ধীরেসুস্থে হেঁটে যেতে যেতে

ভীষণ তিমিরাচ্ছন্ন আজকের এ পৃথিবী
আমাদের। ভাই, বন্ধুদের দেখলেও
ইদানীং যায় না কস্মিনকালে চেনা। ধাক্কা খেয়ে তাড়াতাড়ি
দূরে সরে যাই, জানা নেই কার কামিজের নিচে
ছোরা কিংবা অন্য কোনও মারণাস্ত্র খুব সন্তর্পণে
লুকানো রয়েছে কি না ভেবে ভয়ে কুঁকড়ে থাকি সকল সময়।

কোনও কোনও মধ্যরাতে ভীষণ চমকে উঠে এক
লাফে শয্যা ত্যাগ করি, পাছে কোনও প্রেত
কিংবা আততায়ী গলা চেপে ধরে আচমকা। ঘামে ভিজে ওঠে
শরীর আমার, কোনও মতে টেবিলের এক কোণ
চেপে ধ’রে দাঁড়াই যেন-বা বজ্রাঘাতে
বড় স্থির, কোনও পাখি বেদম ঠোকরালেও উঠবে না নড়ে।

কখনও কখনও নিজ বাসগৃহে অথবা রাস্তায়
ধীরেসুস্থে হেঁটে যেতে-যেতে
নিজের ছায়াটি চোখে পড়লে ভীষণ কেঁপে উঠি,
তারপর অতি দ্রুত হেঁটে চলি, যেন সেই ছায়াটি আমাকে
করবে হামলা আচমকা! গলা ভীষণ শুকিয়ে
আসে, যেন সে মুহূর্তে মুখে ঠেসে দেয়া হলো ঢের শুষ্ক বালি।

বস্তুত কোথাও আজকাল স্বস্তি নেই, শান্তি নেই
এতটুকু; আমার নিজের সত্তা যেন
প্রায়শ আমারই দিকে মারণাস্ত্র উঁচিয়ে এগিয়ে
আসে, চোখ বন্ধ ক’রে বড় বেশি কম্পিত শরীরে
নিজেকে জড়িয়ে ধরি। ভয়ংকর দাঁতাল একটি জন্তু যেন
আমাকে ছিঁড়তে থাকে, তাকে হটাবার মস্ত্র আজও জানা নেই।
১১-১২-২০০২