।। ব্রাহ্মণলক্ষণ তথা ব্রাহ্মণকর্তব্যবর্ণনম্।।
।। ব্রাহ্মণ লক্ষণ তথা ব্রাহ্মণ কর্তব্য বর্ণনা।।
এই অধ্যায়ে ত্রৈবর্ণিকের প্রশংসা করে ব্রাহ্মণের লক্ষণ এবং কর্তব্য সম্পর্কে বলা হয়েছে।
ত্রয়ানামেব বণানাং জন্মতো ব্রাহ্মণঃ প্রভুঃ। সংসৃষ্টা ব্রাহ্মণাঃ পূর্ব তপস্তপ্তবা দ্বিজোত্তমাঃ।।১।। হব্যানামিহ কব্যানাং সর্বস্যাপি চ গুপ্তয়ে। অশ্বস্তি চ মুখেনায্য হব্যানি ত্রিদিবৌকম্।।২।। কব্যানি চৈব পিতরঃ কিং ভূতমধিকং ততঃ। জন্মনা চোত্তমোহয়ং চ সর্বাচা ব্রাহ্মনোহইতি।।৩।। স্বকীয়ং ব্রাহ্মনো ভুঙক্তে বিদধাতি দ্বিজোত্তমাঃ। ত্রয়াণামিহ বণানাং ভাবাভাবায় বৈ দ্বিজা।।৪।। ভবেদ বিপ্ৰ ন সন্দেহস্তষ্টো ভাবায় বৈ ভবেৎ। অভাবায় ভবেৎ ক্রদ্ধস্তস্মাৎপূজ্যঃ সদা হি সঃ।।৫।।
শ্রী সুতহী বললেন, তিনবর্ণের মধ্যে ব্রাহ্মণই হল প্রভু। হে দ্বিজোত্তম, তপস্যা করে প্রথমে ব্রাহ্মণের সৃষ্টি হয়।।১।।
এই লোকে হব্য এবং কাব্যের রক্ষার্থে দেবতা ব্রাহ্মণদের মুখ দিয়ে খাদ্যগ্রহণ করেন। সুতরাং ব্রাহ্মণজনক সর্বোত্তম এবং ব্রাহ্মণ সকলের পূজা গ্রহণের যোগ্য।।২-৩।।
ব্রাহ্মণ স্বয়ং খাদ্যগ্রহণ করেন এবং তিনবর্ণের ভাব ভাবের জন্য তাদেরও দান করেন।।৪।।
বিপ্র ভাবের জন্য তুষ্ট থাকেন এবং অভাব পরিলক্ষিত হলে তিনি ক্রুদ্ধ হন। এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।। এই জন্য ব্রাহ্মণ সর্বদা পূজনীয়।।৫।।
গভাধানাদয়শ্চেহ সংস্কার যস্য সত্তমাঃ চত্বারিশংস্তথা চাষ্টো নিৰ্বতা শাস্ত্ৰতো দ্বিজাঃ। স যাতি ব্রহ্মনাঃ স্থানং ব্রাহ্মণত্বেন দ্বিজাঃ।।৬।। সংস্কারপূতং প্রথমো বেদপুতো দ্বিতীয়কঃ। বিদ্যাতত্ত্বতীয় স্যাত্তীর্থপূতত্ত্বনন্তরম্।।৭।। ক্ষেত্রপূতম প্রবিজ্ঞায় বিপুতং পূজয়েদ দ্বিজাঃ। স্বগাপকাফলদমন্যথা শ্ৰমতায়িয়াৎ।।৮।। পূতানাং পরমঃ পূতো গুরুণাং পরমো গুরুঃ। সর্বসত্বান্বিতো বিপ্রো নিমিতো ব্রহ্মণ পুরা।।৯।। পূজয়িত্বা দ্বিজান্দেবাঃ স্বর্গং ভূজ্ঞত্তিচাক্ষয়ম্। মনুষ্যাশ্চাপি দেবত্বং স্বং স্বং রাজ্যংগতেন চ।।১০।।
হে দ্বিজবর্গ, এই লোকে গর্ভাধানাদি আটচল্লিশ সংস্কার যে ব্রাহ্মণ শাস্ত্রানুসারে পূর্ণ করেন, তিনি ব্রহ্মস্থান প্রাপ্ত হন এবং তিনি ব্রাহ্মণত্ব সংযুক্ত হন।।৬।।
যে ব্রাহ্মণ সংস্কার দ্বারা পবিত্র হন তিনি প্রথম, যিনি বেদাধ্যয়ন এবং অধ্যাপনের দ্বারা পূত হন তিনি দ্বিতীয়। বিদ্যা-জ্ঞান দ্বারা পূত ব্রাহ্মণ তৃতীয় স্থানপ্রাপ্ত হন। অনন্তর তীর্থের দ্বারা নিজেকে পূত করতে হয়। ক্ষেত্রপূত ব্রাহ্মণকে বিশেষরূপে জ্ঞাত হয়ে তাঁকে পূজা করতে হয়। অন্যথ্য স্বর্তাপকা ফল প্রদানকারী ক্ষমতা প্রাপ্ত হয়।।৭-৮।।
পূতগণের মধ্যে পরমপূত গুরুগণের মধ্যে পরমগুরু এবং সর্বসত্ত্বের দ্বারা অঙ্কিত বিপ্রকে ভগবান ব্রহ্মা প্রথমে সৃষ্টি করেছেন।।৯।।
দ্বিজগণকে পূজা করে দেবতা অক্ষয় স্বৰ্গ উপভোগ করেন। মনুষ্যগণও ব্রাহ্মণ অর্চনের দ্বারা নিজ নিজ রাজ্য লাভ করে দেবত্ব প্রাপ্ত হন।। ব্রাহ্মণের অর্চনের দ্বারাই এইসব সম্ভব।।১০।।
যস্য বিপ্রা প্রসীদন্তি তস্য বিষ্ণু প্রসীদতি। তস্মাদ ব্রাহ্মণপূজায়াং বিষ্ণুস্তয্যতি তৎক্ষণাৎ।।১১।। যস্মাদ বিষ্ণুমুখাদ বিপ্ৰ সমুদ্ভূত পুরাদ্বিজা। বেদান্তত্রৈব স জ্ঞতা সৃষ্টি সংহারহেতব।।১২।। তস্মাদ বিপ্রপ্রমুখে বেদাশ্চাপিতা পুরুযেন হি। পূজার্থং ব্রহ্মলোকানাং স্বজ্ঞানথতো ধ্রুবম।।১৩।। পিতৃযজ্ঞবিবাছে বহ্নিকাযেযু শান্তিষু। প্রশস্তা ব্রাহ্মণা নিত্যং সর্বস্ব স্ত্যয়নেষু চ।।১৪।। দেবাভুজ্ঞপ্তি হব্যানি বলিং প্রেতাদয়োহ সুরাঃ। পিতরো হব্যানি বিপ্রস্যৈব মুখাদ ধ্রুবম্।।১৫।। দেবেভ্যশ্চ পিতৃভ্যশ্চ যো দদ্যাদ্যজ্ঞকর্মসু। দানং হোমং বলিং চৈব বিনা বিপ্রেন নিষসালম্।।১৬।
ব্রাহ্মণ যার উপর প্রসন্ন হন, ভগবান বিষ্ণুও তার উপর প্রসন্ন হন। এই কারণে ব্রাহ্মণপূজন করলে বিষ্ণু তৎক্ষণাৎ প্ৰসন্ন হন।।১১।।
হে দ্বিজগণ, ভগবান বিষ্ণুর যে মুখ থেকে প্রথমে ব্রাহ্মণ উৎপন্ন হয়েছেন, বেদসকল সেখান থেকে উৎপন্ন হয়েছে যা জগৎ সৃষ্টির ও সংহারের হেতু। এই কারণে প্রথমে পুরুষ দ্বারা বিপ্রের মুখে বেদকে তিনি অর্পিত করেন। সকলের জ্ঞানার্থে নিশ্চিতরূপে বেদের সমর্পণ ব্রহ্মলোকের পূজা জন্য।। ১২-১৩।।
পিতৃযজ্ঞ, বিবাহ, বহ্নিকার্য, শান্তিকার্য এবং সমস্ত স্বস্ত্যয়ন কর্মে ব্রাহ্মণগণ প্রশস্ত।।১৪।।
ব্রাহ্মণের মুখ দিয়ে দেবগণ হব্য, প্রেতাদি অসুরগণ বলি এবং পিতৃগণ কব্য ভোগ করে থাকেন।।১৫।।
যে ব্যক্তি যজ্ঞকর্মে দেবগণের জন্য এবং পিতৃগণের জন্য দান, হোম এবং বলি প্রদান করেন তিনি ব্রাহ্মণের মাধ্য·ে দান করে সফল বন, অন্যথা সকল দান নিষ্ফল হয়।।১৬।।
বিনা বিপ্ৰং চ যো ধর্ম প্রয়াসফলমাত্রকঃ। ভূজ্ঞতে চাসুরাস্তত্র প্রেতা ভূতাশ্চ রাক্ষসা।। ১৭।। তস্মাদ ব্রাহ্মণমাহুয় তস্য পূজাচ কারয়েৎ।
কালে দেশে চ পাত্রে চ লক্ষকোটি গুনং ভবেৎ।।১৮।। শ্রদ্ধয়া চ দ্বিজং দৃষ্টা প্রকযাদ অভিবাদনম্। দীর্ঘায়ুস্তস্য বাক্যেন চিরঞ্জীবী ভবেন্নরঃ।।১৯।। অনভিবাদিনাং বিপ্রে দ্বেষাদ শ্রদ্ধয়াপি চ। আয়ু ক্ষীনং ভবেৎ পুংসা ভূমি নাশশ্চদুগতিঃ।। ২০।। আয়ুবৃদ্ধিযশোবৃদ্ধি বৃদ্ধি বিদ্যা মস্য চ। পূজয়িত্বা দ্বিজশ্রেষ্ঠান ভবেন্নাস্ত্যত্র সংশয়ঃ।।২১।। ন বিপ্ৰপাদোদক কদমানি/ ন বেদশাস্ত্রপ্রতিগজিতানি। স্বাহাস্বধাস্বস্তি বিরাজিতানি/ শ্মশানতুল্যানি গৃহানি তানি।। ২২।।
ব্রাহ্মণ ব্যতীত যিনি ধর্মকার্য করেন, তাতে কেবল চেষ্টাই সার হয়, অন্য সবকিছু নিষ্ফল হয়। সেখানে অসুর, প্রেত, ভূত এবং রাক্ষস সেই ফল ভোগ করে। এই কারণে ব্রাহ্মণের আবাহন করে, তাঁকে পূজা করতে হয়। দেশ কাল এবং পাত্রে লক্ষকোটিগুণ ফল প্রাপ্ত করা যায়। অর্থাৎ সমুচিৎ সময়, পবিত্র স্থান এবং পরমযোগ্য ব্রাহ্মণের পূজা অনেক গুণ ফল প্রদান করে।।১৭-১৮।।
ব্রাহ্মণকে শ্রদ্ধার সংগে দর্শন করতে হয়, এবং বিধিবৎ অভিবাদন করতে হয়। তিনি যে আশীর্বাণী প্রদান করেন, তাতে প্রণামকারী ব্যক্তি দীর্ঘায়ু হন এবং চিরকাল জীবিত থাকেন।১৯।।
কোন প্রকার দ্বেষ বা হিংসাবশতঃ যে ব্যক্তি ব্রাহ্মণকে অভিবাদন করেন না তিনি ক্ষীণায়ু হন এবং তাঁর ভূমিনাশ হয় ও তিনি দুৰ্গতিপ্রাপ্ত হন।।২০।। এই লোকে দ্বিজশ্রেষ্ঠগণের পূজার্চনা করলে আয়ু, যশ এবং ধন সম্পদ বৃদ্ধি প্রাপ্ত হয়, এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।।২১।।
যড়বিংশতি দোষমাহুনরা নরকভীরব। বিমুচৈব্য বসেতীর্থ গ্রামে বা পত্তনে বনে।।২৩।। তে স্বগে পিতৃলোকে চ ব্রহ্মলোকেম্ববস্থিতাঃ২৪।। অন্যথা ন বসেদ বাসস্তস্মাৎস্তেয়ী ন পালয়েৎ। অর্ধমো বিমমশ্চৈব পশুশ্চ বিশুনস্তথা।।২৫।। পাপিষ্ঠো নষ্ট কষ্টো চ রুষ্টো দুষ্টশ্চ পুষ্টক। হৃষ্টঃ কুণ্ঠশ্চ অন্ধশ্চ কানশ্চৈব তথাপবঃ।।২৬।। চন্ড খন্ডশ্চ বক্তাং চ দত্তস্যাপহরস্তথা। নীচঃ খলশ্চ বাচাল কদমশ্চপল স্তৰ্থা।।২৭।। মলীমসশ্চ তে দোসা ষড়বিংশতিরমী মতাঃ। এতেষাং চাপি বিপ্রেন্দ্রা পশ্চাশীতিনিগদ্যতে।।২৮।। শৃত্বং দ্বিজশাদূলা শাস্ত্রে স্থিনধ্রুবত ক্ৰমাৎ। অধমোহত্র ত্রিধা বিদ্যাদ্বিযম স্যাদ্বিধোচিতঃ।।২৯।।
যে ব্যক্তির গৃহ ব্রাহ্মণের পাদোদকে কর্দমাক্ত হয়নি, যে ব্যক্তির গৃহ বেদ ব্রাহ্মণ লক্ষণ তথা ব্রাহ্মণ কর্তব্য বর্ণন এবং শাস্ত্রমন্ত্র দ্বারা ধ্বনিত হয়নি, যে ব্যক্তির গৃহ স্বাবাও স্বধা তথা স্বস্তি বচনে রহিত সেই গৃহ শ্মশানতুল্য।।২২।।
নরকভীত মনুষ্য ছাব্বিশ (ষড়বিংশ) প্রকার দোষের কথা বলেন। এই দোয় থেকে নিবৃত্ত হতে তীর্থে, আশ্রমে, নগরে, বনে নিবাস করা উচিৎ। এই রকম মনুষ্য স্বর্গে, পিতৃ-লোকে, ব্রাহ্মলোকে অবস্থান করেন।।২৩-২৪।।
এতদ্ভিন্ন অন্য কোনো প্রকার নিবাস করা উচিৎ নয়। স্তেয়ী অর্থাৎ চোরকে পালন করা অনুচিত। অধর্মী, বিষম, পশু, পিশুন, পারিষ্ট, নষ্ট। কষ্ট, রুষ্ট, হৃষ্ট, পুষ্টক, দুষ্ট, কুষ্ট অন্ধ, কাণা এবং চন্ড, বক্তা, দত্তাপহারক নীচ, খল, বাচাল, কদর্য, চল, মলীমস–এইগুলি ষড়বিংশতি দোষের অন্তর্গত।। হে বিপ্ৰেল, এই সকল দোষকে পৈশাচী বলে।।২৫-২৮।।
পশুশ্চতুবিধশ্চৈব কৃপনোপি হি বৈ দ্বিধা। দ্বিধাযাপি চ পাপিষ্ঠো নষ্টা সপ্তবিধ স্মৃত।।৩০॥ কষ্ট স্যাৎপঞ্চধা জ্ঞেয়ঃ রুষ্টোপি স্যাদদ্বিধা দ্বিজা। দুষ্ট স্যাদ যড়বিধো পুষ্টশ্চৈবভবেৎ দ্বিবা।।৩১।। হৃষ্টচাষ্টবিধং প্রোক্তাং কুষ্ঠাশ্চৈব ত্রিধোদিতঃ।
অন্ধঃ কানশ্চ তৌ দ্বৌ দ্বৌ স্যাদ্বৌ চ সগুণোহগুণঃ।।৩২ দ্বৌ চড়ৌ চপলশ্চৈকাবন্ডচন্ডৌ দ্বিগুভবেৎ। দন্ডপন্ডৌ তথা জ্ঞেয়ৌ খলনীচৌ চতুদ্বয়ম্।।৩৩। বাচালশ্চ কদৰ্যশ্চ ক্রমাত্রিভিরুদাহাতঃ। কদর্যশ্চপলশ্চৈব তথা জ্ঞেয় মলীমসঃ।।৩৪।। দ্বাবেকৌ চতুরশ্চৈব স্তেয়ী চৈকবিধো ভবেৎ। পৃথগলক্ষণমেতেষা শুনুধ্বং দ্বিজসত্তমাঃ।।৩৫।। সম্যগ্যস্য পরিজ্ঞাং নরো দেবত্বমাপুয়াৎ। উপানচ্ছত্রধারী চ গুরুদেবাগ্রতশ্চরন্।।৩৬।।
হে দ্বিজ শার্দুল, অতঃপর আপনি শাস্ত্রানুসারে ঐ সকল দোষ ক্রমানুসারে শ্রবণ করুন। অধম তিন প্রকার, বিযম দুই প্রকারের হয়। পশু চার প্রকার, কৃপণ দুই প্রকারের বলা হয়। পাপিষ্ট দুই রকমের এবং নষ্ট সাত প্রকারের হয়।।২৯-৩০।
কষ্ট পাঁচ প্রকার রুষ্ট দুই প্রকার এবং দুষ্ট ছয় প্রকার, পুষ্ট দুই প্রকার, হৃষ্ট আট প্রকার ভেদ বিশিষ্ট। কুন্টের ভেদ তিন প্রকার, অন্ধ ও কাণা দুই প্রকারের এবং সগুণও অগুণ দুই প্রকারের হয়।।৩১-৩২।।
চন্ড ও চপল দুই প্রকারের। দন্ড ও পন্ড এক প্রকারের এবং খল ও নীচ চার প্রকার বিশিষ্ট হয়।।৩৩।।
বাচাল ও কদর্য ক্রমান্বয়ে তিন প্রকারের হয়। মলীমসও তিনপ্রকারের হয়।। এগুলি এক, দুই ও চার প্রকারেরও হয়, স্তেয়ী এক প্রকারেরই হয়। হে দ্বিজশ্রেষ্ঠ, এবার এর পৃথক লক্ষণ শ্রবণ কর।।৩৪-৩৫।।
উচ্চাসনং গুরোরগ্রে তীর্থযাত্রং করোতিযঃ। যানমারুহ্য বিপ্রেন্দ্রা সোপ্যেকত্রাধমো মতঃ।।৩৭।। নিমজ্জ্য তীর্থে বিধিবদগ্রাম্যধমেন বর্তয়ন্। দ্বিতীয়শ্চাধম প্রোক্তা নিন্দিত পরিকীতিত।।৩৮।। বাকচৈব মধুরাশলক্ষনা হৃদি হলাহলং বিষম্। বাদতন্যরোত্যন্যদবাবেতৌ বিষমৌ স্মৃতৌ।।৩৯। মোক্ষচিন্তামতিক্রয্য মোহন্যচিত্তাপরিশ্রমঃ। হরিসেবা বিহীনো য স পশুমোনিতঃ পশুঃ। ৪০ । প্রয়াগে বিদ্যমানেঽপি যোহন্যত্র স্লামমাচরেৎ। দৃষ্টং দেবং পরিত্যজ্য অদৃষ্টং ভজতে তুর্যঃ।।৪১।। আয়ুযস্তু ক্ষায়াথায় শাস্ত্রেয়মূষিসম্মতঃ। যোগাভ্যাসং ততো হিত্বা তৃতীয়শ্চাধম পশুঃ।।৪২।।
সম্যক্ রূপে পরিজ্ঞাত মনুষ, দেবত্বপ্রাপ্ত হন। যে ব্যক্তি উপানৎ ও ছত্রধারণপূর্বক গুরু এবং দেবতার অগ্রে চলেন এবং যিনি গুরুদেবের থেকে উচ্চাসনে উপবিষ্ট হন তথা তীর্থযাত্রাকালে যানারূঢ় হন, হে বিপ্রেন্দ্ৰ তিনি মনুষ্য হয়েও অধমরূপে পরিচিত হন।।৩৬-৩৭।।
তীর্থে নিমজ্জন করে যিনি গ্রাম্যধর্ম আচরণ করেন তিনি দ্বিতীয় প্রকার অধমরূপে পরিচিত হন এবং তিনি নিন্দিত হন।।৩৮।।
যে ব্যক্তির বচন মধুর কিন্তু হৃদয়ে হলাহল, যার বচন এবং কর্মের মধ্যে সঙ্গতি নেই তাকে বিষম বলা হয়।।৩৯।।
যে ব্যক্তি সংসারের জন্মমৃত্যু-বন্ধন থেকে মুক্তির কথা চিন্তা না করে অর্থাৎ মোক্ষ চিন্তা না করে অন্য চিন্তায় নিমগ্ন হন, তিনি পশুযোনি থেকে পশুত্ব প্রাপ্ত হন।।৪০।।
প্রয়াগে বিদ্যমান থেকেও তিনি অন্যত্র স্নান করেন এবং ইষ্ট চিন্তা ত্যাগ করে অদৃষ্ট চিন্তা করেন এবং আয়ুক্ষয়ের জন্য ঋষিপ্রোক্তা সমস্ত যোগাভ্যাস ত্যাগ করেন তিনি তৃতীয় প্রকার অধমরূপে এবং পশুরূপে পরিগণিত হন।।৪১-৪২।।
বহুনি পুস্তকানীহ শাস্ত্রানি বিবিধানি চ। তস্য সারং ন জানাসি স এব জম্বুক পশুঃ।।৪৩।। বলেনচ্ছলছঘেন উপায়েন প্ৰবন্ধনম্। সোহপি স্যাৎপশুনঃ খ্যাত প্রনয়া দ্বিতীয়কঃ।।৪৪।। মধুরান্নং প্রতিষ্ঠাপ্য দৈবে পিত্রে চ কর্মানি। ম্লানং চাপি চ তিত্তগন্নং য প্রযচ্ছতি দুর্মতিঃ।।৪৫।। কৃপনঃ স তু বিজ্ঞেয়ো ন স্বগী ন চ মোক্ষভাবং কুদাতা চ মুদ্রা হীন সক্রোধস্তযজেত য।।৪৬।। স এব কৃপন খ্যাত স্বধমবহিস্কৃতঃ। অদোযেন শুভত্যাগী শুভ কাযোপবিক্রয়ী।।৪৭।। পিতৃমাতৃগুরুত্যাসী শৌচাচারবিবজিতঃ। পিত্রোরগ্রে সমম্মাতি স পাপিষ্ঠতমঃ স্মৃতঃ।।৪৮।।
এই সংসারের প্রভূতগ্রন্থরাশি এবং শাস্ত্র দর্শন করেও তার সার গ্রহণ করেন না যে ব্যক্তি তিনি জম্বুক তুল্য পশুরূপে পরিচিত।।৪৩।!
ছল, বল বা কৌশলের দ্বারা যিনি প্রকৃষ্টরূপে বন্ধন করেন তিনি পিশুন বা প্রণয় রূপে খ্যাত।।৪৪।।
দৈব এবং পিতৃকর্মে যিনি মধুরান্ন প্রতিষ্ঠা করেও ম্লান এবং তিক্তান্ন প্রদান করেন, সেই দুর্মতিকে কৃপণ বলা হয়। তিনি স্বর্গের অধিকারীও হননা আবার মোক্ষপ্রাপ্তও হননা। কুৎসিৎ বস্তু প্রদানকারী আনন্দ এবং প্রসন্নতারহিত ও ক্রোধী–এইরূপ যজনকারী ব্যক্তিও কৃপণ হন। তিনি স্বধর্ম থেকে বহিস্কৃত হন। অদোষের দ্বারা তিনি শুভত্যাগী এবং শুভকার্যের উপবিক্রয়ী হন। মাতা, পিতা এবং গুরুত্যাগী তথাশৌচও আচারবর্জিত এবং মাতা-পিতার পূর্বে ভোজনকারী পাপিষ্টতম হন।।৪৫-৪৮।।
জীবৎপিতৃপরিত্যক্তং সুতং সেবেন্ন বা ক্বচিৎ। দ্বিতীয়স্তু স পাপিষ্ঠো হোমলোপী তৃতীয়ক।।৪৯।। সাধ্বাচারং চ প্রচ্ছাদ্য সেবনং চাপি দশয়েৎ। স নষ্ট ইতি বিজ্ঞেয় ক্রয়ক্রীতং চ মৈথুন্য।।৫০।। জীবদ্দেলবৃতির্য ভার্যাবিপনজীবকঃ। কন্যাশুলেকন জীবেদ্বা স্ত্রীধনেন চ বাক কচিৎ।।৫১।। বড়েব নষ্টা শাস্ত্রে চ ন স্কামোক্ষভাগিনঃ। সদাক্রদ্ধং মনো যস্য হীনং দৃষ্টবা প্রকোপবান্।।৫২।। ভ্রুকুটীকুটিল ক্রুদ্ধো রূষ্ট পঞ্চবিধোদিতঃ। অকামে ভ্রমতে নিত্যং ধর্মানে ব্যবস্থিতঃ।।৫৩।। নিদ্রালুব্যসনাসক্তো মদ্যপ স্ত্রীনিযেবক্। দুষ্টৈ সহ সদালাপ স দুষ্ট সপ্তধাস্মৃতঃ।।৫৪।
কোনো সময়েই পিতৃপরিত্যক্ত পুত্রের সেবা করা উচিত নয়। যে ব্যক্তি তাঁর জীবিত পিতা-মাতাকে ত্যাগ করেন তিনি দ্বিতীয় প্রকার পাপিষ্ঠ।। যিনি হোম লোপ করেন তিনি তৃতীয় প্রকার পাপিষ্ঠ।।৪৯।।
সাধু আচার প্রচ্ছাদনপূর্বক যিনি সেবা করেন তিনি ‘নষ্ট’ রূপে পরিচিত হন। যিনি ক্রয়ের দ্বারা মৈথুন করেন তিনিও নষ্ট হন।।৫০।।
যিনি দেবপূজনপূর্বক জীবিকা নির্বাহ করেন বা ভার্যার বিপণের দ্বারা জীবিকা নির্বাহ করেন, বা যিনি কন্যা শুল্কের দ্বারা জীবিকা নির্বাহ করেন বা যিনি স্ত্রীধনের দ্বারা জীবিকা নির্বাহ করেন–এই প্রকার মনুষ্য নষ্ট হন। তাঁরা স্বর্গতথা মোক্ষ প্রাপ্ত হন না। শাস্ত্রে এঁদের নষ্ট বলা হয়। যাদের মন সদা ক্রোধে পরিপূর্ণ এবং নিজ অপেক্ষা হীনদের দেখে ক্রুদ্ধ হন এবং যারা সর্বদা তির্যক ভ্রুকুটিযুক্ত হন এবং ক্রুদ্ধ হন এই পাঁচপ্রকার ব্যক্তি ‘রুষ্ট’ নামে পরিচিত হন। এরা সর্বদা অধর্ম এবং অকার্য করে থাকেন।।৫১-৫৩।।
নিদ্রালু, ব্যসনাসক্ত এবং স্ত্রীনিষেক, দুষ্টের সংগে বার্তালাপকারী এইরূপ দুষ্ট সাত প্রকার।।৫৪।
একাকী মিষ্টমশ্নাতি বঞ্চকঃ সাধুনিন্দকঃ। যথা সূকরঃ পুষ্টঃ স্যাত্তথা পুষ্টঃ প্রকীতিতঃ।।৫৫।। নিগমাগমতনন্ত্রানি নাধ্যাপয়তি যো দ্বিজঃ। ন শৃনোতি চ পাপাত্মা স দুষ্ট িিত চোচ্যতে।।৫৬।। শ্রুতিঃ স্মৃতিশ্চ বিপ্ৰাণাং নয়নে দ্বে বিনিমিনে একেন বিকল কানো দ্বাভ্যামন্ধ প্রকীতিতঃ।।৫৭।। বিবাদ সোদরৈ সাদ্বং পিত্রোরপ্রিয়কৃদ্বদেৎ। দ্বিজাধম স বিজ্ঞেয়ঃ স চন্ড শাস্ত্রনিন্দিতঃ।।৫৮।। পিশুনো রাজগামী চ শূদ্রসেবক এব চ। শূদ্রাংগনাগমো বিপ্র স চন্ডশ্চ দ্বিজাধর্মঃ।।৫৯।। পঞ্চান্নং শূদ্রগেহে চ যো ভুংক্তে সকৃদেব বা পঞ্চরাত্রং শূদ্রগেহে নিবাসী চন্ড উচ্যতে।।৬০।।
একাকী মিষ্ট দ্রব্য ভক্ষণকারী, বঞ্চক, সাধুব্যক্তির নিন্দাকারী পুষ্ট বলে পরিচিত।।৫৫।।
নিগম, আগম ও তন্ত্র যে দ্বিজ পাঠ করেন না বা শ্রবণ করেন না সেই পাপাত্মা ‘দুষ্ট’ নামে পরিচিত।।৫৬।।
শ্রুতি ও স্মৃতি— এই দুই প্রকার ব্রাহ্মণের নেত্র। যিনি এই দুই প্রকারের মধ্যে কোনো এক প্রকার রহিত হন তিনি ‘কাণা’ বা যিনি দুই প্রকারই রহিত হন তিনি ‘অন্ধ’ বলে পরিচিত হন।।৫৭।।
সোদরের সংগে বিবাদকারী ব্যক্তি, মাতা-পিতাকে অপ্রিয় বচন প্রদানকারী দ্বিজ শাস্ত্রনিন্দিত এবং নরাধম হন। তাকে ‘চন্ড’ বলা হয়।।৫৮।।
যে বিপ্র পিশুন, রাজগামী, শূদ্রসেবক, শূদ্রাঙ্গনাগমনকারী সেই দ্বিজাধম ‘চন্ড’ বলে কথিত।।৫৯।।
শূদ্র গৃহে একবার পক্কান্ন ভোজনকারী এবং পাঁচরাত্রি বাসকারী বিপ্রকেও ‘চন্ড’ বলা হয়।।৬০।।
অষ্টকুষ্ঠান্বিতঃ কুষ্ঠী ত্রিকুষ্ঠী শাস্ত্রনিন্দিত। এতৈ সহ সদালাপ স ভবেত্তৎ সমোধমঃ।।৬১।। কীটবদ ভ্রমনং যস্য কুব্যাপারী কুপন্ডিত। অজ্ঞানাচ্চ বদেদ্ধর্মগ্রবৃত্তি প্ৰধাবতি।।৬২।। অবিমুক্তং পরিত্যজ্য যোহন্যদেশে বসেচিচরম্ স দ্বিধা শূকরপশুনিন্দিতঃ সিদ্ধসম্মতঃ।।৬৩।। কপোলেন হি সংযুক্তো ভ্রুকুটীকুটিলাননঃ। নৃপবদ দন্ডয়েদ্যস্তু স দন্ড সমুদাহৃত।।৬৪।। ব্রহ্মস্বহরণং কৃত্বা নৃপদেবস্বমেব চ। ধনেন তেন ইতরং দেবং বা ব্রাহ্মণানপি।।৬৫।। সম্ভপয়তি যোহশ্নাতি য প্রযচ্ছতি বা ক্বচিৎ। স খরশ্চ পশুশ্রেষ্ঠ সর্ববেদেষু নিন্দিত।।৬৬।। অক্ষরাভ্যসনিরতঃ পঠতেব ন বুধ্যতে। পদশাস্ত্রপরিত্যক্ত স পশু স্যান্ন সংশয়।।৬৭।।
অষ্টকুষ্ঠী, কুষ্ঠী, ত্রিকুষ্ঠী শাস্ত্রনিন্দিত। এদের সঙ্গে সদাবার্তালাপকারীও সমান নিন্দিত।।৬১।।
যিনি কীটবৎ ভ্রমণ করেন, কুব্যাপারী ও কুপন্ডিত, যিনি অজ্ঞতার দ্বারা ধর্মব্যাখ্যা করেন এবং অগ্রবৃত্তি হয়ে প্রধাবন করেন, এ ছাড়া যিনি অবিযুক্তকে পরিত্যাগ পূর্বক অন্য দেশে ভ্রমণ করেন তিনি দুই প্রকার শূকর পশুর ন্যায় — একথা সিন্ধ সম্মত।।৬২-৬৩।।
কপোল দ্বারা সংযুক্ত, ভ্রুকুটি প্রদানকারী এবং কুটিলানন নৃপতুল্য দন্ড প্রদানকারী, তাকে ‘দন্ড’ বলা হয়।।৬৪।।
ব্রহ্মস্ব হরণ করে বা নৃপ ও দেবধন হরণ করে ইতর, দেবতা বা ব্রাহ্মণের তৃপ্তি বিধান করেন বা নিজে ভোগ করেন বা দান করেন তিনি বেদ নিন্দিত হন।।৬৫-৬৬।।
যিনি অক্ষরাভ্যাস থেকে নিরত বা যিনি কেবল পাঠ করেন অর্থ বোঝেন না তিনি পদশাস্ত্র পরিত্যক্ত পশুতুল্য–এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।।৬৭।।
বদত্যন্যৎ করোত্যন্যদগুরুদেবাগ্রতো যত। স নীচ ইতি বিজ্ঞেয়ো হ্যানাচারস্তথাপরঃ।।৬৮।। যড় গুণালং কৃতে সাধোদোষানমৃগয়তে খল। বনে পুষ্পফলাকীনে কালভ কন্টকানিব।।৬৯।। দৈবেন চ বিহীনো য কুসং ভাষাং বদেতু য। স বাচাল ইতি খ্যাতো যো হ্যাপত্ৰ পতায়ুত।।৭০।। চান্ডলৈ সহ আলাপ পক্ষিণং পোষণ্যেরত। মাজারৈশ্চাপি সংভুঙক্তে যৎকৃত্যং মকটোদিতম্।।৭১ তুনচ্ছেদী লোষ্টমদী বৃথা মাংসাশনশ্চ য। চপল সতু বিজ্ঞেয় পরভাষারতস্তথা।।৭২।। স্নেহোদ্বর্তনহীনো যো গন্ধচন্দন বজিতঃ। নিত্যক্রিয়া অকুবানো নিত্যং স চ মলীমসঃ।।৭৩।।
যে ব্যক্তি গুরু ও দেবতার সম্মুখে যা বলেন তা আচরণ করেন না তিনি নীচ এবং অনাচারী।।৬৮।।
ছয়প্রকার গুণে বিভূষিত সাধুব্যক্তিকেও যিনি ‘খল’ মনে করেন তিনি নিজে ‘খল’। তিনি পুষ্প ও ফলে সমাকীর্ণ বনে শলভ কন্টক অন্বেষণকারী।।৬৯।।
দেববিহীন ও কুভাষা উচ্চারণকারী বাচাল লজ্জা রহিত হন।।৭০।।
চন্ডালের সংগে আলাপকারী, পক্ষী পোষণে রত, বিড়ালের সংগে যিনি ভোজন করেন, মর্কটের ন্যায় কৃত্যকারী ও যিনি তৃণ ছেদনকারী, বৃথা লোষ্টসদী এবং মাংস ভোজনকারী তথা পরস্ত্রীতে রত ‘চপল’ নামে পরিচিত।।৭১- ৭২।।
যিনি স্নেহ তৈলাদি ও বর্তনহীন ও গন্ধচন্দনবর্জিত এবং নিত্য ক্রিয়া রহিত তিনি নিত্যমলীমস।।৭৩।।
অন্যায়েন গৃহং বিন্দেদন্যায়েন গৃহান্ধনম্। শাস্ত্রাদন্যগৃহং মন্ত্রং স স্তেয়ী ব্রহ্মঘাতকঃ।।৭৪।। দেবপূস্তকরত্নানি মনিমুক্তাষচমেব চ। গোভূমি স্বর্ণহরন স স্তেয়োতি নিগদ্যতে।।৭৫।। দেবোঽপি ভাবয়েৎ পশ্চান্মানুযোঽপি ন সংশয়। অন্যোন্যভাবনা কাযা স স্তেয়ী যোন ভাবয়েৎ।।৭৬।। গুরো প্রসাদাজয়তি পিত্রোশ্চাপি প্রসাদতঃ। করোতি চ মথাহ চ স চ স্বর্গে মহীয়তে।।৭৭।। ন পোষয়তি দুষ্টাত্মা স স্তেয়ো চাপর স্মৃতঃ।।৭৮।। উপকারিজনং প্রাপ্য ন করোতি পরিযিক্রয়াম্। স তপ্তনরকে শেতে শোনিতে চ পতত্যর্ধঃ।।৭৯।। সর্বেষাং চ সবনানাং ধমতো ব্রাহ্মণপ্ৰভু। পৃথিবীপালকো রাজা ধর্ম চক্ষুরুদায়ঃ।।৮০।।
অন্যায়ভাবে গৃহপ্রাপ্তকারী, অন্যায়পূর্বক ঘর ও ধনসম্পদ লাভ, শাস্ত্রবিরুদ্ধ গৃহ ও মান যিনি প্রাপ্ত হন তিনি ব্রহ্মঘাতক স্তেয়ী হন।।৭৪।।
দেবতা, পুস্তক, রত্ন, মণিমুক্তা, অশ্ব, গো ভূমি এবং সুবর্ণ হরণকারী স্তেয়ী।।৭৫।।
দেবতাভাবনাপূর্বক মনুষ্য ভাবনা করা উচিৎ–এতে কোনো সংশয় নেই। অন্যান্য ভাবনা বা একাগ্রচিত্তে ভাবনা করা উচিৎ।।৭৬।।
দেবতাভাবনাপূর্বক মনুষ্য ভাবনা করা উচিৎ–এতে কোনো সংশয় নেই। অন্যান্য ভাবনাও করা উচিৎ। যিনি যথাযথ তা করেন না তিনিও স্তেয়ী।।৭৭-৭৮।।
যিনি উপকারীজনপ্রাপ্ত হয়েও তাদের পরিস্ক্রিয় করেন না অর্থাৎ তাদের প্রত্যুপকার করেন না তিনি তপ্ত নরকে পতিত হন এবং রক্তে তাদের অধঃপতন ঘটে।।৭৯।।
সমগ্র সবর্ণধর্মে ব্রাহ্মণ প্রভু। পৃথিবী পালনকারী রাজা ধর্মের চক্ষুস্বরূপ।।৮০।।
প্রজাপতেমুখোড়ুতো হোরাতন্ত্রে যথোদিতম্। তদ্বিদো গননাভিজ্ঞা অন্যবিপ্রাঃ প্রচক্ষতে।।৮১।। গঙ্গাহীনো হতো দেশো বিপ্ৰহীনা যথা ক্রিয়া। হোরাজ্ঞপ্তিবিহীনো যো দেশোহসৌ বিপ্লবপ্লব।।৮২।। অপ্রদীপা যথা রাত্রিরনাদিত্যং যথা ণভঃ। তথাহসাংবৎসরো রাজা ভ্রমত্যন্ধ ইবাধ্বনি।।৮৩।। স্থাপয়েদ্ধমতো বিপ্রং ভাবয়েক্তমবৃদ্ধয়ে। শ্মশ্রুযুক্তো দ্বিজঃ পূজ্য সূযোবিপ্ৰস্তু শ্মশ্রুলঃ।।৮৪।। প্রত্যেক প্রদর্শণাৎপুন্যং ত্রিদিং কল্মষাপহম্। দশনে ব্রাত্যবিপ্রস্য সূর্যং দৃষ্টা বিশুধ্যতি।।৮৫।। ন ব্রাত্যত্বং সূর্যবিপ্রে পূজয়েদ্যজ্ঞসিদ্ধয়ে। জ্যোতিবেদস্যাধিকরঃ সূর্যবিপ্রস্য বৈ দ্বিজা।।৮৬।।
প্রজাপতির মুখ থেকে ব্রাহ্মণ উদ্ভূত হন–হোৱাতন্ত্রে এরূপ বলা হয়েছে। তাকে যিনি জ্ঞাত হন তিনি গণনাতে অভিজ্ঞ হন।।৮১।।
যে দেশ গঙ্গাহীন, বিপ্রহীন এবং ক্রিয়াহীন এবং যে দেশ হোরাক্রিয়াহীন সেই দেশ বিপ্লবের দ্বারা প্লাবিত হয়।।৮২।
অপ্রদীপ রাত্রি ও আদিত্যহীন আকাশ যে দেশে সেখানে রাজা অন্ধের ন্যায় ভ্রমণ করেন।।৮৩।।
ধর্মের দ্বারা বিপ্রকে স্থাপনা করে কার্যবৃদ্ধির জন্য ভাবনা করতে হয়। শ্মশ্রুযুক্ত দ্বিজ পূজনীয় হন। তিনি সূর্যতুল্য।।৮৪।।
তাঁকে প্রত্যক্ষ দর্শন করলে পুণ্য হয় এবং ত্রিশ দিন পর্যন্ত প্রত্যক্ষ করলে কলুষ দূরীভূত হয়। ব্রাত্য বিপ্রকে সূর্যের ন্যায় দর্শন করে বিশুদ্ধিপ্রাপ্ত হওয়া যায়।।৮৫।।
সূর্য বিপ্রে ব্রাত্যত্ব নেই। যজ্ঞের সিদ্ধির জন্য পূজা করা উচিৎ। হে দ্বিজ, বিপ্রের জ্যোতির্বেদে অধিকার আছে।।৮৬।।
জাতিভেদাশ্চ চত্বারো ভোজকঃ কথকস্তথা। শিববিপ্রঃ সূর্যবিপ্রশ্চতুর্থঃ পরিপঠ্যতে।।৮৭।। কথকো মধ্যমস্তেষাং সূৰ্যবিপ্ৰস্তথোত্তমঃ। শিবলিঙ্গাচণরতঃ শিববিপ্ৰস্তু নিন্দিতঃ।।৮৮। সূর্যবিপ্রস্য বৈদ্যস্য চ নৃপস্য চ। প্রবাসয়েদক্ষতেন সপুত্রপশুবান্ধবঃ। অবধ্যঃ সর্বলোকেষু রাজা রাজ্যেন পালয়েৎ।।৮৯।। বসুভির্বস্ত্ৰগন্ধাদ্যৈমালৈশ্চ বিবিধৈরপি। দেশচক্রবিদঃ পূজ্যা হোরাচক্রবিদঃ পরাঃ।।৯০।। সূর্যচক্রবিদঃ পূজ্যা নাবমন্যেৎকথঞ্চন। সিদ্ধ্যদ্ধিং চ ধনদ্ধি চ য ইচ্ছেদায়ুষা সমম্। গনবিপ্ৰসমঃ পূজ্যো দৈবজ্ঞ সমুদাহৃতঃ।।৯১।।
জ্ঞাতিভেদ চার প্রকার। যথা ভোজক, কখক, শিববিপ্ৰ এবং সূৰ্যবিপ্ৰ।।৮৭।।
এই চারপ্রকারের মধ্যে কত্থক মধ্যম এবং সূর্য বিপ্র উত্তম বলা হয়। শিবলিংগ অর্চনেরত শিববিপ্র নিন্দিত হন।।৮৮।।
সূর্যবিপ্র, বৈদ্যবিপ্র এবং নৃপতি সপুত্র, সবান্ধব এবং অবধ্য। তিনি রাজ্যপালন করবেন।।৮৯।।
দেবচক্র ও হোরাচক্রজ্ঞাত বিদ্বান্ বহুবিধ ধনসম্পদ, বস্ত্র, গন্ধ ও মাল্যের দ্বারা পূজার যোগ্য।।৯০।।
সূর্যচক্রবিদ্ পূজনীয় হন। তাঁকে কদাপি অবমাননা করা উচিৎ নয়। ধনসম্পদ, সিদ্ধি ইত্যাদি আয়ুর তুল্য প্রার্থনা করলে তাঁকে পূজা করা আবশ্যক।। গণ বিপ্রতুল্য দেবজ্ঞ বিপ্ৰ পূজ্য — একথা বলা হয়।।৯১।।
জাতে বালে নিরূপ্যে চ লগ্নগ্রহ নিরূপনম্। সংস্থানং সূর্যবিপ্রো যঃ সূর্যবিপ্রস্য সতমাঃ। দ্বিমাত্রিকাং সমভ্যস্য সর্ববেদফলং লভেৎ।।৯২।।
বালক জন্মগ্রহণ করলে তার লগ্ন, গ্রহ নিরূপণ করতে হয়। হে শ্রেষ্ঠবর্গ, সূর্য বিপ্রের যে সংস্থান তাও সূর্য বিপ্র। দ্বিমাত্রিকা সম্যরূপে অভ্যাস করে সমস্ত বেদের অধ্যয়ন অধ্যাপন করলে ফলপ্রাপ্ত হওয়া যায়।।৯২।