1 of 2

শকওয়েভ – ৩৫

পঁয়ত্রিশ

আটটার ঠিক আগমুহূর্তে নির্ধারিত রেস্টুরেন্টে প্রবেশ করেই বুঝতে পারল কোহেন, কেন সাক্ষাতের স্থান হিসাবে নির্বাচন করেছে এটাকে রহস্যময় লোকটা।

লোকে লোকারণ্য জায়গাটা। ক্রোম আর নিয়ন-শোভিত, পঞ্চাশের বেশি মার্কিন কিংবদন্তির জাঁকাল মুরাল-সজ্জিত রেস্তোরাঁটা দুঃস্বপ্নের মত মনে হবে যে-কোনও গুপ্তঘাতকের কাছে। সুদূর কল্পনাতেও কিলিং গ্রাউণ্ড হিসাবে বেছে নেবে না সে এটাকে।

কষ্টেসৃষ্টে জটলা ঠেলে একটা টেবিল নিশ্চিত করতে পারল ও জানালার ধারে। চেয়ারে বসে নজর বোলাল চারপাশে। মোলডার ব্যাটা এসে হাজির হয়েছে কি না, কে জানে! জুড়ি, পরিবার আর বন্ধুবান্ধবদের গ্রুপ ওর চারদিকে।

সম্ভবত অর্বাচীনসুলভ হয়ে গেল এখানে আসাটা। এমন তো হতে পারে, প্র্যাকটিকাল জোক করেছে কোনও পাজির পা-ঝাড়া।

দু’মিনিটেরও কম সময়ে উসখুস করে উঠল কোহেন। উঠতে যাচ্ছে, এ সময় রেস্টুরেন্টের লোগোঅলা উর্দি পরনে বিষণ্ণ চেহারা ও মুগুরপেটা শরীর নিয়ে ওয়েইটার সালাম দিল এসে।

কটমট করে চাইল কোহেন বডিবিল্ডারের দিকে। এক মুহূর্ত পর দৃষ্টি নরম করে কোয়ার্টার-পাউণ্ডার বার্গারের অর্ডার দিল ফ্রাই সহ, যদিও কোনও ইচ্ছা বোধ করছে না খাওয়ার। সঙ্গে থাকল সোডা ওয়াটার।

পনেরো মিনিট… পনেরোটা মিনিট দেখবে ওবলল নিজেকে কোহেন। তার পরই বেরিয়ে যাবে এখান থেকে।

পাঁচ মিনিটের মধ্যে চলে এল বার্গার। দেখে মনে হলো, এক দলা বিষ্ঠা ভরে দেয়া হয়েছে বানের মধ্যে। ছুঁয়ে দেখারও রুচি হলো না। স্রেফ সোডা ওয়াটারে চুমুক দিয়ে আশপাশের পুরুষগুলোকে জরিপ করতে লাগল কোহেন।

আরও পাঁচ মিনিট পর বিশাল বপু এক রুপালিচুলো বগলে ফাইল নিয়ে হন্তদন্ত হয়ে ঢুকে পড়ল কাঁচের দরজা দিয়ে। নার্ভাস দৃষ্টিতে ইতিউতি তাকাচ্ছে। গোলগাল, সুখী চেহারাটা উদ্বিগ্ন। কাঙ্ক্ষিত মানুষটাকে খুঁজে পেয়ে ভিড় সামলে এগোতে লাগল মদের পিপের মত শরীরটা চেপেচুপে।

‘মিস্টার মোলডার,’ বলল কোহেন না দাঁড়িয়ে। ‘জিজ্ঞেস করার আগেই জানিয়ে দিই… কেউই অনুসরণ করেনি আমাকে। গ্যারান্টি দিতে পারি এই ব্যাপারে।

ভারি শরীর নিয়ে উল্টো দিকের চেয়ারে বসল মোলডার। ফাইলটা টেবিলে নামিয়ে রাখতে রাখতে বলল, ‘কত পারসেন্ট?’ জানালা ভেদ করে নার্ভাস দৃষ্টি গিয়ে পড়ল রাস্তার লোকজন আর গাড়িঘোড়ার উপর।

‘কী কত পারসেন্ট?’

‘মানে, কত পারসেন্ট নিশ্চয়তা দিচ্ছেন? ওরকম শিয়োর হয়ে তো বলা যায় না কিছুই।’

পরনের বাদামি সুটটা কোঁচকানো। সস্তা মদের গন্ধ পেল কোহেন লোকটার নিঃশ্বাসে।

‘একাই রয়েছি আমরা এখানে,’ আশ্বস্ত করল ও মোলডার-কে। ‘ভরসা রাখুন আমার কথায়। ফালতু বাত- চিতের বান্দা নই আমি। বিনিময়ে চাই: অন্যরাও আলতু-ফালতু কথা না বলুক।’

‘ঈশ্বরের দিব্যি—যাহা বলিব, সত্য বলিব। সত্য বই মিথ্যা বলিব না। প্রমাণও দিতে পারব বক্তব্যের সপক্ষে। ‘

ফাইলটার উদ্দেশে মাথা ঝাঁকাল কোহেন। ‘প্রমাণ নিশ্চয়ই ওটার মধ্যে?’

‘সেজন্যেই তো যক্ষের ধনের মত আগলে রেখেছি!’

‘বুঝলাম। যতটুকু প্রয়োজন, তার চেয়ে একটা মুহূর্তও বেশি থাকার ইচ্ছে নেই আমার। কাজেই, কাজের কথায় আসুন। প্রথমেই দুয়েকটা বেসিক প্রশ্ন। আপনার আসল নাম দিয়েই শুরু করা যাক।’

মোলডার জবাব দেয়ার আগেই ভীমদর্শন ওয়েইটার এসে ব্যাঘাত ঘটাল নোটবুক হাতে।

কর্নড বিফ হ্যাশ, বাঁধাকপি আর বড় এক গ্লাস বাডওয়াইসার বিয়ার অর্ডার করল নকল মোলডার। ওরা আবার একাকী হলে, ঝুঁকে এল সে টেবিলের উপর।

‘জাক গালিফিনাকিস,’ গোপন কথা ফাঁস করছে যেন, এমনিভাবে ফিসফিস করছে লোকটা। ‘আমার আসল নাম।’

ফাইলটা কোহেনের দিকে ঠেলে দিল বিশাল বপু। ‘দেখুন চোখ বুলিয়ে। পরিচয়ের সব প্রমাণ পাবেন ওখানে। খাঁটি লোক আমি… ঈশ্বরের কাছে পরিষ্কার।’ উৎকট ঢেকুর ছাড়ল একটা। ‘দুঃখিত, ইচ্ছে করে করিনি।’ বিয়ারের গ্লাসটা তুলে নিয়ে ঢক ঢক করে তিন ভাগের এক ভাগ খালি করে ফেলল এক টানে পকেট থেকে রিডিং গ্লাস বের করল কোহেন। বিরক্তি লাগে জিনিসটা পরতে। চোখে লাগিয়ে নিয়ে মনোনিবেশ করল ফাইলের মধ্যে।

পেশায় ইঞ্জিনিয়ার, সাতান্ন বছর বয়স গালিফিনা- কিসের। পিটসবার্গের কার্নেগি মেলান ইউনিভার্সিটি থেকে ডিগ্রি নেয়ার পর সিস্টেম ডিজাইনে পোস্টগ্র্যাজুয়েশন করেছে এমআইটি থেকে। বারো বছর আগে ডিপার্টমেণ্ট অভ ডিফেন্সের ডারপা এজেন্সিতে জয়েন করার আগের ঘটনা এগুলো।

‘ডুডে বলে কোনও কিছুতে কাজ করেছেন, এমন কোনও প্রমাণ তো দেখছি না এখানে,’ ফাইলের লেখাগুলোতে দৃষ্টি বুলিয়ে নিয়ে বলল কোহেন প্রশ্নবোধক সুরে।

‘যেমনটা বলেছি… অফিশিয়ালি কোনও অস্তিত্ব নেই ওটার। এমনকী প্রজেক্টটার কথা ডারপার কেউও জানত না। তার পর একদিন আরলিংটনে, এজেন্সির হেডকোয়ার্টারে এল কালো পোশাক পরা লোকগুলো। বলা হলো, আমাদের মাঝ থেকে নির্বাচিত একটা গ্রুপকে নিয়ে যাওয়া হবে পেন্টাগনে।

‘অস্ত্রের পাহারায় আমি এবং আরও নয়জন উঠে বসলাম দুটো এসইউভি-র পিছনে। পুরোই রোমাঞ্চকর ব্যাপার- স্যাপার, বুঝলেন! চেকপয়েন্টের পর চেকপয়েন্ট পার হয়ে অবশেষে পৌঁছুলাম গন্তব্যস্থলে। অনেকগুলো দরজা পেরিয়ে নেয়া হলো এর পর ব্যাঙ্কভল্টের মত একটা জায়গায়।’

এই প্রথম সত্যিকার কৌতূহল দেখা গেল কোহেনের চোখে।

‘ঝাড়া তিনটি ঘণ্টা ব্রিফ করার পর এক ঘণ্টা সময় দেয়া হলো আমাদের—কাজটা নিচ্ছি কি নিচ্ছি না, ডিসিশন নেয়ার জন্যে। নিই বা না নিই, ঘুণাক্ষরেও কাউকে কিছু জানাতে পারব না। সিরিয়াস বিজনেস, যাকে বলে। বলতে চাইছি, ডারপাতে রয়েছেন মানে—অলরেডি আপনার ওপর রয়েছে টন কে টন নন-ডিসক্লোজার এগ্রিমেন্ট। তার ওপর যদি…। যাক গে… বেসিকালি যেটা বলল ওরা: এসব যদি বাইরে ফাঁস করো, গেম ওভার… হায়াত আর এক্সটেণ্ড করা হবে না তোমার।’

‘আমাকে তো বলছেন!’

‘সেটা বাধ্য হয়ে। এর জন্যে পস্তাব না, আশা করি।’

‘হুম। তা, কী ভেবে রাজি হলেন কাজটা নিতে?’

‘পয়সা। অবিশ্বাস্য অঙ্ক অফার করেছিল ওরা। বিলিয়ন, বুঝলেন, বিলিয়ন! স্রোতের মত পয়সাকড়ি আসছে ডুমডে প্রজেক্টে! জোগান দিচ্ছে অদৃশ্য তহবিল। প্রস্তাবটার সঙ্গে যেসব টেকনোলজি দেখানো হলো আমাদের, যে-কোনও বৈজ্ঞানিকের জন্যে রীতিমত শ্বাসরুদ্ধকর সেগুলো। জাস্ট বোল্ড করে দিল এ-দুটো মিলে!’

তড়বড় করে বলে যাচ্ছিল গালিফিনাকিস, ওয়েইটার ফিরতেই কুলুপ আঁটল মুখে।

ফাইলটা বন্ধ করল কোহেন। ধোঁয়া ওঠা বাঁধাকপি আর কর্নড বিফের পাহাড়ের উপর দিয়ে শান্তভাবে তাকিয়ে রইল বিরাট শরীরের লোকটার দিকে।

‘পয়েন্টে আসুন এবার। কী নিয়ে প্রজেক্টটা?’

‘অস্ত্র!’ রেস্টুরেন্টের কলকাকলি ছাপিয়ে শব্দটা শোনা গেল কি গেল না। ‘এমন এক জিনিস, যা দুনিয়া দেখেনি কখনও আগে। প্রথম এইচসিভি বা হাইপারসনিক ক্রুজ ভেহিকল ওয়েপনস সিস্টেম প্রোটোটাইপ নিয়ে কাজ করেছি আমরা ডারপাতে, যেগুলো ছিল ফ্যালকন প্রজেক্টের অংশ। কিন্তু নতুন এই অস্ত্রের কাছে কিছুই না সেগুলো। নাসা-র চাইতেও বেশি সংখ্যক ইঞ্জিনিয়ার আর ফিযিসিস্টদের বহু গুণ বেতন দিয়ে পুষছে ওরা বছর বছর ধরে।’ এক কামড়ে কর্নড বিফের বিশাল এক টুকরো মুখের মধ্যে চালান করল গালিফিনাকিস। চিবাতে লাগল পচ্ পচ্ আওয়াজ করে।

‘মিলফোর্ড কী করছিল ওখানে? ও তো আর বিজ্ঞানী ছিল না!’

‘না, উনি ছিলেন সিকিউরিটি ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বে, ‘ মুখ ভর্তি খাবার নিয়ে বলল বিশাল নামের বিশালদেহী। ‘সব সময় বেইসে থাকতেন না তিনি। কয়েক বার মাত্র দেখেছি আমি ওঁকে।’

‘কোথায় বেইসটা?’

‘যে-কোনখানেই হতে পারে, ‘ হেঁয়ালি করল গালিফিনাকিস। কাঁটাচামচে গেঁথে চর্বিতে ডোবানো বাঁধাকপি তুলে মুখে পুরতে লাগল ক্ষুধার্ত কুকুরের মত।

‘স্থায়ী কোনও ঘাঁটি নেই, বলছেন?’

‘হ্যাঁ এবং না।’ চোরা চোখে চারপাশে চাইল মদের গিপে। পরে আসছি ওসব কথায়। অনেক কিছু বলার আছে আপনাকে।’ হঠাৎ বিকৃত করল মুখটা। ‘ওরে, খোদা! মোচড় মারার আর টাইম পেল না পেটটা!’

চাইল কোহেন আধখাওয়া ঢিবিটার দিকে।

‘জলহস্তির মত না গিললেই পারেন!’ কথাটা বেরিয়ে গেল মুখ দিয়ে।

‘প্রচণ্ড স্নায়ুচাপে থাকলে খাওয়াদাওয়ার হিসেব থাকে না আমার, করুণ মুখ করে বলল গালিফিনাকিস। ‘এটা আমার কন্ট্রোলে নেই, ভায়া!’

‘বুঝতে পারছি, টেনশনের ভিতর দিয়েই গেছে আপনার সারাটা জীবন। না হলে হাতির দশা কেন–মনে মনে বলল শেষটুকু।

‘ঠাট্টা-মস্করার ব্যাপার নয়, ভাই!’ অভিমানী চেহারা বানাল গালিফিনাকিস। ‘ডিপ্রেশন আর দুশ্চিন্তার জন্যে অনেকগুলো করে পিল খেতে হয় আমাকে। স্রেফ তেজপাতা হয়ে গেছে জীবনটা!’

‘সেজন্যে আন্তরিক সহানুভূতি রইল। বাদ দিন ওসব। ফেরা যাক আগের কথায়। আরও বলুন প্রজেক্টটা সম্বন্ধে। নিউক্লিয়ার, বায়োলজিকাল, নাকি আর-কিছু নিয়ে আলাপ করছি আমরা?’

‘একটাও নয়। সম্পূর্ণ ভিন্ন জিনিস এই ডুম্‌য্‌ডে। কল্পনাও করতে পারবেন না, কতটা ভয়ানক এর ধ্বংসক্ষমতা। এ যেন… এ যেন…’ জুতসই উপমা খুঁজছে গালিফিনাকিস। ‘দেবরাজ যিউসের বজ্রবিদ্যুৎ যেন এটা। যেখানেই পড়বে, শুরু হয়ে যাবে নরকতাণ্ডব! পারছেন কল্পনা করতে? পার্থক্য একটাই–কোথায় তাণ্ডব চালাতে হবে, সেটা আমরাই ঠিক করে দিচ্ছি।’

‘আমার মনে হয়, আরেকটু ব্যাখ্যা করে বলা উচিত আপনার।

‘প্রাকৃতিক বিপর্যয়।’

এমন চাপা স্বরে বলা হলো যে, শোনার জন্য কান খাড়া করতে হলো কোহেনকে। ‘সরি, কী?’

‘যা বললাম। সুনামি। ভূমিকম্প। আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত। সব মিলিয়ে মহাবিপর্যয়।’

‘বুদ্ধু বনতে আসিনি আমি এখানে।’ হতাশ হয়ে ভাবছে কোহেন, বৃথাই সময় নষ্ট করল এতক্ষণ।

‘সবই সত্যি এগুলো। বিশ্বাস করুন দয়া করে! দুনিয়া জুড়ে প্রলয় ঘটানোর ক্ষমতা ধরে এই ডুডে। একটা পিন গেঁথে দিন মানচিত্রে, ম্যাপ থেকে মুছে দেবে জায়গাটা। ভুলে যান সৈন্যসামন্তের কথা। ভুলে যান ড্রোন, রোবট আর প্রচলিত অস্ত্রশস্ত্রের কথা। এরই মধ্যে সেকেলে হয়ে এসেছে এগুলো। নতুন ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে যুদ্ধবিগ্রহের জন্যে। অস্ত্রটার সেরা বৈশিষ্ট্য কী, জানেন? আঘাত শনাক্ত করার জো নেই কোনও। কেউ এমনকী জানতেও পারবে না, কোথায় হচ্ছে আক্রমণটা। বিজ্ঞানীরাও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সঙ্গে তফাত করতে পারবে না এটার। বুঝতে পারছেন, কী রকম চোরাগোপ্তা হবে হামলাটা? এজন্যেই সাহায্য চাইছি আপনার, বেজন্মাগুলোর গুমর ফাঁস করার জন্যে।’

‘এক মিনিট।’ এসব আজগুবি আলাপের কতটুকু বিশ্বাস করবে, বুঝতে পারছে না কোহেন। ‘বড় বেশি দ্রুত এগোচ্ছেন আপনি। ‘

‘ক্রাইস্ট!’ চেয়ার থেকে নিজেকে টেনে টেনে তুলল গালিফিনাকিস। ‘বাথরুমে যাওয়াটা অবশ্য-কর্তব্য হয়ে দাঁড়িয়েছে এ মুহূর্তে।’

‘একটু পরে গেলে হয় না?’

‘বড়টা চেপেছে! সত্য আর পায়খানা, বুঝলেন, কখনও চেপে রাখা যায় না! বসুন আপনি। ফিরে এসে বলছি বাকিটুকু। হারামিগুলোর প্ল্যান-প্রোগ্রাম সব জানাব। গ্যারান্টি দিচ্ছি, ভালো লাগবে না শুনতে। সন্ধ্যাটা ফ্রি আছেন, আশা করি?’

‘কেন, বলুন তো!’

‘সময় লাগবে বলতে। ভাবছি, একান্তে কোথাও বসা দরকার আমাদের।’

‘বসলাম। তার পর?’

‘ঠিক করতে হবে করণীয়।’

থপ থপ পা ফেলে ওয়াশরুমের দিকে রওনা হয়ে গেল গালিফিনাকিস।

অস্থিরতা শুরু হলো কোহেনের। বাকি কথাগুলো শোনার জন্য তর সইছে না ওর।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *