অক্সফোর্ড

অক্সফোর্ড

বাবা খুব করে চাইতেন আমি যাতে অক্সফোর্ড কিংবা কেমব্রিজে পড়তে যাই। একসময় নিজেও অক্সফোর্ডের ইউনিভার্সিটি কলেজে পড়তেন তিনি। কাজেই তিনি ভাবতেন, আমারও ওখানে আবেদন করা উচিত। কারণ, সেখানে আমার জন্য অনেক ভালো সুযোগ আছে। সে সময় ইউনিভার্সিটি কলেজে গণিতের কোনো ফেলো ছিল না। সে জন্য আমাকে রসায়নে পড়াতে চাচ্ছিলেন তিনি। গণিতে চেষ্টা না করে আমি প্রাকৃতিক বিজ্ঞানে একটা স্কলারশিপের জন্য চেষ্টা করেছিলাম।

একবার আমাদের পরিবারের বাকি সব সদস্য এক বছরের জন্য ভারতে বেড়াতে গিয়েছিল। কিন্তু আমাকে এ লেভেল আর ইউনিভার্সিটির ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার জন্য থেকে যেতে হয়েছিল। সে সময়টা ড. জন হামফ্রের পরিবারের সঙ্গে থাকতাম। তিনি ছিলেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর মেডিকেল রিসার্চে আমার বাবার সহকর্মী। তাঁদের বাড়িটি ছিল মিল হিলে। ওই বাড়িতে একটি বেসমেন্টে জন হামফ্রের বাবার বানানো বাষ্পীয় ইঞ্জিন আর অন্যান্য আরও কিছু যন্ত্রের মডেল ছিল। ওই বেসমেন্টেই বেশির ভাগ সময় কাটাতাম। গ্রীষ্মের ছুটি মিলতেই পরিবারের সঙ্গে মিলিত হতে আমিও ভারতে চলে গেলাম। আমাদের পুরো পরিবার লক্ষ্ণৌয়ে একটি বাড়ি ভাড়া করে থাকত। বাড়িটি ভারতের উত্তর প্রদেশের সাবেক এক মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে ভাড়া নেওয়া হয়েছিল। দুর্নীতির দায়ে তাঁকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেখানে থাকার সময় আমার বাবা ভারতীয় খাবার খেতে চাইতেন না। সে জন্য ইংলিশ খাবার তৈরি ও পরিবেশনের জন্য সাবেক এক ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনীর রাঁধুনি ও বার্তাবাহককে নিয়োগ করেছিলেন তিনি। অবশ্য আমার পছন্দ ছিল আরও রোমাঞ্চকর কিছুতে।

সেবার আমরা কাশ্মীরেও বেড়াতে গিয়েছিলাম। শ্রীনগর লেকে একটি হাউসবোট ভাড়া নিয়ে তাতে থাকতাম আমরা। তখন বর্ষাকাল চলছিল। পাহাড়ের ওপর ভারতীয় সেনাবাহিনীর বানানো রাস্তার অনেক জায়গায় বৃষ্টিতে ভেঙেচুরে গিয়েছিল (স্বাভাবিক রুটটি ছিল পাকিস্তানের যুদ্ধবিরতিরেখা বরাবর)। ইংল্যান্ড থেকে আমাদের গাড়িটিও আনা হয়েছিল। কিন্তু গাড়িটি তিন ইঞ্চির বেশি পানিতে টিকে থাকতে পারেনি। তাই এক শিখ ট্রাকচালকের সাহায্যে গাড়িটি টেনে নিয়ে যেতে হয়েছিল

.

আমার প্রধান শিক্ষকের ধারণা ছিল, অক্সফোর্ডে ভর্তি হওয়ার চেষ্টার জন্য আমি বয়সে খুবই ছোট। তারপরও ১৯৫৯ সালের মার্চে স্কলারশিপ পেতে পরীক্ষা দিয়েছিলাম। স্কুলের আমার এক ক্লাস ওপরের দুই ছেলেও ছিল আমার সঙ্গে। তবে রেজাল্ট খারাপ হওয়ার পর প্রধান শিক্ষকের ওই কথার মানে বুঝতে পারলাম। আবার হতাশও হয়েছিলাম যখন দেখলাম, ইউনিভার্সিটির লেকচারার ব্যবহারিক ক্লাসে এসে অন্য ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলছেন, কিন্তু আমার সঙ্গে তাঁরা কোনো কথা বলছেন না। অক্সফোর্ড থেকে ফিরে আসার কয়েক দিন পর এক টেলিগ্রাম পেলাম। সেখানে লেখা ছিল, আমি স্কলারশিপ পেয়েছি।

তখন আমার বয়স ১৭। আমার বর্ষের বেশির ভাগ শিক্ষার্থীই কাজ করত সেনাবাহিনীতে। আবার আমার চেয়ে তাদের বয়সও অনেক বেশি ছিল। তাই প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের কিছু সময় নিজেকে খুবই নিঃসঙ্গ মনে হতো। তৃতীয় বর্ষে অনেক বেশি বন্ধু বানানোর চেষ্টা করলাম। সে জন্য বোট ক্লাবে নৌকার মাঝি হিসেবে যোগ দিয়েছিলাম। অবশ্য সেখানে নৌকার মাঝি হিসেবে আমার ক্যারিয়ারটা বেশ ভয়াবহই বলতে হবে। কারণ, পাশাপাশি নৌকাবাইচের জন্য অক্সফোর্ডের নদীটি ছিল সরু। সেখানে একটার পেছনে আরেকটা করে মোট আটটা লাইনে নৌকার সংঘর্ষপূর্ণ নৌকাবাইচ হতো। প্রত্যেক মাঝিকেই তার নৌকাকে সামনের নৌকা থেকে যথাযথ দূরত্ব বজায় রেখে চলতে হতো। তাই প্রতিযোগিতা শুরুর লাইনে শক্ত হাতে নৌকাটাকে ধরে রাখতে হতো সবাইকে।

জীবনের প্রথম প্রতিযোগিতায় সূচনা-গুলি চালানোর পরপরই আমি শুরুর লাইন ধরে সামনে এগোতে লাগলাম। কিন্তু সেটি হালের সঙ্গে আটকে যায়। ফলে আমাদের নৌকা সামনে চলতে থাকলেও আমরা সেবার অযোগ্য ঘোষিত হয়েছিলাম। পরে আরেকটি নৌকার সঙ্গে আমাদের সংঘর্ষও হয়। তবে আমি অন্তত বলতে পারি, সেটা আমার কোনো ভুলের জন্য হয়নি। কারণ, অন্য আটটি নৌকার থেকে নিরাপদ দূরত্বই বজায় রেখেছিলাম। নৌকার কান্ডারি হিসেবে কোনো সফলতা না পেলেও সে বছর আমি অনেক বন্ধু পেয়েছিলাম। সেই সঙ্গে পেয়েছিলাম অনেক আনন্দও।

কাজ থেকে দূরে থাকাটাই ছিল সে সময় অক্সফোর্ডে সবার মধ্যে প্রচলিত মনোভাব। আপনাকে হয় কোনো চেষ্টা ছাড়াই মেধাবী হতে হবে, নয়তো নিজের সীমাবদ্ধতা মেনে নিয়ে একটা চতুর্থ শ্রেণির ডিগ্রি পেতে হবে। ভালো একটি ডিগ্রি পেতে কঠোর পরিশ্রম করাকে ‘গ্রে ম্যান’ বা রসকষহীন মানুষ হিসেবে বিবেচনা করা হতো। সেকালে অক্সফোর্ড অভিধানে এটিই ছিল সবচেয়ে বাজে উপাধি।

সেকালে কলেজগুলো নিজেদের শিক্ষার্থীদের অভিভাবক হিসেবে মনে করত। অর্থাৎ শিক্ষার্থীদের নৈতিকতার জন্য তারাই দায়িত্বপ্রাপ্ত, এমনটাই ছিল তাদের মনোভাব। সে কারণে কলেজগুলোর সবই ছিল একলৈঙ্গিক (অর্থাৎ পুরুষ অথবা নারী)। তাই মাঝরাতে কলেজগুলোর দরজা বন্ধ রাখা হতো। আশা করা হতো, এই সময়ের মধ্যে দর্শনার্থীরা, বিশেষ করে বিপরীত লিঙ্গের দর্শনার্থীরা কলেজ ছেড়ে বাইরে চলে যাবে। মাঝরাতের পর কেউ বাইরে যেতে চাইলে তাকে কাঁটা বিছানো উঁচু দেয়াল বেয়ে পার হতে হতো। তবে আমার কলেজ কর্তৃপক্ষ চাইত, শিক্ষার্থীরা যাতে এভাবে আহত না হয়। সে জন্য দেয়ালে বিছানো কাঁটাগুলোর মাঝখানে একটু ফাঁকা জায়গা রাখা হয়েছিল। তাই এই দেয়াল বেয়ে পার হওয়া বেশ সহজই ছিল। তবে বিপরীত লিঙ্গের কাউকে হাতেনাতে বিছানায় পাওয়া গেলে ভিন্ন কথা। এসব ক্ষেত্রে ঘটনাস্থলেই তাৎক্ষণিকভাবে তাকে বহিষ্কার করা হতো।

প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার বয়স ১৮ বছরের নিচে নামিয়ে আনা এবং ১৯৬০-এর দশকে যৌনবিপ্লব সবকিছু পাল্টে দিয়েছিল। তবে সবই ঘটেছিল আমি অক্সফোর্ড ছেড়ে চলে আসার পর।

.

সে সময় পদার্থবিদ্যার কোর্স এমনভাবে সাজানো হতো, যাতে সহজ উপায়ে পরিশ্রম এড়ানো যায়। অক্সফোর্ডে ভর্তির আগে আমি একটি পরীক্ষা দিয়েছিলাম, এরপর সেখানে পুরো তিন বছরে শুধু শেষের দিকে ফাইনাল পরীক্ষাটি দিতে হয়েছিল। একবার হিসাব করে দেখলাম, অক্সফোর্ডের তিন বছরে আমি প্রায় এক হাজার ঘণ্টা কাজ করেছি। অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে মাত্র এক ঘণ্টা। তবে এই শ্রমহীনতার জন্য মোটেও গর্বিত ছিলাম না। বরং ওই সময়টি আমার মনোভাব অধিকাংশ সহপাঠীর সঙ্গে ভাগাভাগি করেছিলাম। তখন আমরা পুরোপুরি বিরক্তিকর পরিবেশে আক্রান্ত ছিলাম। কোনো প্রচেষ্টাতেও কিছু হবে না বলে মনে হতো আমাদের। অবশ্য আমার অসুস্থতার ফলে সবকিছুই বদলে গিয়েছিল। কেউ আসন্ন মৃত্যুর আশঙ্কার মুখে পড়লে হঠাৎ সে বুঝতে পারে জীবন আসলে কতটা মূল্যবান। তখন সে অনেক কিছুই করতে চায়।

প্রস্তুতির অভাবে, শুধু তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের সমস্যাগুলোর সমাধান করে ফাইনাল পরীক্ষায় টিকে থাকার পরিকল্পনা করলাম। আর যেসব প্রশ্নের জন্য তথ্যমূলক জ্ঞান দরকার, সেগুলো দেওয়ার কথাও ভাবলাম। স্নায়বিক উত্তেজনার কারণে পরীক্ষার আগের রাতে ঘুমাতে পারতাম না। সে জন্য পরীক্ষা খুব বেশি ভালোও দিতে পারিনি। আমার ফলাফল দাঁড়াল, প্রথম আর দ্বিতীয় শ্রেণির মাঝামাঝি। তাই আমার কী ফলাফল পাওয়া উচিত, তা নির্ধারণ করতে পরীক্ষকেরা আমার ইন্টারভিউ নিলেন ইন্টারভিউয়ে আমার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলেন তাঁরা। আমি সোজাসাপটা জবাব দিলাম, গবেষণা করতে চাই। আরও বললাম, আমাকে প্রথম শ্রেণি দেওয়া হলে আমি কেমব্রিজে চলে যাব, আর দ্বিতীয় শ্রেণি পেলে অক্সফোর্ডেই থেকে যাব। শেষ পর্যন্ত তাঁরা আমাকে প্রথম শ্রেণিই দিয়েছিলেন।

কোনো কারণে গবেষণা করার সুযোগ যদি না পাই, তাই বিকল্প পরিকল্পনা হিসেবে সরকারি চাকরিতে ঢোকার জন্য আবেদন করেছিলাম। পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে আমার মনোভাবের কারণে সরকারের নিরাপত্তা বিভাগের চাকরি করার ইচ্ছা ছিল না। তাই পছন্দের তালিকায় শুরুতে দিয়েছিলাম কর্ম মন্ত্রণালয় (তখন সরকারি ভবনগুলোর পরই এর অবস্থান ছিল) অথবা হাউস অব কমন্সের কেরানির চাকরি। ইন্টারভিউগুলোতে পরিষ্কার বুঝতে পারলাম, হাউস অব কমন্সের কেরানিরা আসলে কী করেন, সে সম্পর্কে আমার কোনো ধারণা নেই। তারপরও আমি ইন্টারভিউয়ে উতরে গেলাম। বাকি রইল শুধু লিখিত পরীক্ষা দুর্ভাগ্যক্রমে এই পরীক্ষার কথাটি বেমালুম ভুলে গিয়েছিলাম। যথারীতি পরীক্ষাটা দিতে পারলাম না। পরে সিভিল সার্ভিস নির্বাচন বোর্ড আমাকে খুবই চমৎকার এক চিঠি লিখে জানাল, পরের বছর আমি আবার চেষ্টা করে দেখতে পারি। আমার বিরুদ্ধে তারা ওই পরীক্ষাটি না দেওয়ার ব্যাপারটি ব্যবহার করবে না বলেও জানায়। ভাগ্য ভালো যে কোনো সরকারি কর্মচারী হইনি। কারণ, দৈহিক অক্ষমতার কারণে শেষ পর্যন্ত চাকরিটি আমি চালিয়ে যেতে পারতাম না।

আমার ফাইনাল পরীক্ষার পর লম্বা এক ছুটিতে কলেজ কর্তৃপক্ষ বেশ কিছু ছোট ছোট ভ্রমণের প্রস্তাব দিল। ভাবলাম, এগুলোর বদলে অনেক দূরে কোথাও যাওয়ার প্রস্তাব দেওয়াই ভালো হবে। তাই ইরানে যেতে চাই বলে জানালাম। এ বিষয়ে আমার এক সহপাঠী জন এলডারের সঙ্গে সব পরিকল্পনা করলাম। সে এর আগে ওখানে একবার গিয়েছিল এবং সে ফারসি ভাষাও জানে। ট্রেনে চেপে প্রথমে আমরা ইস্তাম্বুল গেলাম, তারপর আরারাত পাহাড়ের কাছে পূর্ব তুরস্কের এরজুরাম গিয়েছিলাম। এরপর ওই রেলপথ চলে গেছে সোভিয়েত অঞ্চলে। কাজেই মুরগি আর ভেড়ায় গাদাগাদি করা একটি আরব বাসে চেপে আমরা প্রথমে তাবরিজ আর তারপর তেহরান পৌঁছালাম।

তেহরানে গিয়ে জন আর আমি আলাদা হয়ে গেলাম। পরে আরেক ছাত্রের সঙ্গে দক্ষিণে ইস্পাহান, সিরাজ ও পার্সিপোলিসে গেলাম। পার্সিপোলিস ছিল প্রাচীন পারস্য সম্রাটের রাজধানী, আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট যাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করেছিলেন। এরপর আমি মধ্য মরুভূমি পার হয়ে গেলাম মাশহাদ।

বাড়ি ফেরার পথে আমি আর আমার ভ্রমণসঙ্গী রিচার্ড চিন কোন-জাহরায় এক ভূমিকম্পের মুখে পড়েছিলাম। ৭.১ মাত্রার এই ভূমিকম্পে সেবার ১২ হাজার মানুষ মারা গিয়েছিল। নিঃসন্দেহে আমি ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলের কাছেই ছিলাম। অথচ আমার অসুস্থতা এবং সে সময় ইরানি রাস্তায় একটি বাসে যাওয়ার পথে প্রচণ্ড ঝাঁকির কারণে কিছুই বুঝতে পারিনি। আবার স্থানীয় ভাষা না জানায় বেশ কয়েক দিন এ দুর্যোগ সম্পর্কে আমরা কিছুই জানতে পারিনি। ভয়ানক ডায়রিয়া থেকে সেরে ওঠার সেই সময়টি আমরা তাবরিজে ছিলাম। আর রাস্তায় প্রচণ্ড ঝাঁকুনিতে বাসের সামনের সিট থেকে ছিটকে পড়ে পাঁজর ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। ইস্তাম্বুল পৌঁছার আগপর্যন্ত আসল ঘটনা কিছুই বুঝতে পারিনি

তাড়াহুড়ো করে মা-বাবার কাছে একটা পোস্টকার্ড পাঠিয়েছিলাম আমি। তাঁরা প্রায় ১০ দিন দুশ্চিন্তার মধ্যে আমার খবর পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। আমার কাছ থেকে এর আগে তাঁরা সর্বশেষ খবরটি পেয়েছিলেন যে আমি তেহরান ছেড়ে ভূমিকম্পের ওই উৎপত্তিস্থলের দিকেই যাচ্ছি।

তথ্যনির্দেশ

আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট : গ্রিসের মেসিডোনিয়ার তৃতীয় আলেকজান্ডার (খ্রিষ্টপূর্ব ৩৬৫-৩২৩) ইতিহাসে আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট নামে পরিচিত। মাত্র ২০ বছর বয়সে সম্রাট হয়েছিলেন তিনি। খ্রিষ্টপূর্ব ৩৩২ সালে তিনি আলেকজান্দ্রিয়া শহর প্রতিষ্ঠা করেন। প্রাচীন মিসরের রাজধানী ছিল এ শহরটি। শাসনকালের অধিকাংশ সময়ই তিনি উত্তর- পূর্ব আফ্রিকা ও পশ্চিম এশিয়াজুড়ে সামরিক অভিযান চালিয়েছিলেন। এ সময় তিনি ভারতও আক্রমণ করেন। এভাবে তিনি মিসর থেকে উত্তর-পশ্চিম ভারত পর্যন্ত বিস্তৃত সাম্রাজ্যের সম্রাটে পরিণত হন।

পার্সিপোলিস : পার্সিপোলিস নামটি গ্রিকদের দেওয়া। গ্রিক ভাষায় এর অর্থ পারসিকদের নগররাষ্ট্র। পারস্যবাসীর কাছে এর নাম ছিল পারসা। রাজধানীর জন্য এই জায়গা পছন্দ করেছিলেন পারস্য সম্রাট সাইরাস দ্য গ্রেট। তিনিই অ্যাকামেনিদ সাম্রাজ্যের ভিত্তি গড়ে তুলেছিলেন। পরে অ্যাকামেনিদ সম্রাট দারিয়ুস একে সমৃদ্ধ এক রাজধানী হিসেবে গড়ে তোলেন। খ্রিষ্টপূর্ব ৩৩০ অব্দে আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট পার্সিপোলিস আক্রমণ করেন। প্লুটার্কের লেখা আলেকজান্ডারের জীবনী অনুযায়ী এক রাতে মাতাল হয়ে তিনি পার্সিপোলিস পুড়িয়ে দিয়েছিলেন। সেই সঙ্গে তাঁর সৈন্যরাও পুরো শহর লুটপাট করেছিল। তাতেই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় পার্সিপোলিস।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *