পনেরো
এবড়োখেবড়ো পাথুরে জমিতে জমাট রক্তের পাশে ছিন্নভিন্ন হয়ে পড়ে আছে লোকটা। এরিখ ঝুঁকল ওর মুখের ওপর। অপরিচিত চেহারা। অবশ্য পরিচিত হলেও অবস্থার তারতম্য ঘটত না খুব একটা। চেনার জো নেই লোকটাকে। শক্ত খুরের আঘাতে মুখের মাংস ছিঁড়ে ফেড়ে গেছে ওর। চোয়াল বেরিয়ে গেছে দাঁত সহ। কপালে বিরাট ক্ষত, রক্তাক্ত।
সোজা হয়ে দাঁড়াল এরিখ। একটু দূরে লোকটার ঘোড়া পড়ে আছে। মালিকের চেয়ে খুব একটা ভাল অবস্থায় নেই ওটাও। সামনে এগোল সে। ডানপাশে একটা ঝোপের নিচে দোমড়ানো হ্যাটটা দেখতে পেয়ে পা বাড়াল ওদিকে। আরেকটু এগোতেই একটা পাথরের পাশে লম্বা হয়ে পড়ে থাকা লোকটাকে দেখল। লোকটার মুখ ক্ষত-বিক্ষত হলেও একদম চেনার অনুপযোগী নয়। ডগ লেইকার। দু’জন গেল।’ অস্ফুট স্বরে বিড়বিড় করল এরিখ।
তৃতীয় লোকটাকে ঢালের গোড়ায় পাওয়া গেল। বিশাল শরীরটা পড়ে আছে বেঁকে চুরে উপুড় হয়ে। পাশে চাঁদের আলোয় চক চক করছে গোলমতন একটা জিনিস। কুড়িয়ে চোখের সামনে নিয়ে এল এরিখ জিনিসটাকে। দুমড়ে-যাওয়া গোলাকার তারাটির মালিক শেরিফ হল চ্যাপম্যান যে পাশে বাঁকা চোরা অবস্থায় পড়ে-থাকা লোকটাই, বুঝতে পারল
‘ভালই হলো, হল,’ মৃতদেহটার দিকে ফিরল ও। ‘অন্তত ভাইয়ের মুখোমুখি হবার হাত থেকে তো বেঁচে গেলে!’
ঢালের ওপর উঠে গেল এরিখ। পাহাড়ের কালো অংশটার দিকে এগোল। পিস্তল বের করে কক করে নিয়ে অন্ধকারে পা চালাল সন্তর্পণে। কয়েক পা যাবার পর পাহাড়ের গা স্পর্শ করল সামনের দিকে বাড়িয়ে দেওয়া ওর এক হাত। তীক্ষ্ণ চোখে তাকাতেই অন্ধকারে গুহার মত পথটা নজরে এল। এটা একটা প্রাকৃতিক পথ। নিচের দিকটা সুপ্রশস্ত। তবে ওপর দিকটা এতই সঙ্কীর্ণ যে, অনায়াসে গুহা ভাবা যায়। গুহামুখে দাঁড়াল ও। বাতাস টানল নাকে। ধূলির গন্ধে ভারি বাতাসে বুক ভরে গেল ওর।
বামদিকের দেয়াল ধরে এগোল সে সামনের দিকে। অন্ধকার হলেও অসুবিধে হলো না হাঁটতে। গুহার মেঝে সমতল, এবড়োখেবড়ো নয়। শক্ত পাথরে বাঁধানো মেঝের মতই মসৃণ বলা যায়। প্রায় পঞ্চাশ ফুটের মত হাঁটার পর গুহার শেষ মাথায় এসে গেল ও। হঠাৎ চাঁদের আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে গেল ওর সামনের পথ। গুহা পেরিয়ে গেছে ও। ওর সামনে রুইন্স ক্যানিয়নের প্রাচীন ঘরবাড়ির ধ্বংসাবশেষ। নিচে পুরো ক্যানিয়নটা চাঁদের আলোয় ভেসে যাচ্ছে মনে হলো।
ক্যানিয়নে নামল এরিখ গুহামুখের ঢালু পথ বেয়ে। চাঁদের আলোয় ধ্বংসপ্রায় ঘরগুলো প্রেতপুরীর মত রহস্যময়। আশেপাশে হাঁটু সমান উঁচু ঝোপঝাড়। ছড়ানো-ছিটানো ছেঁড়াখোঁড়া পাতা দেখে বুঝতে পারল এ-পথ দিয়েই বেরিয়ে গেছে গরুর পাল। মাটি শক্ত, প্রায় পাথুরে হওয়াতে ওদের খুরের ছাপ পড়েনি খুব একটা। ধ্বংসাবশেষটার দিকে তাকাল ও। পশ্চিম দিকে ক্রমশ নিচু হয়ে গেছে ওটা। ওর আস্তানাটা ছিল আরও পশ্চিমে অবাক হলো এরিখ। অত কাছে থেকেও গরু চলাচলের পথটাও আবিষ্কার করতে পারেনি! অবশ্য অন্যেরাও পারেনি। সবাই জানে এটা একটা বক্স ক্যানিয়ন, পথ থাকার কথা নয়। তাছাড়া ধ্বংসাবশেষের পেছনে গুহামুখটা সহজে কারও চোখে পড়ার কথা নয়। আর পড়লেও এটা এমন ভাবে তৈরি যে, দূর থেকে এর অস্তিত্ব কল্পনাও করা যেত না।
কান পাতল ও। ক্যানিয়নের প্রবেশ মুখের কাছ থেকে গরুর ডাক ভেসে আসছে থেকে থেকে। হালকা আওয়াজ। সম্ভবত ওদের মালিকেরা সামলাচ্ছে ওদের। পা বাড়াল এরিখ। পালিয়ে-যাওয়া লোকটাকে খুঁজে বের করতে হবে। লোকটা ওর পরিচিত, অন্তত গলার আওয়াজে সেরকম মনে হয়েছে। কিন্তু এই মুহূর্তে আওয়াজের মালিকের চেহারাটা স্মরণ করতে পারছে না। সমস্যা হলো, লোকটাকে কোথায় খুঁজতে হবে বুঝতে পারছে না ও।
কিছুটা অন্যমনস্ক হয়ে পড়েছিল এরিখ। হঠাৎ একটা আলগা পাথরে হোঁচট খেয়ে ভারসাম্য হারাল। সামনে ঝুঁকে পড়ল ওর শরীর। পড়ে যাবার ঝোঁক সামলাতে গেল ও মাথা নিচু করে এবং এতেই বেঁচে গেল।
ডানদিকের ধ্বংসাবশেষ থেকে আগুনের ঝলক দেখতে পেল এরিখ আড়চোখে। পর মুহূর্তেই ওর মাথায় হ্যাট ছুঁয়ে গেল একটা গুলি। এতক্ষণ যে পতনের ঝোঁককে রোধ করবার চেষ্টা করছিল ও, গুলির শব্দ শোনামাত্র ওটাকেই কাজে লাগাল। ঝাঁপিয়ে পড়ল ও মাটিতে।
পর পর আরও দুটো গুলি এল। গড়ান দিল এরিখ। আগুনের আভায় একটা ঘরের জানালার মত ফোকর দিয়ে গুলি বেরিয়ে আসতে দেখেছে ও। তার মানে লোকটা ধ্বংসাবশেষের ভেতর আশ্রয় নিয়েছে। পর পর আরও দুটো গড়ান দিয়ে ধ্বংসাবশেষের ভেতরে গলিপথে এসে গেল ও। একটা ঘরের দরজা দিয়ে ঢুকল ভেতরে। ঘরটার ছাদের একদিক ধসে পড়েছে। বালি আর পাথরের স্তূপ সৃষ্টি হয়েছে ঘরের ভেতর। এরিখ স্তূপটার ওপর উঠে বাইরে উঁকি দিল। নিচে একটা ছায়াকে নড়তে দেখে গুলি করল পর পর দু’বার। একদিকে ঝাঁপিয়ে পড়ল ছায়াটা। এরিখের গুলি বালি খসাল সামনের ঘরটার দেয়াল থেকে।
নেমে এল ও স্তূপ থেকে। বেরিয়ে আরেকটা ঘরে ঢুকল। দেয়ালের ফোকর দিয়ে তাকাল বাইরে। লোকটাকে দেখা গেল না।
অপেক্ষা করল এরিখ, চুপচাপ। প্রতিপক্ষ থেকেও কোন সাড়া এল না। গুলি বন্ধ হতেই আচমকা নীরবতা নেমে এসেছে। নিজের শ্বাস-প্রশ্বাসের শব্দ শুনতে পেল ও পরিষ্কার।
মিনিট খানেক অপেক্ষা করে বেরোল ও আবার। পরবর্তী কক্ষটাতে ঢুকতে যাবে, হঠাৎ চোখের কোণে ধরা পড়ল নড়াচড়াটা। ঝাঁপ দিল সে, সাথে সাথে দুটো গুলি পাঠাল নড়াচড়া লক্ষ্য করে। ওদিক থেকেও ছুটে এল গুলি, ওর পাশে দেয়ালে বিদ্ধ হয়ে বালি আর পাথরের কুচি ছড়াল। উঠে ঘরের ভেতর ঢুকে পেছনের দরজা দিয়ে বেরিয়ে গেল ও। একটা প্রাকৃতিক প্যাসেজওয়েতে গিয়ে পড়ল ধ্বংসাবশেষের পেছনে। মৃদু পায়ে হাঁটতে লাগল ও প্যাসেজওয়ে ধরে, একটা লম্বা ঘরের পেছনে গিয়ে দাঁড়াল, তারপর উঁকি দিল গলিপথে
হঠাৎ সামনের একটা ঘরের অন্ধকার দরজা থেকে আগুনের ঝলক দেখা গেল। এরিখ পেছনে ঝাঁপ দিল। শোয়া অবস্থায় গুলি ছুঁড়ল ঝলক লক্ষ্য করে, গড়ান দিয়ে সরে গিয়ে উঠে দৌড় দিল। লম্বা ঘরটার খোলা দরজা দিয়ে ঢুকে গেল ভেতরে।
ভেতরে। অপেক্ষা করতে লাগল। লোকটাকে প্যাসেজওয়েতে নিয়ে আসতে চাইল মনে-প্রাণে। দরজা দিয়ে মুখ বাড়িয়ে বাইরে উঁকি দিল ও।
বেরিয়ে এল লোকটা প্যাসেজওয়েতে। দেয়ালের সাথে মিশে গিয়ে এগোল সামনের দিকে। একটা হাত সামনে বাড়ানো ওর, পিস্তল ধরা।
দরজার কাছে চলে এল ও পা টিপে টিপে। হাসল এরিখ, মনে মনে। লোকটা আর যা-ই হোক, ভাল যোদ্ধা নয়। শেখার মত অনেক কিছুই বাকি আছে ওর। তবে শেখার সময় আর পাচ্ছে না। পিস্তল তুলল এরিখ, ট্রিগার টানল। ক্লিক শব্দ শুনে চমকে উঠে চাইল পিস্তলের দিকে।
লোকটার কানেও গেছে শব্দটা। বিদ্যুৎবেগে লাফ দিল ও সামনে, ঘরের ভেতর ঢুকল। পেছনে সরে গেল এরিখ। লোকটা পিস্তল উঁচাল। এবার? এবার আর তোমার রক্ষা নেই, ওয়েন।’
চিনতে পারল এরিখ এবার লোকটাকে। ‘বাটলার?’
হাসল বাটলার শব্দ করে। জবাব দিল না।
‘এসব কি, বাটলার?’
‘দেখতেই তো পাচ্ছ। এবার বাকিটা দেখার জন্যে তৈরি হও।’
ঝড়ের গতিতে চিন্তা চলছে এরিখের মাথায়। নিজেকে গাল দিল মনে মনে পিস্তল চেক না করার জন্যে। সামান্য ভুলের জন্যে প্রাণ দিতে যাচ্ছে ও এই আনাড়ি শত্রুর হাতে। কিন্তু এখন সময় দরকার। অন্যমনস্ক করে দিতে হবে বাটলারকে।
‘তাহলে রাইলটনটা কে?’ জানতে চাইল ও।
‘আমিই।’ জবাব দিল বাটলার। ‘রবার্ট রাইলটন। বাটলার আমার মায়ের দিকের পদবী। ওটাই ব্যবহার করি আমি এদিকে।’ পিস্তল নাড়াল ও। তৈরি?’
‘তাহলে রাসলিঙটা তুমিই চালাচ্ছিলে এতদিন?’
‘হুঁ।’ স্বীকার করল রাইলটন। ‘তুমি আসার আগে কেউ বুঝতে পারেনি।’ ক্যানিয়নে প্রবেশ মুখের দিকে মাথা ঝাঁকিয়ে ইঙ্গিত করল ও। ‘বেরোতে গিয়ে ফিরে এসেছি। কারা ওরা?’
‘যাদের গরু চুরি করেছিলে, ওরাই। ধরা পড়লে ওরা তোমাকে ফাঁসিতে ঝোলাবে।’
‘কেন, ওরা ওদের গরু ফিরে পেয়েছে!’
‘তা পেয়েছে। কিন্তু তোমার অপরাধের গুরুত্ব তাতে কমবে না।’
ঘরের মাঝখানের খাম্বাটার গায়ে হেলান দিল রাইলটন। ‘আমি জানতাম,’ বলল সে, ‘একদিন তোমার আর আমার মধ্যেই শো ডাউনটা হবে।’
‘এবং দেখা যাচ্ছে তুমিই জিতেছ। কিন্তু এখন আমার প্রশ্নের জবাব দাও। রাসলিঙের কাজটা কিভাবে চালিয়েছ এতদিন ধরে?’
‘সহজ কাজ,’ হাসল রাইলটন। ‘ডগ আর ওক সাহায্য করত আমাকে। হলকে কবজা করেছিলাম লোভ দেখিয়ে। আমাদের সাহায্য করলে জর্জকে সরিয়ে ওকেই ডব্লিউ বারের মালিক করে দেব বলে কথা দিয়েছিলাম। আর কী জানতে চাও?’
‘ডেভিড ক্লে’কে কে হত্যা করেছিল?’
‘আমরাই।’
‘তোমরাই?’ শিউরে উঠল এরিখ। ‘তোমাদের না একত্রে ব্যবসা চালাবার কথা ছিল?’
‘ছিল। কিন্তু উপায় ছিল না। ওকে না সরালে ধরা পড়ে যেতাম আমরা। বড় বেশি বুদ্ধিমান ছিল ক্লে। চ্যাপম্যানের মত বোকা, অহঙ্কারী নয়।’
‘তুমি একটা সাক্ষাৎ শয়তান, রাইলটন!’ দাঁতে দাঁত ঘষল এরিখ।
‘হয়তো।’ আবার হাসল লোকটা। ‘জো রীভসেরও সেই একই ব্যাপার। ওকেও না-ঝুলিয়ে উপায় ছিল না। আমি ডগ আর টিকাউ মিলে করেছি কাজটা।’
‘তোমাকে আমি খুন করব, রাইলটন। রাগে বিকৃত শোনাল এরিখের গলা। ‘তুমি একটা জঘন্য খুনী। কাপুরুষের মত খুন করেছ দু’জন খাঁটি মানুষকে।’
‘কিভাবে?’ যেন অবাক হলো রাইলটন। ‘তোমার পিস্তলে তো গুলি নেই। আমারটায় আছে। সুতরাং বুঝতেই পারছ, তোমার হাতে খুন হচ্ছি না আমি। আমি বেঁচেই থাকব। কেউ সন্দেহ করতে পারবে না আমাকে। ডগ আর হল মারা গেছে, তুমি ছাড়া আর কেউ জানে না এখন আমার পরিচয়। তোমার ব্যবস্থা করে র্যাঞ্চে ফিরে যাব আমি। বিয়ারির বিরুদ্ধে ক্রস অ্যারো দখলের পাঁয়তারার অভিযোগ তুলে সবাইকে খেপিয়ে তুলব। ওকে ভাগিয়ে দিয়ে ওয়েন্ডিকে বিয়ে করলেই ক্রস অ্যারো আমার।’
অন্ধকারে নড়ে চড়ে দাঁড়াল এরিখ। পিস্তল ধরা হাতটা আস্তে আস্তে পেছনে সরে যাচ্ছে ওর
‘নোড়ো না!’ সাবধান করল ওকে রাইলটন। ‘গুলি করতে যাচ্ছি আমি। কোথায় তোমার পছন্দ, বলো। পেটে না কপালে…’
বিদ্যুৎ খেলে গেল এরিখের দেহে। খালি পিস্তলটা ছুঁড়ে মারল ও রাইলটনের মাথা সই করে, সাথে সাথেই ডাইভ দিল ওর দিকে।
ঠকাস করে শব্দ হলো একটা। চেঁচিয়ে উঠে দু’হাতে কপাল চেপে ধরল রাইলটন। হাত থেকে পিস্তল পড়ে গেল ওর। পর মুহূর্তেই এরিখের প্রচণ্ড ধাক্কায় চিৎ হয়ে পড়ল মেঝের ওপর। লাফিয়ে উঠল এরিখ ওপরের দিকে, দু’পা একত্র করে পড়ল লোকটার বুকের ওপর। স্পারের খোঁচায় কেঁপে উঠল রাইলটন, ওর গলা চিরে মর্মভেদী আর্তনাদ বেরিয়ে এল। আবার লাফাল এরিখ ওর বুকের ওপর। আবার। ধীরে ধীরে স্তিমিত হয়ে এল রাইলটনের গলা, আপাদমস্তক কেঁপে উঠল কয়েকবার। নেতিয়ে পড়ল সে। ওর পিস্তলটা কুড়িয়ে নিল এরিখ। পর পর দু’বার গুলি করল ওর বুকে। তৃতীয়বারের সময় ক্লিক করে উঠল পিস্তল। গুলি ফুরিয়েছে।
টলতে টলতে বেরিয়ে এল ও ধ্বংসাবশেষ থেকে। ঢাল বেয়ে নামতে গিয়ে একজন অশ্বারোহীকে এগিয়ে আসতে দেখে লুকিয়ে পড়ল ঝোপের আড়ালে। অশ্বারোহী কাছে আসতেই চিনতে পারল। ‘বার্জার।’ বেরিয়ে এল আড়াল থেকে। আমি ওয়েন।’
‘বাঁচালে!’ রাইফেলটা নামিয়ে রাখল বার্জার স্ক্যাবার্ডের ওপর। ‘এরিখ, সবগুলো গরু ফিরে পেয়েছি আমরা। ডব্লিউ বার, ক্রস অ্যারো, লেজি এফ- সব র্যাঞ্চের। গুলির শব্দ শুনলাম এদিকে?
‘শেষটাকে শেষ করেছি।’
‘কে. এরিখ?’
‘রাইলটন ওরফে রবার্ট বাটলার, শান্তকণ্ঠে বলল এরিখ।
‘রবার্ট বাটলার!’
‘হল চ্যাপম্যান, ডগ লেইকারও ছিল দলে। স্ট্যাম্পিড়ে মারা গেছে ওরা।’
ঘোড়া থেকে নামল বার্জার। সিগারেট রোল করল। এরিখ ওর শেষ সিগারেটটা ধরিয়ে একটা পাথরে হেলান দিয়ে বসল। জামার হাতায় মুখ মুছল। ‘আমাকে একটা ঘোড়া এনে দাও, গোল্ড।’ বার্জারকে অনুরোধ করল ও। ‘গাস রয়ে গেছে ওখানে। ওকে নিয়ে আসতে হবে। আহত হয়েছে বেচারা।’
গোল্ড বার্জার ঘোড়ার জন্যে চলে গেল। নিঃশ্বাস ফেলল এরিখ। চন্দ্রালোকিত ক্যানিয়নের বুকে তাকাল। ‘শেষ পর্যন্ত বন্ধ হলো এই জঘন্য গরুচুরি,’ ভাবল সে। ‘কিন্তু কাজ ফুরোয়নি এখনও। চ্যানি বিয়ারির মুখোমুখি হতে হবে এবার। কাজটা হয়তো সহজ হবে না। তবে যে ভাবেই হোক, এতে জিততেই হবে। নইলে সর্বনাশ হয়ে যাবে অসহায় মেয়েটার।’
আসলে, এরিখ জানে, ওয়েন্ডির নয় শুধু, ওটা ওর নিজেরও লড়াই।