পরিশিষ্ট ও গ্রন্থসূত্র

পরিশিষ্ট-১

এখন কিছু আত্মপক্ষ সমর্থনের প্রয়োজন আছে। বিষয়টি সম্পূর্ণ নৈর্ব্যক্তিক না হতেও পারে। কথামুখে উল্লেখ করেছি। আমার পড়াশোনা ইংরাজি ভাষা সাহিত্যে। বর্ধমান রাজ কলেজে স্নাতক এবং বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর। ইংরাজির ক্লাসে যখন এলিয়েটের ওয়েস্ট ল্যাণ্ড-এ মজে আছি, জমে আছি কীটস্-এ, বিশ্ববিদ্যালয়ে পঠনকালে এক মহান শিক্ষকের সান্নিধ্য পেলাম। প্রণম্য সদানন্দ চক্রবর্তী। ইংরাজি ভাষা-সাহিত্যে অত বড়ো মাপের ভূয়োদর্শী পণ্ডিত শিক্ষাক্ষেত্রে বিরল। অন্যদিকে পুরোদস্তুর সন্ন্যাসী। খালি পা, খালি গা, চন্দনচর্চিত ললাট। চোখ খুলে সামনে দেখি বৈদিক আশ্রমের এক আচার্যকে। চোখ বুজলে দেখি টেমসের তীরে বিচরণরত এক য়ুরোপীয় সাহিত্য সমালোচক। তাঁর কাছে শিখলাম, জানার সীমারেখা বিষয়ের কাঁটাতারে বাঁধা থাকে না। আমার দিক্‌দিশারী অধ্যাপক মোহিত রায় এই সময় আমাকে বৈষ্ণব দর্শন ও বৈষ্ণবপদাবলির রসসাগরের তীরে নিয়ে গেলেন। শেকড় গোঁজার পালা শুরু হল। রূপসাগরে কাঁচা সোনার সন্ধান করতে শুরু করলাম। কেন?

উল্লেখ করেছি আমার পূজ্যপাদ পিতৃদেব সৌরেশচন্দ্র ঠাকুর বৈষ্ণবতীর্থ পাহাড়পুর শিরোনামে একটি পুস্তক রচনা করেন। প্রকাশকাল ১৪০১, ৪ বৈশাখ। পৃষ্ঠা সংখ্যা ১০৮। পরে এক খাতার সন্ধান পাই কল্‌মি পুঁথি জাতীয়। রচয়িতা সতীশচন্দ্র ঠাকুর আমার পিতামহ। পান্ডুলিপির অনেকাংশ পাওয়া যায়নি। বোঝা যায় অসমাপ্ত। পিতার বই এবং পিতামহের পান্ডুলিপি আমার সামনে এক নবদিগন্ত খুলে দেয়। বৈষ্ণব সাহিত্য সম্পর্কে আগ্রহ ক্রমাগত বাড়তে থাকে। এ এক মহাসমুদ্র। বৈষ্ণব সাহিত্য, বৈষ্ণব পদাবলি, বৈষ্ণবসাধনা এবং চৈতন্যজীবনী—সব মিলে এক অনন্ত সম্পদ। তার কণামাত্র পেলেও জীবনচর্চা ধীময় হতে পারে। আমি ওই কণারই কাঙাল।

রবীন্দ্রনাথ বৈষ্ণব পদাবলির কিছু কিছু অংশ পাঠ করেন কৈশোরে। মূলত: কাদম্বরীদেবীর প্ররোচনায়। ব্রাহ্মগৃহে জয়দেব বিদ্যাপতি জ্ঞানদাস-চণ্ডিদাস-গোবিন্দদাস অংশত: ব্রাত্যই ছিলেন। বৈষ্ণব-সাহিত্য পাঠকের আগমন ছিল গৃহে। ধারণা হয়, দুজনে লুকিয়ে চুরিয়ে পড়েছিলেন। এই গুপ্ত-পাঠের ফসল, ভানুসিংহের পদাবলি। তার ভাষা ও গুণগত মান দিয়ে সুধীজন বিচার করবেন। কিন্তু আন্তরিকতা ও রসমাধুর্যে ঘাটতি আছে—এ সন্দেহ অবাঞ্চনীয়। রবীন্দ্রনাথ তন্নিষ্ঠ পাঠক হিসাবে বৈষ্ণবপদাবলিতে মগ্ন হলেন অনেক বছর পর। সম্ভবত: ১৯০৭-এর পর। পরপর আত্মজন বিয়োগ (মৃণালিনীর মৃত্যু ১৯০২, মধ্যম কন্যা রেণুকার মৃত্যু ১১০৩, পিতৃদেব দেবেন্দ্রনাথের মৃত্যু ১৯০৫-সর্বোপরি প্রাণপ্রিয় সন্তান শমীন্দ্রনাথের মৃত্যু ১৯০৭) কবির জীবনকে এক ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করে। বাল্মীকির মত (সামান্য এক ক্রৌঞ্চের মৃত্যু তাঁর শোককে শ্লোকের দিকে নিয়ে যায়) তাঁর শোক সাধনায় রূপান্তরিত হয়। শোক থেকে সাধনা, বিয়োগ ও বিরহের বেদনা, ভক্ত-ভগবানের মিলনেচ্ছা—সব নিয়ে গীতাঞ্জলির স্ফুরণ। শ্রীমতী রাধারাণীর বিরহ ও অভিসারের পূর্ণ প্রতিচ্ছবি ‘আজি শ্রাবণঘন গহন মোহে’, ‘মেঘের পরে মেঘ জন্মেছে’ ইত্যাদি বহু কবিতায় (বা গানে)। ভক্ত-ভগবানের মিলনের নিবিড় ছবি ‘তাই তোমার আনন্দ আমার পর।’ গানের শেষে পাই, ‘মূর্ত্তি তোমার যুগল সম্মিলনে’—। শ্রীকৃষ্ণের শ্যামতনু শ্রীমতীর গৌরতনুতে মিশে যাওয়ার কথা বৈষ্ণব পদাবলিতে। বহিরঙ্গে শ্রীমতী অন্তরঙ্গে কৃষ্ণ। তখনই আসেন গৌরাঙ্গ।

মাদৃশ অ-ভক্ত, অ-পণ্ডিত ও অ-বৈষ্ণবের পক্ষে বৈষ্ণব সাহিত্যের অনুমাত্র প্রকাশের অধিকার নেই। তবু পঙ্গুর গিরিলংঘনের দুরাশায় এবং এক শ্রীপাটে জন্মলাভের অভিমানে এই দুরূহ কাজে অযাচিত অনুপ্রবেশ করেছি। পরম ভাগবত বৈষ্ণবকুল ও সমালোচকের চোখে যদি অপ্রীতির কারণ ঘটে, আমি ক্ষমাপ্রার্থী।

পিতামহ ও পিতৃদেবের রচনা মোতাবেক অদ্বৈতমতধারা তথা ঈশাননগরের বংশলতিকার অনুগামী। সৌরেশচন্দ্র লিখছেন, ‘ঈশাননগর ঠাকুরের পূর্বপুরুষেরা রাঢ়ের বন্দ্যোঘাটি গ্রামের অধিবাসী। ঈশাননাগরের পিতাসহ যে কোন কারণে, শ্রীহট্ট জেলার লাউড়ে গ্রামে যান।’ বৈষ্ণবতীর্থ পাহাড়পুর, পৃষ্ঠা-৪৭

সৌরেশচন্দ্র তাঁর তথ্যের অনুকুলে বলেছেন, সপ্তদশ শতকের প্রথমদিকে ঈশাননগরের প্রপৌত্র ‘শ্যামকিশোর ঠাকুর প্রতিষ্ঠিত গ্রন্থাগারে বিভিন্ন স্থান থেকে সংগৃহীত বিভিন্ন ধরণের বহু সংখ্যক হাতে লেখা পুঁথি ছিল। শ্যামকিশোর রামকানাই-এর জীবনকাহিনী এবং বাণীগুলি সংগ্রহ করে একটি পুঁথি লিখেছিলেন।
সেই পুঁথিটি এবং ঈশাননাগর ঠাকুর রচিত ‘অদ্বৈতপ্রকাশ’ গ্রন্থটি এই গ্রন্থাগারে ছিল। ১৩০৫ সালের অগ্নিকাণ্ডে গ্রন্থাগারটি ভষ্মীভূত হয়। বহু মূল্যবান গ্রন্থ পুড়ে ছাই হয়। দগ্ধাবশেষ পুঁথিগুলি এনে ঠাকুরবংশীয়দের বাসগৃহে সযত্নে রাখা হয়।
…আমি আমার বাল্যকালে দগ্ধাবশেষ পুঁথিগুলি বহুবার দেখেছি।’ বৈষ্ণবতীর্থ পাহাড়পুর, পৃ. ৪৪

শ্রীপাট পাহাড়পুরে (বীরভূম জেলায় আহম্মদপুর স্টেশনের সাড়ে তিন কিলোমিটার দক্ষিণে) ‘খ্রিষ্টিয় ষোড়শ শতকের শেষভাগে অদ্বৈত পরিবারভুক্ত বৈষ্ণব রামকানাই ঠাকুর এবং সুন্দরানন্দ পরিবারভুক্ত পুরন্দর ঠাকুর পাহাড়পুরে এসে আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন।’ তদেব, পৃ. ৬

বর্ণিত হয়েছে ‘ঈশাননাগরের তিন পুত্র। ….(কনিষ্ঠ) কৃষ্ণবল্লভ ঠাকুর বৈষ্ণব মতবাদ প্রচারের জন্য বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়ানোর সময় কিছুদিন মৌগ্রামে (মহুগ্রাম) ছিলেন। মুর্শিদাবাদ জেলার অন্তর্গত কাগ্রামের নিকটবর্তী মৌগ্রাম আজও স্বনামে বিদ্যমান আছে। কৃষ্ণবল্লভ ঠাকুর বিবাহিত হলেও, মৌগ্রামে থাকাকালে, মৌগ্রাম নিবাসী মথুরানাথ মুখোপাধ্যায়-এর অনুরোধে তাঁর কন্যা রুক্মিনী দেবীকে বিবাহ করেন। রুক্মিনীর গর্ভজাত কৃষ্ণবল্লভের পুত্রের নাম রামকানাই ঠাকুর। ….(রামকানাই-এর) উদাস ভাব পাগলামি দেখে তাঁর মাতামহ সে যুগের নিয়মমত অল্প বয়সেই তাঁর বিয়ে দিলেন। অদ্বৈত মহাপ্রভুর চতুর্থ পুত্র বলরাম মিশ্র প্রতিষ্ঠা করেন শ্রীরাধাবল্লভ বিগ্রহ। পরে রামকানাই সংসার ত্যাগ করে চলে গেলেন।
রামকানাই-এর পুত্রের নাম শ্যামকিশোর।’ তদেব, ১৩

আগেই উল্লেখ করেছি, চৈতনোত্তর বিভিন্ন বৈষ্ণব শাখার আভ্যন্তরীণ মতানৈক্যে এবং নবদ্বীপ রাজের বৈষ্ণব ধর্মের প্রতি অনাগ্রহে ও প্রতিকূলতায় বিভিন্ন শাখা ও উপশাখার বৈষ্ণবগণ বাংলার নানা প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েন। অনুকূল পরিবেশ জেনে শ্রীপাট গড়ে তোলেন। কেউ কেউ গড়ে তোলেন আখড়া। বীরভূম, বর্ধমান, মুর্শিদাবাদেও প্রচুর আখড়া শ্রীপাট প্রতিষ্ঠা হয়। সৌরেশচন্দ্র লিখছেন, ‘রামকানাই-এর মাতামহ মহুগ্রাম নিবাসী মথুরানাথ মুখোপাধ্যায় কৃষ্ণমন্ত্রে দীক্ষা গ্রহণের পর মহুগ্রামে একটি বিষ্ণুমন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। কৃষ্ণবল্লভ সেই বিগ্রহের নামকরণ করেছিলেন “রাধাবল্লভ”। …শ্যামকিশোরের দ্বিতীয় পুত্র এক বৈষ্ণব সন্ন্যাসীর কাছে সন্ন্যাস নিয়ে সংসার ত্যাগ করে চলে যান। পরিব্রাজক রূপে বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়ানোর সময় তিনি নাকি বিভিন্ন স্থানে শ্রী বিগ্রহ এবং শ্রীপাট স্থাপন করেন।
তাঁর প্রতিষ্ঠিত শ্রীপাটগুলি রামকানাই-এর পাট নামে এবং বিগ্রহগুলি ‘রাধাবল্লভ’ নামে পরিচিত।’ তদেব, পৃ. ৪৭

সৌরেশচন্দ্রের পিতৃদেব সতীশচন্দ্রের পান্ডুলিপিতে দেখতে পাই (রচনাকাল আনুমানিক ১৯০৭/১০) ‘পাহাড়পুরে অদ্যাপি শ্রীশ্রীরাধাবল্লভের বিগ্রহ সেবা প্রতিষ্ঠিত রহিয়াছে। এবং বর্তমানে এই ক্ষুদ্র পল্লীতে যে রূপ আশ্চর্যভাবে রাধাবল্লভ জিউ প্রভুর সেবা পূজাদি অতিথি সৎকার মহোৎসব সুসম্পন্ন হইতেছে, তাহা ঐশী শক্তির সম্পূর্ণ বিকাশ ভিন্ন আর কিছুই অনুমিত হয় না। ভক্ত শিষ্য মণ্ডলীর অনুরোধে পাটখানি সর্বসাধারণের নিকট প্রচার জন্য আশ্রম নামক পুস্তকে শ্রীরাধাবল্লভ মাহাত্ম ও উক্ত শ্রীপাটের প্রকাশক বর্তমান ঠাকুর বংশের পূর্বপুরুষ ঠাকুর রামকানাই ভূষিত।’ সতীশচন্দ্ৰ, পৃ. ২।

সতীশচন্দ্র পয়ারে লিখছেন :

‘ভক্তি তরে বন্দি আমি শ্রী রাধাবল্লভ।
বিরিঞ্চি-বাঞ্ছিত যিনি দেবের দুল্লভ।।
তাঁর পদযুগে মোর অশেষ প্রণতি।
শ্রীপাট পাহাড়পুরে যাঁর নিত্য স্থিতি।।
বন্দিব আজ করজোরে শ্রীঅদ্বৈত প্রভু।
ভ্রমেও বিভ্রম যেন না হয় কভু।।
শ্রী গৌরাঙ্গের গণ বলি যাঁহার প্রচার।
শ্রীপাটের প্রকাশক তাঁর পরিবার।।
অদ্বৈতের প্রিয়পুত্র বলরাম মিশ্র।
ইঁহার চরণে নতি করিনু অজস্র।।
যে বংশের প্রকাশক ঈশাননাগর।
গৌরগত প্রাণ তিনি করুণাসাগর।।
……………………………………….
তৎপুত্র কৃষ্ণবল্লভ ঠাকুরের খ্যাতি।
উক্তধামে পিতৃসনে ছিল তাঁর স্থিতি।।
তৎপুত্র সাধকেন্দ্র শ্রীরামকানাই।
তাঁর শ্রীচরণে মোর স্তুতি শেষ নাই।।
কঠোর সাধন বলে আসি বীরভূমে।
প্রকাশ করিলেন সেবা রাধাবল্লভ নামে।।
অদ্যাবধি সেই সেবা রহে বিদ্যমান।
তাঁর বংশধরগণ উজ্জ্বল প্রমাণ।।’ আশ্রম, সতীশচন্দ্র/প/. ২০

সৌরেশচন্দ্র পিতৃদেবের রচনারই অনুগামী। বর্ণনারীতি পৃথক হলেও বিষয়-বর্ণনায় দুজনেই আত্মনেপদী। মাঝের কিছু অংশ কীটদষ্ট এবং অস্পষ্ট। সতীশচন্দ্র আরও লিখছেন,

‘শ্রীগুরুর চরণ পদ্ম করিনু বন্ধন।
ঈষ্টদেবরূপে যিনি (….)।।
তাঁর বাক্যামৃত হরণ করয়ে সবার।
সংসার বিষম বিষে যাতনা অপার।।
গুরৈ মনুষ্যবুদ্ধিন্তু মন্ত্রেচাক্ষর ভাবনাং।
প্রতিমায়াং শিলাজ্ঞানংকুৰ্ব্বাশে নরকোব্রজেৎ।।
গুরুতে মনুষ্যজ্ঞান মন্ত্রেতে অক্ষর।
শ্রী বিগ্রহে শিল্পজ্ঞান করে যে পামর।
তাহার নরকে স্থান জানহ নিশ্চয়।
সকল শাস্ত্রেতে ইহা ফুকারিয়া কয়।।
(১০/১২ পঙক্তি অস্পষ্ট)…..
অপার ভক্তি জ্ঞান যিনি ত্রিভুবনে।
শ্রীলাদ্বৈত ভাবের কথা রহে যেন মনে।।।
অদ্বৈত বংশেতে শ্রেষ্ঠ দেবের উদ্ভব।
বংশের কথা চিত্তে হয় অনুভব।।
প্রাংশ পরিচয় অগ্রেতে লিখিতে।
হইল আশা মোর দুর্ব্বল চিত্তেতে।।
গুরু কৃষ্ণ যদি শাস্ত্র মতে হয়।
এই মোর কৃষ্ণকথা জানিহ নিশ্চয়।
অদ্বৈত ভাবেতে মগ্ন মানস যাহার।
রাম ও কানাই ভেদ নাহিক তাহার।।
রাম কানাই এক তত্ত্ব যদি সত্য হয়।
এক দেহে রামকানাই হলেন উদয়।।
অদ্বৈত বংশেতে বা মম পূৰ্ব্ব বংশে।
জগৎ উজ্জ্বল করি শ্রীগোবিন্দ অংশে।।
তাঁদের চরিতকথা প্ৰকাশ আশায়।
কি জানি কি কহিলাম বাতুলের প্রায়।।’ সতীশচন্দ্ৰ।আশ্রম।পৃ. ৫

পরিশিষ্ট-২

অচ্যুতচরণ চৌধুরীর বর্ণনায় ‘ঈশাননাগরের বিস্তৃত বংশাবলী দেওয়া অনাবশ্যক, এস্থলে একটি শাখা সংক্ষেপে প্রদত্ত হইল। ঈশাননাগরের তিনপুত্র–পুরুষোত্তমনাগর, হরিবল্লভ ও কৃষ্ণবল্লভ। তন্মধ্যে জ্যেষ্ঠ পুরুষোত্তমের পুত্র রমানাথ, তৎপুত্র কৃষ্ণচরণ, তৎপুত্র গোপালকৃষ্ণ, তাঁহার পুত্র স্বরূপচন্দ্র, ইঁহার পুত্র ঈশ্বরচন্দ্র, তৎপুত্র যাদবচন্দ্র, যাদবের পুত্র যোগেশচন্দ্র ও এক শিশু জীবিত আছেন।’ শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত, ২/৩, পৃ. ৩৯৬

অদ্বৈতপ্রকাশের ভূমিকায় অচ্যুতচরণ লিখেছেন, ‘ঈশানের বংশধরগণ এখনও আছেন কিন্তু আর তাঁহারা লাউড়ের অধিবাসী নহেন।’ অ.প্র./ভূমিকা। আর একটি স্থলে লিখছেন, ঈশানের বংশের একটি শাখা ‘ঝাকপালে’ বসবাস করেন।

সতীশচন্দ্রের পান্ডুলিপি ও অচ্যুতচরণের গ্রন্থে বিবরণ—একসঙ্গে ধরলে কোথাও একটা সুত্রসন্ধান পেতে পারি।

গ্রন্থসূত্র

ঈশান নাগর, অদ্বৈতপ্রকাশ, সম্পাদনা, কিশোরীদাসবাজী, ঈশ্বরপুরী হালিশহর

ঈশান নাগর, অদ্বৈতপ্রকাশ, সম্পাদনা-সতীশচন্দ্ৰ মিত্ৰ

কবিরাজ, কৃষ্ণদাস, শ্রীচৈতন্যচরিতামৃত, বেণীমাধব শীলস লাইব্রেরী, কলকাতা-২০১৫।

চণ্ডীদাস, পদাবলী, বসুমতী, কলিকাতা, ১৯৯৬।

জয়দেব গোস্বামী, গীতগোবিন্দ, বসুমতী, কলিকাতা,

কৃষ্ণদাস (লাউড়িয়া), বাল্যলীলা সূত্রম

কবিকর্ণপুর, গৌরগণোদ্দেশ দীপিকা

চট্টোপাধ্যায়, সুধীররঞ্জন। ভারতীয় দর্শন প্রস্থানে বৈষ্ণবসাধনার ধারা, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়, ১৯৮২, মুদ্রিত।

গোস্বামী, কাননবিহারী, প্রথম বাংলা চৈতন্যচরিত কাব্য, সাহিত্য পতিষৎ পত্রিকা, ১০৮ বৰ্ষ।

চক্রবর্তী, রমাকান্ত, বঙ্গে বৈষ্ণবধর্ম : একটি ঐতিহাসিক ও সমাজতান্ত্রিক অধ্যয়ন, আনন্দ, কলকাতা, ২০০৭।

চক্রবর্তী মুকুন্দরাম, চণ্ডীমঙ্গল (সম্পাদিত সুকুমার সেন) সাহিত্য অ্যাকাদেমি, নতুন দিল্লি, ১৯৯৩।

কৃষ্ণদ্বৈপায়ন বেদব্যাস, শ্রীমদ্ভাগবত, গীতা প্রেস, গোরক্ষপুর, ২০১৫।

রায়, কার্তিকেয়চন্দ্র, ক্ষিতীশবংশাবলী-চরিত, (সম্পাদিত, মোহিত রায়) শৈব্যা পুস্তকালয়, কলিকাতা, ১৯৮৬।

চৌধুরী, অচ্যুতচরণ, শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত (উত্তরাংশ) উৎস প্রকাশন, ঢাকা, ২০০৫।

—শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত (পূর্বাংশ), উৎস প্রকাশন, ঢাকা, ২০০৪।

মিত্র, সুবল চন্দ্র, সরল বাঙ্গালা অধিকার (৭ম সংস্করণ), কলিকাতা, ১৯৩৬।

মুখোপাধ্যায়, যোগনাথ, বঙ্গ অভিধান, এম.সি.সরকার এ্যাণ্ড সনস্, কলি, ১৯৯৯।

ভট্টাচার্য, হংসনারায়ণ, বঙ্গ সাহিত্য অভিধান, ফার্মা কে.এল.এম.প্রা.লি., কলি, ১৯১২।

ঐ, যুগাবতার, শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য, ফার্মা, কে.এল.এম.কলি, ১৯৮৪।

পাল, প্রশান্তকুমার, রবিজীবনী, (১-৯), আনন্দ, কলিকাতা, ২০০২।

বন্দ্যোপাধ্যায়, অসিতকুমার, বাংলা সাহিত্যের সম্পূর্ণ ইতিবৃত্ত, মডার্ণ বুক এজেন্সি, কলিকাতা, ১৩১৫।

–বাংলা সাহিত্যের ইতিবৃত্ত (২য় খণ্ড), মডার্ণ বুক এজেন্সি, ১৯৯৫।

সেনগুপ্ত, সুবোধচন্দ্র, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, ১৯১৮।

সিনহা, গোপালচন্দ্র, ভারতবর্ষের ইতিহাস, (প্রাচীন-মধ্যযুগ), প্রগ্রেসিভ, কলিকাতা, ২০১৩।

মিশ্র, বাণীপ্রসন্ন, উন্মোচিত ঢাকা দক্ষিণ, সৃজন, শিলচর, আসাম, ২০১১।

চুড়ামণিদাস, গৌরাঙ্গবিজয়, (সম্পাদিত সুকুমার সেন), এশিয়াটিক সোসাইটি, ১৯৫৭।

চৌধুরী, যজ্ঞেশ্বর, যুগস্রষ্টা শ্রীচৈতন্য, নবদ্বীপ পুরাতত্ত্ব পরিষৎ, নবদ্বীপ, ২০০৪।

চৌধুরী, সুজিত, শ্রীহট্ট-কাছাড়ের প্রাচীন ইতিহাস, দিনকাল প্রেস, শিলচর, ২০০৬।

জয়ানন্দ, চৈতন্যমঙ্গল, এশিয়াটিক সোসাইটি, কলিকাতা, ১৯৭১।

দাশগুপ্ত, শশীভূষণ, শ্রী রাধার ক্রমবিকাশ; দর্শনে ও সাহিত্যে, এ.মুখার্জী, কলিকাতা, ১৯৫২।

নিত্যানন্দ দাস, প্রেমবিলাস (সম্পাদিত রাসবিহারী সাংখ্যতীর্থ), মুর্শিদাবাদ, ১৯২১।

বৃন্দাবন দাস, চৈতন্যভাগবত, (সম্পাদিত, উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়), বসুমতী সাহিত্য, কলিকাতা,

ভট্টাচার্য, কুমুদরঞ্জন, সংক্ষিপ্ত বৈষ্ণব অভিধান, ফার্মা .এল.এম.কলিকাতা, ১৯৭৮।

মজুমদার, রমেশচন্দ্র, বাংলাদেশের ইতিহাস (১ম খণ্ড), জেনারেল প্রিন্টার্স অ্যাণ্ড পাবলিশার্স, কলিকাতা, ১৯৭৪।

মুখোপাধ্যায়, সুখময়, চৈতন্যদেব : জীবনী, কালক্রম পরিমণ্ডল, প্রিয়মণ্ডল, ডি.এম. লাইব্রেরী, কলকাতা, ১৯৮৪।

মুখোপাধ্যায়, সুখময়, চৈতন্যদেব : ইতিহাস ও অবদান, সারস্বত লাইব্রেরি, কলিকাতা, ২০০২।

লোচনদাস, চৈতন্যমঙ্গল (সম্পাদিত কিশোরীদাস বাবাজী) ঈশ্বরপুরীর পাট হালিশহর, ২০০৬।

সান্যাল, হিতেশরঞ্জন, ‘বাংলার কীর্তন’, চৈতন্যদেব : ইতিহাস ও অবদান, সারস্বত লাইব্রেরি, ২০০২।

সেন, সুকুমার, চৈতন্যবদান, আনন্দ, কলকাতা, ১৯৮৬।

ঐ, বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস (১ম-২য় খণ্ড), আনন্দ, কলিকাতা, ২০০৭।

শ্রীশ্রীগৌড়ীয় বৈষ্ণব সাহিত্য

মুখোপাধ্যায়, হরেকৃষ্ণ, পদাবলী পরিচয়, দে’জ পাবলিশিং, কলকাতা, ১৯১৮।

মজুমদার, বিমানবিহারী, শ্রীশ্রীচৈতন্যচরিতের উপাদান, ঐ পাঁচশত বৎসরের পদাবলী, জিজ্ঞাসা, পাবলিকেশন, কলিকাতা, ১৩৯৮।

বসু, শঙ্করীপ্রসাদ, মধ্যযুগের কবি ও কাব্য, জেনারেল প্রিন্টার্স এ্যাণ্ড পাবলিসার্স, কলকাতা, ২০০০।

গিরি, সত্যবতী ও সনৎকুমার নস্কর, (সম্পাদিত) বৈষ্ণব সাহিত্য : পুনরালোচনা ও নবমূল্যায়ণ, প্রজ্ঞাবিকাশ, কলিকাতা, ৯

গোবিন্দদাস কর্মকার, গোবিন্দদাসের কড়চা, গোবিন্দদাস সেবা সংঘ, কাঞ্চননগর, বর্ধমান – ‘শ্রীভূমি’ (পত্রিকা), করিমগঞ্জ, শ্রীহট্ট

ভট্টাচাৰ্য্য, যতীন্দ্রমোহন। অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি (১২৭২-১৩৬০) সাত্যিসাধক চরিতমালা, কলকাতা, বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ

ভট্টাচার্য, কালীকৃষ্ণ। শান্তিপুর পরিচয়, কলকাতা : গ্রন্থকার, ১৯৩৭

চৌধুরী, অচ্যুতচরণ তত্ত্বনিধি। ঈশাননাগরের অদ্বৈতপ্রকাশ, বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ পত্রিকা, ১৩০৩

দাস, নিত্যানন্দ। প্রেমবিলাস। কলকাতা, প্রতীক, ১৯১৩

ঘোষ, মৃণালকান্তি : (সম্পা.) ঈশাননাগরের অদ্বৈতপ্রকাশ, ৩য় সং. কলকাতা, বিশ্বকোষ প্রেস, ১৯৩৩

কর, সুবীর। অচ্যুতচরণ তত্ত্বনিধি : জীবন ও সাহিত্য (১২৭২-১৩৬০), করিমগঞ্জ, আসাম, যুগশক্তি প্রকাশনালয়, ১৯৯১

কর্ণপুর, কবি : গৌরগণোদ্দেশদীপিকা। কলকাতা : সংস্কৃত পুস্তক ভাণ্ডার, ১৯৮৭

ভট্টাচার্য, উপেন্দ্রনাথ : বাংলার বাউল ও বাউল গান; ওরিয়েন্ট বুক কোম্পানি, কলকাতা, ১৩৬৪

ঠাকুর, সৌরেশচন্দ্র, বৈষ্ণবতীর্থ পাহাড়পুর, পুস্তকালয়, লাভপুর, বীরভূম, ১৯৯৩।

Gait, Edward, A History of Assam, LBS Pbulishing, Guwahai, Assam, 2004.

Majumder, R.C., History of Ancient Bengal, Tulshi Prakashani, Kolkata, 2005.

Basu, Rama, Doctrines of Nimbarke & his Follower, Vol. III.

Manring, J Rebecca, Advaita, Columbia University, USA.

Chatterjee, Chinmayi. Studies in The Evolution & Bhakti Cult With Special Reference to Vallabha School. Part-1, Jadavpur University, 1976

De, Sushil Kumar. Early History of the Vaisnava Fath and Movement in Bengal. Calcutta, KLM., 1961

Elkman, Sturat. Jiva Goswamini’s Tattvasandarbha, Delhi: Motital Banarasidass, 1986

Haberman, David. Acting as a Way of Salvation : A Study & Raganuga Bhakti Sadhana. New york: Oxford Univer- sity Press, 1988

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *