আমার স্বপ্নগুলো

এক ঘুম থেকে আলাদা ঘুমে মিশে যেতে যেতে
তিন হাজার বছরের কিছু স্বপ্নকণা
আলগোছে কুড়িয়ে নিই হাতে। বাইসনের চোখ,
ভালুকের মাথা, ঘোড়ার পা, গোটা গণ্ডার
ঝলসে ওঠে নিদ্রার প্রান্তরে। গুহার দেয়ালে
আঁকতে থাকি নানা চিত্র, আমার পরনে সিংহের চামড়ার
নেংটি। চিত্র থেকে চিত্রে ঘুমের পর্দার রেশম
সময়হীনতার স্তর রচনা করে পশুর চর্বির তৈরি আলোয়।

আমার স্বপ্নগুলোকে গুছিয়ে রাখি
স্মৃতির কন্দরে, অথচ ওলট পালট হয়ে যায় সব,
একটির গলায় আরেকটি পা রাখে
জল্লাদের ভঙ্গিতে, একটি ভবঘুরের মতো হঠাৎ উধাও
অজানা বন্দরে। দু’তিনটি অসুস্থতায়
ধুঁকে ধুঁকে মরে যায় ঘোর অমাবস্যায়। ওদের
কবর দেয়ার মতো কেউ কোথাও থাকে না; ওরা
বাজে পদ্যের মতো স্মৃতির উদার দাক্ষিণ্য থেকেও বঞ্চিত।

কখনও কখনও স্বপ্নলোকে নিয়ে আর পারি না।
বলা কওয়া নেই অবাঞ্ছিত অতিথির মতো হাজির,
বকবকিয়ে আমার সময় খায়, স্ফীত হতে থাকে
কপালের দু’পাশের রগ, এক সময় ঘুমিয়ে পড়ে
আমার বিছানায়। ওদের তাড়াতে পারলে বাঁচি,
অথচ দূর দূর করে হটিয়ে দেয়াও মুশকিল, এমনই
বেআক্কেল, বেহায়া। কোনও কোনও স্বপ্ন যখন ডানা দোলাতে দোলাতে
কবিতা হয়ে ওঠে, কৃতজ্ঞতায় আমার চোখ টলটলে হ্রদ।
১.৭.৯৯