আমরা ক’জন নানা বয়েসী পুরুষ প্রায় প্রত্যহ এখানে
এই ঘরে বসি, কিছু সময় কাটাই। কেউ কেউ সহজেই
জমিয়ে ফেলেন গল্প, কারও ঠাট্রা মশ্করায় খোলে
মাথা, কেউ সমাজতত্ত্বের ভাষ্যকার, কেউ কেউ দার্শনিক
তর্কে মেতে ওঠেন হামেশা। একজন প্রৌঢ় কবি মাঝে মাঝে
আবৃত্তি করেন নানা বিদেশী কবিতা, বিশেষত নেরুদার।
আমি নিজে স্বল্পবাক, অন্যদের রকমারি কথা কানে নিয়ে
বিস্তর আনন্দ পাই। কোনও কোনও দিন কারও স্থুল রসিকতা
আমাকে পীড়িত করে এবং নীরবে সহ্য করি অরুচির
নিপীড়ন কালেভদ্রে। কোনও দিন ঘরে ঢুকেই কেমন হু হু ফাঁকা
লাগে, আমাদের একজন আর কখনও এখানে আসবে না
আসরের আকর্ষণে। চোরা ব্যাধি তাকে চুরি করে নিয়ে গেছে।
কিছুদিন মন খারাপের মেঘ থাকে, আড্ডায় ভাটার ছাপ
পড়ে, তারপর অচিরেই আবার জোয়ার আসে যথারীতি,
আবার প্রচুর গালগল্প, ঠাট্রা তামাশা, তর্কের ঝড়ঝাপ্টা
সেই ঘরে। কখনও ডায়েবেটিস, রক্তচাপ, হার্টের অসুখ
নিয়ে কিছু কথা হয়। একদিন উপস্থিত আমাদের কেউ
একজন আসবে না আর এই ঘরে, এ সরল সত্য ভুলে থাকি।