তাঁর ছায়া

(এ কে ফজলুল হককে নিবেদিত)

বিশাল দেয়াল নয়, বৃক্ষ নয়, নয় সে পাহাড়;
একটি কিশোর শুধু, মেরুদণ্ড দধিচীর হাড়
দিয়ে গড়া; বস্তুত গড়নে দিব্যি বড়োসড়ো,
ঘরে মন টেকা দায়, প্রান্তরে হাঁটায় বেশি দড়।
কখনো ভাদুরে রৌদ্রে উঠোনে, দাওয়ায়
বসলে মা অন্নছত্রে ঘরকন্না, সংসারী হাওয়ায়
সানন্দে উঠলে মেতে আর আঁচলের প্রান্তভাগ
কোমরে জড়িয়ে, হাতে গালে নিয়ে হলুদের দাগ

বটিতে কুটলে মাছ, বাটনা বাটলে কোথা থেকে
সে কিশোর ছুটে এসে নিজের ছায়ায় দেয় ঢেকে
আপাদমস্তক মাকে। মা বলেন তাকে, “লক্ষ্মী, বাছা
মিছে পুড়িসনে রোদে।
কিন্তু তাঁর রোদ্দুরেই বাঁচা।
তাই বছরের পর বছর সে-রৌদ্রের হল্কায়
কাটান প্রহর আর খরবেগে যেখানে ছলকায়
জীবনের দুই পাড়, সেখানে দাঁড়ান অবিচল;
হেলে চাষিদের প্রাণে নামে তাঁর মানবিক ঢল।
দারুণ খরায় পোড়া স্বদেশকে নিত্য দেয় ছায়া,
কী বিপুল ছায়া, এই বাংলাদেশজোড়া তাঁরই কায়া।