ব্রাহ্ম পর্ব
মধ্য পর্ব
প্রতিসর্গ পর্ব
1 of 3

ষষ্ঠীকল্পে ব্রাহ্মণ্য বিবেক বর্ণন

।। ষষ্ঠীকল্পে ব্রাহ্মণ্যবিবেক বর্ণনম্।।

।। ষষ্ঠীকল্পে ব্রাহ্মণ্যবিবেক বর্ণনা।।

এই অধ্যায়ে ষষ্ঠাকল্পে ব্রাহ্মণ্য বিবেক বর্ণিত হয়েছে।

বেদাধ্যানমপ্যেতদ্ ব্রহ্মণ্যং প্রতিপদ্যতে। বিপ্রবদ্বৈশ্যরাজন্যৌ রাক্ষসা রাবণাদয়ঃ।।১।। শ্বাদচান্ডালদাসাশ্চ লুব্ধকাভীবরাঃ। যেন্যেহপি বৃলাঃ কেচিত্তেপি বেদানবীয়তে।।২।।

শূদ্রা দেশান্তরং গত্বা ব্রাহ্মণ্যং ক্ষত্রিয়ংশ্রিতাঃ। ব্যাপারাকারভাষাদ্যৈর্বিপ্ৰতুল্যৈঃ প্ৰকল্পিতৈঃ।।৩।। বেদানধীত্য বেদৌ বা বেদং বাপি যথাক্রমম্। প্রাদ্বহন্তি শুভাং কন্যাং শুদ্ধব্রাহ্মণজাং নরাঃ।।৪।। অথ বাধীত্য বেদাংসু ক্ষত্রবৈশ্যৈস্ত বা নরাঃ। গৌড় পূর্বাং কৃতামেমুজাতিং বা দক্ষিণাত্যজাম্।।৫।। অপরিজ্ঞাত শূদ্রত্বাদ্ ব্রাহ্মণ্যং যান্তি কামতঃ। তস্মান্ন জ্ঞায়তে ভেদো বেদাধ্যায়ক্রিয়াকৃতঃ।।৬। শাস্ত্র কারৈস্তথা চোক্তং ন্যায়মার্গানু সারিভিঃ। তে সাধু মতমাকন্য সন্তঃ সন্তি বিমৎসরাঃ।।৭।। দত্বা বিপ্ৰায় চামাত্রং যচ্চান্যদপি বিদ্যতে। পশ্চাদভুঙক্তেত্বসৌ রাত্রৌ ভূমিং কৃত্বা তু।।৮।। অধীত্য চতুরো বেদান্যদি বৃত্তে ন তিষ্ঠতি। ন তেন ক্রিয়তে কার্যং স্ত্রীরত্নেনেব যংঢকঃ।।৯।।

ভগবান্ ব্রহ্মা বললেন, বেদাধ্যায়নের দ্বারা ক্ষত্রিয় ও বৈশ্য ব্রাহ্মণত্ব লাভ করতে পারে। রাবণাদি রাক্ষস, স্বাদ, চন্ডাল, দাস, লুব্ধক, আভীর, ধীবর অন্য কোনো বৃমল বেদাধ্যায়ন করতে পারে। শূদ্র ব্যক্তিবর্গ দেশান্তরে গমন করে বা ক্ষত্রিয়ের আশ্রয়ে থেকে ব্রাহ্মণতুল্য ব্যাপার, আকার ও প্রকল্পিত ভাষাদি ব্যবহার দ্বারা ব্রাহ্মণত্ব লাভ করতে পারে। সমস্ত বেদ বা দুই বেদ বা একটি মাত্র বেদাধ্যায়ন করে শূদ্র মনুষ্য ব্রাহ্মণ কন্যাকে বিবাহ করতে পারে।।১-৪।।

অনন্তর বেদাধ্যায়ন করে ক্ষত্রিয় ও বৈশ্যজাতির মনুষ্য দাক্ষিণাত্যজা বা গৌড় পূর্বাজাতি প্রাপ্ত হয়।। ৫।।

শূদ্রত্ব পরিজ্ঞাত না হলে ব্রাহ্মণত্ব লাভ করা যায়। সুতরাং বেদাধ্যায়ন সমস্ত ভেদ দূরীভূত করে। ন্যায় মার্গী শাস্ত্রবিদ্‌গণ একথা বলেছেন, তা শ্রবণ করে সম্ভপুরুষগণ মাৎসর্য রহিত হয়।।৬-৭।।

শিখাপ্রণবসংস্কার সন্ধ্যোপাসন মেখলাঃ। দন্ডাজিন পবিত্রাদ্যাঃ শূদ্রেস্বপি নিরংকুশাঃ।।১০।। প্রমঙ্গোপি হি শূদ্রাণাং ন শক্যো বিনিবারিতুম্। দেবোত্তমত্রয়েণাপি নিবর্ততে নরা স্বয়ম্।।১১।। তস্মান্নৈতেহপি লক্ষ্যন্তে বিলক্ষনতয়া নৃণাম্। যজ্ঞোপবীত সংস্কারমেখলা চুলিকাদয়ঃ।।১২।। আভিচারিক মন্ত্রাদ্যৈ দুর্লভত্বাদিভাষনেঃ। ব্রাহ্মণস্যৈব শক্তি শ্চেনাস্য বিনিহন্যতে।।১৩।। তপঃ মত্যাদি মাহাত্ম্যাদ্দৈবতা সময় স্তুতিঃ। মন্ত্রশক্তিনৃণামেষাং সর্বেৰ্যামপি বিদ্যতে।।১৪।। বচনং দুর্বচস্যাপি ক্রিয়তে সর্বমানবৈঃ। শূদ্রব্রাহ্মণয়োস্তস্থাত্রাস্তি ভেদঃ কথঞ্চন।।১৫।। শাপানুগ্রহকারিত্বং শক্তিভেদো ন বিদ্যতে। চৌরচাটাদিরাজন্য দুর্জনাভিহতে নৃণাম্।।১৬।।

ষড়ঙ্গ বেদপাঠ করলে আচারহীন ব্যক্তিকে পবিত্র বলে মনে করা হয় না। বেদাধায়ন তো ব্রাহ্মণগণের এক শিলা কলা বস্তুতঃ ব্রাহ্মণের প্রকৃত লক্ষণ হল তার চরিত্র। চার বেদ অধ্যয়ন করেও যদি ব্রাহ্মণ চরিত্রবান্ না হয় তাহলে নংপুসক যেমন স্ত্রীরত্ন লাভ করেও যেমন কোনো কার্য করতে পারে না, তেমন তিনি সমস্ত কার্যে হীন হন।।৮-৯।।

শিখা, প্রণব, সংস্কার, সন্ধ্যোপাসনা, মেখলাধারণা, দন্ড, অজিন এবং পবিত্রতা শূদ্রদের মধ্যেও নিরঙ্কুশ হয়। শূদ্রের প্রসঙ্গও বিনিবারিত হয় না। ত্রিদেবোত্তমের দ্বারা মনুষ্য স্বয়ং নিবৃত্ত হয়। তাই যজ্ঞোপবীত সংস্কার ইত্যাদি মনুষ্যগণের বিলক্ষণতা প্রকাশ করে না। আভিচারিকমন্ত্র ইত্যাদি দুর্লভ ভাষণ যদি কেবল ব্রাহ্মণের শক্তি হয় তা সেই শক্তির হনন কে করবে।।১০-১৩।।

তপ, সত্যাদি মাহাত্ম্য, দেবস্ময়স্তুতি ইত্যাদি তথা মন্ত্রশক্তি এই সকলই মানবগণের রয়েছে।।১৪।।

দুর্বচন ব্যবহারকারী মনুষ্যগণের বঞ্চনও সকল মানুষের দ্বারা হয়। এই কারণে শূদ্র এবং ব্রাহ্মণের ম্যধ্য কোনো প্রকার প্রভেদ নেই। শাপ দেওয়া বা অনুগ্রহ করা সেই শক্তির প্রভেদ হয় না যখন চৌরাচারাদি রাজন্য দুর্জনের দ্বারা কিছু বলে।।১৫-১৬।।

আত্মদুঃ খোদয়পায়ং স্বেযু জন্তুযু রক্ষণম্। কতুং ন প্রভবেচ্ছদ্রো ব্রাহ্মণ স্তদ্বদেব হি।।১৭।। মা ভূদ্যগে কলাবেতদ্দেশে চাকার্যবৃদ্ধিজে। স্যাদন্যদেশকালাদৌ দ্বিজানাতিশায়িনাম্।।১৮।। শাপানুগ্রহসামর্থ্যমন্যদ্বাধ্যাত্নগোচরম্। ব্রহ্মাসাধনমেতদ্ধি লিংগং কেচিৎ প্ৰচক্ষতে।।১৯।। সংসাররক্তচেতস্কা মোহন্ধিতমসাবৃতাঃ। পত্যুন মার্গগতেষু প্রত্যাগ্নি শলভা যথা।।২০। জাতিধর্মঃ স্বয়ং কিচিদ্বিশেমঃ শ্রুতিসংগমাৎ অসিদ্ধঃ শূদ্রজাতীনাং প্রসিদ্ধো বিপ্ৰজাতিযু।।২১।। সংস্কারো যোনিসাধ্যো বা সামগ্রী প্রভবোহল বা। শূদ্ৰেজ্যোহতিশয়ং বত্তৈ যঃ সাধারণতাগুণাঃ।।২২।। বিপ্ৰাণাং পঞ্চধা ভেদঃ কল্পনীয়স্তু পন্ডিতৈঃ। ন জাতিজ স্ত্ৰয়ীজো বা বিশেষো যুক্তিবাধকাৎ। ক্রমাক্রমক্ৰিয়াসন্তি ন সনাতন বস্তুনঃ।।২৩।।

আত্ম দুঃখ উদয়ের অপায় এবং নিজ জীব সংরক্ষণ কার্যে শূদ্র হয় না। একইভাবে ব্রাহ্মণও সমর্থ হয় না। এই কলিকালে অকার্যকারী দ্বিজের সেই ক্ষমতা নেই। এতদ্‌ অতিরিক্ত দেশ-কাল ভেদে অতি শক্তিশালী দ্বিজের এই শক্তি রয়েছে। শাপ দেওয়া বা অনুগ্রহ করা হল মনুষ্যের সামর্থ বা অধ্যাস বিষয়কজ্ঞান। কিন্তু কোনো কোনো বিদ্বান এই ক্ষমতাকে তাদের বিদ্বানত্বের চিহ্ন হিসাবে মনে করে।।১৭-১৯।।

সংসারাসক্ত, যোহান্ধকারাচ্ছন্ন ব্যক্তি অগ্নির প্রতি পতঙ্গের লাফানোর ন্যায় অসমার্গ গর্তে পতিত হয়। এখানে জাতির ধর্ম শ্রুতি সংযুক্ত কোনো বিশেষ বস্তু, যা শূদ্র জাতির দ্বারা সিদ্ধ হয় না, কেবল বিপ্রজাতিতেই প্রসিদ্ধ এখানে সংস্কার যোনিসাধ্য হয় অথবা সামগ্রী থেকে উৎপন্ন হয়, যা সামান্যতঃ শূদ্রগণের থেকে অতি বিশেষ হয়।।২০-২২।।

নিত্যো ন হেতুবিগত ক্ৰিয়ত্বাৎ হেতুভবেদ্বেদবিশেষতঃসঃ। স তৎসমস্তৎ প্রতিসন্নিধানাৎ কালাত্যয়েক্ষিত্বময়ুক্তমেব।।২৪।। স্বান্তঃ শরীরবৃত্তিস্থঃ শ্রুতিযোগদুদেতি যঃ। সোনন্যবেদবিজ্ঞাতস্বভান্যৈন গম্যতে।।২৫।। বিশিষ্টাধীতিধর্মত্বে কৃত্রিমা ব্ৰহ্মসংগতিঃ। যস্যাস্ত্যতিশয়স্তস্য নান্মো না শ্রয়তে যদি।।২৬।। দৃশ্যস্বভাবং কিমভীষ্টমেতদ্ ব্রাহ্মণ মাহোস্থিদহষ্টরূপম্। সর্বৈঃ প্রতীয়তে হি দৃশ্যরূপাং জ্ঞান্যথাবদগতিরেব ন স্যাৎ।।২৭।। সামগ্রয়ভাবাৎপরমং বিশেষং ভূদেব গাত্রস্থমভূমিদেবাঃ। স্মরন্তি তেনাত্মনি পুণ্যপাপং যথাতথেত্যেতদযুক্ত মুক্তম্।।২৮।। সামগ্ৰয়নুষ্ঠানগুণৈঃ সমগ্রা শূদ্রা যতঃ সন্তি সমা দ্বিজান্। তস্মদ্বিশেষো দ্বিজশূদ্রনাম্নো নাধ্যাত্মিকো বাহ্যনিমিত্তকো বা।।২৯।।

পন্ডিতগণ বিপ্রের পাঁচপ্রকার ভেদ স্বীকার করেন। যুক্তিবাধক বলে জাতি থেকে উৎপন্ন তথা বেদত্রয়ী দ্বারা প্রভূত ভেদ কিছু বিশেষতা প্রদান করে না। সনাতন বস্তুর কোনো ক্রমের বা অক্রমের ক্রিয়া হয় না। বিগত ক্রিয়ার জন্য হেতু নিত্য হয় না। বেদ বিশেষে তা হেতু হয়। সেটি তার প্রতিসন্নিধানবশতঃ ততুল্য ও কালাত্যপেক্ষিত্ব অযুক্ত হয়। নিজ অন্তঃকরণ ও শরীর বৃত্তিতে স্থিত যা শ্রুতিমার্গে উদিত হয় তা অনন্য বেদবিজ্ঞান স্বভাব ব্যতীত অজ্ঞাত হয়। বিশেষতাযুক্ত, অধ্যয়নকারীর ধর্ম হয় বলে ব্রহ্ম সঙ্গতি কৃত্রিম হয় যদি তার অতিশয়তা তা যদি অন্য আশ্রয় গ্রহণ না করে।।২৩-২৬।।

ব্রাহ্মণ দৃষ্ট স্বভাবে অভীষ্ট অথবা কোনো অদৃষ্ট স্বভাবে স্বরূপ? সকলের দ্বারা দৃশ্যরূপেই প্রতীতি হয়। তা ছাড়া অন্য কোনো গতি নেই। সামগ্রীর অভাবে ভূদেবের শরীর স্থিত সেই পরম বিশেষ যা অভূমিদেব অর্থাৎ অব্রাহ্মণ তিনি স্মরণ করেন। এতে আত্মতে যথা তথা পুণ্য-পাপ-অকথিতব্য।।২৭-২৮।।

সংস্কারতঃ সোহতিশায়ো যদি স্যাৎসর্বস্য পুংসোস্ত্যতি সংস্কৃতস্য। যঃ সংস্কৃতো বিপ্রগণ প্রধানো ব্যাসাদিকৈস্তেন ন তস্যসাম্যম্।।৩০।। হেতুত্বং ঘটতে ন্নৈষাং জাত্যদীনাম্ সম্ভবাৎ। জাতের কৃতকত্বাচ্চ অধীতে ন বিশেষতঃ।।৩১।। সংস্কারতিশয়াভাদন্তরস্যাগতে পরৈঃ। ভৌতিকত্বাচ্ছদীরত্য সমস্তানমসংহতৈঃ।।৩২।। কিং চান্যনাস্তিকম্লেচ্ছযবনাদিজনেম্বেলম্। বেদোদিত বহিদুষ্টচরিতেষু দুরাত্নসু।।৩৩।। ধর্মাদতিশয়ো হৃষ্টঃ কুরসাহসিকাদিযু। তস্মাদবিপ্রেযু জাত্যাদি সামগ্রী প্রভবো ন সঃ।।৩৪।। তস্মান্ন চ বিভেদোস্তি ন বহিনান্তরাত্মনি। ন সুখাদৌ ন চৈশ্চর্যে নাভয়েস্বপি।।৩৫।। ন বীমে নাকৃতৌ নাক্ষে ন ব্যাপারে ন চায়ুষি। নাঙ্গে পুষ্টে ন দৌবল্য ন স্থৈর্যে নাপি চাপলে।।৩৬।। ন প্রজ্ঞায়াং ন বৈরাগ্য ন ধর্মে ন পরাক্রমে। ন ত্রিবর্গে ন নৈপুন্য ন রূপাদৌ ন ভেষজে।।৩৭।।

অনুষ্ঠানগুণের দ্বারা যে সামগ্রী তা যাতে সম্পূর্ণ সেই শূদ্র দ্বিজ সমতুল্য। এই কারণে দ্বিজ এবং শূদ্র নামে যা কিছু বিশেষ তা আধ্যাত্মিক নয় বা বাহ্যনিমিত্তও নয়। সংস্কারের দ্বারা যদি তা অতিশয় হয় তাহলে সকল সংস্কৃতমনুষ্যেরই হবে। প্রধান সংস্কৃত বিপ্রগণ ব্যাসাদির দ্বারা তার সাম্য হয় না।।২৯-৩০।।

জাত্যাদি অসম্ভব বলে এর হেতুত্ব ঘটে না এবং জাতির অকৃতক বলে বিশেষরূপে অধ্যয়ন করে না। সংস্কারের অতিশয় অভাবের জন্য অপরের থেকে অন্তর হওয়ার জন্য অসংহতো থেকে সমস্ত শরীর ভৌতিক হওয়ার জন্য অন্য নাস্তিক, ম্লেচ্ছ, যবনাদিতে সমাপ্ত হয়?।।৩১-৩৩।।

বেদে বলা হয়েছে–ধর্মরহিত, দুষ্ট চরিত্র দুরাত্মা ক্রুর এদের দ্বারা বিপ্রগণের মধ্যে জাত্যাদি সামগ্রী থেকে উৎপন্ন হয় না। এর কোনো বিভেদ নেই।।৩৪-৩৫।।

ন স্ত্রীগর্ডেন গমনে ন দেহমল সংপ্লবে। নাস্তিরন্ধ্রেন চ প্রেম্নি ন প্রমানে ন লোমসু।।৩৮।। শূদ্র ব্রাহ্মণয়োভেদো মৃগ্যমাণোহপি যত্নতঃ। নক্ষতে সর্বধমেষু সমহতি স্ত্রিদশৈরপি।।৩৯।। উক্তমাত্রা বিসম্ভূতিবিচারক্রমকারিভিঃ। বৃদ্ধবৃন্দারকাধীশৈ প্রধৃষ্য মিদং বচঃ।।৪০।। ন ব্রহ্মণাশ্চন্দ্র মরীচিশুভ্রা ন ক্ষত্রিয়াঃ কিংশুকপুষ্পবর্ণাঃ। ন চেহ বৈশ্যা হরিতালতুল্যাঃ শূদ্রা ন চাংগার সমান বর্ণাঃ।।৪১।। পাদপ্রচারৈস্তনুবর্ণকেশৈঃ সুখেন দুঃখেন চ শোনিতেন। ত্বঙমাংসমেদোস্থিরসৈঃ সমানশ্চতুষ্পভেদা হি কথং ভবন্তি।।৪২।। বর্ণপ্রমাণাকৃতি গর্ভবাস বাগ্লু দ্ধিকমেন্দ্রিয়জীতেষু। বলত্রিবর্গামভ্যেজেযু ন বিদ্যতে জাতিকৃতো বিশেষঃ।।৪৩।। স এক এবাত্র পতিঃ প্রজানাং কথং পুনজাতিকৃত প্রভেদঃ। প্রমাণ হৃষ্টান্তনয়প্রবাদৈঃ পরীক্ষ্যমানো বিখত্ব মতি।৪৪

বীর্য, আকৃতি, ব্যাপার, অক্ষ, আয়ু, অঙ্গ, পুষ্ট, দুর্বলতা, স্থিরতা, চপলতা, প্রজ্ঞা, বৈরাপ্য, ধর্ম, পরাক্রম, ত্রিবর্গ, নৈপুণ্য রূপাদি ভেষক, স্ত্রীগর্ভ, গমষ, দেহ, মল,মংপ্লব, স্ত্রীরত্ন, প্রেম, প্রমাণ ইত্যাদিতে কোনো ভেদ হয়না। এই সকল ধর্মে দেখা যায় না।।৩৬-৩৯।।

বিচার ক্রমকারী উক্তমাত্রা বিসম্ভূতি হয়। বৃদ্ধ দেবাবীশের দ্বারা এই বচন অপ্রধয্য হয়। ব্রাহ্মণ চন্দ্রমা কিরণের ন্যায় শুভ্র হয় না এবং ক্ষত্রিয় ঢাকা পুষ্পের ন্যায় লালবর্ণের হয়না। বৈশ্য হরিতালের ন্যায় পীতবর্ণ হয়না এবং শূদ্র অঙ্গারের ন্যায় হয়না। পাদের প্রচার, শরীর বর্ণ, কেশ, সুখ-দুঃখ তথা রক্ত, ত্বক, মাংস, অস্থিত দ্বারা ব্রাহ্মণ ক্ষত্রিয় বৈশ্য শূদ্র- এই চার বর্ণের সমানতা রয়েছে। পুনরায় প্রভেদ কি করে সম্ভব।।৪০-৪২।।

চত্বার একস্যপিতু সুতাশ্চ তেমাং সুতানাং খুল জাতিরেকা। এবং প্রজানাং হি পিতৈক এবপিতৈকভাবান্ন চ জাতিভেদঃ। ৪৫।। ফলান্যথোদুম্বর বৃক্ষজাতে সাগ্র মধ্যান্ত ভবানি যানি। বর্গাকৃতি স্পশরসৈঃ সমানি তথৈকতো জাতিরতি প্রচিন্যা।।৪৬।। যে কৌশিকাঃ কাশ্যপগৌতমাশ্চ কৌন্ডিণ্যমান্ডব্য বশিষ্ঠগোত্রাঃ। আত্রেয় কৌৎসাংগিরস সগর্গা মৌদগল্যকাত্যায় নভাৰ্গবাশ্চ।।৪৭।। গোত্রানি নানাবিধজাতয়শ্চ ভ্রাতৃসুমৈথুন পুত্ৰভাবাঃ। বৈবাহিকং কর্মন বর্ণভেদাঃ সর্বানি শিল্পানি ভবস্তি তেষাম্।।৪৮।। মে চান্যে পন্ডিতাঃ প্রাহদেহব্রাহ্মণতাং নরাঃ। তেমাং দুদৃষ্টিতিমিপনীয়ানুকম্প্য চ।। ৪৯।। ন্যায়াজ্ঞণৌমধৈদিব্যৈঃ পরিণাম সুখাবহৈঃ। উপনীতৈঃ প্রমত্নেন সুদৃষ্টিং সংবিদদ্মহে।।৫০।। মূর্তিমত্ত্বাচ্চ নাশিত্বং নাশিত্বাচ্ছেষভূতবৎ। দেহৃধারনিবিষ্টানাং ব্রাহ্মণ্যং ন প্ৰকল্পতে।।৫১।। একৈকোবয়বস্তেষাং ন ব্রাহ্মণ্যং সমশুতে। ন চানেক সমূহেপি সর্বথাতিপ্ৰসংগতঃ।।৫২।। পৃথিIদকবায়বঅগ্নি পরিণামাবিশেষতঃ। দেহতঃ সর্বভূতানাং ব্রাহ্মণত্ব প্ৰসংগতঃ।।৫৩।।

বর্গ, প্রমাণ, আকৃতি, গর্ভবাস, বাণী, বুদ্ধি, কার্য, ইন্দ্রিয় এবং জীবন, তথাবল, ত্রিবর্গ, অভয়, ভেষজ ইত্যাদি দ্বারা চার বর্ণের ভেদ হয় না। সংসারে চারবর্ণের প্রভু একজনই, তবু প্রভেদ কি প্রকারে হয়। প্রমাণ দৃষ্টান্ত ও নয় প্রভেদ দ্বারা পরীক্ষা করে বিভ্রাটত্ব প্রাপ্ত হয়। একই পিতার চারপুত্র, তাদের সকলের একই জাতি। তাই এদের কোনো প্রভেদ নেই। উদুম্বর, আদি বৃক্ষের আদি, মধ্য অন্তে যে ফল হয় তা সমানই হয়। তাদের বর্ণ, আকৃতি, স্পর্শ একই হয়। সুতরাং ভিন্ন জাতির কথা চিন্তার বিষয়। কৌশিক, কাশ্যপ, গৌতম, কৌন্ডিন্য, মান্ডপ্য, বশিষ্ট, আত্রেয়, যৌদগল্য, কাত্যায়ণ, ভাগব ইত্যাদি গোত্র ভেদে জাতি বহুপ্রকার। অনেক প্রকার জাতি ভ্রাতৃ ঔরসজাত। বিবাহ কার্য দ্বারা জাতিভেদ হয়না। তা একপ্রকার শিল্প।।৪৩-৪৯।।

অন্য পন্ডিত মনুষ্য দেহকে ব্রাহ্মণ বলেন তাদের অজ্ঞানের অন্ধকার দূর করে জ্ঞান আমি প্রদান করব। দেহের আধারকে ব্রাহ্মণ বলে না। পৃথিবী, জল, বায়ু, অগ্নির পরিণামে কোনো বিশেষ ভাব হয় না বলে সমস্ত প্রাণীদেহে ব্রাহ্মণত্ব থাকতে পারে। তত্ত্ব না জানলে ব্রাহ্মণত্ব প্রাপ্ত হওয়া যায় না। অত্যন্ত প্রযত্নের সাথে ব্রাহ্মণত্ব জানতে হয়। যদি তোমরা এই দেহকে ব্রাহ্মণ বলে জান তাহলে চন্ডাল, শূদ্র প্রভৃতিকে ব্রাহ্মণ বলা হোতে পারে।

এই দেহগুণ বিশিষ্ট নাশশীল ভষ্মরাজি। তাই ব্রাহ্মণ দেহাত্মক হয়না। কর্মদ্বারা ব্রাহ্মণত্ব লাভ করতে হয়।।৫০-৫৩।।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *