গোধূলিতে প্রত্যাশা

অনেকটা পথ তো হেঁটেছি এ যাবত। রৌদ্রছায়া
দেখা হলো বেশ কিছু, পাথরের সন্ত্রাসে জখমি হয়ে খুব
কখনও ক্লান্তিতে চোখ বুজে এসেছে বিজন পথে,
যেখানে ঘাতক পশু কিংবা মানুষ নামের স্রেফ
নকল তক্‌মা-আঁটা জানোয়ার ওঁৎ পেতে থাকে। কখনও বা
মধ্যপথে অকস্মাৎ ফুলের সুঘ্রাণে প্রাণ সঞ্জীবিত হয়।

কত যে চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে খুঁজতে হবে শুভ
ঠিকানা কোথাও। কিন্তু সত্যি কি ঠিকানা বলে কিছু
কোথাও বিরাজ করে? কায়ক্লেশে যেখানেই যাই
নিজেকে বেগানা লাগে খুব, সবাই আমার দিকে
তাকায় এমন ঢঙে, যেন আমি এক সঙ, এসেছি সুদূর
অচেনা অজানা কোনও গ্রহ থেকে। কেউ
করে না আলাপ, শুধু দৃষ্টি হেনে যে যার গন্তব্যে
পৌঁছে যায় হয়তো বা। আমি একা পড়ে থাকি পথের কিনারে,
ভীষণ সিঁটিয়ে থাকি নিজের ভেতর। কয়েকটি রুক্ষ গাছ
আজ সাক্ষী আমার নিঃসঙ্গতার; রক্তখেকো পাখি ডেকে ওঠে
নানা দিক থেকে, দিশেহারা আমি চোখ মেলে রাখি
সেদিকেই, যখন যেদিক থেকে সন্ত্রাসী পাখির ধমকের শব্দ আসে।

আমার পথের শেষ কোথায়, জানি না। যেখানেই
হোক না, সেখানে যেন থাকে সুশীতল
ঝরনাধারা, লতাগুল্ম, গাঢ় ছায়া-ছড়ানো ক’জন
প্রবীণ দয়ালু গাছ, যারা ক্লান্তি মুছিয়ে দেবেন
পথিকের। আর যেন থাকেন নিকটে
জ্যোতির্ময়ী কেউ, যিনি আমার ব্যাকুল আঁজলায়
দেবেন ঝরিয়ে গোধূলিতে
ঝরনার শীতল জল প্রণয়ের গহন আঙ্গিকে।
৮.৭.২০০০