ফিরে এসো বন্ধু

বন্ধু, এ কেমন অভিমান তোমার? কত না সূর্যোদয়, কত
সূর্যাস্ত বিলীন হলো অনন্তে, অথচ
ভীষণ নির্বাক তুমি, তোমার ঠোঁটে একটিবারও
ঝলসে উঠছে না আমাদের চিরচেনা
সেই মধুর হাসি। প্রিয় সেন্টু, প্রিয় কবিবন্ধু
আবু জাফর ওরায়দুল্লাহ, তোমার নীরবতা এমন
কনকনে শীত আর সইতে পারছি না আমরা, তোমার
কণ্ঠস্বরের জন্যে বড় তৃষ্ণার্ত ঘরের চার দেয়াল,
লেখার টেবিল, বইপত্তর, সবচেয়ে বেশি তোমার প্রিয়তমা
জীবনসঙ্গিনী, তোমার আত্মজা কাকাতুয়া, তোমার
আড্ডাবাজ বন্ধুমণ্ডলী। আর কত হিমযুগ তুমি ঢেলে দেবে
ওদের দিকে? কোন উষ্মায়? কোন একরোখা অভিমানে?

ভাবতেই পারি না এতদিন তুমি এভাবে থাকবে
এমন নীরবতা ভালোবেসে। মনে হয় কত শতাব্দী কেটে গেছে,
তুমি কিংবদন্তির কথা বলো না, তোমার মমতাময়ী মায়ের
কবরের ঝরা ফুলের কথা বলো না। চর্যাপদের
হরিণ আর ইয়েটস-এর রাজহাঁস
তোমার শিয়রে এসে দাঁড়িয়েছে, ওদের কি অভ্যর্থনা
জানাবে না তুমি? সস্নেহে বাড়িয়ে কি দেবে না হাত?
ওগো বন্ধু, জাগো কবি, সময় বয়ে যায়।

ফিরে এসো বন্ধু নিস্তব্ধ কুয়াশাচ্ছন্ন প্রান্তর থেকে
ফিরে এসো প্রিয়তমা মনির উষ্ণ আলিঙ্গনে। চেয়ে দেখো,
কী ব্যাকুল দৃষ্টিতে সে অষ্টপ্রহর তাকিয়ে রয়েছে তোমার দিকে,
তাকিয়ে দেখো, যে কোমল হাত সারাক্ষণ তোমার
শুশ্রুষায় নিবেদিত, সেই হাতে নিয়ে আবার
ক্রীড়াপরায়ণ হও তুমি। ভালো করে দেখো তোমার ঘরে কাব্যলক্ষ্মী
অপরূপ চাঞ্চল্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন আর বারবার
তোমার দিকে এগিয়ে দিচ্ছেন কবিতার খাতা। বেলা যে যায়,
এবার চটজলদি কুয়াশার জাল ছিঁড়ে
উঠে পড়ো, আনন্দের ঝর্ণাধারা বইয়ে দাও নিরানন্দ ফ্ল্যাটে।
১.১১.২০০০