৫ট. গীতিসংগ্রহ – মান

গীতিসংগ্রহ  মান

৬৩৬

ও রাই কিসের অভিমান গো শ্যাম আসিয়াছে কুঞ্জবনে।।ধু।।
বিরাস বদনে শ্যাম দাঁড়ায় কুঞ্জবনে নয়ন তুলিয়া চাও পিয়ারী
বন্ধুয়ার পানে
গাথিয়া মালতীর মালা অতিশয় যতনে
শ্যাম চান্দের গলে দেও আনন্দিত মনে।
ভাবিয়া রাধারমণ বলে মিনতি বচনে
শ্যামচন্দে বিনয় করৈন ধরিয়া চরণে।

গো (২৫৯)

৬৩৭

কৃষ্ণ আমার আঙিনাতে আইতে মানা করি।
মান ছাড় কিশোরী।।
যাও যাও রসরাজ এইখানে নাহি কাজ
যাও গি তোমার চন্দ্রাবলীর বাড়ি।।
চন্দ্রাবলীর বাসরেতে সারা রাইত পোহাইলায় রঙ্গে
এখন বুঝি আইছ আমার মন রাখিবারে।।
ভাবিয়া রাধারমণ বলে দয়া নি করিবায় মোরে
কেওড় খোলো রাধিক সুন্দরী।।

য/৩০

৬৩৮

তোরে কে শিখাইলো গো নিদারুণ মান
বারে বারে শ্যামকে ধনি কইলে অপমান।।ধু।।
শ্যাম যদি কান্দিয়া যায় গো হইয়া অপমান
চরণ ধরি বিনয় করি তারে গিয়া আন
ব্ৰহ্মা আদি দেবগণে যারে দেয় সম্মান
তার মানে মানিনী হইয়া তোমার এত মান।
ভাবিয়া রাধারমণ বলে মান করা গো দান
যোগীর বেশে দাঁড়াইয়াছে শ্যাম কালাচান।।

য/৩০

৬৩৯

নাগর প্রবেশিও না রাধার মন্দিরে নাগর প্রবেশিও না।।ধু।।
সারা নিশি জাগরণ করি মান করি ঘুমাইয়াছে প্যারী
রাধারে জাগাইতে নাগর আর বলিও না।
শ্ৰীরাধিকার হুকুম বিনে কপাট খুলিও না।
ভাবিয়া রাধারমণ বলে শ্যাম আসিয়াছে কুঞ্জের ধারে
শ্ৰীরাধিকা বিনে শ্যামের প্রাণ বাঁচে না।

গো (২৭৮)

৬৪০

বন্ধু সর সার
পন্থের মধ্যে বাঁকা ঝুঁড়ি কেন এমন কর
আমরা তো অভাগী নারী যাই যমুনার জলে
কুলমান হারাইলাম তোমার বাঁশির স্বরে।।
মান করিয়াছে প্রাণনাথ তোমার মান থাক
আমরা অভাগিনী নারী পথখানি ছাড়।।
লজ্জা নাই তোর নিলাজ কানাই লজ্জা নাইরে তোর
পথ ছাড় রাধাকান্ত লজ্জা ক্ষমা করি।।
ভাবিয়া রাধারমণ বলে শুনা এগো সখী
জল লইয়া ঘরে আইলা রাধা কমলিনী।

ন/১২

৬৪১

ব্রজলীলা সাঙ্গ দিয়া যাই গো শ্ৰীমতী রাই
তোমার প্রেমে বাঁধা আছে শ্যাম নাগর কানাই।।
মান ভাঙ্গ রাই কমলিনী একবার নয়ন তোলা দেখি
জন্মের মতো তোমায় আমি একবার হেরিয়া যাই।।
শ্ৰী রাধার চরণ ধরি মান সাধিলা গুণমণি
রাইগো শ্যামচান পরাণের বন্ধু ছাড়লে বাঁচন নাই।
বাইবে রাধারমণ বলে শুনগো ধনি রাই
মান ভাঙ্গিয়া কোলে লইলা ঠাকুর কানাই।

নৃ.৪

৬৪২

রাই, কিসের তোমার অভিমান গো–
শ্যাম আইল না কুঞ্জবনে।।
আর আইস বন্ধু বইস কাছে–
খাও রে বাটার পান।
ওরে, হাসি মুখে কও রে কথা
জুড়াউক পরান গো।।
আর নতুন ফুলের মালা–
নতুন গাঁথুনি।
সেই মালা পইরাই ত
আমার রাধা বিনোদিনী গো।।
আর ভাইবে রাধারমণ বলে
শুনো রে কালিয়া।
ওরে, তুলসী মালা পইরাই দেও
বন্ধের গলে নিয়া গো।।

শ্রী/৩৪৬

৬৪৩

শ্যামচান্দ পরানের বন্ধু ছাড়লে উপায় নাই
কেবা না পীরিত করে কার বা এত বড়াই
তোমার মত রূপে গুণে আর কি মানুষ নাই–
কেন যে ঘামটি দেখাও তুকাইয়া কারণ না পাই
কত জনে করে পীরিত কার এত জ্বালা
তোমার পীরিতে আমার শরীর আইলো ছাই।
ভাইবে রাধারমণ বলে শোন গো ধনি রাই
মান করি বসিয়া রইছে। নন্দের কানাই।।

গো আ (২৪৩), হা (১)

পাঠান্তর : হা : কেন যে… পাই> × × কতজনে … জ্বালা > কেবা না পিরীত করে কার বা এত জ্বালা; ছাই > কালা; রইছে… কানাই > রইছ কমলিনী রাই।

৬৪৪

শ্ৰীচরণে ভিক্ষা চাই, মান ভাঙ্গো গো কমলিনী রাই।।ধু।।
নয়ন তোল কথা বল গো রাধে জন্মের মতো দেখে যাই।। চি৷।
হয়ে থাকি অপরাধী বিচার কর নিরবধি আইনবিধি সবে
মাইনে যাই।
আইনে দণ্ড হইয়া থাকলে দণ্ডনিয়া যাইতে ক্ষতি নাই।।১।।
চোৰ্য হৈলে চূড়া বাঁশি হইলেম নবীন সন্নাসী
উদাসী হইয়া বেড়াই।
সোনার অঙ্গে ভুষি মাইখে আমি পাগলের মতো বেড়াই।।২।।
ভাইবে রাধারমণ বলে মান ভাঙ্গ রাই কমলিনী
হাসি হাসি কৃষ্ণ পানে চায়
তুমি কৃষ্ণ পানে চাইয়া রইলায় গো রাই
তোমার গৃহে যাইবার মন নাই।।৩।।

মাখ/১

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *