ব্রাহ্ম পর্ব
মধ্য পর্ব
প্রতিসর্গ পর্ব
1 of 3

সূর্যের বিরাট রূপ বর্ণন

।। সুর্যস্য বিরাট স্বরূপ বর্ণনম্।।

।। সূর্যের বিরাট্রপ বর্ণন।।

এই অধ্যায়ে সূর্যের বিরাট রূপের আলোচনা করা হয়েছে।

বিস্তরেণানুপূর্বা চ সূর্যং নিগদতঃ শৃণু। ততঃ শেষান প্রবক্ষ্যেহহং নমস্কৃত্য বিবস্বতে।।১।। অব্যক্তং কারণং যত্তন্নিত্যং সদসদাত্মকম্। প্রধানং প্রকৃতেশ্চেতি সমাহুস্তত্ত্বচিন্তকাঃ।।২।। গন্ধৈবনৈ রসৈহীনং শব্দস্পর্শবিবর্জিতম্। জগদ্যোনিং মহদ্ভুতং পরং ব্রহ্ম সনাতনম্।।৩।। নিগ্রহং সর্বভূতানামব্যক্তমভবৎ কিল। অনাদ্যন্তমজং সূক্ষ্মং ত্রিগুণং প্রভবোপ্যয়ম্।।৪।। অনাকারমবিজ্ঞেয় তমাহুঃ পুরুষং পরম্। তস্যাত্মনা সর্বমিদং জগদ্যাপ্তং মহাত্মনঃ।। ৫।।

শ্রী নারদ ঋষি বললেন, সবিস্তার এবং আনুপূর্বিক সূর্যের রূপের কথা আমা থেকে তুমি শ্রবণ কর। এরপর বিবস্বানকে প্রণাম করে আমি অবশিষ্টাংশের বর্ণ দিচ্ছি।।১।।

তিনি অব্যক্ত কারণ, নিত্য সৎ এবং অসৎরূপ ধারণকারী। যিনি তত্ত্বচিন্তনকা পুরুষ তিনি সূর্যদেবকে প্রধান এবং প্রকৃতি বলে থাকেন।।২।।

গন্ধ, বর্ণ এবং রসহীন তথা শব্দ ও স্পর্শ রহিত জগৎযোনি এবং মহদ্ভূত সনাতন পরব্রহ্ম রূপে সূর্যদেব খ্যাত।।৩।।

সমস্ত ভূতের নিগ্রহ অব্যক্ত, আদি ও অন্ত রহিত। সূক্ষ্ম, ত্রিগুণ (সত্ত্ব, রজঃ তম) প্রভাব বিশিষ্ট।।৪।

যিনি নিরাকার ও অবিজ্ঞাত। তিনি পরমপুরুষরূপে খ্যাত। সেই মহাত্মা দ্বারা সমগ্র জগৎ ব্যাপ্ত।।৫।।

অস্যশ্চরস্য প্রতিমা জ্ঞানবৈরাগ্য লক্ষণা ধর্মেশ্চসকৃতা বুদ্ধিব্রাহ্মী তস্যাভিমানিনঃ।।৬।। অব্যক্তাজ্জায়তে তস্য মনসা যদ্যদিচ্ছতি। চতুর্মুখস্য ব্রহ্মত্বে কালত্বে চান্তকৃদ্ভবেৎ।।৭।। সহস্রমুর্ধা পুরুষস্তিস্রোবস্থাঃ স্বয়ংভুবঃ। সত্ত্বং রজশ্চ ব্রহ্মত্বে কালত্বে চ রজস্তমঃ।।৮।। সাত্ত্বিকং পুরুষত্বে চ গুণবৃত্তং স্বয়ম্ভুবঃ। ব্রহ্মাত্বে সৃজতে লোকান কালত্বে চাপি সংক্ষিপেৎ।।৯ পুরুষত্বে উদাসীনস্তিস্রোহবস্থাঃ প্রজাপতেঃ। ত্রিধা বিভজ্য চাত্মানং ত্রিকালং সংপ্রবর্ততে।।১০।। সৃজতে গ্ৰসতে চৈব বীক্ষতে চ ত্রিভিঃ স্বয়ম্। অগ্রে হিরণ্যগর্ভস্তু প্রাদুভূতঃ স্বয়ম্ভূবঃ।।১১।। আদিত্যস্যাদিদেবত্বাদজাতত্বাদজঃ সমৃতঃ। দেবেষু সমহান্দেবো মহাদেব স্মৃতস্ততঃ।।১২।।

সেই ঈশ্বর প্রতিমা ভজন ও বৈরাগ্য লক্ষণযুক্ত। অভিমানীব্যক্তি ধর্মৈশ্বৰ্য্য বুদ্ধির দ্বারা তাঁকে ব্রাহ্মী বলে থাকেন।।৬।।

তিনি মনের মধ্যে যে ইচ্ছা পোষণ করেন তা অব্যক্ত থেকে উৎপন্ন। চতুর্মুখের ব্রহ্মত্ব এবং কালত্বতে অন্তকৃৎ হয়।।৭।।

পুরুষ সহস্র মূর্ধাযুক্ত হন। সেই স্বয়ম্ভূর তিন অবস্থা বর্তমান। ব্রহ্মতে সত্ত্ব এবং রজ, কালত্বে রজ ও তম। স্বয়ম্ভূর পুরুষত্বে সাত্ত্বিকগুণ যুক্ত থাকে। তিনি ব্রহ্মত্বে লোকসৃজন করেন এবং কালত্ব দশাতে সংহার করে থাকেন।।৮-৯।।

যখন তিনি পুরুষত্ব অবস্থায় স্থিত থাকেন তখন তিনি উদাসীন থাকেন। এই প্রকারে প্রজাপতির তিন অবস্থা বর্তমান। তিনি নিজ আত্মা বা স্বরূপকে তিন প্রকারে বিভাজিত করে ত্রিকালের মধ্যে প্ৰবৃত্ত থাকেন।।১০।

এই তিন প্রকার স্বরূপ দ্বারা তিনি সৃজন, গ্রসন এবং বীক্ষণ করে থাকেন। সর্বাগ্রে স্বয়ম্ভূ থেকে হিরণ্যগর্ভ প্রাদুর্ভূত হয়।।১১।।

আদিত্য আদিদেব এবং অজাত বলে তিনি ‘অজ’ নামে পরিচিত। দেবতাদের মধ্যে তিনি ‘মহান’ বলে তিনি ‘মহাদেব’ রূপেও পরিচিত।।১২।।

সর্বেশত্বাচ্চ লোকস্য অধীশত্বাচ্চ ইশ্বরঃ। বৃহত্ত্বাচ্চ স্মৃতো ব্রহ্মা ভক্তাদভব উচ্যতে।।১৩।। পাতিয়স্মাৎপ্রজা সর্বাঃ প্রজাপতিরতঃ স্মৃতঃ। পুরে শেতে চ বৈ যস্মাত্তস্মাৎ পুরুষ উচ্যতে।।১৪।। নোৎপাদ্যবাদ পূর্বত্ত্বাৎ বাৎস্বয়ং ভূরিতি বিশ্রুতঃ।।১৫ হিরণ্যান্ডগতো যস্মাদগ্রহেশো বৈ দিবস্পতিঃ। তসমাদ্ধিরন্যগর্ভোঽসৌ দেবদেবো দিবাকরঃ।।১৬।। আপো নারা ইতি প্রোক্তা ঋষিভিস্তত্ত্বদশিভিঃ। অয়নং তস্য তা আপোস্তেনে নারায়ন স্মৃতঃ।।১৭।। অর ইত্যেষ শীঘ্রাথো নিপাতঃ কবিভিঃ স্মৃতঃ। আপ এবাণর্বা ভূত্বা ন শীঘ্রাস্তেন তা নরাঃ।।১৮।। লোকগণের সর্ব্বেশ এবং অধীশ বলে তিনি ‘ঈশ্বর’ রূপেও খ্যাত। তিনি ‘বৃহৎ’, সেই কারণে ‘ব্রহ্মা’ এই নামেও খ্যাত। এছাড়া ‘ভবত্ব’ হওয়ার জন্য তিনি ‘ভব’। তিনি সমস্ত প্রজাবর্গের রক্ষা তথা পালনকর্তা তাই তিনি ‘প্রজাপতি’ এইরূপে পরিচিত।।১৩-১৪।।

তিনি উদ্ভূত হননা এবং তিনি অপূর্ব–তাই স্বয়ম্ভূ এই নামে তিনি পরিচিত।।১৫।।

হিরণ্য অল্ডস্থিত এবং দিনস্পতি গ্রহপতি হওয়ার জন্য তিনি হিরণ্যগর্ভ, দেবাদিদেব দিবাকর নামে পরিচিত।।১৬।।

মহর্ষিগণ জলকে ‘নারা’ বলেন এবং জলেই তাঁর ‘অয়ন’ অর্থাৎ নিবাস স্থান বলে তিনি ‘নারায়ণ’ নামেও খ্যাত।।১৭।।

কবিগণ নিপাতের দ্বারা ‘ভার’ শব্দের শীঘ্রতা অর্থ করেছেন। জল অর্ণব হয়ে শীঘ্রতা প্রাপ্ত হয়না। তাই তিনি ‘নর’ রূপে পরিচিত।।১৮।।

একানং বে পুরা তস্মিন্নষ্টে স্থাববজঙ্গমে। নারায়নখ্য পুরুষঃ সুম্বাপ সলিলে তদা। সহস্ৰশীর্যা সুমনা সহস্রস্রাক্ষঃ সহস্রপাৎ।।১৯।। সহস্ৰাবাহু প্রথমঃ প্রজাপতি স্ত্রয়ীপথে য পুরুষো নিগদ্যতে। আদিত্যবর্ণা ভূবনস্য গোপ্তা—অপূর্ব একঃ পুরুষ পুরাণঃ।।২০।। হিরন্যগর্ভঃ পুরুষো মহত্ম সংপদ্যতে বৈ তমস পরস্তাৎ।।২১।

পূর্বে একার্ণবে স্থাবর-জঙ্গম সকল কিছু নষ্ট হয়ে গেলে ‘নারায়ণ’ নামধারী পুরুষ সেই জলে শয়ন করতেন। তিনি সহস্র শীর্ষযুক্ত সহস্র নেত্র ও পদযুক্ত এবং সুন্দর মনসম্পন্ন।।১৯।।

প্রথম প্রজাপতি সহস্র বাহুযুক্ত যিনি ত্রিপথেই পুরুষ নামে খ্যাত। আদিত্যের সমান বর্ণময় পুরুষ এই ভুবনের রক্ষক পুরাণ পুরুষ অপূর্ব।।২০।।

তমোনাশকারী মহাত্মা হিরণ্যগর্ভ পুরুষোত্তম।।২১।।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *