• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • লেখক
  • My Account
  • লেখক
  • My Account
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা PDF ডাউনলোড

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

৩৯. নারীর শ্লীলতা

লাইব্রেরি » তসলিমা নাসরিন » প্রবন্ধ সংকলন (তসলিমা নাসরিন) » নির্বাচিত কলাম (১৯৯০) » ৩৯. নারীর শ্লীলতা

নারীর শ্লীলতা

১. ‘শ্লীলতা’ শব্দের অর্থ ভদ্রতা, শিষ্টতা। ‘শ্লীলতাহানি’ শব্দের অর্থ ভদ্রতানাশ বা শিষ্টতানাশ। ‘শ্লীলতাহানি’ শব্দটি উচ্চারণ করলে যে মানুষের মুখ মনে আসে তা পুরুষ নয়—নারী। শ্লীলতাহানি পুরুষের হয় না, হয় নারীর। কারণ শিষ্টতা পুরুষের বজায় না রাখলেও চলে, নারীর যদি শিষ্টতা, শুদ্ধতা, সতীত্ব, সৌন্দর্য না থাকে তবে আর থাকে কী?

নারীর গুটিকয় মাত্র সম্পদ—এই সম্পদ আগলে না রাখলে জগতে নারী আর আগলাবে কী?

২. এক সপ্তাহে আমার বাড়ির পাশের দুই বাড়িতে ছয় বছরের দুটো শিশু ধর্ষিতা হয়েছে। ওদের অভিযোগের ধরন একই দূর আত্মীয় অথবা প্রতিবেশী বয়স্ক লোকটি (বয়স তেতাল্লিশের উপর) চকলেট মিমি দিয়ে ভুলিয়ে ফুলিয়ে বাচ্চাদের প্যান্টি খুলেছে। আমি আন্দাজ করতে পারি না, ছয় বছরের বাচ্চার শরীরে উপগমনের ইচ্ছায় ওই প্রৌঢ় শরীরগুলো কী করে উত্তপ্ত হয়।

৩. সতীত্ব, মমতা, বাৎসল্য প্রভৃতি গুণকে নারীধর্ম বলে। ‘পুরুষধর্ম’ বলতে অভিধানে কোনও শব্দ নেই। কারণ পুরুষের তো সতীত্ব রক্ষার বালাই নেই, মমতা বাৎসল্য না হলেও চলে। উদ্যম ও তেজ হলেই পুরুষত্ব টিকে থাকে। কোনও নারীর ভেতরে যদি তেজ ও উদ্যমের প্রকাশ হয় তবে তাকে ভাল গুণ না বলে বদগুণ বলা হয়। এতে এই ধারণা স্পষ্ট হয় যে নারী নরম এবং পুরুষ কঠিন প্রকৃতির। তাই নরম জাতীয় গুণগুলো নারীর জন্য ধার্য করা হয়েছে। শারীরিক পার্থক্যের কারণে গুণের কোনও হেরফের হয় না। কার কি গুণ এবং কি ধর্ম হবে তা নির্ধারণ করে সমাজের গুটিকয় পুরুষ। তারা শৌর্য-বীৰ্য ইত্যাদি প্রধান গুণগুলো নিয়ে বাকি যা অনর্থক কিছু গুণ থাকে তা নারীর ভাগে দিয়েছে।

আসলে যে ধর্মটি নারী ও পুরুষ উভয়ের জন্য দরকার তা কোনও নারী বা পুরুষধর্ম নয়—তা ‘মানবধর্ম’। যাদের ‘মানবধর্ম’ নেই তারাই নারী ও পুরুষের মধ্যে ধর্ম ভাগাভাগি করে।

৪. এদেশের চিকিৎসকরা সুযোগ পেলে ইরান চলে যান। আমার বেশ ক’জন চিকিৎসক বন্ধু ইরান থেকে ফিরে এসে ওখানকার গল্প বলেছেন। তাঁরা যে কথাটি সবচেয়ে বেশি বলেন তা হল ইরানী মেয়েরা পা থেকে মাথা অবধি ঢেকে রাখে বটে তবে চিকিৎসকের কাছে অসুখ দেখাতে এসে নিজে থেকেই পুরো কাপড় খুলে উলঙ্গ হয়ে শুয়ে পড়ে। চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে ওদের শরীরে বিশেষ কোনও অসুখ খুঁজে পান না। ওদের অসুখ আসলে মনে। চার দেওয়ালে আবদ্ধ থাকা মেয়েগুলো আসলে বেরোতে চায়, তাই অসুস্থতার ছুতোয় ওরা বেরিয়ে পড়ে–মূলত বের হওয়াই ওদের উদ্দেশ্য। এবং বিদেশি মানুষ পেলে ওরা দেশি নিয়ম ভেঙে মনের অসুখ দূর করে।

চিকিৎসকের কাছে এসেই যারা গায়ের কাপড়চোপড় খুলে ফেলে, তারা এবারের একাদশ এশিয়াডে কেবল মুখ ছাড়া আর কিছুই দেখায়নি। কালো বোরখায় আবৃত হয়ে তারা মার্চ পাস্ট করেছে। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হল—প্রতিটি দলের নামফলক নিয়ে চীনা মেয়েরা মিনিস্কার্ট পরে হেঁটেছে। কেবল ইরানীদের বেলায়—যেহেতু মিনিস্কার্ট পরা ইসলাম-বিরুদ্ধ কাজ তাই নামফলক নিয়ে হাঁটবার জন্য তারা একটি পুরুষ বেছে নিয়েছে। অনেকে প্রশ্ন করেছে ইরানী মেয়েরা কি এশিয়াডের লম্ফ বাফ, দৌড়, সাঁতার বোরখা পরেই সারবে, না কি ইসলামকে খেলার প্রয়োজনে গা থেকে শেষ অদি নামাবে?

আমার চিকিৎসক বন্ধুরা ইরানী মেয়েদের চমৎকার শরীরের বড় প্রশংসা করেন। কড়ে আঙুলে ব্যথার কথা বলে পুরো উলঙ্গ হয়ে যাওয়া মেয়েদের গা টিপে টিপে দেখতে হয় আর কোথাও ব্যথা আছে কিনা, না হলে ওরা বড় রাগ করে। পরাধীনতা মানুষকে অসুস্থ করে, বিকৃত করে, মন এবং শরীরকে পঙ্গু করে। পরাধীন শরীরকে ওরা সুযোগ পেলেই যেখানে সেখানে স্বাধীন করতে চায়। এতে ওদের স্বাধীনতা সামান্যও অর্জন হয় না, বরং বিদেশি পুরুষের চোখের খানিকটা আরাম হয়।

৫. ঢাকা শহরে বিভিন্ন রকম চুল কাটার দোকান আছে। ফুটপাতে পিঁড়িতে বসে নাপিত চুল কাটে, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে বসে দেশি বিদেশি মেয়েরা মেয়েদের চুল কাটে, চুল বাঁধে। আর কিছু আছে মাঝারি মাপের দোকান। ওতে ছেলেরা ছেলেদের চুল কাটে।

ইদানীং এইসব মধ্যবিত্ত সেলুনে কিছু মেয়ে-নাপিতের আবির্ভাব হয়েছে। অবশ্যই এটি একটি ভাল লক্ষণ—মেয়েরা কাজ করছে, উপার্জন করছে। কিন্তু একই সেলুনে কাজে সমান পারদর্শি ছেলে এবং মেয়ের পারিশ্রমিক দুরকম। ছেলে চুল কাটলে বিশ টাকা, মেয়ে কাটলে চল্লিশ টাকা। ফার্মগেটের একটি সেলুনে এই মূল্য তালিকা টাঙানো দেখলাম সেদিন। আমার প্রশ্ন—মেয়ের কেন চল্লিশ টাকা, কেন তার বেলায় বিশ টাকা বেশি?

এই দোকানগুলোয় চুল কাটার বাইরে আর একটি অলিখিত জিনিস বিক্রি হয় তা হল—নারীস্পর্শ। চুল কাটার দাম বিশ টাকা, নারীম্পর্শের দাম বিশ টাকা। মোট চল্লিশ টাকা। শেষ বিশ টাকা তার অসৎ উপার্জন। পারিশ্রমিকের পার্থক্য দেখে এই নারী শ্রমের প্রতি আমার আর শ্রদ্ধা থাকেনি।

মেয়েরা যে কাজেই নামে, যে কাজেই তারা অগ্রসর হয়—কিছু না কিছু নারীত্ব তাদের উৎসর্গ করতে হয়। কোথাও দৃষ্টি, কোথাও স্পর্শ, কোথাও কণ্ঠস্বর, কোথাও ভঙ্গিমা, কোথাও হাসি, কোথাও আহ্লাদ।

যেদিন এই সমাজ নারীর শরীর নয়—শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নয়—নারীর মেধা ও শ্রমের মূল্য দিতে শিখবে, কেবল সেদিনই নারী মানুষ বলে স্বীকৃত হবে।

Category: নির্বাচিত কলাম (১৯৯০)
পূর্ববর্তী:
« ৩৮. বিবাহিত মেয়েরা যেমন হয়
পরবর্তী:
৪০. চুড়ি আর সস্তার জিনিস »

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বাংলা লাইব্রেরি : উল্লেখযোগ্য বিভাগসমূহ

লেখক ও রচনা

অনুবাদ সাহিত্য

সেবা প্রকাশনী

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

কোরআন

হাদিস

ত্রিপিটক

মহাভারত

রামায়ণ

পুরাণ

গীতা

বাইবেল

বিবিধ রচনা

বাংলা ওসিআর

Download Bangla PDF

হেলথ

লাইব্রেরি – ফেসবুক – PDF

top↑