ব্রাহ্ম পর্ব
মধ্য পর্ব
প্রতিসর্গ পর্ব
1 of 3

আদিত্যবার মাহাত্ম্য বর্ণন

।। আদিত্যবারমাহাত্ম্য।।

।। আদিত্য বার মাহাত্ম্য।।

এই অধ্যায়ে আদিত্য বার মাহাত্ম কথিত হয়েছে।

সে ত্বাদিত্যদিতে ব্রহ্মণ পূজয়ন্তি দিবাকরম্। স্নানদানাদিকং তেষাং কিং ফলং স্যাবদব্রীতু মে।।১।।

দিণ্ডি বললেন, হে ব্রাহ্মণ, যে মানব আদিত্য বারে দিবাকরের পূজন করেন এবং স্নান-দানাদি কর্ম করেন তিনি কি ফল লাভ করেন? কৃপাপূর্বক আপনি আমাকে বলুন।।১।।

পুন্যা সা সপ্তমী প্রোক্তা যুক্তা তেন পিতামহ। বিজয়েতি তথা নাম বন্যতামস্য পুষ্যতা।।২।। যেত্বাদিত্যেদিনে ব্রহ্মঞ্ছাদ্ধং কুবন্তি মানবাঃ সপ্তজন্মসু তে জাতাঃ সম্ভবন্তি বিরোগিণঃ।।৩।। নক্তং কুবন্তি মে তত্র মানবাঃ স্থৈর্যমাশ্রিতাঃ। জপমানাঃ পরং জাপ্যমাদিত্যহৃদয়ং পরম্।।৪।। আরোগ্যমিহ বৈ প্রাপ্য সূর্যলোকং ব্ৰজন্তি তে। উপবাসং চ যে কুমুরাদিত্যস্য দিনে সদা।।৫।। জপন্তি চ মহাশ্বেতাং তে লভন্তে যথেপিসতম অহোরাত্রেন নক্তেন ত্রিরাত্রনিয়মেন বা।।৬।। জপমানো মহাশ্বেতামীপিস্তং লভতে ফলম্।। বিশোযতঃ সূর্যদিনে জপমানো গণাধিপ।।৭। যড়ক্ষরং তথা শ্বেতাং গচ্ছেদ্বৈরোচনং পদম্। দ্বাদশোহ স্মৃতা বীরা আদিত্যস্য মহাত্মনঃ।।৮।

হে পিতামহ, সেই আদিত্যবার যুক্ত সপ্তমী তিথি পরম পুণ্য তিথি–একথা আপনি বলেছিলেন, এছাড়া সেটি “বিজয়া” নামে পরিচিত তাও বলেছেন। এখন সেই তিথির পুণ্যতা সম্বন্ধে বলুন।। ২।।

প্রজাপতি ব্রহ্মা বললেন, হে ব্রাহ্মণ, যে ব্যক্তি রবিবারে শ্রাদ্ধ করেন, তিনি সপ্তজন্ম নীরোগ থাকেন।।৩।।

যে ব্যক্তি ঐ দিন স্থির হয়ে রাত্রে আদিত্য হৃদয়ের জপ করেন, তিনি এই লোকে পূর্ণ আরোগ্য লাভ করে মৃত্যুর পর সূর্যলোকে চলে যান। আদিত্যবারে যিনি সদা উপবাসব্রত পালন করেন তিনি সূর্যলোক প্রাপ্ত হন।।৪-৫।।

যিনি মহাশ্বেতাকে জপ করেন তিনি ঈপ্সিত বস্তু লাভ করেন। অহোরাত্রে, কেবল রাত্রে অথবা ত্রিরাত্রে যথানিয়মে মহাশ্বেতার জপকারী ঈপ্সিত ফললাভ করেন। হে গণাধিপ, বিশেষরূপে আদিত্যবারে জপ করলে পুর্ণফল প্রাপ্ত হওয়া যায়।।৬-৭।।

ষড়ক্ষর তথা শ্বেতার জপ করলে ব্যক্তি বৈরচন পদ লাভ করেন, এই সংসারে মহাত্মা আদিত্যের দ্বাদশবার কথিত হয়েছে।।৮।।

নন্দো ভদ্রাস্তথা সৌম্যঃ কাযদঃ পুত্রদস্তথা। জয়ো জয়ন্তে বিজয় আদিত্যাভিমুখ স্থিতঃ।।৯।। হৃদয়ো রোগহা চৈব মহাশ্বেতপ্রিয়োৎ পর শুক্লপক্ষস্য যষ্ঠায়াং তু মাঘে মাসিগণাধিপ।।১০।। যঃ কুর্মাৎ স ভবেদভূপঃ সর্বপাপভয়পহঃ। অত্র নক্তং স্মৃতং পুণ্যং খৃতেন স্ত্রপনং রবেঃ।।১১।। অগস্ত্যকুসুমানীহ ভানোস্তুষ্টিকরানি তু। বিলেপনং সুগন্ধস্ত শ্বেতচন্দনমুত্তমম্।।১২।। ধূপস্তু গুগুলঃ শ্রেষ্ঠো নৈবেদ্যং পূপমেব হি। দত্ত্বাপূযং তু বিপ্ৰস্য ততো ভুজ্ঞীত বাগ্যতঃ।।১৩।। নক্ষত্ৰদর্শনাত্ৰক্তং কেচিদিচ্ছন্তি মানদ। মূহুর্তোনং দিনং কেচিৎপ্ৰবদন্তি মনীষিণঃ।।১৪। নক্ষত্রদশনাম্নক্তমহম্মন্যে গণাধিপ প্রস্থমাত্রং বা ভবেৎপুপং গোধূমময়মুত্তমম্।। ১৫।।

আদিত্যের সেই দ্বাদশ নাম হল — নন্দ, ভদ্র, সৌম্য, কামদ, পুত্ৰদ, জয়, জয়ন্ত, বিজয়, আদিত্য, হৃদয়, রোগহা এবং মহাশ্বেতাপ্রিয়। হে গণাধিপ, মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের ষষ্ঠী তিথিতে যিনি এই দ্বাদশ নাম জপ করেন তিনি সমস্ত পাপের ভয় অপনোদনকারী রাজা হন। রাত্রে ঘৃতের দ্বারা সূর্যের স্বপন পরমপুণ্যময় কর্ম— এইরূপ কথিত আছে।।৯-১১।।

অগস্ত্য বৃক্ষের পুষ্প সূর্যদেবের অত্যন্ত প্রিয়। সুগন্ধ বিলেপনের মধ্যে শ্বেতচন্দন উৎকৃষ্ট। ধূপের মধ্যে গুম্বুল শ্রেষ্ঠ, নৈবেদ্যর স্থলে পুষ্প সূর্যদেবের বিশেষ প্রিয়। সূর্যদেবকে এই সকল দ্রব্য নিবেদন করে বিপ্রকে প্রদান পূর্বক মৌন হয়ে ভোজন করা উচিৎ।।১২-১৩।

হে মানদ, কিছু বিদ্বান্ ব্যক্তি নক্ষত্র দর্শন করে রাত্রি সমাগত অনুমান করেন, অপরপক্ষে অন্য মণীষীগণ দিবসের একমুহূর্ত অবশিষ্ট থাকতেই রাত্রির আগমন স্বীকার করেন। হে গণাধিপ আমি নক্ষত্র দর্শন বলেই রাত্রি আগমন স্বীকার করি। সূর্যদেবকে রাত্রে নিবেদন করার জন্য পূপ একপ্রস্থ প্রমাণ এবং উত্তম গোধূমচূর্ণের দ্বারা প্রস্তুত করতে হবে।।১৪-১৫।।

যবোদ্ভবং বা কুর্বীত সগুড়ং সপির্যান্বিতম্। সহিরণ্যং চ দাতব্যং ব্রাহ্মণে সেতিহাসকে।।১৬।। ভৌমে দিব্যেহম বা দেয়ং ন্যসেদ্বা পুরতো রবেঃ। দাতব্যো মন্ত্রতশ্চায়ং মন্ডকো গ্রাহ্য এব হি।।১৭।। ভূত্বাদিত্যেন বৈ ভক্ত্যা আদিত্যং তু নমস্য চ। আদিত্যতেজসোৎপন্ন রাজ্ঞীকরবিনির্মিতম্। শ্রেয়সে মম বিপ্র ত্বং প্রতীচ্ছাপূপমুত্তমম্।।১৮।। কামদং সুখদং ধর্মং ধনদং পুত্ৰদং তথা। সদাস্তু তে প্ৰতীচ্ছামী মন্ডকং ভাস্করপ্রিয়ম।।১৯।। এতৌ চৈব মহামন্ত্রৌ দানাদানে রবি প্রিয়ে। অপুপস্য গণশ্রেষ্ঠ শ্রেয়তে নাত্র সংশয়ঃ।।২০। এষ নন্দবিধিঃ প্রোক্তো নরানাং শ্রেয়সে বিভো অনেন বিধিণা যস্তু নরঃ পূজয়তে রবিম্। সর্বপাপবিনিমুক্ত সূর্যলোকে মহীয়তে।।২১।।

গোধূমের অভাবে যবচূর্ণ গুড় এবং ঘৃত সংযুক্ত করে পূপ প্রস্তুত করতে হবে।।১৬।।

সেই পূপ দিব্য ভৌম, অথবা সূর্যদেবের অগ্রে ভক্তিপূর্ব্বক প্রণাম করে মন্ত্রের দ্বারা নিবেদন করবে। এক্ষেত্রে মন্ডকগ্ৰাহ্য হয়।।১৭।।

হে বিপ্র, আদিত্যের তেতে উৎপন্ন তথা রাজ্ঞীহস্তে বিশেষরূপে প্রস্তুত পূপ কল্যাণের নিমিত্ত উত্তমরূপে গ্রহণ করুন। কামনা প্রদানকারী, সুখদানকারী, ধর্মসম্বন্ধীয় ধনদাতা এবং পুত্র প্রদানকারী ভাস্কর ভগবানের প্রিয়মন্ডক আমি গ্রহণ করলাম।।১৮-১৯।।

হে গণশ্রেষ্ঠ। এই দুই প্রকার বচন দান এবং আদানে রবির পরম প্রিয় এটি কল্যাণকর এ বিষয়ে কোনো সংশয় নেই।।২০।।

হে বিভো, মানবের শ্রেয় সম্পাদনের নিমিত্ত এই নন্দবিধি বলা হয়েছে। এই বিধানানুসারে যিনি সূর্যদেবের পূজা করেন তিনি সমস্ত প্রকার পাপ থেকে বিশেষরূপে মুক্তি লাভ করে সূর্যলোকে প্রতিষ্ঠা লাভ করেন।।২১।।

ন দারিদ্রয়ং ন রোগশ্চ কুলে তস্য মহাত্মনঃ। যোহনেন পুজয়েদ ভানুং ন শ্রয় সন্ততে স্তথা।।২২।। সূর্যলোকাচ্চতশ্চসৌ রাজা ভবতি ভূতলে। বহুরত্নসমাযুক্তস্তেজসাদ্বিজ সন্নিভঃ।।২৩।। পঠতাং শৃন্বতাং চেদং বিধানং ত্রি পুরান্তক। কং দদাত্যচলং দিব্যমম্বুজামচলাং তথা।।২৪।।

সেই মহাত্মা পুরুষ কোনো প্রকার দরিদ্রতা প্রাপ্ত হন না বা তাঁর বংশের কেউ কখনও রোগভোগ করেন না। যে ব্যক্তি এই রীতিতে ভগবান্ ভানুর পূজন করেন তাঁর কখন সন্তান ক্ষয় হয় না। যখন তিনি সূর্যলোক চ্যুত হয়ে ভূ-মন্ডলে আসেন, তখন তিনি রাজা হন। এ ছাড়া প্রভুর রত্নলাভ করে তেজের দ্বারা বিপ্রতুল্য হন। এই বিধান পাঠ করলে বা শ্রবণ করলে পাঠকারী বা শ্রবণকারীকে ত্রিপুরাম্ভক অচল দিব্য সুখ এবং অচলা লক্ষ্মী দান করেন।।২২-২৪।।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *