২০. দরজা খাঁখাঁ করছে

দরজা খাঁখাঁ করছে। ঘরে ঢুকেই থমকে দাঁড়ালুম। আসবাবপত্র সব অন্তর্ধান। কার্পেটের উপর অ্যাটাচিকেসে মাথা রেখে দোস্ত মুহম্মদ শুয়ে। আমাকে দেখেই চেঁচিয়ে বললেন, বোরর, গুমশোবেরিয়ে যা, পালা এখান থেকে।

দোস্ত মুহম্মদের রকমারি অভ্যর্থনা সম্ভাষণে ততদিনে আমি অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছি। কাছে গিয়ে বললুম, জিনিসপত্র সব কি হল? আগা আহমদ যে ভারী ভারী টেবিল চেয়ার, কোচ সোফা পর্যন্ত সরাবে ততটা আঁচ করতে পারিনি।

দোস্ত মুহম্মদ বিড়বিড় করে বললেন, সব ব্যাটা চোর, সব শালা চোর, কোনো ব্যাটাকে বিশ্বাস নেই, কাবুল থেকে প্যারিস পর্যন্ত।

আমি বললুম, বড় অন্যায় কথা। চুরি করল আগা আহমদ, দোষ ছড়ালে প্যারিস পর্যন্ত।

বললেন, কী মুশকিল, আগা আহমদ চুরি করলে তার পিছনে আমি রাইফেল কাঁধে করে বেরতুম না? না বেরলে আফ্রিদী সমাজে আমার জাত-ইজ্জত থাকত? নিয়েছে ব্যাটা লাফেঁ?

সে আবার কে?

পর্শু এসে পৌঁচেছে, ফরাসীর অধ্যাপক। ল-ই-দরিয়ায় বাসা বেঁধেছে বেশ বাড়িখানা। আফগান সরকারের যত আদিখ্যেতাআত্তি সব বিদেশীদের জন্য।

আমি বললুম, চোর কে, তার সাকিন-ঠিকানা সব যখন জানেন তখন মাল উদ্ধার–

বললেন, আইনে দেয় না–বেচারী দুঃখ করছিল কোথাও আসবাবপত্র পাচ্ছে না। আমি বললুম আমার বাড়িতে বিস্তর আছে–ফরাসী জানো তে, বুক দ্য মোবল, ফুল দ্য মোবল, তা দ্য মোবল, ব্যাটাকে দেখিয়ে দিলুম বিস্তর মাল কত বিচিত্র কায়দায় ফরাসীতে বলা যায়। শুনে ব্যাটা দুসরা আফগান লড়াইয়ের গোরা সেপাইয়ের মত কচুকাটা হয়ে শুয়ে পড়ল।

আমি বিরক্ত হয়ে বললুম, শুয়ে পড়ল কোথায়, এসে তো দিব্যি সব কিছু ঝেঁটিয়ে নিয়ে গেল।

দোস্ত মুহম্মদ আপত্তি জানিয়ে বললেন, তওবা তওবা, নিজে এলে কি আর সব নিয়ে যেত–দেখত না ভিটেতে কবুতর চরার মত অবস্থা হয়ে উঠেছে। আমিই সব পাঠিয়ে দিলুম।

আমি চটে গিয়ে বললুম, বেশ করেছ, এখন মনো হিমে শুয়ে–

এক লাফ দিয়ে দোস্ত মুহম্মদ আমার গলা জড়িয়ে ধরে বললেন, বলিনি বলিনি, তখন বলিনি, পারবিনি রে, পারবিনি–তোকে আপনি বলা ছাড়তেই হবে। কিন্তু তুই ভাই রেকর্ড ব্রেক করেছিস ঝাড়া পনরো দিন আপনি চালিয়েছিস।

আমি বললুম, বেশ বেশ। কিন্তু স্বেচ্ছায় যখন সব কিছু বিলিয়ে দিয়েছ তখন দুনিয়া শুদ্ধ লোককে চোর চামার বলে কটু কাটব্য করছিলে কেন?

কাউকে বলবিনে, শুনেই ভুলে যাবি? তবে বলি শোন। তুই যখন ঘরে ঢুকলি তখন দেখলুম তোর মুখ বড় ভার। হয়ত দেশের কথা ভাবছিলি, নয় কাল রাত্তিরের গানের খোয়ারি কাটিয়ে উঠতে পারিসনি কেন যে ক্ষ্যাপার এরকম ভূতুড়ে গান গায়? তা সে যাকগে। কিন্তু তোর মুখ দেখে মনে হল তুই বড্ড বেজার। তাই যা-তা সব বানিয়ে, তোকে চটিয়ে সব কথা ভুলিয়ে দিলুম। দেখলি কায়দাখানা।

আমি বললুম, খুব দেখলুম, আমাকে বেকুব বানালে। তোমাকে বেকুব বানায় আগা আহমদ, আর তুমি বেকুব বানালে আমাকে। তা নূতন কিছু নয়। আমাদের দেশে একটা দোহা আছে

শমনদমন রাবণ আর রাবণদমন রাম,
শ্বশুরদমন শাশুড়ী আর শাশুড়ীদমন হাম্।

ঢিলে গল্প, কঁচা রসিকতা। কিন্তু দোস্ত মুহম্মদ নবীনের মত, যাহা পায় তাহাই খায়, মুখে হাসি লেগেই আছে।

আমি বললুম, সব বুঝেছি, কিন্তু একটা খাট তো অন্তত কেনো, মাটিতে শোবে নাকি?

দোস্ত মুহম্মদ বললেন, তবে আসল কথাটা এই বেলা শোন; বিলিতী আসবাবপত্রে আমি কখনো আরাম বোধ করিনি দশ বৎসর চেষ্টা করার পরও। অথচ পয়সা দিয়ে কিনেছি, ফেলতে গেলে লাগে। এতদিনে যখন সুযোগ মিলল তখন নূতন করে জঞ্জাল জুটোব কেন? এইবার আরাম করে পাঠানী কায়দায় ঘরময় মই চষে বেড়াব খাট থেকে পড়ে গিয়ে কোমর ভাঙবার আর ভয় নেই।

আমি বললুম, কর্মরত ন শিকনদ, তোমার কোমর ভেঙ্গে দু টুকরোনা হোক।।

কথা ছিল দুজনে একসঙ্গে বাগদান সায়েবের বাড়ি যাব।

পূর্বেই বলেছি ফরাসী দূতাবাসে বগদানফ সায়েবের বৈঠকখানা ছিল বিদেশী মহলের কেন্দ্রভূমি। বাগান থেকেই শব্দ শুনে তার আভাস পেলুম। ঘরে ঢুকে দেখি একপাল সায়েব মেম।

আমাকে ঘরের মাঝখানে দাঁড় করিয়ে বগদানফ সায়েব চোস্ত ফরাসী ভাষায় দুরুস্ত ফরাসী কায়দায় বললেন, পেরমেতে মওয়া ল্য প্লেজির দ্য ভূ প্রেজাতে অনুমতি যদি দেন তবে আপনাদের সামনে অমুককে নিবেদন করে বিমলানন্দ উপভোগ করি।

তারপর এক-একজন করে সকলের নাম বলে যেতে লাগলেন। আমি বলি, হাডুডু, তাঁদের কেউ বলেন, আশাতে, কেউ বলেন, শার্মে, কেউ বলেন, রাভি। অর্থাৎ আমার সঙ্গে পরিচিত হয়ে কেউ হয়েছেন enchanted, কেউ charmed কেউ বা ravished! একেই বলে ফরাসী ভদ্রতা। এরা যখন গ্রেতা গার্বো বা মার্সেনে দাঁতরিশের সঙ্গে পরিচিত হয়ে সত্যি সত্যি enchanted হন তখন কি বলেন তার সন্ধান এখনো পাইনি।

মসিয়োঁ লাফোঁ গল্পের হেঁড়া সুতোর খেই তুলে নিয়ে বললেন, তারপর বাদশা আমায় জিজ্ঞেস করলেন, ফরাসী শিখতে ছমাসের বেশী সময় লাগার কথা নয়। আমি বললুম, না হুজুর, অন্তত দুবছর লাগার কথা।

বগদানফ সায়েব বললেন, করেছেন কি? বাদশাহের কোনো কথায় না বলতে আছে? দিবা দ্বিপ্রহরে, প্রখর রৌদ্রালোকে যদি হুজুর বলেন পশ্য, পশ্য, নীলাম্বরের ললাটদেশে চন্দ্রমা কি প্রকারে শ্বেতচন্দন প্রলেপ করেছেন। আপনি তখন প্রথম বললেন, হুজুরের যে পূতপবিত্র পদদ্বয় অনাদি কাল থেকে অসীম কাল পর্যন্ত মণিমাণিক্যবিজড়িত সিংহাসনে বিরাজমান এ-গোলাম সেই পদরজ

স্পর্শ লাভের আশায় কুরবানী হতে প্রস্তুত। তারপর বলবেন—

বাধা দিয়ে মাদাম লাফে বললেন, সম্পূর্ণ মন্ত্রোচ্চারণে যদি ভুলচুক হয়ে যায়? দৈর্ঘ্য তো কিছু কম নয়।

বগদানফ সায়েব সদয় হাসি হেসে বললেন, অল্প-স্বল্প রদবদল হলে আপত্তি নেই। মণি-মাণিক্যের বদলে হীরা-জওহর বলতে পারেন, পদরজের পরিবর্তে পদধুলি বললেও বাধবে না।

তারপর বলবেন, হুজুরের কী তীক্ষ্ণ দৃষ্টি, চন্দ্রমা সত্যই কি অপূর্ব বেশ ধারণ করেছেন এবং নক্ষত্রমণ্ডলী কতই না নয়নাভিরাম।

ইতালির সিমোরা দিগাদো জিজ্ঞেস করলেন, তবে কি ভদ্রতা বজায় রেখে হুজুরকে সত্যি কথা জানাবার কোনো উপায়ই নেই। এই মনে করুন মসিয়োঁ লাফে যদি সত্যি সত্যি জানাতে চান যে, ফরাসী শিখতে দুবছর লাগে?

বগদানফ বললেন, নিশ্চয়ই আছে, বাদশা যখন বলবেন ছমাস আপনি তখন বলবেন, নিশ্চয়ই, হুজুর, ছমাসেই হয়। দুবছরে আরো ভালো হয়। হুজুরেরও তো কাণ্ডজ্ঞান আছে। আপনার ভদ্ৰসৌজন্যের আতর তিনি শুকবেন, গায়ে মাখবেন, তাই বলে তো আর গিলবেন না।

মসিয়োঁ লাফে বললেন, এ সব বাড়াবাড়ি।

বগদানফ বললেন, নিশ্চয়ই; বাড়াবাড়িরই আরেক নাম superfluity। আর পোয়েট টেগোর আমাদের তিনি গুরুদেববলেই তিনি প্রোফেসর বেনওয়া ও আমার দিকে একবার বাও করলেন তিনি বলেন, আর্টের সৃষ্টি হয়েছে সুপারফ্লুয়িটি থেকে। আমার দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে বললেন, কথাটা বোঝাতে গিয়ে তিনি শাস্ত্রী মশায়কে কি একটা চমৎকার তুলনা দিয়েছিলেন না?

আমি বললুম, কাঠের ডাণ্ডা লাগানো টিনের কেনেস্তারায় করে রাধু মালীর নাইবার জল আনার মধ্যে আর নন্দলাল কতৃক চিত্রবিচিত্রিত মৃৎপাত্র ভরে যোড়ণী তন্বী সুন্দরীর জল আনার মধ্যে যে সুপারফ্লুয়িটির তফাত তাই আর্ট।

বগদানফ সায়েব উৎসাহিত হয়ে বললেন, শুধু আর্ট? দর্শন, বিজ্ঞান, সব কিছু কলচর বলতে যা কিছু বুঝি। সবই সুপারফ্লুয়িটি থেকে, বাড়াবাড়ি থেকে।

অধ্যাপক ভ্যাঁসাঁ বললেন, কিন্তু এই কলচর যখন চরমে পৌঁছয় তখন গুরুচণ্ডালে এত পার্থক্য হয়ে যায় যে, বাইরের শত্রু এসে যখন আক্রমণ করে তখন সে দেশের সব শ্রেণী এক হয়ে দাঁড়াতে পারে না বলে স্বাধীনতা হারায়। যেমন ইরান।

আমি বললুম, ভারতবর্ষ।

পোলিশ মহিলা মাদাম ভরভচিয়েভিচি বললেন, কিন্তু ইংরেজ? তারা তো সভ্য, তাদের গুরুচণ্ডালেও তফাত অনেক, কিন্তু তারা তোল সব সময় এক হয়ে লড়তে পারে।

বগদানফ জিজ্ঞেস করলেন, কাদের কথা বললেন, মাদাম?

ইংরেজের।

ঐ যারা ইয়োররাপের পশ্চিমে একটা ছোট দ্বীপে থাকে?

মজলিসে ইংরেজ কেউ ছিল না। সবাই ভারী খুশী। আমি মনে মনে বললুম, আমাদের দেশেও বলে চরুয়া।

অধ্যাপক ভ্যাঁসাঁ বললেন, বগদানফ ঠিকই অবজ্ঞা প্রকাশ করেছেন। ইংরেজদের ভিতর অনেক খানদানী বংশ আছে সত্যি কিন্তু গুরুচণ্ডালে যে বৈদগ্ধ্যের পার্থক্য হবে, সে কোথায়? ওদের তো থাকার মধ্যে আছে এক সাহিত্য। সঙ্গীত নেই, চিত্রকলা নেই, ভাস্কর্য নেই, স্থপতি নেই। শ্রেণীতে শ্রেণীতে যে পার্থক্য হবে তার অনুভূতিগত উপকরণ কোথায়? অথচ ফ্রান্সে এসব উপকরণ প্রচুর; তাই দেখুন ফরাসীরা এক হয়ে লড়তে জানে না, শান্তির সময় রাজ্য পর্যন্ত চালাতে পারে না। যে দেশে আছি তার নিলে করতে নেই, কিন্তু দেখুন, এক ফোঁটা দেশ অথচ স্বাধীন।

মাদাম ভরভচিয়েভিচি বললেন, এ দেশেও তো মোল্লা আছে।

দোস্ত মুহম্মদ বললেন, কিছু ভয় নেই মাদাম। মোল্লাদের আমি বিলক্ষণ চিনি। ওদের বেশির ভাগ যেটুকু শাস্ত্র জানে আপনাকে সেটুকু আমি তিন দিনেই শিখিয়ে দিতে পারব। কিন্তু মেয়েদের মোল্লা হওয়ার রেওয়াজ নেই।

মাদাম চটে গিয়ে বললেন, কেন নেই?

দোস্ত মুহম্মদ দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলে বললেন, দাড়ি গজায় না বলে।

ভার্স সান্ত্বনা দিয়ে বললেন, মোল্লাই হন আর যাই হন, এ দেশের মেয়ে হয়ে জন্মালে যে আপনাকে বোরকার আড়ালে থাকতে হত। আমাদের ক্ষেতিটা বিবেচনা করুন।

সবাই একবাক্যে

Oui, Madame,
Si, si, Madame,
Certainement, Madame.

কোরাস সমাপ্ত হলে দোস্ত মুহম্মদ বললেন, কিন্তু পর্দা-প্রথা ভালো।

যেন আটখানা অদৃশ্য তলোয়ার খোলার শব্দ শুনতে পেলুম; চোখ বন্ধ করে দেখি দোস্ত মুহম্মদের মুণ্ডটা গড়িয়ে গড়িয়ে আফ্রিদী মুলুকের দিকে চলেছে।

নাঃ! কল্পনা। শুনি দোস্ত মুহম্মদ বলছেন, ধর্মত বলুন তো মশায়রা, মাদাম ভরভচিয়েভিচি, মাদাম লাফোঁ, সিন্নোরা দিগাদোর মত সুন্দরী সংসারে কয়টি? বেশীর ভাগই তো কুচ্ছিত। পাইকারী পর্দা চালালে তাহলে ক্ষতির চেয়ে লাভ বেশী নয় কি?

মহিলারা কথঞ্চিৎ শান্ত হলেন।

কিন্তু মাদাম ভরভচিয়েভিচি পোলিশ, উষ্ণ রক্ত। জিজ্ঞাসা করলেন, আর পুরুষদের সবাই বুঝি খাপসুরত এ্যাডনিস? তারাই বা বোরকা পরে না কেন, শুনি।

দোস্ত মুহম্মদ বললেন, তাই তো পুরুষদের দিকে মেয়েদের তাকানো বারণ।

মজলিসে হট্টগোল পড়ে গেল। মেয়েরা খুশী হলেন না ব্যাজার হলেন ঠিক বোঝা গেল না। কুয়াশা কাটিয়ে সিন্নেরা দিগাদো দোস্ত মুহম্মদকে জিজ্ঞাসা করলেন, সুন্দরীর অপ্রাচুর্য বলেই কি আপনি বিয়ে করেননি?

দোস্ত মুহম্মদ একটুখানি হাঁ করে বাঁ হাত দিয়ে ডান দিকের গাল চুলকোতে চুলকোতে বললেন, তা নয়। আসল কথা হচ্ছে, কোনো একটি সুন্দরীকে বেছে নিয়ে যদি তাকে বিয়ে করি তবে তার মানে কি এই নয় যে, আমার মতে দুনিয়ার আর সব মেয়ে তার তুলনায় কুচ্ছিত। একটি সুন্দরীর জন্য দুনিয়ার সব মেয়েকে এ রকম বে-ইজ্জৎ করতে আমার প্রবৃত্তি হয় না।

সবাই খুশী। আমি বিশেষ করে। পাহাড়ী আফগান বিদগ্ধ ভ্যাঁসাঁকে শিভালরিতে ঘায়েল করে দিল বলে।

ইরানী রাজদূতাবাসের আগা আদিব এতক্ষণ চুপ করে বসেছিলেন, বললেন, তবেই আফগানিস্থানের হয়েছে। ইরানী কায়দার নকল করে আফগানিস্থানেরও কপাল ভাঙবে। ইরান কিন্তু ইতিমধ্যে হুশিয়ার হয়ে গিয়েছে। শাহ-বাদশাহের সঙ্গে কথা বলবার যে সব কায়দা বগদানফ সায়েব বললেন সেগুলো তিনি দশ বছর আগে ইরানে শিখেছিলেন। এখন আর সেদিন নেই। সব রকম এটিকেটের বিরুদ্ধে সেখানে এখন জোর আন্দোলন আর ঠাট্টামস্করা চলছে। ঘরে ঢোকার সময় যে সামান্য ভদ্রতা একে অন্যকে দেখায় তার বিরুদ্ধে পর্যন্ত এখন কবিতা লেখা হয়। শুনে শুনে একটা তো আমারই মুখস্থ হয়ে গিয়েছে। আপনারা শোনেন তো বলি।

সবাই উৎসাহের সঙ্গে রাজী হলেন।

আগা আদিব বেশ রসিয়ে রসিয়ে আবৃত্তি করে গেলেন–

খুদা তুমি দিলে বহুৎ জ্ঞান,
শেষ রহস্য এই বারেতে কর সমাধান।
ইরান দেশের লোক
কসম খেয়ে বলতে পারি নয় এরা উজবোক্।
বিদ্যে আছে, বুদ্ধি আছে, সাহস আছে ঢের
সিঙি লড়ে, মোকাবেলা করে ইংরেজের।
তবে কেন ঢুকতে গেলেই ঘরে
সবাই এমন ঠেলাঠেলি করে?
দোরের গোড়ায় থমকে দাঁড়ায় ভিতর পানে চায়,
আপনি চলুন, আপনি ঢুকুন, দাঁড়িয়ে কিন্তু ঠায়।
হাসি-খুশী বন্ধ হঠাৎ গল্প যে যায় থেমে
ঠেলাঠেলির মধ্যিখানে উঠছে সবাই ঘেমে।
অবাক হয়ে ভাবি সবাই কেন এমন করে,
দিবা-দ্বিপ্রহরে
কি করে হয় ঘরের মাঝে ভূত?
তবে কি যমদূত?
সলমনের জিন্?
কিম্বা গিলটিন?
ঢুকলে পরেই কপাৎ করে কেটে দেবে গলা,
তাই দেখে কি দোরে এসে বন্ধ সবার চলা?

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *