আমি অনেকদিন থেকে এমন একটা শার্ট খুঁজছি,
যা আমাকে মানাবে।
নানা জামা-কাপড়ের দোকানে, শহরের
প্রতিটি ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে
ঢুঁ মেরে দেখেছি শাদা, কালো, হালকা নীল, গৈরিক,
সবুজ, বাদামি, মেরুন-রঙ বেরঙের শার্ট পরখ করে দেখেছি,
কিন্তু হা নসিব,
আমার মনের মতো শার্ট কোথাও নেই।
কোনো শার্টের রঙ হয়তো পছন্দ হয়, কিন্তু কলার
পছন্দ হয় না। কোনোটার কলার দারুণ লাগে,
অথচ হাতার খুঁত অত্যন্ত বেশি
নজরে পড়ে; আবার কোনো শার্টের
সকল কিছুই পছন্দমাফিক হলো,
কিন্তু সেটা গায়ে চাপাতে গিয়ে দেখি
বুকের কাছটায় এমন চেপে বসেছে যে,
দম বন্ধ হয়ে আসে।
তৈরি শার্টের আশা জলাঞ্জলি দিয়ে
খুব দেখেশুনে কাপড় কিনে
নামজাদা দর্জির দোকানে গিয়েও
তেমন ফায়দা হলো না শেষ অব্দি।
শহরের অসামান্য দর্জি নেহাৎ মামুলি
একটা শার্ট বানালো আমার জন্যে।
ঝকঝকে প্যাকেট হাতে
ম্লান মুখে ফিরে আসি বাসায়।
ব্যয়বহুল শার্ট বাক্সবন্দি হয়ে
পড়ে রইলো।
আসলে আমি একটা অসাধারণ শার্ট খুঁজছি
অনেকদিন ধরে, তন্ন তন্ন করে।
এমন শার্ট আমি চাই যা লোকে
অন্য কারুর গায়ে দেখবে না কক্ষনো।
এতদিনে আমার এ বিশ্বাস
জন্মে গেছে যে, কোনো ডিপার্টমেন্টাল স্টোর
অথবা দর্জির দোকান
আমার মুশকিল আসান করতে পারবে না।
ফলত
আমি নিজেই আমার শার্ট বানানোর
সিদ্ধান্ত নিলাম এক শুভলগ্নে। দিনরাত
মাথা খাটিয়ে নকশা এঁকে
অনেক কাটছাঁট করা গেল।
আমার তীক্ষ্ণ দৃষ্টির নিচে
ক্রমশ স্পষ্ট হতে লাগলো বাহারী শার্টের আদল।
নিজেই নিজের পিঠ চাপড়ে দেবার
একটা ইচ্ছা লক লক করে উঠলো
আমার ভেতর হাঁপানো কুকুরের জিভের মতো।
কিন্তু বড় বেশি খাপছাড়া আর বেমানান
হয়ে গেল না কি জামাটা?
না, ইহকালে
মনের মতো শার্ট আর পরা হবে না আমার।