ব্রাহ্ম পর্ব
মধ্য পর্ব
প্রতিসর্গ পর্ব
1 of 3

ধর্ম স্বরূপ বর্ণন

।। ধর্মস্বরূপ বর্ণনম্।।

।। ধর্ম স্বরূপ বর্ণন।।

এই অধ্যায়ের প্রথমে মঙ্গলাচরণ এবং পুনরায় ভবিষ্যপুরাণের প্রশংসা পূর্বক ধর্মস্বরূপ আলোচিত হয়েছে।

স্বচ্ছং চন্দ্রাবদান্ত কবিকরমকরক্ষোভ সজ্ঞাত ফেনম্। ব্রহ্মোস্তুতিপ্ৰসুক্তৈব্ৰত নিয়মপরৈঃ সেবিত বিপ্রমুখৈঃ। ওংকারালংকৃতেন ত্রিভূবনগুরুণাং ব্রহ্মণা দৃষ্টপূতম্। সম্ভোগাভোগগম্যং জনকলুষহরং পৌষ্করং বঃ পুনাতু।।১।। নমস্কৃত্য জগদযোনিং ব্রহ্মরূপধরং হরিম্। বক্ষ্যে পৌরানিকীং দিব্যাং কথাং পাপপ্ৰণাশিনীম্।।২। যজ্জু ত্বা পাপকর্মণি স গচ্ছেৎপরামং গতিম্। পুণ্যং পবিত্রমায়ুষ্যমিদানীং শৃণুন দ্বিজাঃ।।৩।।

স্বচ্ছ চন্দ্রমার ন্যায় শুভ্র, কবিকর মকর ক্ষোভসজ্ঞাত ফেনকের ন্যায়, ব্রহ্মোদ্ভূতি প্রমুক্ত, ব্রতনিয়ম পরায়ণ বিপ্রমুখে ধর্মতত্ত্ব শ্রবণ করা উচিৎ। ওঁকার অলংকৃত ত্রিভুবনগুরু ব্রহ্মা যা পূর্বে দেখেছিলেন জনকলুষহারী পুষ্কর তীর্থ তোমাদের রক্ষা করুক।।১।।

শ্রী সূতজী বললেন, ব্রহ্মরূপধারী জগৎযোনি শ্রীহরিকে প্রণাম করে পাপনাশী এই দিব্য পৌরাণিক কথা বর্ণনা করছি।। যা শ্রবণ করে পাপকর্মত্যাগ করে মানব পরমগতি প্রাপ্ত হয়। সে কথা পরম, পুণ্য, পবিত্ৰ এবং আয়ু বৃদ্ধিকারী। হে দ্বিজগণ, এখন তোমরা এই কথা শ্রবণ কর।।২-৩।।

ভবিষ্য পুরাণমখিলং যজ্জগাদ গদাধরঃ। মধ্যপর্ব হাথো বক্ষে প্রতিষ্ঠাদিবিনির্ণয়ম্।।৪।। ধর্মপ্রশং সনং চাত্র ব্রাহ্মাণাদিপ্রশং সনম্। আপদধমস্য কথনং বিদ্যামাহাত্ম্যবর্ধনম্।।৫।। প্রতিমাকরনং চৈব স্থাপনাচিত্রলক্ষণম্। কালব্যবস্থাসগাদিপ্রতিসর্গদিলক্ষণম্।।৬।। পুরাণলক্ষণং চৈব ভূগোলস্য চ নির্ণয়ম্। নিরূপণং তিথীনাং চ শ্রাদ্ধসংকল্পমন্তরম্।।৭।। মুমূষোরপি যৎকর্ম দানমাহাত্যমেব চ। ভূতং ভব্যং ভবিষ্যং চ যুগধর্মানুশাসনম্।।৮।। এয়ানামাশ্রমাণাং চ গৃহস্থো যোনিরূচ্যতে। অন্যেঽপি সুপজীবন্তি তস্মাৎ শ্রেষ্ঠো গৃহাশ্রমী।।৯।।

গদাধর–যে সম্পূর্ণ ভবিষ্যপুরাণ বর্ণনা করেছিলেন, তার মধ্যপর্বে প্রতিষ্ঠাদি বিশেষ নির্ণয়ের কথা বলা হয়েছে।।৪।।

এই পর্বে ধর্মের প্রশংসা ও ব্রাহ্মণাদির প্রশংসা করা হয়েছে, এই পর্বে আপদ্ধর্মের কথন এবং বিদ্যামাহাত্ম্য বর্ণন করা হয়েছে।।৫।।

প্রতিমাকরণ, স্থাপনাচিত্রের লক্ষণ, কাল ব্যবস্থা এবং সর্গাদি প্রতিসর্গাদি লক্ষণ বর্ণনা করা হয়েছে।।৬।।

পুরাণের লক্ষণ, ভূগোল বিশেষ নির্ণয়, তিথি নিরূপণ, শ্রাদ্ধ সংকল্পা অন্তর বর্ণিত হয়েছে।।৭।।

মুমূর্ষ ব্যক্তির কর্ম ও দান মাহাত্ম তথা ভূত, ভব্য ও ভবিষ্যযুগধর্ম অনুশাসন এই পুরাণে বলা হয়েছে।।৮।।

তিনপ্রকার আশ্রমের উৎপত্তিস্থান ‘গৃহস্থ’ বলা হয়। গৃহস্থের সহায়তায় অন্য সকল আশ্রম উপজীবিত হয়। এই কারণে গৃহাশ্রমীকে সর্বশ্রেষ্ঠ বলা হয়।।৯।।

একাশ্রমং গৃহস্থস্য এয়াণাং সূতিদশনম্। তস্মাদ্রার্হস্থ্যমেবৈকং বিজ্ঞেয়ং ধর্মশাসনম্।।১০।। পরিত্যজেদর্থকামৌ যৌ স্যাতাং ধর্মবর্জিতৌ। সর্বলোকবিরুদ্ধং চ ধর্মমপ্যচরেন্ন তু।।১১।। তড়াগস্য চ সন্নিধ্যে তড়াগং পরিবর্জয়েৎ। প্রপাস্থানে প্রপা বজ্যা মঠস্থানে মঠংত্যজেৎ।।১২।। ধর্মাৎ সজ্ঞায়তে হ্যার্থো ধর্মাৎ কমোহ ভিজায়তে। ধর্মাদেবাপবগোহয়ং তস্মাদ্ধর্মং সমাশ্রয়েৎ।। ১৩।। ধর্মশ্চার্থশ্চ কামশ্চ ত্রিবর্গস্ত্রিগুণো মতঃ। সত্ত্বং রজস্তমশ্চেতি সস্মান্ধর্মং সমাশ্রয়েৎ।।১৪।। উর্দ্ধং গচ্ছন্তি সত্ত্বস্থা মধ্যে তিষ্ঠন্তি রাজসাঃ। জঘন্য গুণবৃতিস্থা অধো গচ্ছত্নি তামসা।।১৫।।

এক গৃহস্থাশ্রমই অন্য সকল আশ্রমের সূতিদর্শন বা উৎপত্তিস্থল। সুতরাং গার্হস্থ্য আশ্রমকেই ধর্মশাসন মনে করা উচিত।।১০।।

যা ধর্মরহিত, অর্থ ও কাম সংযুক্ত তা ত্যাগ করা উচিত। যা কিছু সমস্ত লোক বিরুদ্ধ ধর্ম, সেটিও কদাপি আচরণ করা উচিত নয়।।১১।।

তড়াগের সান্নিধ্যেই তড়াগকে ত্যাগ করা উচিত। প্রপাস্থানে প্রপা এবং মঠের স্থানে মঠ ত্যাগ করা উচিত।।১২।।

ধর্ম থেকে অর্থের উৎপত্তি হয় এবং ধর্ম থেকে কাম উৎপন্ন হয়। ধর্ম থেকেই অপবর্গের উদ্ভব। সুতরাং ধর্মের সমাশ্রয় অবশ্য কর্তব্য।।১৩।।

ধর্ম, অর্থ এবং কাম এদের ত্রিবর্গ বলা হয়। এই ত্রিবর্গ ক্রমান্বয়ে সত্ত্ব, রজ এবং তম–এই তিনগুণ। তাই ধর্মের মধ্যে আশ্রয় গ্রহণ করা উচিত।। ১৪।।

যিনি সত্ত্বগুণ আশ্রয় করেন, তিনি উর্দ্ধে গমন করেন। রজঃ গুণ অবলম্বনকারী মধ্যভাগে থাকেন এবং জঘন্য গুণবৃত্তি অবলম্বনকারী বা তমোগুণাশ্রয়ী তামসব্যক্তি অধোভাগে গমন করেন।।১৫।।

যস্মিন্ ধর্মঃ সমাযুক্তো হ্যর্থকামৌ ব্যবস্থিতৌ। ইহলোকে সুখী ভূত্বা প্রেত্যানন্ত্যায় কল্পতে।।১৬।। তস্মাদর্থং চ কামং চ যুক্ত্বা ধর্মং সমাশ্রয়েৎ। ধর্মাৎ সজ্ঞায়তে কামো ধর্মাদথোভিজায়তে।। ১৭।।

যে মানব ধর্মসংযুক্ত অর্থ ও কাম স্বয়ং তাঁর কাছে উপস্থিত হয়। সেই মানব এই লোকে সুখোপভোগ করে মৃত্যুর পর আনন্ত্যে কল্পিত হন।। ১৬।। সুতরাং মানবের ধর্ম, অর্থ ও কামকে যুক্ত করে ধর্মের স,মাশ্রয় করা উচিত। ধর্ম থেকে কাম ও অর্থের সমাশ্রয় হয়েই যায়।। ১৭।।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *