চোর

চোর

আপনারা হয়তো চোরকে ঘৃণা করেন? তা করুন, তবু এসব কথা প্রকাশ না করে পারছি না। চোর বলতে যদি ভাবেন আমাদের একটা আস্তানা আছে, সেখান থেকে রোজ রাতে গায়ে তেল মেখে, সিঁদকাঠি বগলে আমি চুরি করতে বেরোই, তা হলে ভুল ভেবেছেন। ও রকম করলেই হয়েছিল! সঙ্গে সঙ্গে হাজত। আমাকে দেখে কেউ চিনতে পারত না। ভিড়ের সঙ্গে মিশে থাকার মতো দেখতে আমি, কেউ আমার একটা বর্ণনা পর্যন্ত দিতে পারত না। আমি ট্রামে, বাসে, জাদুঘরের সামনে নিশ্চিন্তে ঘুরে বেড়াতাম! নিজের ঘরবাড়ি চাকরিবাকরি না থাকলেও, আমার কোনো অভাব ছিল না। আমার মানিব্যাগ থাকত লোকের পকেটে পকেটে। সেসব দিন বদলে গেছে। সুখ কারও পায়ের সঙ্গে বেড়ি দিয়ে বাঁধা থাকে না। তাই আমাকে প্রায় তিন মাস ধরে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছিল। কাউকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না, পকেটটা মনে হচ্ছিল একশো মণ ভারী। অথচ সে জিনিসটা খুব ছোট, চেষ্টা করলে ব্যাগের মধ্যে লুকিয়ে রাখা যায়। কানেই পরেছিল সেই মোটা গিন্নি হীরের ইয়ারিং। ওই তো চেহারা, তার আবার শখ দেখুন। স্ক্রুপ ঢিলে হয়ে গেছিল। জাদুঘরের সিঁড়ির মধ্যিখানে হাতে নিয়ে দেখছিল। দেখলেন তো বুদ্ধির বহর? ও জিনিসের মালিক হবার ওর যোগ্যতা কই?

সিঁড়ির ওপরের বাঁক থেকে জিনিসটা ছিনিয়ে নিলাম। নিয়েই দৌড়। জাদুঘরটা চোরদের সুবিধার জন্যই তৈরি। পাঁচ মিনিটে দোতলা তিনতলা করে প্রায় নিখোঁজ হয়ে গেছি, এমন সময় দালান দিয়ে কয়েকটা লোক দৌড়ে এল আবার। আমি কেমন করে হাত ফসকে যে নীচে গিয়ে পড়লাম নিজেই বুঝতে পারলাম না। পড়েই উঠে পালিয়েছিলাম, ধরতে পারেনি। পায়ে চোট লাগেনি, হাতে লেগেছিল। কাঁধের ধারে। আর সে কী যন্ত্রণা, এমন ব্যথা যেন আমার কোনো শত্রুরও না হয়। আছে অনেক শত্রু আমার। ঐ গিন্নির স্বামী বিজ্ঞাপন দিয়েছিল, কানের ফুলের জোড়াটি উদ্ধার করে দিলে দু হাজার টাকা বকশিশ নাকি আলাদা করে একেকটা হীরের যত দাম, দুটোকে একসঙ্গে করলে তার দু’গুণ না হয় পাঁচগুণ। আমাদের জগতে বিশ টাকা দিয়ে খুনে ভাড়া করা যায়, দু হাজার টাকা লিখতে কটা শূন্য দিতে হয় তাই জানে না বেশিরভাগ লোক। পারলে আমার বন্ধুরাই আমাকে ধরিয়ে দিত। সেই ইস্তক পালিয়ে বেড়াচ্ছিলাম। কাউকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। সেই বিজ্ঞাপনে লিখেছিল, চোরের বর্ণনা দেওয়া গেল না, ময়লা শার্ট, সরু ঠ্যাং, কালো পেন্টেলুন পরা, খালি পা, আর তিনতলার সিঁড়ি থেকে পড়ে পা ছাড়া শরীরের অন্য জায়গায় জখম। পায়ে কিছু হয়নি, নইলে দৃষ্কৃতকারী পালাতে পারত না। এর পর আমার কোথাও গিয়ে যে গা ঢাকা দেওয়ার চেষ্টা করা কত অসম্ভব, সে তো বুঝতেই পারছেন।

সেটাকে ময়লা কাগজে জড়িয়ে, শালপাতায় মুড়ে, পকেটে রেখেছিলাম। ফেলতে পারিনি। যার জন্য আমার এত কষ্ট, তাকে কখনো ফেলা যায়। ভালো মানুষ সেজে অচেনা পাড়ার দোকান থেকে খাবার কিনে খেয়েছি। এখন পকেটও প্রায় খালি হয়ে এসেছে অথচ কলিমুদ্দির কাছে আমার কিছু কাপড়চোপড়, টাকাকড়ি রাখা আছে। চাইতে গেলে সে-ই আগে আমাকে ধরিয়ে দেবে। দু হাজার টাকা কি চাট্টিখানিক কথা। ঐ হীরের লোকটা নিজেকে ভারী ধার্মিক ভাবে— নাকি কোথায় মন্দির করে দিয়েছে— অথচ টাকা দিয়ে ভালো মানুষকে বিশ্বাস করবে, চোরকে খুনে বানাতে একটুও দ্বিধা করে না।

রাতে যেখানে সেখানে পড়ে থাকি। রাস্তায় বড় পাইপের ভেতর কিংবা তৈরি হচ্ছে বাড়ির সিঁড়ির নীচে, যেখানে চেনা লোকজন থাকে না এমন সব জায়গায়। এই মুহূর্তে একটা খালি বাড়ি পেলে, চুপ করে সেখানে সাতদিন পড়ে থাকতাম। এ ব্যথা আর সইতে পারছিলাম না। খাব না দাব না, নড়ব না চড়ব না, শুধু চুপ করে পড়ে থাকব। এমন কোনো জায়গায় যেখানে কেউ আমার খোঁজ করবে না।

খালি বাড়ি বলে কিছু নেই আজকাল। খিদিরপুরের ডকের কাছে মুন্সীদের হানাবাড়ি ছাড়া। তার ত্রিসীমানায় কেউ যায় না। যারা যারা আগে আগে গেছিল, তারা নাকি কেউ ফেরেনি। সামনেটা গুদোমঘর, পেছনে ভাঙা বসতবাড়ি। নাকি সিরাজদ্দৌলার সময়কার বাড়ি, তাঁরি মুন্সীর। যেমন মুনিব তেমনি নফর। গুদোমটা অনেক কাল পরে তৈরি। সেকালে কাঠ, তুলোর বস্তা, পাট, জাহাজে তোলার আগে এখানে জমা করা হত। খুনে লেঠেলদের আস্তানা। খুব বিশ্রী একটা ব্যাপারের পর পুলিস এসে দরজায় এই বড় তালা লাগিয়ে সিল করে দিয়ে গেছে। সে-ও আজ পঁচিশ ত্রিশ বছর তো বটে। একদিক দিয়ে ভালোই হয়েছিল। সামনে নিরাপদ তালা মারা, পাশের করগেটের দেওয়ালে একটা খিড়কি দোর। তাই দিয়ে ঢুকে শহরের যত ঘরছাড়া বাউন্ডুলে, গুন্ডা, বদমায়েরা নিশ্চিন্ত আরামে রাত কাটাত। তারপর তারাও ও জায়গা ছাড়তে বাধ্য হল। রাতে নাকি কী সব দেখত। বছর কুড়ি গুদোম খালি। সাপখোপরা থাকে। পেছনেই মস্ত বাড়ি না প্রাসাদ। তাকে মরণদশায় ধরেছে। বাইরের পলেস্তারা খসে গেছে, ইঁট বেরিয়ে এসেছে, জানালা দরজা খুলে পড়েছে, বট অশ্বত্থ গজিয়েছে। চারদিকে একটা ভ্যাপসা গন্ধ। হাঁটু অবধি আগাছা; এ জমিতে কতকাল কেউ হাঁটেনি।

আমার শরীর জবাব দিয়েছিল। কাঁধটা ফুলে ঢোল। পকেটে শালপাতায় মোড়া সেই জিনিসটে আর ডকের দোকান থেকে লুকিয়ে আনা ছোট একটা পাউরুটি। দিনের আলো প্রায় নেই বললেই হয়। আশ্চর্যের বিষয় মুন্সীবাড়ির ভাঙা সিং দরজার বাইরে একটা সরকারি কল। তার মুখ থেকে সরু ধারায় জল পড়ছে তো জলই পড়ে যাচ্ছে। নীচে চকচকে সবুজ শ্যাওলা জমে গেছে। সেই জলে হাত মুখ পা ধুলাম। কতকাল গায়ে জল পড়েনি সে আর কী বলব। আঁজলা ভরে জল খেলুম। জলের মতো আছে কী? ভগবানের দান। আমার মতো হতভাগাকেও কেমন প্রাণ ভরে জল খেতে দিলেন দেখে অবাক হলাম। তাও যদি অনুতাপ হওয়া পাপী হতাম। গির্জার বারান্দায় একবার শুয়েছিলাম। অনেক রাত্রে পাদ্রী এসে ডেকে তুলে আমাকে হাত-পা ধোবার জল, একটা মাটির হাঁড়ি ভরতি সুরুয়া আর বড় এক টুকরো রুটি দিয়েছিল। তখন শীতকাল, গায়ে দেওয়ার জন্য একটা ছেঁড়া কম্বলও দিয়েছিল। বলেছিল পাপীরা অনুতাপ করলে যীশু তাদের বুকে টেনে নেন। ভোরে কম্বলটা নিয়ে পালিয়েছিলাম। আমার মতো নোংরা ছেলেকে যীশু যে বুকে টেনে নেবেন না, তাতে কারো সন্দেহই নেই। সেই কম্বলটা এখনো আমার জিনিসপত্রের সঙ্গে কলিমুদ্দির ঘরে পড়ে আছে। চিরকাল তাই থাকবে। হীরে চুরি যেমন তেমন অপরাধ নয়। দশ বছরেও মাপ হয় না।

মানুষের জীবনে এমন সব সময় আসে যখন মনের ভয় ভাবনা সব দূর হয়ে গিয়ে, শরীরের দরকারটাই সমস্ত জায়গা জুড়ে বসে। ভাবছিলাম ঐ হানাবাড়িটাতে গিয়ে শুয়ে থাকলেই তো ল্যাঠা চোকে। মুখ তুলে দেখি মুন্সীবাড়ি নিতান্ত খালি নয়। একজন সাদাকাপড় পড়া বুড়ো বামুন, হাতে একটা ছোট্ট তেলের কুপি নিয়ে আমার কাছে এসে দাঁড়ালেন। হাসি পেল। আজকাল কখনো বাড়ি খালি পড়ে থাকে? লোকটা সটাং আমার কাছে এসে বললেন, “কলটা বন্ধ করে দাও। জলপড়ার শব্দে আমার বিশ্রামের ব্যাঘাত হয়।” তাই দিলাম। বুড়ো খুশি হয়ে বললেন, “কী চাও? এখানে কেউ আসে না। এটাকে বলে হানাবাড়ি। ভয় পায়। আমি মায়ে খেদানো ঠগ জোচ্চোর বদমায়েস চোর।”

বললাম, “গুরুঠাকুর, কিছু চাই না। শুধু সাত দিন কোথাও গিয়ে চুপ করে পড়ে থাকতে চাই। কাঁধে বড় ব্যথা। পা আর চলে না।”

বুড়ো এদিক ওদিক চেয়ে বললেন, “এসো আমার সঙ্গে।”

উঃফ! বাঁচা গেল! লোকও যেমন বলে কিনা ভূতের বাড়ি, তবু ভাগ্যিস তাই বলে, নইলে আর দেখতে হত না। ঘরে ঘরে কাঠের জ্বালে হাঁড়ি বসত। আমাকে পালাতে হত।

তিন ধাপ সিঁড়ি বেয়ে দালানে উঠতে হয়। কিছুতেই পা আর উঠল না। হাঁটু দুটো কী রকম জুড়ে গেল। তারপর আর কিছু মনে নেই। বুড়ো ভদ্রলোকই নিশ্চয়ই আমাকে ধরে ঘরে তুলেছিলেন, দোতলার ঘর; বুড়োর হাড় শক্ত বলতে হবে। যখন জ্ঞান হল অমন যে ক্লান্তি, তাও দূর হয়ে গেছে। বলেছিলাম সাত দিন চুপ করে পড়ে থাকব। নিজের দরকারে একবার উঠে, সেই যে আবার শুলাম, চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে আর জাগিনি। বুড়ো বামুনকেও আর দেখিনি। তিনিই বা আমাকে বিশ্বাস করবেন কেন? কাষ্ঠ হাসলাম। বিশ্বাস করবার মতো চেহারা বটে আমার! কেন জানি, একটুও খিদে পায়নি৷ তবু অভ্যাসের জোরে পকেটটা দেখলাম। কই পাঁউরুটিটা তো নেই। যাক গে পাঁউরুটি। পাশ ফিরে আবার ঘুমোলাম। খিদে নেই, তেষ্টা নেই, শরীরের আর কোনো দরকার নেই। শুধু ঘুম। হয়তো সত্যিই সাতদিন ঘুমিয়েছিলাম! তারপর একদিন সকালবেলায় জেগে উঠে দেখি, শরীরটা একেবারে ঝরঝরে হয়ে গেছে। বাইরে থেকে একটা মহা হট্টগোল কানে এল। ঘরের জানালার পাল্লা নেই। চেয়ে দেখি আগাছায় ভরা উঠোনে ট্রাক, কপিকল, অদ্ভুত চেহারার প্রকাণ্ড প্রকাণ্ড যন্ত্রপাতি। আর মেলা লোকজন।

পাশে এসে বুড়ো ভদ্রলোক দাঁড়ালেন। বললেন, “এবার তোমাকে আমাকে এখান থেকে সরতে হয়। বাড়ি ভেঙে ফেলা হবে। বেওয়ারিশ সম্পত্তি, সরকার দখল নিচ্ছেন। ঐ কড়িকাঠের ওপর আমার মা-কালী লুকোনো আছেন, দেখো তো পাড়তে পার কি না!”

হাসি পেল; আমি দেওয়াল বেয়ে দোতলায় উঠতে পারি। কুলুঙ্গীতে এক পা, জানালায় মাথায় এক পা হাত বাড়িয়ে কড়িকাঠের ওপর থেকে আমার কড়ে আঙুলটার মতো ছোট্ট মা-কালীর মুর্তিটি পেড়ে আলগোছে তাঁকে দিলাম। কে জানে সোনার কি না। সেই রকমই ঠাওর হল। তারপর তাঁর পায়ের কাছে গড় করে বললাম, “আপনি আমার প্রাণ বাঁচালেন। যা বলবেন তাই করব।”

বুড়ো বললেন, “যা এবার। গলিতে ভূতের বাড়ি ভাঙা দেখতে ভিড় জমেছে, তাদের সঙ্গে মিশে যা গে। অন্য সব ব্যবস্থাও করে ফেলেছি। এবার রওনা দে। কোনো ভয় নেই।”

হঠাৎ কাঁধে ব্যথার কথা মনে পড়তেই টের পেলাম সেটা এক্কেবারে সেরে গেছে। প্যান্টের পকেটে হাত দিয়ে দেখলাম, সেটাও নেই। উঃফ বাঁচা গেল। কিন্তু বুড়ো লোকটি কোথায় গেলেন? জানালা দিয়ে চেয়ে দেখলাম, ভিড়ের মধ্যিখান দিয়ে তিনি আস্তে আস্তে গঙ্গার দিকে চলেছেন। আমিও তখন নেমে এলাম। ভিড়ের লোকেরা গাদাগাদি হয়ে দাঁড়িয়ে কত রকম যে মন্তব্য করছিল তার ঠিক নেই। ভূত বাছাধন এবার টের পাবেন। দুশো বছরের মৌরসী পাট্টা এবার উঠল। হেনা তেনা কত কী! একজন আবার বললেন, “এদের চাইতে তার-ই অধিকার বেশি। তার বাপের সম্পত্তি! বামুন মানুষ, কালীভক্ত।” সবাই শূন্যে নমস্কার করতে লাগল। হাসি পেল। তখনো বুড়ো লোকটিকে দূরে দেখা যাচ্ছিল। লোকগুলোর মাথা খারাপ। গঙ্গার ধারে পৌঁছে নৌকোটৌকো চেপে থাকবেন, সেখানে গিয়ে আর তাঁকে দেখতে পেলাম না। ভেবেছিলাম সঙ্গে যাব।

তার বদলে সটাং কলিমুদ্দির কাছে গেলাম। যা হয় একটা বোঝাপড়া হয়ে যাক। আর পালিয়ে বেড়াব না, মন ঠিক করে ফেলেছিলাম। আমাকে দেখেই কলিমুদ্দি ছুটে এসে পায়ে পড়ল। “আমাকে মাপ কর। দু হাজার টাকা বখশিস দেবে বলেছিল। লোভ হয় কিনা তুই-ই বল? এদিকে তুই ফিরছিস না দেখে, আমি কী ভাবতে কী ভেবে বসলাম রে! তোর নামধাম সব গিয়ে থানায় লিখিয়ে এলাম। ক দিন ধরে সরু চিরুনি দিয়ে শহরটাকে আঁচড়ে ফেলেছিল এরা। এখন কাগজে দিয়েছে ইয়ারিং মোটে হারায়নি, মোটা গিন্নির হাত ব্যাগের মধ্যেই পড়েছিল, এ্যাদ্দিনে পাওয়া গেছে। থানার লোক এসে আমাকে যা নয় তাই বলে গেছে। তোকে হেনস্তা করার জন্য মালিক তোর জন্য পাঁচশো টাকা জমা দিয়েছে। সেটি গিয়ে নিয়ে আয়। আমিও যাচ্ছি। তোকে সনাক্ত করতে হবে তো। তা ছিলি কোথায়?”

আমি বললাম, “একটু বাইরে গেছলাম। থানার লোকে আমাকে চেনে, সনাক্ত করতে হবে না।”

তবু সনাক্ত করতে বেশ হামলা হয়েছিল। শেষটা যখন টাকাটা সত্যি পাওয়া গেল, কলিমুদ্দিকে একখানা পোস্টকার্ড লিখে দিলাম, “আমার কাপড়-চোপড় আর টাকাকড়ি যা তোর কাছে আছে, সে সব তোকে দিয়ে আমি দেশে গেলাম।”

তাই চলে যাচ্ছি দেশে এই রেলে চেপে। সেখানে আমার মা আছে, কিছু জমিজমাও আছে। চলে যাবে এক রকম করে।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *