১০২. রাম-লক্ষ্মণরূপে বিষ্ণুর চারি অংশে মর্ত্ত্যে নররূপে জন্মগ্রহণ

সূর্য্যবংশে মহারাজ দশরথ নামে।
পুত্র হেতু যজ্ঞ করে মহা পরিশ্রমে।।
পূর্ব্বেতে আছিল তাঁর অনেক সুকর্ম্ম।
তেঁই তাঁর বংশে হরি লইলেন জন্ম।।
ভুবনে অবতীর্ণ, দেবের দুঃখ অন্ত।
বিধিবাক্যে নিজ ভক্তে করিতে শাপান্ত।।
এতেক চিন্তিয়া মনে প্রভু ভগবান।
চারি অংশে নিজ জন্ম করেন বিধান।।
যথায় নৃপতি যজ্ঞ করে আনন্দেতে।
অকস্মাৎ চরু উঠে যজ্ঞকুণ্ড হৈতে।।
যজ্ঞপূর্ণ করে রাজা কার্য্যসিদ্ধি জানি।
চরু লয়ে গেল যথা আছে দুই রাণী।।
আনন্দে কহেন গিয়া দোঁহাকার আগে।
ভোজন করহ চরু দোঁহে তুল্যভাগে।।
নৃপতির মুখ শুনি এইরূপ বাণী।
নিলেন আনন্দে সেই চরু দুই রাণী।।
সুমিত্রা নামেতে তাঁর তৃতীয়া মহিষী।
আইল দোঁহার কাছে পুত্র অভিলাষী।।
অর্দ্ধ অর্দ্ধ করি যবে খান দুই জনে।
হেনকালে সুমিত্রাকে দেখি বিদ্যমানে।।
পুনর্ব্বার করিল তা অর্দ্ধ অর্দ্ধ ভাগে।
স্নেহ করি দিল দোঁহে সুমিত্রার আগে।।
কৌশল্যা কৈকেয়ী তবে সুমিত্রারে কয়।
অবশ্য হইবে তব যুগল তনয়।।
দুই পুত্র হয় যেন দোঁহে অনুগত।
তিন জনে প্রসঙ্গ হইল এইমত।।
এরূপে খাইল চরু আনন্দিত মনে।
যথাকালে গর্ভবতী হৈল তিন জনে।।
সিংহাসনে তুষ্ট মনে আছে নৃপমণি।
একে একে প্রসবিল তিন রাজরাণী।।
কৌশল্যার গর্ভে জন্ম নিলেন শ্রীরাম।
পূর্ণ অবতার মূর্ত্তি দূর্ব্বাদলশ্যাম।।
দ্বিতীয় কৈকেয়ী গর্ভে জন্মিল ভরত।
এ তিন ভুবনে যায় অতুল মহত্ব।।
লক্ষ্মণ নামেতে জ্যেষ্ঠ সুমিত্রার সুত।
দ্বিতীয় শত্রুঘ্ন সর্ব্ব লক্ষণ সংযুত।।
হেনমতে জন্মিলেন বিষ্ণু অবতার।
উল্লসিত ধরাধাম, হর্ষ সবাকার।।
দিনে দিনে বাড়ে যেন সিতপক্ষ চন্দ্র।
অস্ত্র শস্ত্রে বিশারদ, দেখিতে আনন্দ।।