একটি হারিয়ে যাওয়া কবিতার জন্যে

একটি কবিতা আজ হারিয়ে ফেলেছি গোধূলিতে, যাকে আর
পাবো না কখনও খুঁজে কোনওদিন। এসেছিল সবুজাভ পাতা
যেমন গাছের ডালে আসে সাবলীল। আমি তার
আবির্ভাবে নক্ষত্র বৃষ্টিতে ভিজে আপাদমস্তক
যেন চলে গেছি উড়ে সব পেয়েছির দেশে। আনন্দ, আনন্দ
ধ্বনি বুকে বেজে উঠেছিল আর কবিতার খাতা
অপরূপ, অনিবার্য শব্দাবলী পাওয়ার আগেই
কোথায় হারিয়ে গেল ক্ষুধিত তিমিরে। গোধূলির
রঙ মুছে গেল সন্ধ্যা পেরিয়ে গভীর রাত্রি এল,
আমার মগজ শূন্য করে লব্ধ শব্দাবলী প্রত্যাবর্তনের
রীতি ভুলে গেছে ফের বহুদিন পর। অকস্মাৎ চিত্তপটে
ঝড় ওঠে, মনে জাগে পুরোনো দিনের কথামালা।

ঢের আগে পুরোনো ঢাকার গলিবাসী বহুকাল
ছিলাম মনের সুখে। শৈশব, যৌবন, আদি প্রৌঢ়ত্বের ঋদ্ধ
কিয়দংশ কেটেছে সেখানে। যৌবনের এক মধ্যরাতে
চকিতে আমার খুব কাছে এসে, হঠাৎ কোথায়
আন্ধারে হারিয়ে গেল অপরূপ একটি কবিতা। জানি না তো
কী করে ফিরিয়ে আনা যায় তাকে; সমস্ত শরীরে
ফুটছে অজস্র কাঁটা, অনুশোচনায় হতবুদ্ধি বললেন
অশ্রুপাত করে আর কিছুক্ষণ পরে, কী আশ্চর্য, কাগজের শূন্য
পাতা জুড়ে ফুটে ওঠে পলাতকা কবিতার রূপ।
অথচ এখন এই শহরতলিতে মাথা খুঁড়ে মরলেও
আমার হারিয়ে-যাওয়া কবিতাকে কোথাও পাবো না,
শুধু অতিদূর থেকে অস্পষ্ট আসবে ভেসে কারও ক্রূর হাসি।
২৯.১১.৯৯