কথা ছিল হেঁটে যাবো আমরা দু’জন নদীবাঁকে
হয়তো পড়বে চোখে ঝলমলে বক, কখনো বা
হঠাৎ চমকে দেবে ফুটপাতে কোকিলের সুর।
দুপুরে কোথাও থেমে খেয়ে নেবো রুখা-সুখা, শোভা
দেখবো শহর ঘুরে, কথা ছিল; কথা ছিল নাকি?
তবে কেন অকস্মাৎ নিজেকে সরিয়ে নিতে চাও
আমার নিকট থেকে? আজ কোন্ অভিমানী পাখি
তোমাকে শোনালো গান বিদায়ের, দাও বলে দাও।
পাখি তার পাখিনীকে বলে আর্তস্বরে যাক আজ
পাখার চাঞ্চল্য থেমে, আকাশে দুর্যোগ ভয়ানক।
শাখা শূন্য করে গেলে নিমেষে চৌদিকে রুদ্র বাজ
ছড়াবে আগুন আর আমাকে ছিড়বে বৃষ্টি-নখ!
আমি সে পাখির ব্যাকুলতা জানি, জানি তার ভয়।
তুমি আছো ভেবে দীপ্র কিছুকাল ছিলাম পথিক
ক্লান্তিহীন দশদিকে এবং রাত্তিরে লোকালয়
থেকে দূরে চলে গিয়ে ছায়াচ্ছন্ন কোন্ সে গথিক
দালানের কাছে পৌঁছে চেয়েছি তৃষ্ণার জলধারা
তোমারই নির্জন ঘাটে। সেখানে আমরা কেউ কারো
মুখ আ দেখেই পরস্পর খুঁজি অবয়ব তারা
আর চাঁদহীন আকাশের নিচে। যদি যেতে পারে।
আমাকে আঁধারে ফেলে, চলে যেও। স্মৃতি পান করে
আমার সকালসন্ধ্যা কাটবে নিঃসঙ্গ; বারে বারে
ফিরে যাবো তুমিহীন তুমিময়তায়, একা ঘরে
তোমার প্রতিমা খুঁজে পাবো খড়মাটি অন্ধকারে।
রেখেছো শব্দের রৌদ্রছায়া জালে বন্দি করে তুমি
হে মধুর স্বরময়ী। তোমার অস্পষ্ট পদধ্বনি
বাজে সবখানে, স্নিগ্ধ প্রতিধ্বনিময় মনোভূমি
এখনই মিলনক্ষণ, পুনরায় বিচ্ছেদ এখনই।