বিচিত্র প্রকৃতির মানুষের মানসিক ঘাত-প্রতিঘাতে একটা নাটকীয় সংস্থা চোখের সম্মুখে গড়িয়া উঠিতেছিল, নাটকের প্রথম অঙ্ক শেষ হইবার পূর্বেই কে যেন আমাদের প্রেক্ষাগৃহ হইতে ঠেলিয়া বাহির করিয়া দিল।

বৈকালে দিবানিদ্রা সারিয়া দেখিলাম, ব্যোমকেশ একান্তে বসিয়া গভীর মনোযোগের সহিত কিছু লিখিতেছে। আমি তাহার পিছন হইতে উঁকি মারিয়া দেখিলাম, ডায়েরির মত একটা ছোট খাতায় ক্ষুদি ক্ষুদি অক্ষরে লিখিতেছে। বলিলাম,—‘এত লিখছ কি?’

লেখা শেষ করিয়া ব্যোমকেশ মুখ তুলিল,—‘গোলাপ কলোনীর পাত্র-পাত্রীদের চরিত্র-চিত্র তৈরি করেছি। খুব সংক্ষিপ্ত চিত্র—যাকে বলে thumbnail portrait.’

অবাক হইয়া বলিলাম,—‘কিন্তু গোলাপ কলোনীর সঙ্গে তোমার তো সম্বন্ধ ঘুচে গেছে। এখন চরিত্র-চিত্র এঁকে লাভ কি?’

ব্যোমকেশ বলিল,—‘লাভ নেই। কেবল নিরাসক্ত কৌতূহল। এখন অবধান কর। যদি কিছু বলবার থাকে পরে বোলো।’

সে খাতা লইয়া পড়িতে আরম্ভ করিল—

নিশানাথ সেন : বয়স ৫৭। বোম্বাই প্রদেশে জজ ছিলেন, কাজ ছাড়িয়া দিয়া কলিকাতার উপকণ্ঠে গোলাপ বাগান করিয়াছেন। চাপা প্রকৃতির লোক। জীবনে কোনও গুপ্ত রহস্য আছে। সুনয়না নামে জনৈকা চিত্রাভিনেত্রী সম্বন্ধে জানিতে চান। সম্প্রতি কেহ তাঁহাকে মোটরের টুকরো উপহার দিতেছে। (কেন?)

দময়ন্তী সেন : বয়স আন্দাজ ৩০। এখনও সুন্দরী। বোধহয় নিশানাথের দ্বিতীয় পক্ষ। নিপুণা গৃহিণী। কলোনীর সমস্ত টাকা ও হিসাব তাঁহার হাতে। আচার-আচরণ সম্ভ্রম উৎপাদক। দুই বছর আগে বিদ্যাশিক্ষার জন্য নিয়মিত কলিকাতা যাতায়াত করিতেন।

বিজয় : বয়স ২৬–২৭। নিশানাথের পালিত ভ্রাতুস্পুত্র। ফুলের দোকানের ইন্-চার্জ। দোকানের হিসাব দিতে বিলম্ব করিতেছে। আবেগপ্রবণ নার্ভাস প্রকৃতি। কাকাকে ভালবাসে, সম্ভবত কাকিমাকেও। নেপালবাবুকে দেখিতে পারে না। মুকুল সম্বন্ধে মনে জট পাকানো আছে—একটা গুপ্ত রহস্যের ইঙ্গিত পাওয়া যায়।

পানুগোপাল : বয়স ২৪–২৫। কান ও স্বরযন্ত্র বিকল। লেখাপড়া জানে না। নিশানাথের একান্ত অনুগত। চরিত্র বিশেষত্বহীন।

নেপাল গুপ্ত : বয়স ৫৬–৫৭। কুটিল ও কটুভাষী। প্রচণ্ড দাম্ভিক। রসায়নের অধ্যাপক ছিলেন। এখনও এক্সপেরিমেন্ট করেন, ফল কিন্তু বিপরীত হয়। নিশানাথকে ঈর্ষা করেন, বোধহয় নিশানাথের জীবনের কোনও লজ্জাকর গুপ্তকথা জানেন। দময়ন্তী দেবী তাঁহাকে ভক্তি করেন। (ভয়ে ভক্তি?)

মুকুল : বয়স ১৯–২০। সুন্দরী কিন্তু কণ্ঠস্বর স্বাভাবিক নয়, কৃত্রিম বলিয়া মনে হয়। রুজ পাউডারের সাহায্যে মুখসজ্জা করিতে অভ্যস্ত। বর্তমান অবস্থার জন্য মনে ক্ষোভ আছে কিন্তু পিতার মত হঠকারী নয়। প্রায় দুই বছর পিতার সহিত কলোনীতে বাস করিতেছে।

ব্রজদাস : বয়স ৬০। নিশানাথের সেরেস্তার কেরানি ছিল, চুরির জন্য নিশানাথ তাহার বিরুদ্ধে সাক্ষী দিয়া তাহাকে জেলে পাঠাইয়াছিলেন। জেল হইতে বাহির হইয়া ব্রজদাস কলোনীতে আশ্রয় লইয়াছে। সে নাকি এখন সদা সত্য কথা বলে। লোকটিকে দেখিয়া চতুর ব্যক্তি বলিয়া মনে হয়।

ভুজঙ্গধর দাস : বয়স ৩৯–৪০। অত্যন্ত বুদ্ধিমান, অবস্থার শোচনীয় অবনতি সত্ত্বেও মনের ফুর্তি নষ্ট হয় নাই। ধর্মজ্ঞান প্রবল নয়, লজ্জাকর দুর্নৈতিক কর্মে ধরা পড়িয়াও লজ্জা নাই। বনলক্ষ্মীর প্রতি তীব্র বিদ্বেষ। (কেন?) ভাল সেতার বাজাইতে পারেন। চার বছর কলোনীতে আছেন।

বনলক্ষ্মী : বয়স ২২–২৩। স্নিগ্ধ যৌবনশ্রী; যৌন আবেদন আছে—(অজিত তাহাকে স্বপ্ন দেখিয়াছে) কিন্তু তাহাকে দেখিয়া মনে হয় না সে কুলত্যাগিনী। চঞ্চলা নয়, প্রগল্‌ভা নয়। কর্মকুশলা; একটু গ্রাম্য ভাব আছে। দেড় বছর আগে বিজয় তাহাকে কলোনীতে আনিয়াছে।

মুস্কিল মিঞা : বয়স ৫০। নেশাখোর (বোধহয় আফিম) কিন্তু হুঁশিয়ার লোক। কলোনীর সব খবর রাখে। তাহার বিশ্বাস কলিকাতার দোকানে চুরি হইতেছে। দেড় বছর আগে নূতন বিবি বিবাহ করিয়া ঘরে আনিয়াছে, পুরাতন বিবিকে তালাক দিয়াছে।

নজর বিবি : বয়স ২০–২১। পশ্চিমের মেয়ে, আগে বাংলা জানিত না, বিবাহের পর শিখিয়াছে। ভদ্রঘরের মেয়ে বলিয়া মনে হয়। কলোনীর অধিবাসীদের লজ্জা করে না, কিন্তু বাহিরের লোক দেখিলে ঘোমটা টানে।

রসিক দে : বয়স ৩৫। নিজের বর্তমান অবস্থায় তুষ্ট নয়। দোকানের হিসাব লইয়া নিশানাথের সহিত গণ্ডগোল চলিতেছে। চেহারা রুগ্ন, চরিত্র বৈশিষ্ট্যহীন। (কালো ঘোড়া?)

খাতা বন্ধ করিয়া ব্যোমকেশ বলিল,—‘কেমন?’

ব্যোমকেশ আমাকে বনলক্ষ্মী সম্পর্কে খোঁচা দিয়াছে, আমিও তাহাকে খোঁচা দিবার লোভ সংবরণ করিতে পারিলাম না,—‘ঠিক আছে। কেবল একটা কথা বাদ গেছে। নেপালবাবু ভাল দাবা খেলেন উল্লেখ করা উচিত ছিল।’

ব্যোমকেশ আমাকে একবার ভাল করিয়া নিরীক্ষণ করিল, তারপর হাসিয়া বলিল,—‘আচ্ছা, শোধ-বোধ।’

সন্ধ্যার সময় রমেনবাবুর চাকর আসিয়া একটি খাম দিয়া গেল। খামের মধ্যে দুইটি ফটো।

ফটো দুইটি আমরা পরম আগ্রহের সহিত দর্শন করিলাম। কমলমণি সত্যই বঙ্কিমচন্দ্রের কমলমণি, লাবণ্যে মাধুর্যে ঝলমল করিতেছে। আর শ্যামা ঝি সত্যই জবরদস্ত্ শ্যামা ঝি। দুইটি আকৃতির মধ্যে কোথাও সাদৃশ্য নাই। এবং গোলাপ কলোনীর কোনও মহিলার সঙ্গে ছবি দুইটির তিলমাত্র মিল নাই।