বিয়ে
ক্যালটেক থেকে ১৯৭৫ সালে আমরা ফিরে এসেছিলাম। ফেরার সময় জানতাম, আমাদের বাড়ির সিঁড়িটা আমার জন্য এখন খুবই কষ্টকর হয়ে উঠবে। আমার সহকর্মীরা সে সময় আগের চেয়েও বেশি সহমর্মিতা দেখাতে শুরু করলেন। ফলে আমরা কলেজের মালিকানাধীন বিশাল এক ভিক্টোরিয়ান ধাঁচের বাড়ির নিচতলার এক অ্যাপার্টমেন্ট বরাদ্দ পেলাম। (ওই বাড়িটি এখন ভেঙে সে জায়গায় আমার নামে শিক্ষার্থীদের থাকার জায়গা বানানো হয়েছে।) আমাদের অ্যাপার্টমেন্টটা ছিল একটা বাগানের ভেতর। বাগানটির রক্ষণাবেক্ষণ করতেন কলেজের এক মালি। শিশুদের সঙ্গে তিনি বেশ চমৎকার ব্যবহার করতেন।
শুরুতে আমি ইংল্যান্ডে ফিরে যেতে তেমন ইচ্ছুক ছিলাম না। কারণ, আমেরিকার সঙ্গে তুলনা করলে ওখানে সবকিছুই সংকীর্ণ আর বাধানিষেধে ঘেরা। সেখানকার পুরো ভূদৃশ্য সে সময় ডাচ এলম রোগে মৃত গাছে বিক্ষিপ্ত অবস্থায় ছিল। অন্যদিকে পুরো দেশ মেতে ছিল ধর্মঘটে। তবে নিজের গবেষণায় সফলতা এবং ১৯৭৯ সালে আমাকে গণিতের লুকাসিয়ান প্রফেসর হিসেবে নির্বাচিত করার কারণে আমার মেজাজ ভালোই ছিল। এককালে এই পদে দায়িত্ব পালন করেছেন স্যার আইজ্যাক নিউটন ও পল ডিরাক
১৯৭৯ সালে করসিকায় এক ভ্রমণের পর আমাদের তৃতীয় সন্তান টিমের জন্ম হয়। সেবার করসিকায় এক সামার স্কুলে বক্তৃতা দিতে গিয়েছিলাম। এরপর জেন আগের চেয়েও বিষণ্নতায় আচ্ছন্ন হয়ে উঠল। তার আশঙ্কা হচ্ছিল, আমি বুঝি শিগগিরই মারা যাব। সে জন্য এমন কাউকে কাছে পেতে চাচ্ছিল, যিনি আমার মৃত্যুর পর তাকে ও আমার সন্তানদের ভরণপোষণ করবেন এবং তাঁকে বিয়েও করবেন। এসব সমস্যা মেটাতে স্থানীয় এক গির্জার মিউজিশিয়ান ও অর্গানবাদক জোনাথান জোনসকে খুঁজে পেয়েছিল সে। আমাদের অ্যাপার্টমেন্টে তাঁকে এক ঘরও দিয়েছিল জেন। এ ব্যাপারে শুরুতেই আপত্তি জানানো উচিত ছিল, কিন্তু শিগগিরই মারা যাব বলে আমারও আশঙ্কা হচ্ছিল। আর আমার মৃত্যুর পর আমার সন্তানদের সহায়তার জন্য কাউকে প্রয়োজন বলে মনে করছিলাম।
ক্রমেই আমার অবস্থার অবনতি হতে লাগল। আমার অসুখের একটি লক্ষণ ছিল দীর্ঘায়িত শ্বাসকষ্টসহ মূর্ছা যাওয়া। ১৯৮৫ সালে সুইজারল্যান্ডের সার্নে (ইউরোপিয়ান পারমাণবিক গবেষণা সংস্থা) এক ট্রিপে গিয়ে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হলাম। তড়িঘড়ি করে প্রাদেশিক এক হাসপাতালে আমাকে ভর্তি করে ভেন্টিলেটরে রাখা হলো। হাসপাতালের চিকিৎসকেরা ভেবেছিলেন, আমি বোধ হয় আর নেই। একপর্যায়ে তাঁরা ভেন্টিলেটর সরিয়ে সেখানেই আমার জীবনের ইতি ঘটাতে চাইলেন। কিন্তু তা করতে দিতে রীতিমতো অস্বীকার করে বসে জেন। আমাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে উড়িয়ে কেমব্রিজের আদেনব্রুক হাসপাতালে ভর্তি করেছিল সে। আমাকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সেখানকার চিকিৎসকেরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছিলেন। শেষ পর্যন্ত আমার ট্রাকিওটমি (শ্বাসনালিতে অস্ত্রোপচার) করতে বাধ্য হয়েছিলেন তাঁরা।
এই অপারেশনের অনেক আগেই আমার কথাবার্তা অস্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। সে জন্য আমাকে যাঁরা ভালোমতো জানতেন, শুধু তাঁরাই আমার কথা বুঝতে পারতেন। তারপরও অন্তত অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগ চালিয়ে যেতে পারতাম। আমার সেক্রেটারিকে নির্দেশনা দিয়ে বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্রগুলো লিখতাম। আবার সেমিনারের সময় আমার পক্ষ থেকে একজন ইন্টারপ্রেটার থাকত। সে আমার কথাগুলো বুঝে আরও পরিষ্কারভাবে সবার সামনে পুনরাবৃত্তি করত। কিন্তু শ্বাসনালির এই অস্ত্রোপচারের কারণে আমার কথা বলার ক্ষমতা একেবারেই হারিয়ে গেল। একসময় অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র উপায় হয়ে দাঁড়াল একটার পর একটা অক্ষর দিয়ে শব্দ বানান করা। সে জন্য আমার ভ্রু নাড়িয়ে কাউকে স্পেলিং কার্ড থেকে সঠিক অক্ষর বেছে নিতে নির্দেশ দিতাম। কিন্তু এভাবে আলোচনা চালানো খুবই কঠিন কাজ। আর বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্রের কথা না হয় বাদই দিলাম।
ওয়াল্ট ওলটম নামে ক্যালিফোর্নিয়ার এক কম্পিউটার বিশেষজ্ঞ আমার এই সংকটাপন্ন অবস্থা সম্পর্কে শুনেছিলেন। আমার জন্য একটি কম্পিউটার প্রোগ্রাম পাঠিয়েছিলেন তিনি, যার নাম ইকুয়ালাইজার। এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে আমি হাতে একটি সুইচ টিপে স্ক্রিনের এক সারি মেনু থেকে শব্দ বাছাই করতে পারতাম। এখন তাঁর তৈরি আরেকটি প্রোগ্রাম ব্যবহার করি, যার নাম ওয়ার্ডস প্লাস। এটি আমার চশমায় বসানো ছোট্ট একটি সেন্সর দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। সেন্সরটি আমার গালের ওঠানামায় সাড়া দেয়। আমি কী বলতে চাই, তা ঠিক করতে পারলে সেটি স্পিস সিনথেজাইজারে পাঠিয়ে দিতে পারি।
প্রথম দিকে এই ইকুয়ালাইজার প্রোগ্রামটি শুধু ডেস্কটপ কম্পিউটারে ব্যবহার করতাম। পরে কেমব্রিজের অ্যাডপটিভ কমিউনিকেশনের ডেভিড ম্যাসন আমার হুইলচেয়ারে ছোট্ট এক পার্সোনাল কম্পিউটার এবং একটি স্পিস সিনথেজাইজার বসিয়ে দেন। এখন আমার কম্পিউটার সরবরাহ করে ইনটেল। এই পদ্ধতিটির কারণে আগের চেয়ে অনেক ভালোভাবে যোগাযোগ করতে পারছি আমি। প্রতি মিনিটে এখন তিনটি শব্দ ব্যবহার করতে পারি। তা ছাড়া যা লিখি কিংবা ডিস্কে সেভ করে রাখি, তা দিয়ে কথাও বলতে পারি। এগুলো প্রিন্টও নিতে পারি কিংবা উঠিয়ে নিতে পারি এবং একটার পর একটা বাক্য বলে যেতে পারি। এই পদ্ধতি ব্যবহার করে এরই মধ্যে সাতটি বই এবং অনেকগুলো বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্র লিখেছি। আবার বেশ কয়েকটি বৈজ্ঞানিক ও জনপ্রিয় ধারার বক্তৃতাও দিয়েছি এটি ব্যবহার করে। সেগুলো বেশ ভালোভাবেই গৃহীত হয়েছে। আমার মনে হয়, এসব সম্ভব হওয়ার পেছনে বড় অবদান রয়েছে স্পিচ প্লাসের তৈরি স্পিচ সিনথেজাইজারের গুণ।
যে কারও জন্যই তার কণ্ঠস্বর বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কারও কণ্ঠ যদি অস্পষ্ট হয়, তাহলে অন্যরা তাকে মানসিকভাবে কমজোরি বলে মনে করে। এই সিনথেজাইজার আমার জানামতে সবচেয়ে ভালো। কারণ, এর স্বরভঙ্গি বিভিন্ন হয় এবং এর কথা ‘ডক্টর হু’ সিরিজের দ্যালেকের মতো নয়। স্পিচ প্লাস ব্যবসা গুটিয়ে ফেলার পর থেকেই তাঁদের স্পিচ সিনথেজাইজার প্রোগ্রামটাও হারিয়ে গেল। আমার কাছে এখন সর্বশেষ তিনটি সিনথেজাইজার আছে। সেগুলো বেশ ভারী আর চালাতেও অনেক শক্তি খরচ হয়। আবার এর মধ্যে এমন চিপ আছে, যেগুলো বিলুপ্ত হয়ে গেছে। তাই সেগুলো আর পাল্টানোও যাবে না। তারপরও এখন পর্যন্ত ওই বিশেষ কণ্ঠ দিয়েই আমাকে সবাই চেনে। এটিই এখন আমার ট্রেডমার্কে দাঁড়িয়ে গেছে। কাজেই আরও প্রাকৃতিক কণ্ঠস্বর পাওয়ার আশায় আমি এগুলো বদলাব না। বাকি তিনটি সিনথেজাইজার ভেঙে না যাওয়া পর্যন্ত এগুলোই চালিয়ে যাব।
হাসপাতাল থেকে বাইরে আসার পর আমার সব সময়ের জন্য নার্সিং সেবার প্রয়োজন হয়ে পড়ল। প্রথমে ভেবেছিলাম, বৈজ্ঞানিক ক্যারিয়ার বোধ হয় এখানেই শেষ। সত্যি সত্যিই সেটি ঘটলে শুধু বাসায় বসে থাকা আর টেলিভিশন দেখা ছাড়া আমার আর কোনো কাজ থাকবে না। শিগগিরই দেখতে পেলাম, বৈজ্ঞানিক গবেষণা চালিয়ে যেতে পারছি। আবার ল্যাটেক প্রোগ্রাম ব্যবহার করে গাণিতিক সমীকরণও লিখতে পারছি। এই গ্রোগ্রামের সাহায্যে সাধারণ চিহ্ন দিয়ে কোনো গাণিতিক চিহ্ন লেখা যায়, যেমন “ লেখার জন্য লিখতে হয় $/pi$।
.
এদিকে জেন আর জোনাথানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান ঘনিষ্ঠতা দেখে খুবই খারাপ লাগছিল। শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি সহ্য করতে না পেরে ১৯৯০ সালে আমার এক নার্স এলেন ম্যাসনকে সঙ্গে নিয়ে একটি ফ্ল্যাটে উঠে পড়লাম।
একসময় দেখা গেল, আমাদের দুজনের জন্য এবং এলেনের দুই ছেলের জন্য ফ্ল্যাটটা খুবই ছোট। প্রতি সপ্তাহেই ওর দুই ছেলে ওর কাছে বেড়াতে আসত। কাজেই ফ্ল্যাটটি বদলানোর সিদ্ধান্ত নিলাম। ১৯৮৭ সালে একটা বিশ্রী রকম ঝড়ে নিউহ্যাম কলেজের ছাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এটি ছিল নারীদের জন্য একমাত্র আন্ডারগ্র্যাজুয়েট কলেজ। (শুধু ছেলেদের জন্য কলেজগুলোতে সে সময় মেয়েরাও ভর্তি হতে পারত। আমার কিস কলেজেও অনেক রক্ষণশীল ফেলো ছিল। এটিই ছিল সর্বশেষ কলেজ, যেখানে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে এখানে মেয়েদের ভর্তি না করা হলে ভালো ছাত্ররা আবেদন করবে না।) নিউহ্যাম কলেজটি অসচ্ছল হওয়ার কারণে ওই ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত ছাদটি মেরামতের খরচ মেটাতে চারটি প্লট বিক্রি করেছিল। একটা হুইলচেয়ার-বান্ধব বাড়ি বানাতে আমরা সেখান থেকে একটি প্লট কিনেছিলাম।
এলেন আর আমি ১৯৯৫ সালে বিয়ে করলাম। এর ঠিক নয় মাস পর জেনও বিয়ে করে বসল জোনাথান জোন্সকে।
এলেনের সঙ্গে আমার বিয়েটি ছিল বেশ আবেগীয় আর উত্তেজনাময়। আমাদের অনেক উত্থান-পতন পার হতে হয়েছে। তবে একজন নার্স হিসেবে অনেকবার আমার জীবন বাঁচিয়েছে এলেন। গলায় অস্ত্রোপচারের পর আমার ট্রাকিয়ায় একটি প্লাস্টিক টিউব বসানো ছিল। এটি আমার ফুসফুসে খাবার ও লালা যাওয়ায় বাধা দিত। টিউবটি বসানো হয়েছিল ট্রাকিয়ায় একটি ফোলানো আংটা দিয়ে। বছরের পর বছর এই আংটার চাপে আমার শ্বাসনালি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে কাশি আর শ্বাসকষ্ট সৃষ্টি করেছিল। একবার ক্রিটে এক কনফারেন্সে গিয়েছিলাম। ক্রিট থেকে ফেরার পথে বিমানে প্রচণ্ড কাশি উঠল। ডেভিড হওয়ার্ড নামের এক সার্জন সেদিন একই প্লেনে ছিলেন। এলেনের সঙ্গে যোগাযোগ করে তিনি বললেন, আমাকে সাহায্য করতে পারবেন তিনি। এরপর আমার ল্যারিনজেকটমি করার প্রস্তাব দিলেন। তাতে আমার গলা থেকে আমার বায়ুনালি পুরোপুরি আলাদা হয়ে যাবে এবং প্রয়োজনে আংটাসহ টিউবটি সরিয়েও নেওয়া যাবে। কেমব্রিজের আদেনব্রুক হাসপাতালে চিকিৎসকেরা বললেন, এটা নাকি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ, কিন্তু এলেন সার্জারি করতে পীড়াপীড়ি করল। ফলে লন্ডন হাসপাতালে অপারেশনটা করলেন ডেভিড হাওয়ার্ড। এই অপারেশন আমার জীবন বাঁচিয়ে দিয়েছিল। আর দুই সপ্তাহ থাকলেও আংটাটি আমার বায়ুনালি আর গলার মাঝখানে একটি ছিদ্র তৈরি করত এবং তাতে আমার ফুসফুসে রক্তক্ষরণ হতো।
কয়েক বছর পর আরেকবার এক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েছিলাম আমি। সেবার গভীর ঘুমের মধ্যে আমার অক্সিজেন লেভেল ভয়ানকভাবে নিচে নেমে গিয়েছিল। তড়িঘড়ি করে আমাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল, তারপর সেখানে চার মাস থাকতে হয়েছিল। আস্তে আস্তে আমাকে একটি ভেন্টিলেটর বসিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। এটা রাতের বেলা ব্যবহার করতাম। আমার চিকিৎসক এলেনকে বলেছিল, বাড়িতে গিয়ে আমি হয়তো মারা যাব। (তারপরই চিকিৎসক পাল্টিয়েছি)। দুই বছর আগে থেকে প্রতিদিন ২৪ ঘণ্টা ভেন্টিলেটর ব্যবহার করি। আমি দেখেছি, এর কারণে শক্তি ফিরে পাই।
এ ঘটনার এক বছর পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮০০ বছর পূর্তি উপলক্ষে তার তহবিল সংগ্রহের ক্যাম্পেইনে আমাকে নিয়োগ করা হয়। আমাকে সান ফ্রান্সিসকোতে পাঠানো হয়েছিল, সেখানে ছয় দিনে পাঁচটি লেকচার দিয়েছিলাম। এতে খুবই ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম। একদিন সকালে ভেন্টিলেটর খুলে ফেলার পর মারাই যাচ্ছিলাম। দায়িত্বরত নার্স ভেবেছিল, আমি হয়তো ঠিকই আছি। আরেকজন নার্স এলেনকে তাড়াহুড়ো করে ডেকে না আনলে সেদিন হয়তো মারাই পড়তাম। সে এসে আমার চেতনা ফিরিয়ে এনেছিল। আমার এসব সংকট এলেনের ওপর বেশ মানসিক চাপ বাড়িয়ে দিয়েছিল। তাই ২০০৭ সালে আমরা বিবাহবিচ্ছেদ নিই। তার সঙ্গে বিচ্ছেদের পর এক হাউসকিপারের সঙ্গে এখন একাই থাকি আমি।
লুকাসিয়ান প্রফেসর : ইংল্যান্ডের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিতের প্রফেসরশিপের নাম লুকাসিয়ান চেয়ার অব ম্যাথমেটিকস। এই পদের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে বলা হয় লুকাসিয়ান প্রফেসর। ১৬৬৩ সালে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্লামেন্ট সদস্য হেনরি লুকাসের নামে এই পদটি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। ১৯৬৪ সালে তৎকালীন ব্রিটেনের রাজা দ্বিতীয় চার্লস এটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করেন। একে বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাসম্পন্ন একাডেমিক পদ হিসেবে বর্ণনা করেছে দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফ। এই পদে দায়িত্ব পালন করেছেন আইজ্যাক নিউটন, চার্লস ব্যাবেজ, পল ডিরাক, স্টিফেন হকিংসহ আরও অনেকে।
আইজ্যাক নিউটন : ইংরেজ গণিতবিদ, জ্যোতির্বিদ, পদার্থবিদ সর্বকালের সবচেয়ে প্রভাবশালী বিজ্ঞানীদের মধ্যে একজন। তাঁর লেখা প্রিন্সিপিয়াকে বলা হয় চিরায়ত গতিবিদ্যার ভিত্তি। তাঁর আবিষ্কৃত গতির সূত্র এবং সর্বজনীন মহাকর্ষ পরবর্তী ৩০০ বছর ভৌত মহাবিশ্ব – সম্পর্কিত বিজ্ঞানীদের দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রভাবিত করে গেছে।