হারানো সুর – ৯

নয়

‘জ্যাক নানাকে সিম্ফনি আর ওই রহস্যমানবের কথা জানাতে হবে,’ সিভিক সেন্টারে হেঁটে যাচ্ছে, এসময় বলল রবিন।

ডনের মাথায় অন্য চিন্তা খেলছে। ‘আমাদের পুলিস ডাকা উচিত!’

‘খাইছে, খামের ভেতরে কী আছে না জেনেই?’ প্রতিবাদ করল মুসা।

‘মুসা ঠিকই বলেছে,’ সায় জানাল নথি। ‘প্রমাণ ছাড়া আমরা সিম্ফনিকে দোষী বলতে পারি না।’

‘ওঁর সাথে কথা বললে কেমন হয়?’ প্রস্তাব করল কিশোর। ‘আমরা কী দেখেছি জানাব। তিনি যদি স্কোরটা চুরি না করে থাকেন তো সব খুলে বলবেন আমাদেরকে।’

‘আর যদি চুরি করে থাকেন?’ সু কি জানতে চাইল।

‘তাহলে আমরা সোজা গরম পানিতে,’ সাফ জানাল গোয়েন্দাপ্রধান।

সু কিকে বিভ্রান্ত দেখাল।

‘গরম পানি মানে?’

ওরা এখন সিভিক সেন্টারে পৌঁছে গেছে।

‘পরে বলব,’ বলে কিশোর ভেতরে ঢুকল সবার সঙ্গে। মঞ্চে সমবেত হয়েছেন যন্ত্রসঙ্গীতশিল্পীরা। হেক্টরের বাঁয়ে যথাস্থানে সিম্ফনি। ছেলে-মেয়েদের মনে হলো মহিলার মুখের চেহারায় কেমন এক অপরাধী অভিব্যক্তি।

মেরি হপকিন্স সাঁত করে আইলে ঢুকে রবিনের পাশে দাঁড়ালেন।

‘হারানো সুরটা পাওয়া গেল?’

‘না,’ জানাল রবিন।

এবার হেক্টর ডাউনবিট হিট করতেই বাজনা আরম্ভ হলো। আজ রিহার্সালটা স্বচ্ছন্দে এগোল। অনুশীলন শেষে করতালিতে মুখর হলো অডিটোরিয়াম।

হেঁটে মঞ্চের কিনারায় এলেন হেক্টর।

‘দেখতে পাচ্ছি আপনারা খুব সহজেই সন্তুষ্ট,’ বললেন, তবে এটা পরিষ্কার, তিনি নিজেও খুশি। অর্কেস্ট্রার উদ্দেশে ঘুরে দাঁড়ালেন। ‘লম্বা লাঞ্চ ব্রেক নিন,’ বললেন শিল্পীদের। ওঁরা ভাল বাজিয়েছেন, এটা তারই স্বীকৃতি-নিজের কায়দায় বললেন আরকী।

আজ লাঞ্চের ব্যবস্থা করা হয়েছে রিসেপশন হল-এ। মুসা লম্বা টেবিলটার পাশ বরাবর হাঁটছে আর খাবারগুলো খুঁটিয়ে দেখছে। অনেক ধরনের সালাদ রয়েছে ওখানে: সবজি, পাস্তা, ডিম, টিউনা, বিন আর আলু। দু’পাশে মাংস আর পনিরের বড়- বড় দুটো ট্রে। ঝুড়ি ভর্তি হরেক রকমের পাউরুটি। কয়েকটা পাত্র ফলমূল দিয়ে ভরা।

রবিন ওর পাতে পাস্তা সালাদ আর রাই ব্রেড তুলে নিল। ‘মুসা, তুমি কী নিচ্ছ?’ প্রশ্ন করল।

মাথা নাড়ল মুসা।

‘সবগুলোই তো ভাল। ঠিক করতে পারছি না।’

‘তারমানে তুমি প্রত্যেকটাই একটু-একটু করে চাখবে,’ বলল কিশোর।

মুসা ভান করল এমন খাসা বুদ্ধি ওর মাথায় আসেনি। ‘ধন্যবাদ, কিশোর,’ বলে, প্রতিটা ডিশ থেকে খানিকটা করে তুলে নিতে লাগল।

এবার দেয়াল লাগোয়া চেয়ারগুলোতে গিয়ে বসল ওরা। ঠিক এমনিসময়, মেরি হপকিন্সের সঙ্গে অডিটোরিয়াম থেকে বেরিয়ে এলেন সিম্ফনি। ছেলে-মেয়েদের দিকে হাঁটছেন তাঁরা।

‘এই যে, তোমরা!’ সিম্ফনি এমনভাবে বললেন যেন এতক্ষণ ওদেরকেই খুঁজছিলেন। ‘কাল সকালে কি আমার সাথে হোটেলে দেখা করতে পারো? রোজ ব্রেকফাস্টে রোল আর জুস দেয় ওরা। আমরা একসাথে নাস্তা করে এখানে চলে আসতে পারি। স্টেজে একক পরিবেশনার প্র্যাকটিস করতে চলেছি। শ্রোতা থাকলে ভাল লাগবে আমার।’

‘খাইছে, একশোবার!’ প্রায় চেঁচিয়ে উঠল মুসা। ও নিশ্চিত সিম্ফনি কিছুতেই চোর হতে পারেন না।