1 of 2

শকওয়েভ – ৩০

ত্রিশ

মাস খানেক আগের কথা।

ফেয়ারফ্যাক্স কাউন্টি, শেফার্ডসটাউন, ভার্জিনিয়া।

উষ্ণ, আর্দ্র এক মধ্যরাত।

গাছের সারিঅলা জনহীন এক রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে আছে আকর্ষণীয় চেহারার টাউনহাউসটি। মাথার উপর অকৃপণভাবে আলো বিলাচ্ছে চাঁদ। বেডসাইড টেবিলে রাখা সেলফোনের আওয়াজে অকস্মাৎ নিদ্রা টুটে গেল ঘুমন্ত বাড়িটার।

চাদরের নিচ থেকে বিছানায় শায়িত মানুষটার একটা হাত বেরিয়ে এসে মুঠোয় চেপে ধরল ফোনটা। চেহারাকে চিরতার পানি খাওয়ার মত বানিয়ে ঠেসে ধরল কানে।

‘কে, মিয়া, আপনি?’ পয়লাই ঝাল ঝাড়ল বাড়ির মালিক। ‘দিনরাত্তির সব গুলে খেয়েছেন নাকি?’

‘ফিল কোহেনের সঙ্গে কথা বলছি?’ জানতে চাইল রুঠা এক পুরুষকণ্ঠ। গলা শুনে মনে হয়— বয়সটা তার চল্লিশের ঘরে।

‘জি, বলছেন। আপনার পরিচয়?’

‘ফক্স মোলডার।‘

মুহূর্তের নীরবতা। ‘নিজের নামের ব্যাপারে অনিশ্চিত মনে হচ্ছে কেন আপনাকে, মিস্টার ফক্স মোলডার?’ ড্রিঙ্ক- ট্রিঙ্ক করেছে ব্যাটা—গলার স্বরে ধারণা করছে কোহেন। ‘সে যা-ই হোক, কিচ্ছু এসে যায় না তাতে। এ নামের কাউকে চিনি না আমি। বুঝতে পারছি না, কী করে পেলেন এই নাম্বার। আরেক বার রাতবিরেতে ডিসটার্ব করেছেন তো, হাজতবাসের সুবন্দোবস্ত করে দেব—বুঝেছেন?’

‘ফোন রাখবেন না, প্লিজ!’ করুণ মিনতি. ওপাশের কণ্ঠটায়। ‘একান্তই প্রয়োজন আমার আপনার সাহায্য। গোপনীয়তার খাতিরে বলতে পারছি না, কোত্থেকে পেয়েছি নাম্বারটা। যার কাছে পেয়েছি, সে আমাকে আশ্বাস দিয়েছে, বিশ্বাস করা যায় আপনাকে। একটু সময় দিন… একটু মনোযোগ দিয়ে শুনুন আমার কথা!’ সেকেণ্ডের বিরতি নিল কলার। ‘আমিও একজন সরকারি কর্মচারী।’

‘আপনার কথার মাথামুণ্ডু কিছু বুঝতে পারছি না আমি! আমি তো প্রাইভেট জবে আছি,’ সত্য স্বীকার করল না কোহেন। ‘সরকারি লোক, কে বলল আপনাকে? সাহায্য লাগলে, পুলিসের কাছে যাচ্ছেন না কেন?’

‘নো ওয়ে, ম্যান। এফবিআই-এরও হেল্প নেয়ার উপায় নেই কোনও। ঠিক আপনার সাহায্যই প্রয়োজন আমার, যেহেতু আপনি কোম্পানি-র লোক।’

কোম্পানি হচ্ছে সিআইএ-র ডাকনাম। প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছে এ নামেই পরিচিত সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি। আর এ সংস্থারই স্পেশাল ইনভেস্টিগেটর ফিল কোহেন।

কিন্তু ওর পেশার খবর তো সাধারণের জানার কথা নয়!

‘যার কাছেই শুনেছেন, ভুল শুনেছেন,’ নাকচ করে দিল ও ফক্স মোলডারকে। ‘আর কোনও কথা নয়। আবারও সাবধান করছি আপনাকে। বাই বাই।’

ওপাশ থেকে ‘মিলফোর্ড ব্রাউন’ নামটা উচ্চারণ করায় ফোনটা আর কাটা হলো না কোহেনের। উল্টো আরও একটু জোরে চেপে ধরতে হলো কানে।

‘কী বললেন?’

‘আপনার বন্ধুর মৃত্যু হয়েছে কীভাবে, জানি আমি, আওড়াল ওপ্রান্তের কণ্ঠ।

কথাগুলো যেন সপাটে চড় কষাল কোহেনের গালে।

প্রায় বিশ বছর আগে একই সঙ্গে এজেন্সিতে যোগ দেয় ব্রাউন আর কোহেন। বিভিন্ন রিক্রুট ট্রেইনিং প্রোগ্রামের মধ্য দিয়ে সদ্ভাব গড়ে ওঠে দু’জনের। কোহেনের অফিসের দেয়ালে ফ্রেমবন্দি একটা ফোটোগ্রাফও রয়েছে দুই সহকর্মীর। সাত বছর আগে মিসৌরি ব্রেকসে এক ক্যানু ট্রিপে তোলা। উজ্জ্বলরঙা ওয়েটসুট পরা দু’বন্ধুতে কসরত করছে ক্যানু-প্যাডল নিয়ে। ফিল কোহেনের বয়স তখন সাঁইতিরিশ। তখন পর্যন্ত ফিট রয়েছে মেরিন কোরের দিনগুলোর মত। দু’বছরের ছোট, সুদর্শন মিলফোর্ড ব্রাউনের রোদ-ঝলসানো চেহারায় দু’কান পর্যন্ত ঠেকেছে গিয়ে হাসি।

পরের বছরগুলোতে বিদেশ-বিভূঁইয়ে নানান ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে দেখা গেল ব্রাউনকে। সবগুলো মিশনের কথা বলতেও পারত না খোলাখুলি। মাঝে-সাঝে দেখাসাক্ষাৎ হতো বটে দু’জনার, তবে খুব অল্প সময়ের জন্য।

তার পর তিন মাস আগে ছুটিতে বউকে নিয়ে ম্যালিবু উপকূলে গেল স্কুবা ডাইভিঙে। সেখানেই ঘটল হৃদয় বিদারক ঘটনাটা।

করোনারের রিপোর্টে বলা হয়েছে: দুর্ঘটনাবশত ডুবে গিয়ে মৃত্যু। খিঁচ ধরে থাকতে পারে পায়ে। হতে পারে অন্য কিছুও। এটুকু হলেও কথা ছিল না। কিন্তু বোটের ঘুরন্ত প্রপেলারের সঙ্গে বাড়ি খেয়ে এমনই বিতিকিচ্ছি দশা হয়েছিল মৃত দেহটার, ডেন্টাল রেকর্ড থেকে শনাক্ত করতে হয়েছে লাশের পরিচয়।

অনেক কষ্টে ঢোক গিলল কোহেন। নিজের হৃৎস্পন্দনও যেন শুনতে পাচ্ছে ও। ‘সবাই-ই জানে, কীভাবে মারা গেছে মিলফোর্ড।

‘না, জানে না,’ জবাব দিল অপর প্রান্ত। ‘তবে গাদাগুচ্ছের মিথ্যায় যদি বিশ্বাস করতে চান, সেক্ষেত্রে অন্য কথা।’ নাটকীয়ভাবে আবার বিরতি নিল মোলডার। ‘আপনার বন্ধুর ব্যাপারেই নয় শুধু, আরও অনেক কিছুই জানা আছে আমার।’

‘ফক্স মোলডার নাম নয় আপনার!’ ধরে বসল কোহেন। ‘আমিও দেখেছি এক্স-ফাইলস টিভি সিরিজটা। আসল নামটা বলে ফেলেন তো এই বেলা!’

নিজের ফোন নাম্বার জানাল কলার। ‘একটা ফোনবুথ রয়েছে আপনার বাড়ি থেকে তিন ব্লক দক্ষিণে। পনেরো মিনিটের মধ্যে ওখানে গিয়ে ডায়াল করবেন নাম্বারটা।’ রিপিট করল ডিজিটগুলো। ‘ইজ দ্যাট ক্লিয়ার?’

‘নেগেটিভ। কেন করব কাজটা?’

‘কারণ, মিস্টার ব্রাউনের ব্যাপারে আরও অনেক কিছু জানতে চান আপনি — চান না?’

আর কথা বাড়াল না রহস্যময় কলার। রেখে দিল ফোনটা।

টোপ গেলার ব্যাপারে খুব একটা আগ্রহ পাচ্ছে না কোহেন। কত রকম ছাগল-পাগল রয়েছে দুনিয়ায়! খানিকটা বিচলিত লাগছে অবশ্য বন্ধুর ঘটনাটা সামনে আসায়।

আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। ছদ্মনামধারীর আহ্বানে সাড়া দেয়ার মানে, নিজের পেশাগত পরিচয় স্বীকার করে নেয়া। পস্তাতে হতে পারে এর জন্য।

টিক টিক করে পেরিয়ে যাচ্ছে মুহূর্তগুলো। মন থেকে তাড়াতে পারছে না কোহেন ফোনকলটা। ছটফট করছে বিছানার কিনারে বসে।

শেষটায়, জিত হলো কৌতূহলেরই।

গায়ে কাপড় চাপিয়ে তড়িঘড়ি করে বেরিয়ে এল সে বেডরুম থেকে।

ঝুড়ি থেকে বেরিয়ে এসে অন্ধকার হলওয়েতে প্রত্যাশা নিয়ে লেজ নাড়তে লাগল পোষা সারমেয়।

‘কী, রে, বুস্টার!’ জানোয়ারটার উদ্দেশে বলল কোহেন। ‘নাইটওয়াক হয়ে যাবে নাকি খানিকটা?’

স্ট্যাণ্ড থেকে রশিটা তুলে নিয়ে বুস্টারের কলারে আটকাল ও। কোহেন আর ওর বিশাল ল্যাব্রাডরটাই টাউনহাউসের একমাত্র বাসিন্দা। এখন পর্যন্ত কোনও মিসেস কোহেনের পদচিহ্ন

পদচিহ্ন পড়েনি এ-বাড়িতে। সিআইএ-র চাকরিতে ওর মতন ডেডিকেটেড লোকেদের ব্যক্তিগত জীবনে দেয়ার মত সময় থাকে না বড় একটা। তবে শুভ দিন আসতে দেরিও নেই বেশি।

সদর দরজা থেকে সিঁড়ির ধাপগুলো পেরিয়ে রাতের রাস্তায় নেমে এল কোহেন। জিভ বের করে মনিবের পাশে পাশে মনের সুখে চলল পোষা ল্যাব্রাডর।

মাত্র তিনটে ব্লক দূরের বুথ পর্যন্ত পৌঁছুতে পৌঁছুতেই ফুরিয়ে গেল দম। ফিটনেস ঠিক না রাখার কুফল টের পাচ্ছে কোহেন হাড়ে-মাংসে।

ডায়াল করল কলারের দেয়া নাম্বারে।

‘ভাবা শুরু করেছিলাম, আসবেন না আপনি,’ ফোন ধরেই বলে উঠল মোলডার।

‘বেশ। আমার মনোযোগ কাড়তে সফল হয়েছেন আপনি। কিন্তু এসব ঢাক ঢাক গুড় গুড় একদমই পছন্দ নয় আমার। এর জন্যে রাতদুপুরে বিছানা ছাড়তে হলে তো আরও নয়। পরিচয় যেহেতু জানা আছে; নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন, কেউ আমার সঙ্গে টাল্টিবাল্টি করলে, পরিণাম কী হতে পারে!’

‘কেউই টাল্টিবাল্টি করছে না আপনার সঙ্গে। কিন্তু, ভাই, একা তো আপনি? ঠিক জানেন, ফলো করেনি কেউ?’

‘করেছে। একটা জিন্দালাশ!’ বলল কোহেন বিরক্তিভরে। ‘খোদার ওয়াস্তে শুরু করবেন? না রাখব?’

মুহূর্ত খানেকের বিরতি। তার পর গলায় রহস্য ঢেলে দুটো শব্দ উচ্চারণ করল ফক্স মোলডার।

‘প্রজেক্ট ডুডে।’

বি-গ্রেড কোনও স্পাই মুভির টাইটেল বলে মনে হলো কোহেনের।

‘জীবনেও শুনিনি এ জিনিস! কী এই অশ্বডিম্ব?’

‘শুনলে তো এত কাহিনী করতাম না আপনার সঙ্গে।’

‘হেঁয়ালি বাদ দিয়ে মিলফোর্ড ব্রাউনের ব্যাপারে কী বলবেন, বলুন।’

‘বলছি।’ দম নিল মোলডার। ‘প্রজেক্ট ডুডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন ব্রাউন। বছর তিনেক আগে যোগ দেন এটাতে।’

‘কই, কখনও তো কিছু বলেনি আমাকে!’

‘কেন বলেননি, বুঝতে পারছেন না? নিজেও জানতেন না, কীসের সঙ্গে জড়িয়েছেন তিনি। ছদ্ম-আবরণে ঢাকা ছিল প্রজেক্টটা। কিংবা জানলেও, গোপনীয়তার কারণে মুখ খোলার উপায় ছিল না।’

‘বলে যান।’

‘কেউই আলাপ করে না ডুম্‌য্ডেকে নিয়ে, বাইরের কারোরই জানা নেই ডুমডের সম্বন্ধে। হোমল্যাণ্ড সিকিউরিটি নয়, সিআইএ নয়, এমনকী প্রেসিডেন্টও অবগত নন এটার ব্যাপারে।’

‘জানেন শুধু আপনি,’ বাঁকা সুরে বলল কোহেন। ‘আর তাতেই হয়ে গেছেন বিশেষ কিছু।’

‘আমিও অংশ ছিলাম ওটার, খোলসা করল মোলডার। ‘প্রজেক্টটার গোপন রহস্য সম্বন্ধে অল্প যে-ক’জন পূর্ণ ওয়াকিবহাল, বলতে পারেন, তাদেরই একজন এই বান্দা।

‘প্রজেক্ট ডুমডেটা আসলে বিষ্ঠার মত। যতক্ষণ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের জঠরে রয়েছে, নো ঝক্কি-ঝামেলা। কিন্তু একটি বার বেরিয়ে গেলেই বদ গন্ধে আবিল করে তুলবে চারপাশ। বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে তৈরি এই হাইলি ক্লাসিফায়েড গভর্নমেন্ট প্রোগ্রামের কাছে ছেলেখেলা মনে হবে ডারপা-র কর্মকাণ্ডকে।’

‘আচ্ছা!’ ডিফেন্স অ্যাডভান্সড রিসার্চ প্রজেক্টস এজেন্সি-র সংক্ষিপ্ত রূপ যে ডারপা, জানা আছে কোহেনের।

‘হ্যাঁ। চারটা বছর ডুমডের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম আমি। ডিপ্রেশন, অ্যালকোহল, মাদকাসক্তি—এই তিন প্রবলেম দেখিয়ে ট্রিটমেন্টের জন্যে ডিসচার্জ নিই মাস দেড়েক আগে। আসল কথা হলো: গোপনে গোপনে কী ছক কষছে ওরা, জেনে যাওয়ার পর আত্মসম্মানবোধ আর অবশিষ্ট ছিল না নিজের মধ্যে। সেজন্যেই বেরিয়ে আসতে চেয়েছি যে-কোনও মূল্যে। তাতেও কি নিস্তার রয়েছে? সর্বক্ষণ তটস্থ হয়ে থাকতে হচ্ছে অজানা ভয়ে। তার পরও কিছু একটা না করা অবধি সোয়াস্তি নেই আমার!’

‘কী করার কথা বলছেন আপনি?’ বিষয়টা ধরতে পারছে না বলে চরম বিরক্তিতে ভুগছে কোহেন।

কবরের মত ভারি নীরবতা বিরাজ করল কয়েক মুহূর্ত। মানুষের স্নায়ুর জোর পরীক্ষা করাটা মোলডার লোকটার একটা বদভ্যাস বলে মনে হচ্ছে সিআইএ এজেন্টের।

‘বাকি কথাগুলো শোনার জন্যে সামনাসামনি দেখা হতে হবে আমাদের,’ স্তব্ধতা ভেঙে বলল অবশেষে মোলডার নামধারী লোকটা।

‘বলছেন, মদখোর ড্রাগ অ্যাডিক্ট আপনি। মেন্টাল সমস্যাও রয়েছে। কী করে ভরসা রাখি আপনার কথায়!’

‘এ-ও বলেছি—নীচতা ও মিথ্যার জগতে বিচরণ করবেন কি করবেন না, সেটা আপনার বিবেচনা,’ খানিকটা উত্তেজিত হয়ে বলল মোলডার। ‘আমি যে-কথাগুলো শোনাতে চাইছি আপনাকে, হাট হয়ে খুলে যাবে তাতে বিশাল এক চক্রান্তের দরজা। অনেক ভেবেচিন্তে নির্বাচন করেছি আপনাকে। এখন যদি সাহায্য না পাই আপনার, সিএনএন-এর সঙ্গেই কন্ট্যাক্ট করতে হবে আমাকে। এটাও বলে রাখছি, বোমটা ফাটানোর পর কিন্তু হাত কামড়াতে হবে আপনাকে!’

‘লোভ দেখাচ্ছেন? তা, আমাকেই বেছে নেয়া কেন-হোয়াই মি? স্রেফ তো একজন ইনভেস্টিগেটর আমি। বিরাট মেশিনের ক্ষুদ্র একটা বল্টু। সত্যিকার কোনও ক্ষমতা বলতে তো কিছুই নেই এই আমার।’

‘অন্তত আমার চাইতে ভালো অবস্থানে রয়েছেন। গরম জিনিস, ভাই, এটা! এসব নিয়ে যদি ওপরমহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করি, স্ট্রেইট পাছা ঝলসানো হবে আমার। শুনেছি, সোজা-সাপটা লোক আপনি, সত্যিকারের সচ্চরিত্র মানুষ। আজকাল তো বেশির ভাগই দুইমুখো সাপ।’

‘সাধ্যমত নিষ্ঠার সঙ্গে নিজের কাজটুকু করি,’ অযথা বিনয় দেখানোর লোক নয় কোহেন। ‘কাজের প্রয়োজনের সঙ্গে আপস করি না কখনও। সেজন্যে যদি সৎ লোক বলেন আমাকে, তা হলে তা-ই।’

‘সেক্ষেত্রে আগামী কাল রাতে দেখা করুন ওয়াশিংটনে…’

‘ওয়াশিংটনের কোথায়?’

‘কানেক্টিকাট অ্যাভিনিউ নর্থওয়েস্টের আমেরিকান সিটি ডাইনার। চেনেন?’

গভীর জলে ডুবতে চলেছে, টের পাচ্ছে কোহেন। এক মুহূর্ত ভেবে নিয়ে বলল, ‘খুঁজে নিতে পারব।’

‘সময়: আটটা। থাকবেন কিন্তু! আপনার মুখচেনা নই আমি। সেজন্যে খুঁজে নেব আপনাকেই।’

কেটে দেয়া হলো ফোন। শব্দ হলো—খুট।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *