অভিজ্ঞ – রবার্ট টি, কুরোসাকা

অভিজ্ঞ – রবার্ট টি, কুরোসাকা

মেটিরিয়ালাইজার যন্ত্র তৈরি সম্পূর্ণ হল।

নেড কুইন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে কয়েক পা পেছনে সরে এসে দাঁড়াল। ময়লা মাখা দু’হাত তোয়ালেতে বেশ ভালো করে মুছল। যন্ত্রটার আপাদমস্তক বেশ ভালো করে পর্যবেক্ষণ করল কয়েকবার। নিজের হাতে করা বিশ্বাসই হয় না! বিশাল বোর্ডে সারবন্দী। ডায়াল নানান আকারের আলোর সারি– সাদা কালো একরাশ সুইচ। এই প্রজেক্টের পেছনে কত বছরই না কেটে গেছে। সেই সঙ্গে কত যে অর্থ গেছে, কে তার সঠিক হিসাব রাখে। অবশেষে যন্ত্র সম্পূর্ণ হল।

মাথার ওপরে বিচিত্র দর্শন লোহার শিরস্ত্ৰণ চাপিয়ে পরপর কয়েকটা প্লাগ কন্ট্রোল প্যানেল গুঁজে দিল নেড। তীক্ষ্ণদৃষ্টিতে একে একে সব মিটার ডায়াল পর্যবেক্ষণ করে মেন সুইচটা অন করে দিয়ে বলল, দশ ডলার বিল।

চাপা গুঞ্জনে ভরে উঠল ঘর। পরক্ষণেই রিসিভারে একখণ্ড কাগজ আত্মপ্রকাশ করল। হাতে তুলে নিয়ে, সে এটা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখল ভালো করে। যথার্থই আসল।

–মার্টিনী–চাপাস্বরে বলল নেড।

পরক্ষণেই ঘূর্ণনজনিত শব্দ। রিসিভারে তরল পদার্থের আবর্তন দেখা দিল। মনে মনে গালি দিল নেড। না, শেখার অনেক বাকি আছে।

–এক বোতল শ্চিলিজঙ্গমার্টিনি।

পরিচিত ঘূর্ণনের শব্দের সঙ্গে সঙ্গে চিরপরিচিত বাদামি রঙের বোতল আবির্ভূত হল। বোতলের তরল পদার্থ চেখে দেখল নেড। বিদ্রুপের হাসিতে সারা মুখ জ্বলজ্বল করে উঠল।

আপন মনে শিস দিয়ে উঠল সে। আরও পরীক্ষার প্রয়োজন আছে। নেড এবার রিসিভারের আয়তন বৃদ্ধি করল। বৃহত্তর এক রোমাঞ্চকর এক্সপেরিমেন্টের জন্যে প্রস্তুত হল সে।

অর্থের প্রাচুর্য মানুষকে বিপথে নিয়ে যায়। নেডের ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম হল না। ভদ্র, মার্জিত, শিক্ষিত, চিরাচরিত ভদ্রলোকের খোলস ভেদ করে আদিম লাম্পট্যের শিকার হল নেড, যা আমরা অল্পবিস্তর সকলেই হয়ে থাকি।

মেটিরিয়ালাইজারের সুইচটা অন করল নেড। গভীর শ্বাস নিয়ে নিচের ঠোঁটটা কামড়ে ধরল কয়েক মুহূর্তের জন্যে। পরক্ষণেই বলে উঠল, মেয়ে চাই– মেয়ে!

এবার বেশ উচ্চগ্রামে ঘূর্ণনের শব্দ উঠল… চললও বেশ কিছুক্ষণ… অবশেষে তা ধীরে ধীরে স্তিমিত হয়ে এল। রিসিভারের ওপরে মেয়ে আবির্ভূত হল। জন্মদিনের পোশাক পরা সম্পূর্ণ নিরাবরণ। কারণ পোশাক সম্বন্ধে কোনও কিছুই। বলেনি নেড। মেয়েটির হাতে ঝুমঝুমি– মাথায় পিগটেল। বয়স মাত্র আট বছর।

–হেল… চিৎকার করে উঠল নেড কুইন। হু

ইর-র-র…

…আগুনে দগ্ধ হওয়া একরাশ ধ্বংসস্তূপ থেকে দুটো নরকঙ্কাল উদ্ধার করল দমকলবাহিনী। পুড়ে ঝামা হয়ে গেছে।