নিষ্ঠুর প্রতারণা

দুপুরবেলা রোজ যেখানে শুয়ে শুয়ে বই পড়ি,
কিংবা আকাশপাতাল ভাবি অথবা
হঠাৎ কখনও কখনও ঘুমিয়ে পড়ি,
সেদিন সদ্যলেখা একটি কবিতাকে আমার ডান পাশে শুইয়ে
চশমাটা খুলে সেই পদাবলীর সান্নিধ্যে রাখি।
কয়েক মুহূর্তের মধ্যে সৃষ্টি হলো
এক অস্বস্তিকর পরিস্থিতি। তাকিয়ে দেখি,
কালো চশমাটা আড়চোখে কবিতার দিকে তাকিয়ে
ক্ষান্ত হচ্ছে না, ওর তরতাজা যৌবনের স্পর্শের লোভে
কবিতার কোমরে বাড়িয়ে দিলো ঈষৎ কম্পিত হাত।

ঈষৎ নড়ে চড়ে ওঠে কবিতা। চশমার কামাতুর হাত
ওর স্তন মুঠোবন্দী করার সঙ্গে সঙ্গে গা
ঝাড়া দিয়ে ওঠে তন্বী কবিতা। ওর ফুঁসে ওঠার ভঙ্গি
আমার দৃষ্টি এড়ালো না। আমার রাগী চোখ দুটো দেখে
ভড়কে যায় আমার নিত্যসঙ্গী চশমা। চটজলদি
শিথিল হলো ওর শক্ত মুঠি, পুরো হাত। কবিতাকে
আলগোছে সরিয়ে আমার বাঁ পাশে নিয়ে আসি।
নিমেষে কবিতা আকাশের নীল হ্রদের সুস্থির
জলরাশি, প্রান্তরের প্রশান্ত সবুজ। আমার চোখে
চোখ রেখে কী করে যে আমার দয়িতা
হয়ে গেল সে, ওকে বুকে টেনে নিয়েও
খর দুপুরে সম্মোহিত আমি বুঝতে পারিনি কিছুতেই।
এরপর থেকে আমার চশমা শেকসপীয়রের ওথেলো
নাটকের খলনায়ক ইয়াগোর মতোই আমার
চরম সর্বনাশের মতলবে নানা ফাঁদ পাততে শুরু করে
এবং আমি সহজে ওর শঠতার প্ররোচনায় নিরপরাধ, শুদ্ধতমা,
সুন্দরী ডেসডেমোনসুলভ কবিতাকে গলা টিপে হত্যা শুরু করি।
কবে আমি ইয়াগোর নিষ্ঠুর প্রতারণা থেকে মুক্ত হবো কে জানে?
১৬.১১.৯৯