পারবে কি রুখে দিতে

এ শহর, আমার এ জন্মশহর উঠেছে হেসে,
লেগেছে বাসন্তী রঙ তার
ধূসর সত্তায় আজ। কোকিলের কী ব্যাকুল ডাক
কবির হৃদয়ে নিমেষেই জাগায় কাঙ্ক্ষিত চিত্রকল্প, কোকিলের ডাক
উৎফুল্ল তরুণ তরুণীর প্রাণে আনে সুন্দর ও কল্যাণের
স্নিগ্ধ রূপ উৎসব-ছন্দিত এই বকুলতলায়। কোকিলের
গান নিবেদিত তানে শহীদ মিনারে
সশ্রদ্ধ ছড়ায় বসন্তের আভা, অগণিত ফুল।

আমিও কৃতজ্ঞতায় করেছি গ্রহণ
বসন্তের সানুরাগ দান জীবনে আমার আর
চেতনাকে প্রজ্বলিত রেখেছি সর্বদা
শুভবাদী আলোর শিখায়। জীবনের অস্তরাগে
যৌবনের পদধ্বনি আজও বারবার
আমাকে প্রবল টানে ঝড়ক্ষুব্ধ পথে,
আর হিংস্র হাওয়ায় আগলে রাখি দীপ,
সন্ত্রস্ত মাথায় নাচে ঘাতকের শাণিত কুড়াল।

কখনও নিইনি অস্ত্র হাতে; কোনও পাখি,
প্রজাপতি কিংবা কোনও কীটকেও
করিনি হনন কোনওদিন, অথচ আমার এই
প্রাণের পূর্ণিমা
দপ্‌ করে নেভাবার জন্যে তালেবানি অমাবস্যা ধেয়ে আসে।
এই যে রমনার মাঠে, বকুলতলায়
এখন রবীন্দ্রনাথ আর বিদ্রোহী কবির বসন্তের গান
আর কোকিলের কুহুতান ক্ষণে ক্ষণে জেগে ওঠে,
সে দীপ্ত আনন্দধ্বনি পারবে কি রুখে দিতে কবন্ধ সন্ত্রাস?
পারবে কি ভবিষ্যের কোনও সূর্যোদয়ে?