বৈশাখ বিষয়ক কয়েকটি পঙ্‌ক্তি

বাংলা নববর্ষের প্রথম মাস, তোমাকেই
বলছি, শোনো-
যদি আমি রবীন্দ্রনাথ হতাম, তাহলে তো
কথাই ছিল না। হে বৈশাখ বলে শুরু করতাম
আর এক দীর্ঘ বন্দনাগীতি রচনা করে ফেলতাম
তোমারই উদ্দেশে। জীবনানন্দের পক্ষপাত ছিল হলুদ
হেমন্তের প্রতি। তবু জীবনানন্দ হতে পারার গৌরব
অর্জন করলেও তোমার অন্তর্গত রূপের, হে বৈশাখ,
একটি মায়াবী চিত্রকল্প ধানসিঁড়ি নদীর ঢেউ অথবা
শঙ্খ চিলের ডানার ঝাপটার সহযোগিতায়
ফুটিয়ে তুলতে পারতাম দুপুরের ঝিমধরা
আভার গভীর বর্ণনায়। হায়, আমার অদৃশ্য
মুকুটে গৌরবদীপ্ত কোনও মুক্তো অথবা
হীরে জহরত নেই। আমার দীপ্তি প্রায়শই বিপথে হারায়।

হে বৈশাখ, তোমার অনন্য রূপের গুণকীর্তনে আমার
দক্ষতা শূন্যের কোঠায় বলেই ক্ষমাপ্রার্থী। আমি শুধু
তোমাকে মিনতি জানাতে পারি। জোড় হাতে
বলতে পারি, হে বৈশাখ, দয়া করে তুমি
আমাদের আপন দরিদ্রজনের ছনের ছাদ-অলা ঘরবাড়ি,
পর্ণ কুটিরগুলো লণ্ডভণ্ড কোরো না, ভেঙো না
ফলবতী গাছ, নষ্ট কোরো না আমাদের প্রাণপ্রিয় ফসল।
বরং তোমার ঝোড়ো তাণ্ডব ধ্বংস করুক সন্ত্রাস দুর্নীতি,
ভণ্ডামি,কালো কুসংস্কার, প্রাম্প্রাদায়িক আগুন, মানবিক
ক্লেদ, উগ্র মৌলবাদীদের উন্মও হিংস্রতা ধ্বংস করুক,
লুপ্ত করুক চিরতরে। তাহলে রবীন্দ্রনাথ না হওয়া সত্ত্বেও
তোমার রুদ্র গলায় পরিয়ে দেব বন্দনার গীতিমালা।
১১.৪.৯৯