উত্তর – ফ্রেডরিক ব্রাউন

উত্তর – ফ্রেডরিক ব্রাউন

আনুষ্ঠানিকভাবে সোনা দিয়ে শেষ কানেকশানটা সোল্ডারিং করে দিলেন ডর এভ। ডজনখানেক টেলিভিশন ক্যামেরার চোখ চেয়ে রইল তাঁর পানে। ব্রহ্মাণ্ডের সাব-ইথার ফুড়ে ডজনখানেক ছবি ছুটে গেল চক্ষের নিমেষে।

সিধে হয়ে দাঁড়ালেন ডর এভ। নড় করলেন ডর রেনকে। এগোলেন সুইচটার দিকে– সুইচ টেপার সঙ্গে সঙ্গে কমপ্লিট হবে কনট্যাক্ট। পলক ফেলার আগেই ব্রম্ভাণ্ডের সব ক-টা বসতিপূর্ণ গ্রহের সঙ্গে যোগাযোগ সংস্থাপিত হবে– বিরানব্বই লক্ষ কোটি গ্রহের বিরানব্বই লক্ষ কোটি দানবিক কমপিউটিং মেশিন এক হয়ে যাবে একটিমাত্র সুপারসার্কিটের মধ্যে এসে যুক্ত থাকবে একটিমাত্র সুপারক্যালকুলেটরের সঙ্গে সব ক-টা ছায়াপথের যাবতীয় জ্ঞান জড়ো হবে এক এবং অদ্বিতীয় সাইবারনেটিক্স মেশিনে মধ্যে।

কোটি কোটি শ্রোতা নিমেষহীন চোখে তাকিয়ে রইল ডর রেনের পানে। সংক্ষেপে যা বলার তা বললেন ডর রেন। ক্ষণিক স্তব্ধ থেকে বললেন তারপর– “ডর এভ, সময় হয়েছে।”

সুইচ ঠেলে নামিয়ে দিলেন ডর এভ। দানবিক গুঞ্জনধ্বনি উত্থিত হল কয়েক মাইল লম্বা প্যানেল থেকে। আলোর ফ্ল্যাশ দেখা দিল ঘন ঘন। বিরানব্বই লক্ষ কোটি গ্রহ থেকে ছুটে আসা অবর্ণনীয় অকল্পনীয় শক্তি নিমেষে ফুঁসে উঠল প্যানেলগুলোর আড়ালে সূক্ষ্ম জটিল যন্ত্রজালে।

এক পা পেছিয়ে এসে গভীর শ্বাস টানলেন ডর এভ। বললেন- “ডর রেন, প্রথম প্রশ্ন জিজ্ঞেস করবার সম্মান শুধু আপনারই।”

“ধন্যবাদ, ডর এভ। কিন্তু আমি যে প্রশ্ন করব, আজ পর্যন্ত এককভাবে কোনও সাইবারনেটিক্স মেশিন তার উত্তর দিতে পারেনি।”

বলেই ফিরলেন মেশিনের দিকে। শুধোলেন–“ঈশ্বর আছেন?”

বিপুল কণ্ঠস্বরে জবাব এল সঙ্গে সঙ্গে তিলমাত্র দ্বিধা না করে কোনওরকম রিলে ক্লিকিং না করে : “হাঁ, ঈশ্বর এখন আছেন।”

আচম্বিতে নিঃসীম আতঙ্কে মুখ থেকে সমস্ত রক্ত নেমে গেল ডর এভের। ছিটকে গিয়ে ধরতে গেলেন সুইচটা।

নির্মেঘ আকাশ থেকে বজ্র নেমে এল তক্ষুনি– নীল হয়ে পড়ে গেলেন ডর এভ এবং গলে গিয়ে বন্ধ হয়ে গেল সুইচ।