1 of 2

মহাপ্লাবন – ১৮

আঠারো

নিয়ন লাইট ক্লাবের ওপরতলায় প্রাইভেট সুইটে দাঁড়িয়ে আছে বিলিয়নেয়ার লো হুয়াং লিটন। মেঝে থেকে ছাত পর্যন্ত কাঁচের দেয়াল ভেদ করে দেখছে নিচতলার লড়াইয়ের এরিনা। ওখানে জড় হচ্ছে একদল দর্শক। নিজেও হুয়াং খুশি হবে লড়াই দেখতে পেলে। কিন্তু আগের কাজ আগে। চুকিয়ে দিতে হবে ওরে চিচিওয়ার প্রাপ্য।

ঘুরে খুনির দিকে তাকাল লো হুয়াং। তার মনে হলো অসুস্থ বোধ করছে লোকটা। ‘তুমি ঠিক আছ তো, ওরে? নাকি এটাই তোমার ছদ্মবেশ?’

‘আহত ছিলাম, মাত্র সুস্থ হয়ে উঠছি,’ বলল প্রেতাত্মা। ‘সেজন্যেই চাই আরও টাকা।’

কথা শেষ হতে না হতেই ভীষণভাবে শিউরে উঠল সে। চেহারা বিকৃত হলো রাগী বুলডগের মত। তিরতির করে কাঁপছে ডান গাল। কাঁচা হলুদের মত হলদে চোখ। ঘামে চকচকে ত্বক।

তাকে ছোবল তোলা গোখরা বলে মনে হলো লো হুয়াঙের। নরম সুরে বলল, ‘একটু পর পাবে প্রাপ্য টাকা। নতুন কাজও নিতে পারো হাতে। তাতে পাবে এর দশ গুণ টাকা। দায়িত্ব বেশি হলেও ঝুঁকি সে কাজে অনেক কম।’

‘শালার গুষ্ঠি মারি তোমার কাজের,’ ঘেউ করে উঠল ওরে। ‘গত কাজটা করতে গিয়ে মরেই যাচ্ছিলাম। এবার টাকা দিয়ে দাও। চলে যাব।’

‘লুকিয়ে পড়ে সুবিধা হবে না তোমার,’ বলল লো হুয়াং। ‘কী বলতে চাও?’

‘ওই দুর্গে ছিল এমন একজনের কাছ থেকে তোমার চেহারার বর্ণনা পেয়েছে ফেডারেল পুলিশ,’ বলল বিলিয়নেয়ার, ‘সহজেই খুঁজে বের করবে। আর তখন শত শত খুনের দায়ে দেরি না করে ঝুলিয়ে দেবে তোমাকে।’

‘ক্ব-কী? তুমি তা হলে বলে দিয়ে…’

‘আরে, আমি কেন বলতে যাব? বুঝতে পারছ না যে, তোমার কাছে সাহায্য চাইছি!’

‘তা হলে ওরা জানল কী করে?’

‘তুমি নিজেই তো বলেছ, বেঁচে গেছে কেউ কেউ।’

অপমানে লাল হলো ওরের গাল। পরক্ষণে রাগ ও অসুস্থতার জন্যে হয়ে গেল ফ্যাকাসে।

‘এবার শোনো আমার কথা, ওরে,’ বলল হুয়াং, ‘বাকি জীবন চোরের মত লুকিয়ে বেড়ালে শেষে তোমাকে ফকির হতে হবে। অথচ, তোমার যা যোগ্যতা, থাকার কথা রাজার হালে’। আর সেই টাকা দেয়ার কথাই বলছি। তাতে নতুন করে শুরু করতে পারবে জীবন। থাকবে নতুন পরিচয়। কেউ জানবে না আগে কে ছিলে তুমি।’

পকেট থেকে ভাঁজ করা একটা কাগজ বের করল লো হুয়াং। দু’আঙুলের ফাঁকে রেখে বাড়িয়ে দিল ওরের দিকে।

ক’সেকেণ্ড দ্বিধা করে ছোঁ মেরে কাগজটা নিল জাপানি খুনি। কাগজের ভাঁজ খুলে দেখল, আঁকা হয়েছে ওরই চেহারা। ঠোঁটের ওপরে পুরনো ক্ষত। নিচে উল্কির ড্রইং। একদম ওরটার মতই!

রাগে থরথর করে কেঁপে উঠল ওরে। ফড়াৎ করে টেনে ছিঁড়ল কাগজটা। ওটা মুচড়ে ছুঁড়ে মারল লো হুয়াং লিটনের মুখ লক্ষ্য করে।

স্বাভাবিক চেহারায় কাঁধ ঝাঁকাল চিনা বিলিয়নেয়ার। ‘পুলিশের কাছে ওটার কপি আছে।’

‘তাতে কিছুই যায় আসে না।’

‘যায় আসে, ভাল করেই জানো তুমি,’ কড়া সুরে বলল হুয়াং, ‘অর্থাৎ, তোমার সময় শেষ। প্রেতাত্মা হিসেবে বেশি দিন টিকবে না আর। লুকিয়ে পড়তে হবে চোরের মত। তারচেয়েও খারাপ কথা, নেই তোমার কোনও বন্ধু। কেউ সাহায্য করবে না। শেষ ভাড়াটে খুনির জীবন। একাকী মরবে কোথাও। আমি কিন্তু তোমাকে দিতে চাই নতুন সুযোগ। সে সুযোগটা নেবে কি না, তা তোমার ব্যাপার। যদি একটা কাজ নাও, এমন ব্যবস্থা করব, আইন ছুঁতে পারবে না তোমাকে।

‘কী কাজ? সোনার বাসনে এনে দিতে হবে কারও কাটা মাথা?’

‘যে ফাঁস করেছে তোমার ছবি, তাকে নিজের স্বার্থেই খুন করবে তুমি,’ বলল বিলিয়নেয়ার। ‘তবে আমি জানতে চাই হারিয়ে যাওয়া এক তলোয়ারের তথ্য। ‘

‘তলোয়ার?’

‘নিশ্চয়ই শুনেছ হঞ্জো মাসামিউনের কথা?’

‘অবশ্যই,’ বলল ওরে, ‘জাপানের সবচেয়ে নামকরা তলোয়ার। …তো? ওটা তো হারিয়ে গেছে আজ থেকে বহু বছর আগে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষদিকে। ধরে নেয়া হয় ওটা চুরি করেছে আমেরিকানরা, অথবা….

‘ওসব ভুল কথা,’ বলল লো হুয়াং, ‘আসলে কী হয়েছে ভাল করেই জানি। যুদ্ধের শেষে আমেরিকান সেনাবাহিনী নির্দেশ দিয়েছিল, যাতে সব অস্ত্র তাদের কাছে জমা দেয় জাপানিরা। এমন কী বাদ দেয়া চলবে না আনুষ্ঠানিক তলোয়ারও। তাতে রেগে গেল ধনী জাপানিরা। ঠিক করল লুকিয়ে রাখবে বাপ-দাদার অস্ত্র। কিন্তু জাপানের ভবিষ্যৎ ভেবে আমেরিকানদের সঙ্গে হাত মেলালেন ইয়েমাসা টোকাগায়া। নইলে সর্বনাশ হতো এ দেশের। ঠিক হলো, অস্ত্র আমেরিকানদের হাতে তুলে দেবেন তিনি। সেগুলোর ভেতর ছিল বিখ্যাত চোদ্দটা তলোয়ার। হঞ্জো মাসামিউনেও ছিল। ঠিক হলো, টোকিও পুলিশ স্টেশনে জমা হবে এসব তলোয়ার। পরে গোল্ডি বিলমোর নামের এক সার্জেন্ট সংগ্রহ করল ওগুলো। হারিয়ে গেল চোদ্দটা তলোয়ার। আর দেখা গেল না কোথাও। কেস খতম। কিন্তু আমেরিকানদের রেকর্ড অনুযায়ী: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষে জাপানে গোল্ডি বিলমোর নামে তাদের কোনও সৈনিক, নাবিক বা বিমানবাহিনীর কেউ ছিল না।’

‘তার মানে মিথ্যা বলেছে কেউ,’ বলল ওরে।

‘ঠিক,’ বলল হুয়াং, ‘কিন্তু মিথ্যা বলল কে? আমার কাছে যে তথ্য আছে, তাতে মনে হচ্ছে আমেরিকানদের কাঁচকলা দেখিয়ে ওগুলো আগেই সরিয়ে ফেলেছিল কেউ।’

চোখ সরু করে বিলিয়নেয়ারকে দেখল ওরে।

বড়শিতে গেঁথে গেছে হাঙর, বুঝল হুয়াং। এবার খেলিয়ে তুলতে হবে ডাঙায়। জাপানের অত্যন্ত সম্মানের অস্ত্রগুলো রয়ে গেছে এ দেশেই, অন্তর থেকে বিশ্বাস করতে চাইছে খুনি লোকটা। জাপানের সব তলোয়ারবাজ স্বপ্ন দেখে, একবার নিজ হাতে নেবে হঞ্জো মাসামিউনে! এভাবেই পেইন্টাররা স্পর্শ করতে চায় পিকাসো বা ভ্যান গগের ছবি। স্কাল্পটাররা ধরতে চায় মাইকেল এঞ্জেলোর ডেভিডের হাত। অথচ কোনওটাই থাকে না হাতের নাগালে। কিশোর বয়স থেকেই অস্ত্র আর ঠাণ্ডা লোহা নিয়েই কারবার ওরের। যদি ছুঁতে পারে হঞ্জো মাসামিউনে, সেটা হবে ওর জীবনের সেরা প্রাপ্তি।

‘কী ধরনের তথ্য পেয়েছ তুমি?’

‘হাউস অভ পিয়ার্সে অভিজাত সবাইকে গোপন এক প্রতিজ্ঞা করান টোকাগাওয়ার পরিবার। আর সেসময় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষদিকে তাঁদের হয়ে কাজ করেন ইয়েমাসা টোকাগায়া। তাঁদের গল্প কিন্তু অন্যরকম।’

‘বলতে থাকো।’

‘ইয়েমাসা টোকাগায়া চান আমেরিকান সেনাবাহিনীর সঙ্গে মিলেমিশে চলতে, কিন্তু তাঁর পরিবারের অন্যরা খুশি ছিলেন না। তাই তৈরি করেন নকল তলোয়ার। একেবারে শেষসময়ে এটা টের পেলেন ইয়েমাসা, ফলে পরিবারে তৈরি হলো গৃহযুদ্ধের পরিবেশ। নিজেরা লড়াই করে খুন হলেন ক’জন। তখন ইয়েমাসা বুঝলেন, এসব তলোয়ার যে শুধু বংশের গর্ব, তা নয়, গোটা জাপানের প্রতিরোধ যুদ্ধের প্রতীক। ভবিষ্যতে হয়তো আবারও মাথা তুলে দাঁড়াবে জাপানিরা। তাই তাঁর এক চিঠিতে লিখেছেন, আবারও যুদ্ধের কথা ভাবলে শিউরে ওঠেন তিনি। তবে জাতীয় এসব তলোয়ার দেশের মানুষের কাছে থাকাই উচিত। লুকিয়ে রাখা যেতে পারে। যাতে ওগুলোর কারণে আবারও যুদ্ধের ডাক দিতে না পারে এ জাতি। তাঁর এই চিঠি পাঠিয়ে দেয়া হলো হাউস অভ পিয়ার্সে। ফলে পুলিশ স্টেশনে যাওয়ার পথেই গায়েব হলো তলোয়ার। বদলে রাখা হয় চোদ্দটা নকল। তাতে বোকা বনল না কেউ। তবে প্রচার করে দেয়া হলো আমেরিকান সেনাবাহিনীর সার্জেন্ট গোল্ডি বিলমোরের কাহিনী।’

‘আর কোথায় গেল এসব তলোয়ার?’ জানতে চাইল ওরে।

‘টোকাগায়ার চিঠি পেয়ে দূরের এক মন্দিরে ওগুলো লুকিয়ে রাখলেন এক শিনটো যাজক।’

খুব বিরক্ত হলো প্রেতাত্মা। ‘যুদ্ধের অস্ত্র গেল সাধুর হাতে? ছিহ্!’

‘এ ছাড়া উপায় ছিল না।’

‘কোন্ মন্দিরে? কোথায়? জাপানে তো হাজার হাজার মন্দির।’

বড় করে দম নিল লো হুয়াং লিটন। ‘কখনও প্রকাশ করা হয়নি কোন্ মন্দিরে আছে এসব তলোয়ার। তবে সে সময়ে টোকাগায়া পরিবার বিশেষ শ্রদ্ধার চোখে দেখত ফুজি মাউণ্টেনের টিলাময় এলাকায় একটা মন্দিরকে। খুব গোপন মন্দির। নিজেরা তো আর রাখতে পারতেন না, তাই অমন জায়গাতেই রেখেছেন জাতীয় অমূল্য সম্পদ। তলোয়ার তুলে দেয়া হয়েছে মন্দিরের সাধুদের হাতে, যাঁদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ আছে স্রষ্টার।’

মাথা দোলাল ওরে। কিন্তু পুরোপুরি বিশ্বাস করেনি। ‘পরে কেন প্রকাশ পেল না এই তথ্য? আজও হঞ্জো মাসামিউনের জন্যে পাগল হয়ে আছে একদল লোভী ট্রেয়ার হান্টার।’

‘আমি দেখেছি এমন এক রেকর্ড, যেটার কথা জানে না বেশিরভাগ মানুষ, বলল বিলিয়নেয়ার, ‘সরকারি রেকর্ড। উনিশ শ’ পঞ্চান্ন সালে জাপানি গোয়েন্দারা ধারণা করে, কোথায় আছে এসব তলোয়ার। কিন্তু তখন পুরো নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে জাপান আমেরিকার ওপর।’

শ্যাম্পেনের গ্লাস নিল হুয়াং। ‘ওয়াশিংটনের দেয়া ঋণ নিয়ে নতুন করে দেশ গড়ছে জাপান সরকার। হুড়মুড় করে ….. আমেরিকায় বিক্রি হচ্ছে জাপানের তৈরি জিনিসপত্র। রপ্তানির সুযোগ পেয়ে জাপানি সমাজে গজিয়ে উঠেছে নতুন ধনিক শ্রেণীর ব্যবসায়ী। এদিকে রাশান ভালুক বা চিনা ড্রাগন থেকে দেশটাকে আগলে রেখেছে আমেরিকান যুদ্ধ জাহাজ, রণবিমান ও হাজার হাজার সৈনিক। পরিস্থিতি বুঝতে পেরে চুপ মেরে গেল সরকার। কোনওভাবেই নষ্ট করা চলবে না আমেরিকা আর জাপানের বর্তমান সম্পর্ক। এসব তলোয়ার পেলে হঠাৎ গজিয়ে উঠবে জাপানি জাতীয়তাবোধ। গোটা দেশটাকে যুদ্ধের দিকে ঠেলে দেবে শোগান পরিবারগুলো। তা ছাড়া, টোকাগায়া পরিবারকে না জড়িয়ে তলোয়ার উদ্ধার করার উপায় নেই। কাজেই চুপ করে থাকল জাপান সরকার। আমলাদের লাখো ফাইলের নিচে চাপা পড়ল হঞ্জো মাসামিউনে আর অন্যসব স্বনামধন্য তলোয়ার। মুছে ফেলা হলো প্রতিটি তথ্য ও প্ৰমাণ।’

‘তুমি জেনে বলছ তো?’ জানতে চাইল ওরে।

‘পুরোপুরি নিশ্চিত নই,’ বলল হুয়াং, ‘তবে এসব তলোয়ার সাধুদের কাছে না থাকলে, ধরে নিতে পারো আর কখনও পাওয়া যাবে না। তলোয়ারের সঙ্গে রয়ে গেছে একটা ডায়েরি। ধারণা করা হয়, ওটা এসেছে মাসামিউনে আর তাঁর উত্তরপুরুষদের কাছ থেকে। ওটায় লেখা আছে কীভাবে মেশাতে হবে ধাতু। নইলে তৈরি হবে না এ ধরনের তলোয়ার।’

কথাটা মেনে নিয়েছে ওরে। তাতে হয়ে উঠেছে আরও সতর্ক। ‘আগে তো শুনিনি তুমি তলোয়ার কালেক্ট করো? হঠাৎ এত আগ্রহ কেন?’

‘তোমার প্রশ্নের জবাব দেব না,’ গম্ভীর মুখে বলল লো হুয়াং, ‘তবে ধরে নাও, আমি চাই আমেরিকান খপ্পর থেকে বেরিয়ে সত্যিকারের স্বাধীনতা লাভ করুক আমার মায়ের দেশ। আর তার ফলে কল্পনাও করতে পারবে না, কত টাকা পাবে তুমি। নতুন করে সাজিয়ে নেবে জীবন। চিরকালের জন্যে মাফ করে দেয়া হবে তোমার সব অপরাধ।’

‘চাপা মারার আর জায়গা পাও না,’ বিরক্ত হয়ে বলল ওরে। ‘আগে যে টাকা পাই, সেটা দিয়ে দাও, বিদায় হই।’

কাঁধ ঝাঁকাল লো হুয়াং লিটন। বলে দিয়েছে যা বলার। পকেট থেকে নিল ছোট একটা ডিস্ক। ওটা ক্যাসিনোর চিপের চেয়ে একটু বড়। ব্রাসের। অষ্টভুজ। ওজনে বেশ ভারী। একদিকে খোদাই করা ড্রাগন, অন্যদিকে সংখ্যা।

‘তোমার প্রাপ্য,’ বলল বিলিয়নেয়ার। ‘এই ক্যাসিনোর যে-কোনও টেবিলে গিয়ে এটা দেখালে যে-কোনও অঙ্কের চিপ্‌ দেবে তারা। খেলতে পারো যত খুশি। অথবা এটা নিয়ে চলে যেতে পারো অ্যাকাউন্ট সেকশনে। তুমি চাইলে ওরা দেবে আমেরিকান ডলার বা ইউরোপিয়ান যে-কোনও দেশের ব্যাঙ্ক নোট। যেগুলো বেশি চলে, বড় অঙ্কের নোট নিলে বয়ে নেয়া সহজ হবে। তবে, পরে যদি মনে হয় ভুল করেছ, ডিস্কের ওসব সংখ্যায় ফোন দেবে আমাকে। সেক্ষেত্রে নতুন চুক্তির জন্যে আলাপ করব আমরা।’

জানালার পাশের টেবিলে ডিস্ক রাখল লো হুয়াং লিটন।

সামনে বেড়ে সোনালি চাকতি নিল ওরে। মনে মনে বুঝতে চাইছে প্রস্তাবের ওজন। লোকটার কথা সত্যি হলে তা দারুণ লোভনীয় একটা ব্যাপার। রাজি হয়ে যাওয়াই ভাল। জীবনটা আপাতত সত্যিই অন্ধকারময় মনে হচ্ছে তার।

একবার হুয়াংকে দেখল প্রেতাত্মা। তারপর জানালার কাঁচ ভেদ করে তাকাল নিচে। বিস্ফারিত হলো দু’চোখ। ফিসফিস করে বলল, ‘আরে, শালা! দাঁড়া!’

‘তোমাকেই ঠিক করতে হবে কী করবে।’

কিন্তু হুয়াঙের প্রস্তাব নিয়ে ভাবছে না ওরে। সোজা চেয়ে আছে একতলা নিচে একজনের দিকে। ‘না, ওই শালা এল কোত্থেকে!’

লো হুয়াং লিটনকে পাশ কাটাবার সময় টেবিল থেকে ওয়াইনের গ্লাস তুলে বাড়ি মেরে ওটার বাউল ভেঙে নিল উন্মাদটা। মামাত ভাইকে থামাবে ভেবেও পরক্ষণে সতর্ক হলো বিলিয়নেয়ার। প্রেতাত্মাকে ঠেকাবার চেষ্টা বুদ্ধিমানের কাজ নয়!

ডিস্ক পকেটে পুরেই ঝড়ের বেগে সুইট ছেড়ে বেরিয়ে গেল ওরে চিচিওয়া। পেছনে দড়াম করে বন্ধ হলো দরজা।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *