২.৫ বাউল-ফকিরি গানের স্বরলিপি ও স্বরলিপি প্রসঙ্গে

বাউল-ফকিরি গানের স্বরলিপি ও স্বরলিপি প্রসঙ্গে

যতই আলোচনা চলুক বাউল বা ফকিরি গান নিয়ে, যেখা যাচ্ছে, পূর্বজদের প্রধান ঝোঁক তার ভাবের বিশ্লেষণে বা প্রকাশভঙ্গির অভিনবত্ব বিষয়ে। সাহিত্যিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে এ-জাতীয় গানের বিচার একদিক থেকে ভাবলে, ভুল। কেননা বাউল ও ফকিরি গান রচনার উদ্দেশ্য তো কোনওভাবে সাহিত্যরচনা নয়— তাঁরা এমনকী শিষ্ট বিদ্বজ্জনদের জন্য এসব গান লেখেননি। তাই হালে ঝোঁক পড়েছে সামাজিক নৃবিদ্যা বা সমাজবিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে বাউল ফকিরদের জীবন ও রচনাকে দেখা বা দেখানো। তাদের প্রতিবাদী চেতনা ও সমন্বয়ী ভাবনাকে বড় করে তুলে ধরা, যার মধ্যে অন্তঃস্থ হয়ে আছে আমাদের নিম্নবর্গের অন্যতর ইতিহাস। সমাজের ভদ্রলোক-শ্রেণি যে-উদ্যমে ব্যর্থ হয়েছেন, যেমন সাম্প্রদায়িক বিভাজনরেখাকে মুছে, তুলে ধরা মানবিক প্রত্যয়ের সবলতা, তা নিপুণভাবে ফুটে উঠেছে লোকায়তদের ভাবনার বলিষ্ঠতায়। এক ধরনের গবেষক বাউল ফকিরদের সামাজিক অবস্থান ও অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে কাজ করে চলেছেন। বিদেশি সন্ধিৎসুদের কাছে বাউলদের মরমি রহস্যের জগৎ, অপ্রকাশ্য চন্দ্ৰতত্ব আর আচরণবাদের কুট কায়াবিশ্ব অনেকটাই সম্মোহিত করেছে। একথা আজ দ্বিধাহীনভাবে বলা চলে যে, রবীন্দ্রনাথ-ক্ষিতিমোহন মনসুরউদ্দিন-উপেন্দ্রনাথ প্রভৃতিরা বাউল দর্শনকে যেভাবে উপস্থাপিত করতে চেয়েছিলেন, আধুনিক গবেষণা ও পর্যবেক্ষণ তার চেয়ে অনেক প্রাগ্রসর উন্মোচনে ব্যাপৃত ও বাস্তবগন্ধী। বাংলাদেশেও আহমদ শরীফ, বোরহানউদ্দীন খান জাহাঙ্গির কিংবা আহমদ মিনাজের চিন্তাচেতনা বাউল জীবন বিষয়ে অনেকটাই সমাজমুখী ও দিগদর্শী।

কিন্তু সাংগীতিক দৃষ্টিকোণ থেকে বাংলার বাউল ও ফকিরদের সাধনাকে এখনও সঠিকভাবে দেখানো হয়নি। যাকে বলে গানের ভিতর দিয়ে দেখা বাউলভুবন তা এখনও আমাদের কাছে অনালোকিত। সবে বছর দশেক এ কাজ শুরু হয়েছে। গ্রামে গ্রামে ঘুরে গান সংগ্রহ, সেই গান স্থায়ীভাবে সংরক্ষণ ও স্বরলিপি করে রাখা, বাউল ফকিরি গানে সুর ও স্বরপ্রয়োগের স্বাতন্ত্র নিয়ে বিশ্লেষণ, একই গান কীভাবে একেক অঞ্চলে সুরে ও গায়নে ভিন্ন ধরন পেয়ে যায় তা লক্ষ করা— এ জাতীয় কর্মোদ্যোগের সূচনা ঘটেছে মাত্র। বাউল গানের সুরকাঠামোয় ঝুমুর, ভাওয়াইয়া, ভাঙা কীর্তন ও ভাটিয়ালির প্রভাব শনাক্ত করা হচ্ছে কিন্তু পাকাপাকি সাংগীতিক বিশ্লেষণের সমন্বিত ও অনুপুঙ্খ আয়োজন গড়ে ওঠেনি, প্রধানত প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যম, অর্থাভাব ও ক্ষেত্ৰকর্মীদের সমন্বয়ের অভাবে। এ ব্যাপারে একক প্রয়াসীরূপে উল্লেখযোগ্য প্রবীণ খালেদ চৌধুরী এবং তরুণতর কঙ্কন ভট্টাচার্যের নাম। যথাক্রমে কলকাতার ‘ফোক মিউজিক অ্যান্ড ফোকলোর রিসার্চ ইনস্টিটিউট’ ও ‘পশ্চিমবঙ্গ সংগীত একাডেমি’-তে এই দুইজনের গানের সংগ্রহ সংরক্ষিত।

পশ্চিমবঙ্গের বাউল-ফকিরদের সমীক্ষা প্রয়াসে আমার লক্ষ্য তাই অনেকটাই ছিল গানে দিকে। টেপে নিবদ্ধ বেশ কিছু গান (নানা জেলার) যা আমি ও আমার সহকারীরা সংগ্রহ করেছি তা সংরক্ষিত আছে ‘লোকসংস্কৃতি ও আদিবাসী সংস্কৃতি কেন্দ্র’-র সংগ্রহালয়ে। ভবিষ্যতে সেগুলি ব্যবহার করলে গত দেড় দশকের বাংলার বাউল ফকিরদের গানে সুর ও গায়নের প্রকৃতি তথা বৈচিত্র্য ধরা পড়বে। তবে সেগুলি সবক্ষেত্রে গায়নের দিক থেকে বা স্বরক্ষেপের গভীরতায় নির্ভরযোগ্য নয়, কারণ অধিকাংশ গায়ক গায়িকা গানের দীক্ষায় তত উন্নত নন—পারফরমেন্স লেভেল খুব উঁচু নয়— সংগীত গ্রহণেও যান্ত্রিক ত্রুটি আছে। সমসাময়িক চটুল সুরের নকলনবিশি এবং বিকৃতির নমুনাও সহজলভ্য। তবু ভাল গানও অনেক পাওয়া গেছে এবং তার সংখ্যাই বেশি।

কিন্তু আমাদের লক্ষ্য কিছুটা বিশেষায়ণের অভিমুখী, তাই বাউল গানের এবং ফকিরিগানের ব্যাপক প্রচলিত কয়েকটি ছাঁচ বা ছককে আলাদাভাবে শনাক্ত করে এখানে স্বরলিপিবদ্ধ করে উপস্থাপিত হল। পশ্চিমবঙ্গে বর্তমানে প্রচলিত এবং বহু গায়কের অনুসৃত বাউল-ফকিরি গানের অন্তত দশরকম রীতি বা স্ট্যান্ডার্ড স্ট্রাকচার অনুধাবন করলে আমাদের লোকায়ত শিল্পীদের আত্মপ্রকাশের স্বাভাবিক উৎসনির্ভরতা স্পষ্ট হবে।

‘বাঁকা নদীর পিছল ঘাটে’ ও ‘সব লোকে কয় লালন কী জাত সংসারে’ পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান দুটি জনপ্রিয় সুরবিন্যাসের কৌশল ধারণ করে রেখেছে। গান দুটির স্বরলিপি করেছেন লোক সংগীতের তত্ত্বজ্ঞ ও ভাণ্ডারি খালেদ চৌধুরী।

‘যদি ডাকার মতো পারিতাম ডাকতে’ একটি প্রসিদ্ধ বাউলাঙ্গের গান, যার ধরনকে ‘ফিকিরচাঁদী ঢং’ বলা হয়। এটির স্বরলিপি সংগীতাচার্য রমেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের করা এবং দিনেন্দ্র চৌধুরীর সৌজুন্যে প্রাপ্ত। ‘মন চল যাই ভ্রমণে’, ‘চল্ গুরু চল দুজন যাই পারে’ ও ‘আমার ঐ নিতাইচাঁদের দরবারে’ গান তিনটির স্বরলিপি লোকসংগীতশিল্পী ও শিক্ষক দিনেন্দ্র চৌধুরী প্রণীত।

স্বরলিপি অধ্যায়ে ফকিরি গানের চারটি নমুনা থাকছে। ‘লা ইলা ইল্লালার নকশা’, ‘ঐ মনের মানুষ আছে খামোস’, বন্ধুর বাড়ি তে রে মন’ ও ‘ঘরের মানুষ আছে ঘরে’ এই চার ধাঁচের ফকিরিগান ও তার সুর সরাসরি সংগ্রহ করেছেন বিশিষ্ট গবেষক কঙ্কন ভট্টাচার্য, বীরভূমের ফকিরদের গায়ন থেকে। স্বরলিপিও তাঁর করা।

স্বরলিপি প্রসঙ্গে বিশেষ সহায়তা করেছেন রণজিৎ সিংহ ও আমার স্নেহভাজন ছাত্র দীপংকর দাস। তাঁদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। খালেদ চৌধুরী, দিনেন্দ্র চৌধুরী ও কঙ্কন ভট্টাচার্য আমার বিশেষ অনুরোধে স্বরলিপি প্রণয়ন করে লোকসংগীতের প্রতি তাঁদের বহুদিনের দায়বদ্ধতা প্রমাণ করেছেন।

স্বরলিপি

বাঁকা নদীর পিছল ঘাটে
ও পার হবি কী করে
ও পার যাবি কী করে।
ও সেথায় কামকুম্ভীর রয়েছে সদায়
বাপরে বাপ সদায় হাঁ করে।
আস্তে আস্তে ধীরে ধীরে যে করে গমন
ও তার হয় না রে মরণ
যে যায় তাড়াতাড়ি হুড়াহুড়ি
ও তার প্রাণ হারাবার তরে।
শ্রীচৈতন্য নিত্যানন্দ অদ্বৈতের ঘাট
ও তার কীবা পরিপাট
দেখলে সেই ঘাটের ছবি অবাক হবি,
যাবি দুই বাপ বেটাতে মরে।
মদন-মাদন-শোষণ-স্তম্ভন ও মোন এই পঞ্চসার
ও সারের মহিমা অপরা,
যদি সেই যুদ্ধে যাবি তীর ছুটাবি
তবে চাবি লাগা ঘরে।
সেথা গন্ধকালী বসে আছে।
(ওই দ্যাখ, দ্যাখ) বলি খাবার তরে।
বাঁকা নদীর পিছল ঘাটে

বাঁকা নদীর পিছল ঘাটে

বাকি কলিগুলি দ্বিতীয় কলির অনুরূপ

সব লোকে কয়, লালন কী জাত এই সংসারে।
লালন কয়, জাতির কী রূপ, দেখলাম না এই নজরে॥
কেউ মালা কেউ তসবীহ্ গলে
তাই তো রে জাত ভিন্ন বলে
যাওয়া কিম্বা আসার বেলায়
জাতের চিহ্ন রয় পড়ে॥
ছুন্নৎ দিলে হয় মুসলমান
নারীর তবে কী হয় বিধান
বামন চিনি পৈতেয় প্রমাণ
বামনী চিনি কী প্রকারে ॥
জগৎ বেড়ে জাতির কথা
লোকে গল্প করে যথাতথা
লালন বলে, জাতির ফাৎনা
ডুবিয়েছি সাধ-বাজারে ॥
সব লোকে কয় লালন কী জাত

সব লোকে কয়

বাকি পঙ্‌ক্তিগুলি তৃতীয় পঙ্‌ক্তির অনুরূপ
যদি ডাকার মতো পারিতাম ডাকতে
তবে কি মা অমন করে লুকিয়ে থাকতে পারতে।
আমি নাম জানি নে ডাক জানি নে জানি নে মা কোন কথা বলতে;
আমি ডেকে দেখা পাই না তাইতে
আমার জনম গেল কাঁদতে।
দুখ পেলে মা তোমায় ডাকি
আবার সুখ পেলে চুপ করে থাকি ডাকতে
তুমি মনে ব’সে মন দেখ মা।
আমায় দেখা দাও না তাইতে!
ডাকার মত ডাকা শিখাও
না হয় দয়া ক’রে দেখা দাও আমাকে
আমি তোমার খাইমা তোমার পরি
কেবল ভুলে যাই নাম করতে।

তাল/দাদরা
সংগীতাচার্য রমেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় কৃত স্বরলিপি
যদি ডাকার মত

যদি ডাকার মত
সব লোকে কয়

মন চলো যাই ভ্রমণে
কৃষ্ণ অনুরাগের বাগানে
সেথা যাবি প্রাণ জুড়াবি
আনন্দে সমীরণে।
সে বা গানে তিন জন মালী
একজন উড়ে একজন সাহেব একজন বাঙালী
তারা সেচ করে লাড়ে চারে
গাছ-বাড়ে অতি যতনে।
সে বাগানে নিত্য ফোটে পাঁচ রকমের ফুল
সৌরভে প্রাণ আকুল করে গৌরবে আকুল
ওরে আত্মারামের আত্মা ব্যাকুল
করেছে তার আঘ্রাণে।

তাল: দাদরা
মন চলো যাই ভ্রমণে

মন চলো যাই ভ্রমণে

স্থায়ী

প্রথম অন্তরা

দ্বিতীয় অন্তরা

দ্বিতীয় অন্তরা

চল্ গুরু চ্‌ল দুজন যাই পারে
আমার একলা যেতে ভয় করে।
পার ঘাটাতে মাল্লা ছয় জনা
সঙ্গী বিনে তারা আমায়
পার করে দেয়না
মাঝি বলে পার করে-দি
মাল্লারা নিষেধ করে।
আমার দেহ ছিলো শ্মশানের সমান
গুরু তুমি মন্ত্র দিয়ে
করলে ফুল বাগান
আবার সেই বাগানে ফুল ফুটেছে
গোঁসাই অধর চাঁদ বিরাজ করে।

তাল: দাদরা
চল্‌ গুরু চল্‌

চল্‌ গুরু চল্‌

স্থায়ী

চল্‌ গুরু… দুজন যাই পারে অবধি।
প্রথম অন্তারা

চল্‌ গুরু… দুজন যাই পারে অবধি।

দ্বিতীয় অন্তরা

চল গুরু… দুজন যাই পারে অবধি।
আমার ঐ নিতাই চাঁদের দরবারে
একমন হ’লে সে-ই যেতে পারে
দুমন হ’লে পড়বি ফেরে
পারবি না যেতে পারে।
চারদশে হয় চল্লিশ সেরে মন
রতি মাসা কমি হ’লে লয়না মহাজন
আবার সদর হুকুম আছে ব্রজে
রাধারানী পার করে।
কাঠুরেতে মাণিক চেনে না
ময়রার বলদ চিনি বয় তার স্বাদ জানে না
আবার সোনার বেনে সোনা চেনে
পরখ করে লয় তারে।
সদর আমিন শ্রীরূপ গোঁসাই সনাতন
আনন্দ বাজারে তারা প্রেমের মহাজন
ও-প্রেম দাঁড়ি ধরে ওজন করে
ঘ’ষে মেজে লয় তারে।

তাল: দাদরা
আমার ঐ নিতাইচাঁদের
স্থায়ী

প্রথম অন্তরা

দ্বিতীয় অন্তরা

তৃতীয় অন্তরা

ফকিরি (দাদরা)

লাইলাহা ইল্লালার নকশা আছে যার দিলে
খুদা পাক্‌ রসুরুল্লাহ সঙ্গেতে ফিরে ॥
ছয়তলাতে তালা দিলে অধরাকে ধরা যায়
হু-হু শব্দে বীণা বাজে তোমার দিল দরিয়ায়
হু-হু শব্দর কর ঠিকানা পাইবি রে সোনার মদিনা
পাইলে পাইতে পার আত্মায় আত্মায় মিশিলে॥
একুশ হাজার ছয়শোটিকার নাসিকাতে আসে যার
এই কথাটি মুর্শীদ ধরে তোমরা সবে জান ভাই
আড়ি পেতে আল্লা আছে মিমে মহম্মদ আছে
এই কথা বলতে মানা লিখা আছে পাক্‌ পুরাণে॥
রত্না কূলের আব্দুল ফকির বলে দিল এই সভায়
বেহেস্তে যাবার পথ পরিষ্কার করনা ভাই
বেহেস্তে যাবার কালে লয়ে যাবে কোলে করে
নইলে দোজখ যেতে হবে তাতে কিছু বাধা নাই॥
লাইলাহা ইল্লালার নকশা আছে যার দিলে

ফকিরি (কাহারবা)

ঐ মনের মানুষ আছে
খামোশ হৃদয় মাঝে
গোপন ভাবে।
মানুষ মানুষ বলে সবে
মানুষ ধর মানুষ পাবে॥
মানুষ ধরে দেখ নিজে
পাবে মানুষ হৃদয় মাঝে
(ঐ) থেকে না আর মিছে কাজে
মানুষ আছে ধরতে হবে॥
মানুষ আছে রঙমহলে
মানুষ মিলে কলমার কলে
নইলে জনম যায় বিফলে
আখেরাতে পস্তাইবে॥
আলির ডালসিধ হইল যখন
হুকম দিল সাঁই নিরঞ্জন
তখন সেজ্‌দা করে ফেরেস্তাগণ
সেই মানুষ আসিল যবে॥
মহম্মদ কয় কাতর হালে
ফকির সাহার চরণ তলে
মানুষেরই হুঁশের বলে
সাবেদ পেয়ে দেখলাম ভবে॥
ঐ মনের মানুষ আছে

ফকিরি (কাহারবা)

বন্ধুর বাড়ী হ’তে রে মন
আইছি অনেকদিন গো আমি।
যাব কবে মরি ভেবে দেহ হ’ল হীন॥
বন্ধু যখন আসবে নিতে
তার সঙ্গে ভাই যাব চলে
থাকবে না আর এই মহলে
সবাই বাসে ঘিন্‌॥
রোজা নামাজ পঞ্চ বেলা
গলে লাগাও তিরিশমালা
বন্ধু দেখে হবে ভোলা
খেলবে কত রসের খেলা বয়সের নবীন॥
দায়েম শাহের রচনা
মিঠাই মণ্ডা ঘিয়ে বোনা
তেলে ছাঁকা তাও নেব না,
বুঝে মিঠাই কিন্‌॥
বন্ধুর বাড়ী হ’তে রে মন

ফকিরি (কাহারবা)

ঘরের মানুষ আছে ঘরে
তারেও চিনলাম না—
চিনে ভালোবাসলে পরে
বিচারের ভয় রবে না,
তোমার মবণের ভয় রবে না॥
দুশ’ছয়টি টুকরো কাঠের
বিনা পেরেকে সেই ঘর আঁটে
তিনশ’ ষাটটি তার লাগিয়ে
চালায় মালিক কারখানা॥
আট কুঠুরি ঘরের নয় দরজা
তিনজন উজির তিনজন রাজা
তিনতলা ঘর বড়ই মজার
পাঁচজনার ঐ বারামখানা॥
সাততলা ঘর সিংহাসনে
বসে আছে মালিক নিজের ধ্যানে
লালন বলে অন্যমনে
কর গুরুর সাধনা॥
ঘবের মানুষ আছে ঘরে

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *