কবির খাঁ খাঁ ঘর শুধু অশ্রুপাত করে

বেগম সুফিয়া কামালের প্রতি শ্রব্ধাঞ্জলি

সতেজ ভোরের অনুরাগী আমি বরাবর, রোদ
বারান্দায় রেশমি চাদর হয়ে কেমন ছড়িয়ে
পড়ে, একটি কি দু’টি পাখি গান গায়। ভালো লাগে,
গাছের পাতার স্নিগ্ধ নাচে দোলা লাগে প্রাণে, অথচ আজকে
সকাল কেমন এক অন্ধতার হাহাকার নিয়ে
এলো চতুর্দিকে, সারাদেশে। হাজার হাজার কালো
কালো পাখি নিয়েছে দখল করে রাজপথ, জনপদ অলিতে গলিতে
অন্ধকার হাহাকার হয়ে যায়। চতুর্দিকে ওঠে রব, কান্না
অবিরল, ‘এখন কোথায় তিনি? এখন কোথায়
কবি, আমাদের কবি? হায়,

অন্ধকারে যিনি বারবার হেঁটেছেন রাজপথে
জ্বলন্ত মশাল হয়ে, নির্ভুল দেখিয়েছেন সাধের কাঙ্ঘিত
দিকগুলি, তিনি আজ আলোর উৎসব ফেলে,
শক্রদের ভিড়ে ছেড়ে আমাদের
গেলেন কোথায় কোন্‌ জন্মন্ধ তিমিরে? আমাদের
শহরের প্রতি গাছে, প্রতি ফ্ল্যাটে, মাঠে, প্রতিটি পাড়ায়,
কত বুদ্ধিজীবীর স্টাডিতে, কবিদের আস্তানায়, বস্তিতে বস্তিতে
আলোকিত পদ্মের মতোই ফুটে ওঠে তাঁর মাতৃমুখ।

আজ এই নির্বাপিত দিনে মনে হয়
নির্বাসিত আছি, বারবার দীপ জ্বালাতে গিয়েও
দেখি বৈরী ধর্মান্ধতা, কুসংস্কার সবখানে ফণা তুলে আছে।
একটি অনুচ্চ কণ্ঠস্বর আমাদের জাগিয়ে তোলার জন্যে ডেকে যায়,
শূন্য ধানমণ্ডির একটি বাড়ি বড়ই নিঝুম, বাগানের গাছপালা
এবং কবির খাঁ খাঁ ঘর শুধু অশ্রুপাত করে
২০.১১.৯৯