গীতিসংগ্রহ – খন্ডিতা
৬০৯
আইল না গো প্ৰাণবন্ধু মনে রইল খেদ
যামিনী হইল ভোর।
কোকিলায় পঞ্চমে গায় শুনিতে মধুর।।
পিয় পিয় প্রিয় স্বরে ডাকিছে ময়ূর
কার কুঞ্জে গিয়া বন্ধু হইয়াছে বেভোর।।
পুরুষ সব ভ্রমর জাতি নিদয়া নিষ্ঠুর
ভাইবে রাধারমণ বলে কালা মনচুর।।
৬১০
ঐ নাকি যায় নিষ্ঠুর কালিয়া
ওয়াগো আমার প্রাণবন্ধে বাজায় বাঁশি নিরলে বসিয়া।।
যদি বন্ধের লাগ পাইতাম চরণে প্ৰাণ সপিতাম
ওয়াগো তারে পান খাওয়াইয়া রাখিতাম ভুলইয়া।।
পথের মধ্যে ডাকাডাকি সব সখীগণ মিলিয়া
বান্ধিয়া আন প্ৰাণবন্ধুরে রাধার বসন দিয়া।।
ধর ধর এগো সখী চোরা যায় পলাইয়া
মারিও না গো প্ৰাণবন্ধুরে বাঁশি লও কাড়িয়া।।
ভাইবে রাধারমণ বলে মনেতে ভাবিয়া
জন্মাবধি রাধার প্ৰেমে বান্দা চিকন কালিয়া।।
করু/৫
৬১১
ও প্ৰাণ সখীগো নিশিগত প্ৰাণনাথ আইল না
এগো আইল না গো চিকন কালা আশা পূর্ণ হইল না।
লবঙ্গ মালতীর কলি বিনা সুতে মালা গাঁথি গো
আমার গাথা মালা হইল বাসি শ্যামগলে দিলাম না।।
বিদেশেতে যার পতি সে-বা নারীর কিবা গতি গো
এগো দুরন্ত যৌবনের কালে যুবতীর প্রাণ বেঁচে না।।
ভাইবে রাধারমণ বলে প্ৰেমানলে অঙ্গ জ্বলে
এগো কুন রমণী পাইয়া শ্যামে আমায় মনে করে না।
আশা/১৩
৬১২
কই গেলে পাই তারে কই গেলে পাই।
পাইলে শ্যামরে লইয়া কোলে নগরে বেড়াই।।
পাইলে শ্যামরে ধরব গলে ছাড়াছাড়ি নাই।
আত্মীয় জানিয়ে প্রাণবন্ধুরে হৃদয়ে দিলাম ঠাঁই।।
ছিল আশা দিল দাগা আর প্রেমে কাজ নাই।
জাতিজুতি ফুল মালতী মালাটি গাথাই।।
দেখলে মালা উঠবে জ্বালা কার গলে পরাই।
আগর চন্দন উঠে কান্দন কার অঙ্গে ছিটাই।।
ভাইবে রাধারমণ বলে শোন গো ধনি রাই।
চন্দ্রার কুঞ্জে থইয়া বন্ধে দুয়ারে জাগাই।
হা ১৮ (১৭), গো (২১২)
পাঠান্তর : শ্যামরে > তারে; আত্মীয়… ঠাঁই > xx আর > এমন; উঠবে জ্বালা > দ্বিগুণ জ্বালা, আগর… ছিটাই > থইয়া বন্ধে > আছে বন্ধে; দুয়ারে জাগাই>ভাবনা কিছু নাই।
৬১৩
কহ কহ প্ৰাণনাথ নিশির সংবাদ
কার কুঞ্জেতে বসিয়া বন্ধু কার পুরাইলায় সাধ।
সিন্দুরের বিন্দু দেখি লাগিতে কপালে
মুখকিনি হাসু হাসু চউখ ঝিম্ ঝিম্ করে।
কটিবাস পীতবাস রাখিয়াছ কোথায়
নবীন বেশ পরিধান করিলে কোথায়।
ভাইবে রাধারমণ বলে রাখিও রাঙ্গা পায়।
আমি মইলে বধের ভাগী তুমি নি আইবায়।
গো (১৯২), হা (২২)
পাঠান্তর : লাগিতে > লাগিয়াছে, মুখ কিনি হাসু হাসু > মুখে কেন দুইটি, পরিধান
করিলে কোথায় > পরিয়া তুমি আসিয়াছ যেথায়, অইবায় > হইবায়।
৬১৪
কি অপরূপ দেইখে আইলাম
জলের ঘাটে গিয়া।
কালায় রঙ্গে-রঙ্গে বাজায় বাঁশি—
কদম-তলে বইয়া।।
কালা না কালিন্দ্রির জল
চলো দেখি গিয়া।।
এগো, কালায় নিল জাতি-কুল-
প্ৰাণটি না যায় রাখা।
চন্দ্রাবলী দুচ্চারণী,
জানে বড় টুনা।
এগো, টুনা করি রাইখছে আমার
বন্ধু কালিয়া-সোনা।।
ভাইবে রাধারমণ বলে–
শুনো গো সজনী :
বন্ধে শঠের মতো কয়গো কথা
জনমের লাগিয়া।
শ্রী/৩২৬
৬১৫
কি করিতাম তোরে রে পুষ্প কি করিতাম তোরে
রাজনী প্ৰভাত হইল ভাসাইতাম সাগরে।।ধু।।
গোকুলে রহিয়াছে পুষ্প ফুটিয়া সারি সারি
চন্দ্রাবলীর কুজের মাঝে বিরাজে বংশীধারী।
কেওয়া কেতকী ফুটে আর গন্ধরাজ
চন্দ্রাবলীর কুঞ্জের মাঝে বিরাজ করে রসরাজ।
ভাইবে রাধারমণ বলে শুন গো ধনি রাই
চন্দ্রার কুঞ্জে বিরাজ করে শ্ৰীনদের কানাই।।
গো (১৩৭)
৬১৬
কোথায় রইলায় কালিয়া শ্যাম পরার বশে
যারে ভাবি রাত্ৰিদিনে সে থাকে তার রঙ্গরসে।
সম্মুখেতে প্ৰাণনাথে কতই ভালোবাসে
বন্ধু যার কাছে যায় তার কথা কয় রইলাম বন্ধু আশার আশে।
শাশুড়ী ননদী ঘরে যন্ত্রণা দেয় মোরে
আমি অবোধিনী বিরাহিণী প্রেম শিখাইলায় কোন সাহসে।।
ভাবিও রাধারমণ বলে না ভাবিও মনে
মনমোহিনী বইসা রইছে ঐ পিরিতে ঐ পিপাসে।।
সুখ/১৩
৬১৭
গলার হার খুলিয়া নেও গো ও ললিতে।
এগো হার পরিয়া কি ফল আছে বন্ধু নাই মোর কুঞ্জেতে।।
ললিতায় নেও গলার মালা বিশখায় নেও হাতের বালা
এগো খুলিয়া নেও কানের পাশা আর আশা নাই মোর বাঁচিতে।।
হারের কিবা শোভা আছে যার শোভা তার সঙ্গে গেছে
এখন কৃষ্ণনামের হার গড়িয়া পৈরাও আমার গলেতে।।
ভাইবে রাধারমণ বলে প্ৰেমানলে অঙ্গ জ্বলে
এগো কৃষ্ণনামের পুতদেহু ভাসাও নিয়া জলেতে।
আশা/১৫
৬১৮
গো বিনোদিনী রাই শ্যামবন্ধু কার বাসরে তুমি বল চাই।
আইবো করি কই আমারে রাখিলো লালসাই
সারা নিশি জাগিয়া থাকি উদ্দেশ্য না পাই।
আসিব ছিল না মনে কেন বলল রাই
যা-ও সখী রাখো গিয়া বাসর সাজাই।
সারা নিশি জাগিলাম বাসর সাজাই
অভাগা রাধারমণ না আইল কানাই।।
গো (১৮৫)
৬১৯
চল কুঞ্জে যাই গো ধনী চল কুঞ্জে যাই
কুঞ্জে গেলে প্ৰাণনাথের দেখা কিবা পাই
চল চলা এগো সখী ত্বরিত করিয়া
কুব্জা নারীর প্ৰেমে শ্যাম রইয়াছে ভুলিয়া
সারা নিশি পাত করলাম পন্থ পানে চাইয়া
এখনো না আইল বন্ধু নিঠুর কালিয়া
ভাইবে রাধারমণ বলে মনেতে ভাবিয়া
পরা কি আপনার হয় পিরিতের লাগিয়া।
আশা/১৪
৬২০
তোরে মানা করি রে বন্ধু নিষেধ করি রে
চন্দ্ৰাবলীর কুঞ্জে তুমি যাইও না
ঘুমাইয়া রইয়াছে আমার রাই কাঞ্চন সোনা।।ধু।।
বৃন্দাবনে সাধন তত্ত্ব পাইয়া বংশীধারী
তুমি কালা কোথায় রইলে পাইয়া কোন রমণী;
ভাবে বুঝি রে বন্ধু
ভাবে বুঝি কালাচান্দ উদয় হইল না।
রঙ্গভঙ্গ ত্রিভঙ্গ শ্যাম কখন রবে না।
চন্দ্ৰাবলীর কুঞ্জে রে বন্ধু তুমি যাইতায় পারবায় না
তুমি যদি যাও রে বন্ধু পন্থ ছাড়ি দিমুনা।
দীনহীন বাউলে কয় কথা মিছে নয়
চন্দ্রাবলীর কুঞ্জে তুমি গেছিলো নিচ্চয়
রাধারমণ বাউলে বলে আমার সবের আশা পূর্ণ হইল না।
গো (২৭৩)
৬২১
নিদয়া হবে বলি আগেতে না জানি বন্ধু শ্যাম গুণমণি।
আমি তোমার, তুমি আমার ভিন্ন নাই যে জানি।
ওরে, আমায় ছাড়িয়ে ভদ্রার কুঞ্জে পোহাইল রজনী।
আর তুমি হও রে কল্পতরু আমি হই রে লতা।
ওরে দুইচরণ বেড়িয়া রাখামু ছাইড়া যাইবা কোথা।
আর ভাবিয়া রাধারমণ বলে, শ্যামাগো রসবতী
ব্ৰজপুরের মাঝে তোমরা কয় ঘর আছে সতী?
শ্রী (৩৩৮)
৬২২
পোষাইল সুখের যামিনী বড় বাকি নাই।
বলিয়া দে গো চন্দ্রাবলী রাধার কুঞ্জে যাই।।
নিত্য নিত্য চুরি করি তোমার কুঞ্জে আই–
তোমার মতন রূপেগুণে আর কি মানুষ নাই।
চন্দ্ৰাবলী হস্তে ধরি বলিলা কানাই
চন্দ্রাবলী বিনে কৃষ্ণের আর তো লক্ষ্য নাই।
ভাইবে রাধারমণ বলে শুন গো ধনী রাই
মুরলি বাজাইয়া কুঞ্জে চলিলা কানাই।
শ্রীশ/১০
৬২৩
প্ৰাণ থাকিতে দেখি বন্ধু আসে কিনা আসে
আসাপথে চাইয়া থাকি মনের অভিলাষে।।
সখী গো দংশিয়া কালনাগে সেকি প্ৰাণে বাঁচে
সখী বিষে অঙ্গ জরজর বাঁচিব কেমনে।
থাকি গো সাজাইয়া ফুলের শয্যা বন্ধু আসবে বইলে
সোনা বন্ধু ভুইলা রইছেন চন্দ্রার কুঞ্জেতে।
আসত যদি প্ৰাণবন্ধু গো বসিতাম নিরলে
কহিতাম জন্মের দুঃখ ধরিয়া চরণে।।
সখী গো ভাইবে রাধারমণ বলে শুন গো সকলে
আইনে দেখাও প্ৰাণবন্ধুরে জীবন থাকিতে গো।
সুখ/১৩
৬২৪
প্ৰাণবন্ধু কই গো সখী নিষ্ঠুর কালিয়া
ধরা গো ধর গো তারে চোরা যায় পলাইয়া।।
মাইরো না গো ঐ চোরারে বাঁশি লিও কাড়িয়া
পাছের মধ্যে বকা কুরি সব সখী মিলিয়া।
বাইন্দা আন ঐ চেগারারে রাধার বসন দিয়া
ভাইবে রাধারমণ বলে মনেতে ভাবিয়া
তে রাধার প্ৰেমে বান্ধা চিকন কালিয়া
সুখ/২১
৬২৫
প্ৰাণবন্ধু কালিয়া আইল না শ্যাম কি দোষ পাইয়া
ও বড় লাজ পাইলাম কুঞ্জেতে আসিয়া।।ধু।।
প্ৰাণবন্ধু আসবে করি দোয়ারে না দিলাম।
দড়ি ওগো অইল না শ্যাম নিশি যায় পোহাইয়া।।
বুঝি কোন রমণীরে পাইয়া রাখিয়াছে শ্যাম ভুলইয়া
এগো রহিয়াছে শ্যাম আমারে ভুলিয়া।।
গাঁথিয়া বনফুলের মালা, মালায় হইল দ্বিগুণ জালা,
ও মালা দিতাম। গিয়া জলেতে ভাসাইয়া।।
মনে বড়ই আশা করি আইলা না শ্যাম বংশধারী
রাখিতাম চুয়া চন্দন কটরায় ভরিয়া।।
ভাবিয়া রাধারমণ বলে রাধার প্ৰেমানলে অঙ্গ জ্বলে
দুইটি নয়ন জলে বুক তো যায় ভাসিয়া।।
আহো/১৫, সুধী/১, হা (১২), গো (১৯৪), ঐ (২২০)
৬২৬
প্ৰাণবন্ধু কালিয়া আজ তোমারে দিব না ছাড়িয়া।
ওরে বন্ধু রাখমু তোমায় হৃদয়ে তুলিয়া।।
আমার আছে শতেক দাবী রাখব তোমায় গিরিধারী
শমন দিয়া দিব ধরাইয়া।।
টেকা পয়সা যত ছিল আফিসা সকলি নিল
হয়রে বন্ধু সাক্ষী দিমু এজলাসে উঠিয়া।।
আইনমতে আদালতে নালিশ করমু তিনধারায়।
হয়রে বন্ধু হাইকুট যাইমু শুধু দেহ লইয়া।।
ভাইবে রাধারমণ বলে প্ৰেমানলে অঙ্গ জ্বলে
হয়রে বন্ধু শাস্তি দিয়া একবার আনমু ফিরাইয়া।
সর্ব/১২
৬২৭
প্ৰেম জ্বালা সহে না পরানে গো সখী
শ্যাম রসিক নাগর বিনে।।ধু।।
সখী গো আমি যদি পাখি হইতাম
উড়ি গিয়া বন্ধু দেখতাম গো
আমার বন্ধু কার কুঞ্জে রহিল।
সখী গো বহু আশা ছিল মনে
মিলিতাম প্ৰাণবন্ধুর সনে গো
আমার মনের আশা মনেতে রহিল।
সখী গো ভাইবে রাধারমণ বলে
শুন সখী সকলে গো
আমার প্রাণবন্ধু আসিবা সকালে।
গো (২৬০)
৬২৮
বন্ধু বিনোদ রায় অভাগিনী ডাকি বন্ধু
আমায় দেখা দাও
চাতক রইল মেঘের আশে রে বন্ধু মেঘ না হইল তায়
মেঘ না হইলে চাতকিনীর কি হবে উপায়।
ডাকিতে ডাকিতে বন্ধু নিশি গইয়া যায়।
ভ্রমরায় ঝংকারে বন্ধুরে ডাকে কোকিলায়।
কার কুঞ্জে গিয়াছে বন্ধুরে ভুলিয়া আমায়
সরল প্ৰাণে গরল দিল নিঠুর কালায়।
ভাইবে রাধারমণ বলে রে বন্ধু হায় মারি হায়
আমারে অসুখী করে শ্যাম রইল কোথায়।
করুণা/১৪, য ১৪১
পাঠান্তর : ডাকি > দয়ার, (দ্বিতীয় চরণে যোগ হবে —তোমার আমার একদিন দেখা রে বন্ধু গিয়া যমুনায়/সেই অবধি মনপ্রাণ হরিয়া নিলায়; মেঘ…. তায় > মেঘ না পড়তায়, মেঘ না … উপায় মেঘ বিনে চাতকী রাই বাঁচে কি আশায়; ডাকিতে… কালায় > × × বন্ধু হায় কোথায় > রে বন্ধু পিরিতি বিষম দায় / অকুল সাগরের মাঝে ভাসাইলায় আমায়।
৬২৯
বাসর শয্যা কেনো সাজাইলাম গো আমার আদরের বন্ধু আসল না।।ধু।।
সখী গো — বড় আশা ছিলো মনে মিশিব প্রাণবন্ধুর সনে
আমার মনের দুক্ষ মনেতে রহিলো।।
সখী গো-আত্তর গোলাপী ভরি সাজাইলাম পানের বিড়ি
আমার কুঞ্জমোহন কার কুঞ্জে রহিলো।
সখী গো ভাইবে রাধারমণ বলে দগ্ধে রাই প্ৰেমানলে
আমার প্রাণবন্ধু আনিয়া দেখাও মোরে।
গো আ ১৭৫ (২৫৬)
৬৩০
বৃন্দে গো আয় গো বৃন্দে শ্যামকে দেখাও আনিয়া
মনপ্রাণ সদায় ঝুরে তাহার লাগিয়া।
সারারাত্রে থাকি আমি পন্থ পানে চাইয়া
কোন বিধাতা বন্ধু দাতা রাখিল বান্ধিয়া।
নারী জাতি অল্পমতি ভুলায় বাঁশি দিয়া
আসব বলে গেল বন্ধু না আইল ফিরিয়া।
ভাইবে রাধারমণ বলে মনেতে ভাবিয়া
সোহাগ মণি ভাবের বন্ধু শান্ত কর গিয়া।
হা/১৫, গো (২৯৩)
পাঠান্তর : গো : তাহার > বন্ধের; থাকিস্মামি > জাগি থাকি; গিয়া > আইয়া।
৬৩১
ললিতা বিশখা শ্যামকে আনিয়া দেখা
প্ৰাণ যায় বিচ্ছেদের জ্বালায়
আমার মরণকালে বন্ধু রহিল কোথায়।।ধু।।
হায় হায় প্ৰাণ যায় বিচ্ছেদের জ্বালায়
পন্থপানে চাইতে চাইতে আর নাহি সহা যায়।
বল সখী কি করি উপায় ফুলের শয্যা বাসি হইয়া যায়
আইল না কালুশী কুহু, রবে ডাক্ছে কোকিলায়।
কেওয়া কেতকী ফুল মালতী রঙ্গন বকুল
চুয়া চন্দন রইলো কটরায়।
ভাইবে রাধারমণ বলে শ্যাম রহিয়াছে চন্দ্রার কুঞ্জে
প্রেমের জেলখানায়।
গো (১৫০), শ্রীশ/২
পাঠান্তর? শ্ৰীশ /২
হায় হায় …. জ্বালায় > হায় হায় হায়, যার লাগি বনবাসী হই/ সে-বা কই আর আমি কাঁই/ বল সখী কি করি উপায়; আর নাহি সহা যায় >ধৈৰ্য না মানে চিতে; আইল না… কোকিলায় > বন্ধু আসবে বলে বইলা বইলাছে আমায়; কেওয়া কেতকী… চন্দ্রার কুঞ্জে -> ভাইবে রাধারমণ বলে চন্দ্রাবলি পাইয়া পন্থে বন্ধু রাইখছে।
৬৩২
শুন শুন সহচরী কার কুঞ্জে রইল গো হৃদয় বেহারী।
আমার হৃদয় কইছে খালি কোথায় রইল কালশশী।
ভাবে বুঝি চন্দ্রাবলী তোর হইয়াছে চতুরালী
যা গ’ তোরা কইরে ত্বরা আন গে শ্যাম মনোহরা
নইলে যে পরানে মারি সঙ্কট হইল ভারি।।
দীনহীন রমণ কয় শুন রাই দয়াময়
আইসবা তোমার রসময় থাকগো ধইজ্জ ধরি।।
শ্যা /৭
৬৩৩
শ্যাম নি আইছইন গো চন্দ্ৰা তোর কুঞ্জেতে
সত্য সত্য ক’লো চন্দ্ৰা দোহাই তোর পায়েতে।
আইছইন বন্ধু খেলছইন পাশা খাইছইন বাটার
পান পুষ্প দিয়া ভরি গেছেন বিছনা আধাকান।
অনামা চোরারে আমি ধরলাম আথের বান
ছুটিয়া গেছেগি চোরা দিয়া হেছকাটান।
ভাবিয়া রাধারমণ বলে শোন গো চন্দ্ৰাবান
তোর লাগি বন্ধু আলা আমার লাগি আন।
গো (২৫৩), হা (১০)
পাঠান্তর : হা
সত্য সত্য কলো > সত্য কথা কওগো, তোর পায়েতে > দেই তোমারে; ধরলাম… এছকা টান > ধরিয়াছিলাম হস্তে দিয়া ঝাড়া উঠিয়া খাড়া ফালাই গেল মোরে; চন্দ্ৰাবান… আন > চন্দ্রাবলী। তোমার বাঁশিতে চান্দের দশা, আমার বাঁশিতে ফণী।
৬৩৪
সজনী ও সজনী আইল না শ্যাম গুণমণি।।ধু।।
বুঝি পেয়ে তা রেখেছে কোন রমণী।। চি৷।
আসবে বলে রসরাজ নিকুঞ্জ করেছি সাজ
বড়লাজ পাইলাম গো রমণী।।১।।
শয্যায় হইল নিশিভোর ভ্ৰমরায় করে আকুল
কৰ্ণে শুনি কুকিলার কুহুধ্বনি।।২।।
শুন তোরা সখী গণ জ্বালাও গো হুতাশন
অনলে ত্যেজিব পরাণি।।।৩।।
ভাইবে রাধারমণ বলে শ্যাম বিচ্ছেদে রাই মরিলে
লোকে বলব পুরুষ পাগল রমণী।।৪।।
রা/১৪৯
৬৩৫
সোনাবন্ধে নাকি গো আমায় পাসরিল বল না বল না।।ধু।।
কি করি কি করি সই গো সংবাদের মানুষ পাইলাম না।।চি।।
চাইয়া থাকি আশাপন্থে আমি পাইলাম না বন্ধুর বাতাস অন্তে
অকূলে ভাসাইয়া বন্ধে এখন আমায় ফিরে চায় না।।১।।
কোন রমণী পাইয়া মত্ত বন্ধে না করে আমার তত্ত্ব
দারুণ বিধিরে কি দুষ দিব। আমার কর্মদুষে সুখ হইল না।২।
ভাইবে রাধারমণ বলে আমার জনম গেল দেশ বিদেশ ঘুরে
কাচা পিতল দেখতে সুন্দর পুরা দিলে রং ধরে না।।৩।।
রা/১১৭