ব্রাহ্ম পর্ব
মধ্য পর্ব
প্রতিসর্গ পর্ব
1 of 3

সপ্তমী কল্প বর্ণনে কৃষ্ণ-সাম্ব সংবাদ

।। সপ্তমীকল্পবর্ণনে কৃষ্ণসাম্বসংবাদঃ।। ।

।। সপ্তমীকল্প বর্ণনে কৃষ্ণসাম্ব সংবাদ।।

বিস্তারাদ্বদ বিপ্রেন্দ্র সপ্তমীকল্পমুত্তমম্। মহাভাগ্যং চ দেবস্য ভাস্করস্য মহাত্মনঃ।।১।। অত্রৈবাহুমহাত্মানঃ সংবাদং পুন্যমুত্তমম্। কৃষ্ণেন সহ সত্ত্বেন স্বপুত্ৰেন মহীপতে।।২।।

এই অধ্যায়ে সপ্তমী কল্পবর্ণনা প্রসঙ্গে কৃষ্ণ ও সাম্বের সংবাদ, রুদ্র এবং ব্রহ্মার সংবাদ, তথা আদিত্যের মাহাত্ম্য বর্ণনা করা হয়েছে।।

রাজা শতানীক বললেন, হে বিপ্রেন্দ্ৰ, আপনি এই পরম শ্রেষ্ঠ সপ্তমী কল্পের সবিস্তার বর্ণনা দিন এবং মহাত্মা ভাস্কর দেবের মাহাত্ম্য বর্ণনা করুন।।১।।

মহর্ষি সুমন্তু বললেন, এই বিষয়ে মহাত্মাগণ একটি অত্যুত্তম সংবাদের অবতারণা করে থাকেন। হে মহীপতে, সেই সংবাদ হল ভগবান্ শ্রীকৃষ্ণের সংগে তার পুত্র সাম্বের কথোপকথন।।২।।

সপ্তমী কল্প বর্ণনে কৃষ্ণ-সাম্ব সংবাদ ভক্ত্যা প্রণম্য বিধিবদ্বাসুদেবং জগদ গুরুম্। ইহামুত্র হিতং শাম্বঃ প্ৰ পচ্ছ জ্ঞানমুত্তমম্।।৩।। জাতো জন্তুঃ কথং দুঃখৈৰ্জম্ননীহ ন বাধ্যতে। প্রাপ্নোতি বিবিধান্ কামান্ কথং চ মধূসূদন।।৪।। পরত্র স্বর্গমাপ্নোতি সুখানি বিবিধানি চ। অনুভূয়োচিতং কলং কথং মুক্তিমবাপ্লুতে।।৫।। দৃষ্টেবং মম নির্বেদো জাতো ব্যাধিজনার্দন। দৃষ্টবমং জীবিতাশাপি রোচতে ন হি মে ক্ষনম্।।৬।। কিং ত্বেবমকৃতার্থোহস্মি যন্মে প্রাণা ন যান্তি হি। সংসারে ন পতিয্যামি জরাব্যাধি সমন্বিতে।।৭।। যেনোপায়েন তন্মেহদ্য প্রসাদং কুরু সুব্রত। আবিধ্যাবিধিনির্মূক্তো যথাহং তথা বদ।।৮।।

একবার সাম্ব জগৎগুরু বাসুদেবকে যথাবিধি ভক্তিপূর্বক প্রণাম করে ইহলোক এবং পরলোকের বিষয়ে উত্তম জ্ঞান জিজ্ঞাসা করেছিলেন।।৩।

হে মধুসূদন, ইহজগতে জাত মানব কি প্রকারে দুঃখ দ্বারা পীড়িত হয়না এবং কোন্ রীতিতে মানব তার সমস্ত কামনা পূরণ করেন। কি প্রকারে পরকালে স্বর্গলাভ কবে বিবিধ প্রকার সুখানুভূতি লাভ করেন।।এছাড়া উচিত সময় পর্যন্ত সকল প্রকার আনন্দানুভব করে কি প্রকারে দেহান্তে মোক্ষ প্রাপ্ত হন।।৪-৫।।

হে জনার্দন, জগতের এই প্রকার রূপ দেখে আমার বৈরাগ্য জন্মাচ্ছে এবং ব্যাধি উৎপন্ন হচ্ছে। জাগতিক এই দুঃখ দেখে ক্ষণকাল মাত্রও জীবন-ধারণের ইচ্ছা উৎপন্ন হচ্ছেনা।।৬।।

আমি প্রাণত্যাগে অকৃতার্থ। এই জরা এবং ব্যাধিযুক্ত সংসার বন্ধনে শামি আবদ্ধ হতে চাই না।।৭।।

হে সুব্রত, এর থেকে পরিত্রাণের যে সকল উপায় আছে তা প্রসন্নতাপূর্বক আমাকে বলুন, যার দ্বারা আমি মানসিক ব্যথা ও ব্যাধি থেকে মুক্ত হতে পারি।।৮।।

দেবতায়াঃ প্রসাদোহন্যঃ সর্বস্য পরমো মতঃ। উপায়ঃ শাশ্বতো নিত্য ইতি মে নিশ্চিতা মতিঃ।।৯।। অনুমানাগমাদ্যেশ্চ সম্যগুৎপাদিতাময়া। কদাচিদন্যথা কর্তুং ধীয়তে কেনচিৎ ক্বচিৎ।।১০।। প্রাসাদো জায়তে তস্য সম্যগারাধনক্রিয়া। যদা তাং চ সমুদ্দিশ্য কৃত্বা তদ্বেদিনা তথা।।১১।। বিশিষ্টা দেবতা সম্যগ বিশিষ্টনৈব দেহিনা। আরাধিতা বিশিষ্টং চ দদাতি ফলমীহিতম্।।১২।। অস্তিত্বে ন চ সন্দেহঃ কেষাং চিদ্দেবতাং প্রতি। নাস্তীতি নিশ্চয়োহন্যেষাং বিশিষ্টাস্ত্বং কথাঃ কুরু।।১৩ সিদ্ধং তু দেবতাস্তিত্বমাগমেযু বহুঠথ। প্রমাণমাগমো যস্য তস্যাস্তিত্বংচ বিদ্যতে।।১৪।।

ভগবান বাসুদেব বললেন, দেবতার অনুগ্রহ অন্য সকল কিছু অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ এবং সেটাই একমাত্র শাশ্বত–এই বিষয়ে আমি নিশ্চিত।।৯।।

অনুমান এবং আগম (বেদাদিশাস্ত্র) দ্বারা আমি তা সম্যক্ উৎপন্ন করেছি। কোনো ব্যক্তি কোনো সময়ে আবার এর অন্যথা বলে থাকেন।।১০।।

দেবতাকে সম্যরূপে আরাধনা করলেই তাঁর প্রসাদ বা অনুগ্রহ লাভ করা যায়। তখন তাঁর উদ্দেশ্য করে আরাধনা ক্রিয়ার মাধ্যমে কৃপাপ্রার্থী তাকে সম্যরূপে জ্ঞাত হন।।১১।।

কোনো এক বিশিষ্ট দেবতা বিশেষতাপূর্ণ মানবের দ্বারা সম্যক্ রূপে যখন আরাধিত হন, তখন সেই দেবতা অভীষ্ট ফল প্রদান করে থাকেন।।১২।।

সাম্ব বললেন, কিছু ব্যক্তি দেবতার অস্তিত্ব নিয়ে নিঃসন্দেহ এবং কেউ কেউ দেবতার অস্তিত্ব স্বীকার করেন না। আপনি এ বিষয়ে সবিশেষ বলুন।।১৩।।

ভগবান বাসুদেব বললেন, আগমে(বেদাদিশাস্ত্র) দেবতার অস্তিত্ব বহুবার প্রমাণিত। আগম যার প্রমাণ তার অস্তিত্ব অবশ্যই বিদ্যমান।।১৪।।

অনুমানেন বাপ্যদ্য তদস্তিত্বং প্রসাধ্যতে। প্রমাণ মস্তি যস্যেদং সিদ্ধা যস্যেহ চাস্তিতা।।১৫।। প্রত্যক্ষেণাপি চাস্তিত্বং দেবতায়াং প্রসাধ্যতে। তচ্চাবশ্যং প্রমাণং চ দৃষ্টং সর্বশরীরিণম্।।১৬।। যদি নামা বিবিক্তাস্তু তির্যগ্যোনির্গতা অপি। নোৎপদ্যতে তথা হ্যস্তিব্যহারো যথা স্থিতঃ।।১৭।। প্রত্যেক্ষেনোপলভ্যন্তে সম্যগবৈ যদি দেবতাঃ। অনুমানাগমাভ্যাং চ তদর্থং ন প্রয়োজনম্।।১৮।। প্রত্যক্ষেনোপলভ্যন্তে ন সর্বা দেবতা ক্বচিৎ। অনুমাগমগম্যা সন্তি চান্যাঃ সহস্রশঃ।১৯।। যা চাক্ষগোচরা কাচিদ্বিশিষ্টেফলপ্রদা। তামেবাদৌ মমাচক্ষ কথয়িয্যস্যথাপরম।।২০।।

অনুমান দ্বারাও দেবতার অস্তিত্ব সিদ্ধ হয়, অনুমান যদি প্রমাণ হয়, তাহলে দেবতারও অস্তিত্ব সিদ্ধ হয়।।১৫।।

প্রত্যক্ষ প্রমাণ দ্বারাও দেবতার অস্তিত্ব প্রসাধিত হয়। যা সমস্ত শরীরধারীর দৃষ্ট তা অবশ্যই প্রমাণ।। ১৬।।

বিবিক্ত ব্যক্তি ও তির্য যোনির প্রাণীরও অস্তিত্ব ব্যবহার অন্যরূপ উৎপন্ন হয়।। ১৭।।

সাম্ব বললেন, যদি দেবতা প্রত্যক্ষ প্রমাণের দ্বারা সঠিকভাবে উপলব্ধ হন, তাহলে তাঁর অস্তিত্বের দৃঢ়তা নিয়ে অনুমান এবং আগমের কোনো প্ৰয়াজন নেই।। ১৮।।

ভগবান বাসুদেব বললেন, সকল দেবতা প্রত্যক্ষ প্রমাণের দ্বারা উপলব্ধ হন না। অন্য সহস্র দেবতা অনুমান ও আগমের দ্বারা সিদ্ধ হন।।১৯।।

সাম্ব বললেন, যে সকল দেবতা নেত্রগোচর এবং বিশিষ্ট অভীষ্ট ফল প্রদান করেন, প্রথমে তাদের বিষয়ে কৃপাপূর্বক কিছু বলুন। অনন্তর অন্য দেবতাদের বিষয়ে বর্ণনা করবেন।।২০।।

প্রত্যক্ষং দেবতা সূর্যা জগচ্চক্ষুদিবাকরম্। তস্মাদভ্যধিকা কাচিদ্দেবতা নাস্তি শাশ্বতী।।২১।। যস্মাদিদং জগজ্জতং লয়ং যাস্যতি যত্র চ। কৃতাদিলক্ষণঃ কালঃ স্মৃতঃ সাক্ষাদ্দিবাকরঃ।।২২।। গ্রহনক্ষত্রযোগাশ্চ রাশয়ঃ করণানি চ। আদিত্যাবসবো রুদ্রাঅশ্বিনৌ বায়ুবোহনলঃ।।২৩।। শত্রুঃ প্রজাপতি সর্বে ভূভুবঃ স্বস্তথৈব চ। লোকাঃ সর্বে নগা নাগাঃ সরিতঃ সাগরাস্তথা। ভূতগ্রামস্য সর্বস্য স্বয়ং হেতুদিবাকরঃ।।২৪।। অস্যেচ্ছয়া জগৎসবমুৎপন্নং সচরাচরম্। স্থিতং প্রবর্ততে চৈব স্বাৰ্থ চানুপ্রবর্ততে।।২৫।। প্রসাদাদস্য লোকোহয়ং চেষ্টমানঃ প্ৰদৃশ্যতে। অস্মিন্নভাদিতে সর্বমুদ্দেস্তমিতে সতি। অস্তং যাতীত্যদৃশ্যেন কিমেতৎ কথ্যতে ময়া।।২৬।।

ভগবান বাসুদেব বললেন, প্রত্যক্ষ দেবতা হলেন সূর্য, যিনি এই জগতের নেত্র এবং দিন সৃজনকারী। তাঁর থেকে অধিক শাশ্বত কোনো দেবতা নেই।।২১।।

সেই সূর্যদেব থেকে জগৎ উৎপন্ন হয় এবং তাতেই লয়প্রাপ্ত হয়। কৃতাদিলক্ষণ (সত্যযুগাদি) কালও স্বয়ং দিবাকর।।২২।।

গ্রহনক্ষত্রসমূহ, যোগ, রাশি, করণ, আদিত্য, বসু, রুদ্র, অশ্বিনীকুমার, বায়ু, অগ্নি, ইন্দ্র, প্রজাপতি সমস্ত স্বর্গ মর্ত্য ও পাতাল লোক, নদী, সর্প, পর্বত সমূহ, সকল সমুদ্ররাশি এবং ভূত সকল এই সকলের হেতু হল

কেবল মাত্র দিবাকর।।২৩-২৪।।

তাঁর ইচ্ছাতে এই স্থাবর ব্যঙ্গমাত্মক, জগৎ উৎপন্ন হয়। তাঁর ইচ্ছাতেই জগৎ স্থির হয় এবং নিজ কর্মে প্রবৃত্ত হয় তাঁর ইচ্ছাতেই।।২৫।।

তস্মাদতঃ পরংনাস্তি ন ভূতং ন ভবিষ্যতি। যে বৈ বেদেষু সর্বেষু পরমান্তেতি গীয়তে।।২৭।। ইতিহাসপুরানেষু অন্তরাত্নেতি গীয়তে।। ব্রাহ্যাত্নৈ তিসুযুন্নাস্থঃ স্বপ্রস্থো জাগ্রতঃ স্থিতঃ।।২৮।। অস্তং যাতীত্যদৃষ্টেন কিমেতৎ কথ্যতে ময়া। তস্মাদতঃ পরং নাস্তি ন ভূতং ন ভবিষ্যতি।।২৯।। যত্র বাহ ইতিখ্যাতঃ প্রেরকঃ সর্বদেহিনাম্। নানেন রহিতং কিঞ্চিদভূতমস্তি চরাচরম্।।৩০॥ যো বেদৈবেদবিদ্ভিশ্চ বিস্তরেনোহ শক্যতে। বক্তং বর্যশতৈণাসৌ শক্যঃ সংক্ষেপতো ময়া।।৩১।। তস্মাদ্ভূণকরঃ খ্যাতঃ স্বত্রায়ং দিবাকরঃ। সবৈশঃ স্বকর্তায়ং সর্বভর্তায় মব্যয়ঃ।।৩২।।

সূর্যদেবের অনুগ্রহেই লোকে চেষ্টাশীল হয়। তাঁর উদয়ের সঙ্গে জগৎ উদিত হয় এবং তিনি অস্তাচলে গেলে জগতও অস্তাচলে যায়। সুতরাং তারপর আর কেউ নেই, পূর্বে কেউ ছিলেন না এবং ভবিষ্যতেও থাকবেন না। তাই তাঁকে বেদে “পরমাত্মা” বলা হয়েছে।।২৬-২৭।।

ইতিহাস এবং পুরাণে তাঁকে ‘অন্তরাত্মা’ বলা হয়েছে। সেই বাহ্য আত্মা সুষুম্নাস্থ, স্বপ্নস্থ এবং জাগ্রত অবস্থায় থাকেন।।২৮।

তিনি যখন অহৃষ্ট হন তখন তিনি অস্তাচলে চলে যান — এটাই আমার অভিমত। তত্ত্বল্য দেবতা পূর্বে ছিলনা, ভবিষ্যতেও হবে না।।২৯।।

সূর্যদেব পৃথিবীলোকে ‘বাহ’ নামে পরিচিত এবং তিনি দেহধারী সকলের প্রেরণা। এই চরাচরে সূর্যদেব রহিত কিছু নেই; সমস্ত চরাচর তাঁকে অবলম্বন করেই বর্তমান।।৩০।।

তিনি সমগ্র বেদ এবং বেদজ্ঞ মণীষীগণের দ্বারা সবিস্তারে শতবর্ষ যাবৎ বর্ণন যোগ্য নন এবং আমার দ্বারাও সংক্ষেপে বলা সম্ভব নয়।।৩১।।

এই কারণে দিবাকর সূর্যদেব সর্বগুণাকর নামে খ্যাত। তিনি সকলের প্রভু, সকলের কর্তা, সকলের ভর্তা এবং অব্যয়।।৩২।।

জাতা মৎস্যাদয় সয্যগগতিমতো মহেশ্বরাৎ। মন্ডলব্যতিরিক্তং চ জানামি পরমাথতঃ।।৩৩।। তথাস্য মন্ডলং কৃত্বা যো হোনমুপতিষ্ঠতে। প্রাতঃ সায়ং চ মধ্যাহ্নে স যাতি পরমাং গতিম।।৩৪।। কিং পুনমন্ডলস্থং যো জপতে পরমাথতঃ। বিবিধাঃ সিদ্ধয়স্তস্য ভবন্তি ন তদদভূতম।।৩৫।। মন্ডলে চ স্থিতং দেবং দেহে চৈনং ব্যবস্থিতম। স্ববুদ্ধয়ৈব সংমূঢ়ো য পশ্যতি স পশ্যতি।।৩৬।। ধ্যাম্বৈবং পূজয়েদ্যস্ত জপেদ্যো জুহুয়াচ্চ য। স সর্বান প্রাপুয়াৎকামান গচ্ছেদ্ধর্মধ্বজং তথা।।৩৭।। তস্মাত্ত্বমিহ দুঃখানামন্তং কতুং যদীচ্ছসি। ইহামুত্র চ ভোগানাং ভুক্তিং মুক্তিং চশাশ্বতীম।।৩৮।।

মৎস্য প্রভৃতি গতিমান্ জীবনিচয় মহেশ্বর হতে উৎপন্ন এবং পরমার্থতঃ মণ্ডল বহির্ভূত নয়।।৩৩।।

এই প্রকার মণ্ডল কল্পনা করে যিনি প্রাতঃ, মধ্যাহ্ন ও সায়াহ্নে যথাবিধি উপাসনা করেন তিনি পরমাগতি লাভ করেন।।৩৪।।

যিনি মন্ডলস্থ সূর্যদেবকে যথার্থরূপে জপ করেন, তিনি বিবিধ প্রকার সিদ্ধি প্রাপ্ত হয়— তা অদ্ভুত কিছু নয়।।৩৫।।

যে বিদ্বান্ মন্ডলস্থিত এই দেবকে সুবুদ্ধির দ্বারা নিজ দেহের মধ্যে প্রত্যক্ষ করেন, তিনিই প্রকৃত দ্রষ্টা।।৩৬।।

যিনি এই প্রকারে একাগ্রচিত্তে ধ্যান করে পূজা করেন জপ করেন এবং হবন করেন, তিনি সমস্ত অভীষ্ট কামনা সিদ্ধ করেন। এছাড়া তিনি ধর্মধ্বজ নিয়ে অচ্ছেদ্যভাবে চলতে পারেন।।৩৭।

আরাধায়াকমকস্থো মন্ত্রৈরিহ তদাত্মনি। অংগৈবৃত্তবৃতে চৈব স্থানে শাস্ত্রেন রক্ষিতে।।৩৯।। কবচেন চ সংগুপ্তে সর্বতোহস্ত্রেন রক্ষিতে। এবং প্রাপ্স্যসি মত্নেন সবদা ফলমীপ্সিতম্।।৪০।। দুঃখমাধ্যাত্মিকং লেহ তথা চৈবাধিভৌতিকম্। আধিদৈবিকমত্যুগ্রহন ভবিষ্যতি তে সদা।।৪১।। ন ভয়ং বিদ্যতে তেষাং প্রপন্না যে দিবাকরম্। ইহামুত্ৰ সুখং তেষামচ্ছিদ্রং জায়তে সুখম্।।৪২।। সূর্যেনৈদং মমোদ্দিষ্টং সাক্ষাদ্যজ্ঞান মুত্তমম্। আরাধিতেন বিধিবৎকালেন বহুনা তথা।।৪৩।। প্রাপ্যতে পরমং স্থানং যত্র ধর্মধ্বজঃ স্থিতঃ। এতৎ সংক্ষিপ্তমুদ্দিষ্টং ক্ষিপ্রসিদ্ধিকরং পরম। যথা নান্যদতোহস্তীতি স্বয়ং সূর্যেণ ভাষিতম্।।৪৪।। উপায়োয়ং সমাখ্যাতস্বব সংক্ষেপত্ত্বিহ। যস্মাৎপরতরো নাস্তি হিতোপায়ঃ শরীরিণাম।। ৪৫।।

এই কারণে তুমি যদি নিজ দুঃখের অবসান চাও ও এই লোকে সুখ অনুভব করতে চাও তথা পরলোকে শাশ্বতীমুক্তি কামনা কর তাহলে সূর্য্যমণ্ডলে স্থিত অর্কদেব অর্থাৎ সূর্যদেবের আরাধনা কর ও মন্ত্রের দ্বারা নিজ দেহ শুদ্ধি পূর্বক ব্রত পালন কর।।৩৮-৩৯।।

নিজদেহকে কবচের দ্বারা গুপ্ত এবং অস্ত্রের দ্বারা রক্ষিত করে সূর্য্যার্চ্চনা করলে সকল ফল লাভ করা যায়।।৪০।।

এই প্রকার আরাধনা করলে তোমার আধ্যাত্মিক, আধিভৌতিক এবং আধিদৈবিক দুঃখ সর্বদা উগ্ররূপে প্রকট হবে না।।৪১।।

যে ব্যক্তি ভগবান দিবাকরের শরণে আসেন তাঁর কোনো প্রকার ভয় থাকেনা। দিবাকরের সেই পরমভক্ত এই জগতে এবং পরলোকে নিশ্চিদ্র সুখভোদ করেন।।৪২।।

ভগবান্ সূর্যদেব সেই উত্তমজ্ঞান স্বয়ং আমাকে প্রদান করেছেন। বিধিপূর্বক অনেকদিন ব্যাপী এই প্রকারে তাঁর আরাধনা করলে ধর্মধ্বজ প্রাপ্ত হওয়া যায়। এই প্রকারে আমি তোমাকে শীঘ্র পরমসিদ্ধিকারী বিধান সংক্ষেপে বলছি। কারণ ভগবান সূর্যদেব বলেছেন— এছাড়া অন্যকোনো প্রকার বিধান নেই।।৪৩-৪৪।।

এই সংসারে সেই উপায় আমি সংক্ষেপে তোমাকে বলছি। মনুষ্যগণের পক্ষে এছাড়া অন্য কোনো হিতকর উপায় নেই।।৪৫।।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *