১১৮. ভীমান্বেষণে অর্জ্জুনের গমন

হেথায় চিন্তিত রাজা আশ্রমে বসিয়া।
ধীরে ধীরে কহিলেন অর্জ্জুনে চাহিয়া।।
শুন ভাই ধনঞ্জয় না বুঝি কারণ।
ভীমের বিলম্ব কেন হয় এতক্ষণ।।
শীঘ্রগতি বৃকোদরে কর অন্বেষণ।
বুঝি ভীম কার সনে করিতেছে রণ।।
আজ্ঞামাত্র পার্থবীর উঠিয়া সত্বর।
নিলেন গাণ্ডীব হাতে তূণ পূর্ণ শব।।
প্রণাম করিয়া বীর ধর্ম্মের চরণে।
চলিলেন ধনঞ্জয় ভীম অন্বেষণে।।
ঘোর বনে প্রবেশিয়া পার্থ বীরবর।
চলিলেন দ্রুতগতি নির্ভয় অন্তর।।
বসন্ত সময়, তাহে কোকিল কুহরে।
মকরন্দে অলিকুল সদা কেলি করে।।
কুহু কুহু রবে পিক করিতেছে গান।
স্বচ্ছন্দ গমনে বীর সরোবরে যান।।
কতক্ষণে উত্তরিলা মায়া সরোবরে।
তৃষ্ণার্ত্ত হইয়া যান জলপান তরে।।
হেনকালে বকরূপী কন ধর্ম্মরায়।
প্রশ্ন পূরি জলপান কর ধনঞ্জয়।।
প্রশ্ন না পূরিয়া যদি কর জল পান।
পরশ করিবামাত্র যাবে যমস্থান।।
ধর্ম্মবাক্য ধনঞ্জয় না শুনি শ্রবণে।
আপনার দম্ভে চলিলেন বারি পানে।।
পড়ি আছে বৃকোদর জলের উপর।
দেখি শোক করিলেন মনে বীরবর।।
এই জল হৈতে হৈল ভ্রাতার নিধন।
কোন্ লাজে আমি আর রাখিব জীবন।।
মায়াজল স্পর্শমাত্র বীর ইন্দ্রসুত।
শরীর হইতে তার গের পঞ্চভূত।।
এখানে চিন্তিত অতি রাজা যুধিষ্ঠির।
দোঁহার বিলম্ব দেখি হলেন অস্থির।।
নকুলেরে কহিলেন ধর্ম্ম নরপতি।
ভীমার্জ্জুন অন্বেষণে যাও শীঘ্রগতি।।