তিমিরবিনাশী একজন

বস্তুত তিমিরবিনাশের ব্রত ছিল আজীবন
তার, বুঝি তাই মুখে আর
কলমের ডগায় ঝরাতো নিত্যদিন
আলোর অদম্য ঝর্নাধারা। নিজস্ব প্রাপ্তির কোনও মরীচিকা
বিভ্রান্ত করেনি তাকে কস্মিনকালেও। অন্তরের
দীপ্ত স্রোত দুর্নিবার টানে তাকে পৌছে
দিয়েছে নির্ভুল সত্য, সুন্দর এবং কল্যাণের খুব কাছে। সাধনার
পথে সে থামেনি বেশুমার প্রেতযোনির তাণ্ডবে।

তিমির লালন করে যাদের এবং যারা তিমিরের
হিংস্রতার উপাসক, তারা
তাকে হননের ক্ষিপ্ত অভিলাষে মেতে পাশব উন্মত্ততায়
যূপকাঠে ঠেলে দেয়। তিমিরবিনাশী
উদার প্রদীপ্ত প্রাণ রক্তাক্ত, নিস্পন্দ পড়ে রয়
নিশ্চতন, নির্বাক ধুলোয়।

তিমিরবিনাশী লোকটার বাসগৃহে বেধড়ক
অন্ধকার নেমে আসে, গৃহিণীর বুক চিরে ওঠে
বেদনা, কান্নার রোল। আত্মীয়, স্বজন, বন্ধগণ
স্তম্ভিত, শোকার্তে, অতঃপর খবরের কাগজে বিশাল
শিরোনাম, ফটোগ্রাফ, বক্তৃতা, বিবৃতি, প্রতিবাদী
মিছিলের ক্ষুব্ধ ঢেউ নানা স্থানে। আখেরে সুস্থির
নীরবতা সবখানে। শুধু শব্দ সাধকের গৃহকোণে
মাঝে মাঝে চাপা কান্না, খেলায় নিমগ্ন তার তিন বছরের
পৌত্রীর কোমল গালে রৌদ্রছায়া নাচে আর তিমিরবিনাশী
লোকটার বিপন্ন বিধবা সংসারের অন্ধকারে আলো খোঁজে।
১৭.২.৯৯