গর্জে ওঠো স্বাধীনতা

কী করবো সে বসন্ত দিয়ে যাতে আছে শুধু ধু ধু
কোকিলের ডুকরে ওঠা, নেই
ফুলের বাহার? সে বাগানে কী কাজ আমার, বলো,
যেখানে আসে না পাখি কোনোদিন? কী রুক্ষ কঠিন
মাটি আর দাঁড়ানো প্রেতের মতো সারি সারি গাছের কংকাল।
কী দরকার সে প্রেমের যা কেবলি কাঁটার
মুকুট
পরায় মাথায় আর বিষপাত্র তুলে দেয় হাতে?
কোন্‌ কাজে লাগে সেই পথ,
যেখানে হাঁটে না কেউ, যেখানে অদৃশ্য
রঙীন আইসক্রিমঅলা, শহর-ভাসানো মিছিলের ঢেউ?

তোমাকে ডেকেছিলাম, প্রিয়তমা, যখন সূর্যের সূর্যোদয়ের দিকে
মুখ রেখে যাত্রা ছিল আমাদের, বুর্জোয়া মোহের
পিছুটান আনেনি তোমার কানে জনগণমন-জাগানিয়া গান।
জাঁহাবাজ ঈগলের নখরের ভীষণ আক্রোশে
এখনো বন্দিনী তুমি, হাঁটতে পারো না রংধনুর গালিচামোড়া পথে।
তুমি বিনে কী দুরূহ এই পথ চলা।

চৌদিকে আঁধার করে বিকট দানব আসে পায়ের তলায়
নিমেষে গুঁড়িয়ে নব্য সভ্যতার বুনিয়াদ,
ফাঁসিতে লটকে দেয় পূর্ণিমা চাঁদকে, আর নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সব
পদ্ম আর গোলাপের উন্মীলন, দোয়েলের শিসঃ
নিষিদ্ধ ঘোষণা করে আমার পদ্যের পর্বে পর্ব্যে নিরিবিলি
তোমার নিঃশ্বাস আর চুলের সৌরভ।

সুদিনের প্রতীক্ষায় যে কিশোরী বাঁকানো শরীরে
বসে আছে বার্ধক্যের বিজন দাওয়ায়,
তাই এই বয়সের ভারের দোহাই,
নেলসন মান্দেলার দীর্ঘ কারাবাসের দোহাই,
বীর যুবা নূর হোসেনের শাহাদাতের দোহাই,
দিগন্ত কাঁপিয়ে ক্রুদ্ধ টাইটানের মতোই আজ
হাতের শেকল ছিঁড়ে ফেলে
গর্জে ওঠো, গর্জে ওঠো তুমি স্বাধীনতা।