3 of 4

৪.০৫ সুলতান মহম্মদের ন্যায় বিচার

সাতশো অষ্টাশিতম রজনী :

শাহরাজাদ নতুন কাহিনী শুরু করে–

মিশরের সুলতান খলিফা মহম্মদ ইবন থাইলুন জ্ঞানে গরিমায় মহত্ত্বে যেন সেরা ছিলেন তেমনি ছিলেন তিনি একজন যোগ্য সুশাসক। কিন্তু তার পরলোকগত পিতা ছিলো তার ঠিক উল্টো। শিক্ষা-দীক্ষার সে ধার ধারতো না, প্রজাদের ওপর নিপীড়ন করে প্রদেয় রাজস্বের তিন চার গুণ আদায় করাই ছিলো তার একমাত্র কাজ। দীন হতে দীনতম কোনও মানুষও তার ক্ষুদ্রতম

সঞ্চয় আগলে রাখতে পারতো না সুলতানের কোপদৃষ্টি থেকে।

কিন্তু মহম্মদের প্রকৃতি ছিলো সম্পূর্ণ ভিন্ন। প্রজাদের দুঃখে তার হৃদয় আকুল হয়ে উঠতো। তিনি ছদ্মবেশে প্রজাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে তাদের অবস্থার হালচাল জেনে নিয়ে তার প্রতিবিধান করার চেষ্টা করতেন।

সুলতান মহম্মদের শুধু মনে প্রশ্ন জাগতো তার সলতানিয়তে প্রজাদের মধ্যে এতো আর্থিক বৈষম্য কেন? কেন একদল লোক বিলাস ব্যসনে অলস জীবন যাপন করবে? আর কেনই বা বাকী সব মানুষ সারাদিন হাড়ভাঙা খাটুনি খেটে ক্ষুধার অন্ন সংস্থান করবে?

একদিন তিনি তার দরবারের তাবৎ গণ্যমান্য আমলা ও পাত্র-মিত্র পারিষদদের হাজির হতে বললেন তাঁর সামনে।

সকলে এসে সমবেত হলো। সারা দরবার-কক্ষ সেদিন পরিপূর্ণ। সুলতান সকলকে আহ্বান করেছেন। সুতরাং একজনও গরহাজির থাকেনি সেদিন।

সুলতান মহম্মদ বললেন, আপনাদের মধ্যে আমার উচ্চতম পদের উজিররাও যেমন আছেন তেমনি আছে আমার প্রাসাদের দ্বাররক্ষীরাও। আজ আমি একটা ব্যাপারে নিশ্চিত হতে চাই। আমার কর্মচারীরা যে যে-রকম মাইনে পায় তাতে তাদের প্রত্যেকের কীভাবে সংসার-যাত্র নির্বাহ হতে পারে তা আমি দেখতে চাই। যদি দেখি, কেউ তার প্রয়োজনের তুলনায় বেশি অর্থ গ্রহণ করে তবে আমি তা কমিয়ে দেব নির্ঘাৎ। কিন্তু যদি দেখি, যারা কম মাইনে পেয়ে অতি কষ্টে সংসার চালায় তাদের আমি মাইনের অঙ্ক বাড়িয়ে দিতেও দ্বিধা করবো না।

সুলতানের নির্দেশ মতো প্রথমে এসে দাঁড়ালো তার চল্লিশ জন উজির। সকলেরই সাজ-পোশাক বাদশাহী। নানারকম স্বর্ণালঙ্কর-খচিত পোশাক আশাক-এ ঝকমক করছে তারা। এর পরের সারিতে এসে দাঁড়ায় বিভিন্ন প্রদেশের সুবাদাররা। তাদেরও জাঁকজমক দেখার মতো। এরপর সেনাবাহিনীর প্রধানরা এলো। তারপর এলো কাজীরা।

সকলেই এক এক করে হাঁটুগেড়ে বসে কুর্ণিশ জানায় সুলতানকে। সুলতান সকলেরই সশ্রদ্ধ অভিবাদন গ্রহণ করেন। কাউকে হয়তো কোনও প্রশ্ন করেন, আবার কাউকে কিছুই বলেন না।

এইভাবে সুলতানের সব দপ্তরে সমস্ত কর্মচারীদের সালাম কুর্ণিশ জানানো হয়ে গেলে, সব শেষে সুলতানের হারেমের দুই বল্লমধারী খোজা নফর এসে দাঁড়ালো। যদিও ওরা দু’জনেই অলস এবং দেখতে বেশ নাদুস-নুদুস, তবু চোখে মুখে যেন কি এক বেদনার ছাপ ফুটে উঠেছিলো দু’জনেরই। স্বয়ং সুলতান ডেকেছেন, সকলেই কেমন সেজেগুজে ফিটফাট হয়ে হাজিরা দিয়েছে কিন্তু ওদের সাজ-পোশাক দেখলে মনে হয় কতকাল ধরে যেন মেঝেয় গড়াগড়ি খেয়েছে! ওরা দু’জনেই একসঙ্গে সুলতান মহম্মদের সামনে দাঁড়িয়ে আভূমি আনত হয়ে ক্ষুব্ধ ধরা গলায় বলতে থাকলো, আপনি দীনদুনিয়ার মালিক জাঁহাপনা, আপনার দয়াতেই বান্দারা কোনও রকমে বেঁচে আছে। কিন্তু আপনার পিতার আমলে আমরা কি সুখেই না ছিলাম। তিনি গত হওয়ার পর থেকে আমাদের কপাল পুড়তে আরম্ভ করেছে। এখন আমাদের এমন হাল হয়েছে, যা মাহিনা পাই তা দিয়ে দু’বেলার উদরপূর্তি হয় না। পরনের বেশবাসের দশা দেখছেন, জাঁহাপনা। এমন সঙ্গতি নাই একখণ্ড চাদর,কিনে গায়ে দিই। সারাটা শীতকাল ঠাণ্ডায় জমে বরফ হয়ে যাই। কিন্তু কি করবো, কাকেই বা জানাবো আমাদের এ দুঃখের করুণ কথা। কেই বা শুনতে চাইবে। তবে আমাদের ভয় হয় কি জানেন, জাঁহাপনা, এইভাবে অনাহারে কাটাতে কাটাতে হয়তো বা কোনদিন এই রোগা টিঙটিঙ শরীরটা ধুপ করে পড়ে শেষ হয়ে যাবে। যাই হোক খোদাতালা আমাদের সুলতানের সুখ-সমৃদ্ধি এবং দীর্ঘ জীবন দান করুন, এই প্রার্থনা করি।

কিছুক্ষণ চিন্তা করার পর সুলতান মহম্মদ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেন। এই দুই দ্বাররক্ষী সত্যিই ভীষণ দুস্থ। এমন কোনও ইনাম পায় না যা দিয়ে ওরা একটু ভালোভাবে জীবন-যাপন করতে পারে। প্রাসাদের ভিতরে ওদের কাজ, সুতরাং বাইরের লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ নাই এবং সেই কারণেই অন্যের কাছ থেকে বখশিশাদি পাওয়ায় বিশেষ কোনও সুযোগ পায় না এরা।

মহম্মদ আশ্বাস দিলেন, আমি তোমাদের দুঃখ-দুর্দশার কথা অবগত হলাম। আমার হুকুমতে এই বৈষম্য আমাকে সত্যিই ব্যথা দিয়েছে। যাই হোক, এর পর থেকে তোমরা যাতে একটু ভালোভাবে কাটাতে পার, সেজন্য প্রতি বছরে দু’শো দিনার করে ইনাম পাবে।

সুলতানের এই ন্যায় বিচারে গদগদ হয়ে দ্বাররক্ষীদ্বয় বার বার তিনবার সালাম কুর্ণিশ জানিয়ে সভাকক্ষ ছেড়ে বেরিয়ে গেলো। সভায় সমাগত কর্মচারীবৃন্দ সুলতানের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে উঠলো।

দরবারের সমাপ্তি ঘোষণা করার পর সবাই যখন সভাকক্ষ ছেড়ে গমনোদ্যোগ করছে এমন সময় এক অশীতিপর বৃদ্ধকে দেখতে পেলেন সুলতান। লোকটি, যে কারণেই হোক, এতক্ষণ তার দৃষ্টিগোচরে আসেনি। সুলতান তার সন্নিকটে আসতে ইশারা করলেন।

বৃদ্ধ গুটি গুটি সুলতানের দিকে এগিয়ে এসে যুক্ত করে নিবেদন করে, আপনি আমাদের ভাগ্যবিধাতা, মহামান্য শাহেনশাহ। এই বৃদ্ধ বান্দা আপনার বিশেষ কোনও দপ্তরে নিযুক্ত নাই। সেই কারণে হুকুমৎ বিধি অনুসারে আমার নির্দিষ্ট কোনও পদও নাই। তবে আপনার অবগতির জন্য জানাই, মহামান্য সুলতানের মৃত পিতার আমি এক নগণ্য অনুরক্ত নফর ছিলাম। তিনি তার একান্ত ব্যক্তিগত একটি ছোটো কৌটো আমার হেপাজতে রাখতেন। শাহেনশাহ জীবিত থাকতে তার প্রয়োজন মতো কৌটোটা আমি তাকে বের করে দিতাম। প্রয়োজন শেষ হয়ে গেলে আবার তিনি সেটা আমার হাতেই ফিরিয়ে দিতেন। এইভাবে বহুকাল কেটে গেলো, আমি তার সঙ্গে সঙ্গে ছায়ার মতো থাকি ঐ কৌটোটা নিয়ে। হঠাৎ তিনি একদিন ইন্তেকাল করলেন। এখন আমি সমস্যায় পড়লাম সেই কৌটোটা নিয়ে। নিতান্তই তার ব্যক্তিগত ব্যবহারের বস্তু। অন্য কারো হাতে তুলে দেবার নির্দেশও দেননি তিনি। সুতরাং আজও সেটা আমি যখের ধনের মতো আগলে রয়েছি। আমি জানি না তার মধ্যে কী জিনিস আছে।

আজ আপনাদের গোলামী করতে করতে আশীটা বছর কেটে গেছে। মুখ ফুটে কোনও দিন কোনও কথা বলতে হয়নি। কারণ মহামান্য শাহেনশাহর পিতা জীবিত থাকতে আমার কোনও অভাবই তিনি রাখতেন না। না চাইতেই দু’হাত ভরে পেতাম। কিন্তু তিনি গত হওয়ার পর আমাকে বড় একটা কেউ নজর দেয় না। মাস গেলে দশটি স্বর্ণমুদ্রা বরাদ্দ আছে তাই নিয়ে ঘরে যাই। সংসারে অনেক খানেওয়ালা বাল-বাচ্চা, এই সামান্য বেতনে আমি আর দিন গুজরান করতে পারছি না, জাঁহাপনা। ভেবেছিলাম, যত অভাবই থাক, যত কষ্টই হোক, নিজের দুঃখের কাহিনী নিজ মুখে আর শোনাবো না কাউকে। খোদা ওপরে আছেন, আর মর্তে আল্লাহর প্রতিভূ আপনি আছেন, কোনও না কোনও দিন আপনারা আমার দিকে মুখ তুলে চাইবেন। বহুদিন প্রতীক্ষা করার পর আজ আপনার সামনে এসে দাঁড়াবার সুযোগ মিলেছিলো। মনে বড়

 

আশা করে এসেছিলাম, জাঁহাপনা, এই অধমের দিকে একবার নজর পড়লে শাহেনশাকে আর মুখ ফুটে কিছু বলতে হবে না।

সুলতান মহম্মদ অবাক হয়ে বললেন, কিন্তু এই সামান্য একটা কাজের জন্য হুকুমতের এতোটা ব্যয়-বরাদ্দ কে করেছে। এ তো চলতে পারে না। কী এমন সে কৌটো? তার রক্ষার জন্য এতো টাকা খরচ করতে হচ্ছে? কী আছে তার মধ্যে?

বৃদ্ধ বললো, খোদা কসম, আমি বলতে পারবো না। গত চল্লিশ বছর ধরে বাদশাহর হুকুম মতো আমি সেটা আগলে ধরে রেখেছি।

মহম্মদ বললেন, এক্ষুণি নিয়ে এসো, আমি দেখবো।

বৃদ্ধ দরবার ছেড়ে বেরিয়ে যায়। এবং একটু পরেই একটি ছোট্ট সোনার কৌটো নিয়ে ফিরে আসে। সুলতান ইশারা করতে ঢাকনাটা সে খুলে ধরে।

সুলতান দেখলেন, কৌটোর ভিতরে ছোট্ট এক ডেলা রাঙামাটি আর একটুকরা পাতলা ছাগচর্ম রক্ষিত আছে।

চামড়ার টুকরোটায় বেশ পরিষ্কার বড় বড় হরফে কী যেন লেখা আছে। সুলতান হাতে নিয়ে পড়ার চেষ্টা করলেন। কিন্তু বহু ভাষায় পণ্ডিত হওয়া সত্ত্বেও তার এক বর্ণ উদ্ধার করতে পারলেন না তিনি। উজির আমির পাত্র-মিত্র সভাকবি কেউই তার পাঠোদ্ধার করতে পারলো না।

সুলতান বললেন, মিশর এবং সিরিয়ার, পারস্য এবং ভারতের জ্ঞানীগুণীদের ডাকো। হয়তো তাদের কেউ পড়ে দিতে পারবেন।

সুলতানের আমন্ত্রণে অনেক পণ্ডিতরাই এলো কিন্তু কেউই পাঠোদ্ধার করতে পারলো না। সুলতান দেশে-বিদেশে প্রচার করে দিলেন, যদি কেউ এই চর্মপত্র পাঠ করে দিতে পারে তবে তাকে অঢেল ইনাম দেওয়া হবে। অথবা কেউ যদি তেমন কোনও ব্যক্তির সন্ধান দিতে পারে তাকেও প্রচুর পুরস্কার দেওয়া হবে।

এই ঘোষণার দিন কয়েক পরে একদিন এক সাদাপাগড়ী পরে এক বৃদ্ধ এসে হাজির হলো সুলতানের সামনে। যথাবিহিত কুর্ণিশ জানিয়ে সে বললো, আল্লাহ আমাদের পালনকর্তাকে দীর্ঘায়ু করনু, আমি আপনার পিতা শাহনেশাহ থাইলুনের এক অধম বান্দা। তাঁর জীবিত কাল পর্যন্ত আমি তার সেবা করে গেছি। আমিই জানি ঐ কৌটোয় রক্ষিত চর্মপত্রটির ইতিহাস। ঐ চর্মপত্র একমাত্র একজনই পাঠ করতে পারেন। তিনি তার মালিক। অল আসারের পুত্র শেখ হাসান আবদাল্লাহ তার নাম। আজ থেকে চল্লিশ বছর আগে আপনার পিতা তাকে অন্ধকার কারাগারে নিক্ষেপ করেছিলেন। জানি না, আজও সে জীবিত আছে কিনা?

সুলতান মহম্মদ প্রশ্ন করলেন, কেন তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছিলো?

বৃদ্ধ বললো, কারণ আপনার পিতা অনেক জোর-জুলুম অত্যাচার করেও তাকে দিয়ে ঐ পত্রের পাঠ উদ্ধার করাতে পারেনি। লোকটির কাছ থেকে ঐ পত্রখানা তিনি জোর করে কেড়ে নিয়েছিলেন।

সুলতান তখুনি প্রহরী-সর্দারকে হুকুম করলেন, যাও সব কয়েদখানা তন্ন তন্ন করে খুঁজে-পেতে দেখ, শেখ হাসান আবদাল্লাহ নামে কেউ কোথাও আছে কিনা, পেলে সঙ্গে করে নিয়ে এসো আমার কাছে।

খোদাই বাঁচিয়ে রেখেছিলেন। প্রহরী-সর্দার শেখ হাসান আবদাল্লাকে কয়েদখানার বাইরে এনে হামামে নিয়ে গিয়ে গোসলাদি করিয়ে নতুন সাজ-পোশাকে সাজিয়ে সুলতান সমীপে হাজির করলো।

সুলতান দেখলেন, এক অশীতিপর লোলচর্ম বৃদ্ধ। তার চোখেমুখে বহু লাঞ্ছনা, অত্যাচারের ছাপ। সুলতান সশ্রদ্ধভাবে উঠে দাঁড়িয়ে স্বাগত জানালেন তাকে। তখতে তারই পাশে সসম্মানে বসালেন। তারপর বললেন, শেখ সাহেব, আমার বাবা যে ভুল, যে অন্যায় করে গেছেন, তার জন্য আমি মর্মাহত। এমন কোনও বস্তু আমি জোর করে আঁকড়ে ধরে রাখতে চাই

যা আমার সম্পত্তি নয়। তা সে যদি তামাম দুনিয়ার সমগ্র ধনভাণ্ডারের চাবিও হয়, তবুও। হাসান আবদাল্লার দু’গাল বেয়ে অশ্রুধারা নেমে আসে। দু’হাত ওপরে তুলে আকুল হয়ে বলতে থাকে, খোদা, তুমি আছ, তুমিই একমাত্র সত্য এই দুনিয়ায়, তা না হলে শত্রুর অন্ধকার কারাগারে তিলে তিলে পচে শেষ হচ্ছিলাম। প্রতি মুহূর্তেই ভাবতাম তোমার কথা। ইন্তেকাল সব দুঃখ বেদনার অবসান ঘটাতে পারে, আমি তোমার কাছে দিবস রজনী সেই প্রার্থনাই জানিয়েছিলাম এতকাল। কিন্তু তখন কী জানতাম আমার শত্রুর পুত্রই আমাকে মুক্ত করে আবার সূর্যের আলো দেখাবে একদিন। এখন ভাবছি সবই তোমার অপার লীলা।

তারপর সুলতানের দিকে চোখ ফিরিয়ে সে বললো, জাঁহাপনা, একদিন যার জন্য অনেক রক্তপাত ঘটে গেছে, অসহ্য অত্যাচার সয়েছি এবং নিশ্চিত মৃত্যু জেনেও আমার মুখ থেকে একটি শব্দ বের করতে পারেনি, আজ তা আমি স্বেচ্ছায় আনন্দচিত্তে আপনার হাতে তুলে দিচ্ছি। যে সহৃদয়তার পরিচয় আপনি দিয়েছেন আমার কাছে তার মূল্য অসীম। আপনার পিতা সেদিন আমাকে মেরেধরে ভয় দেখিয়ে কবুল করাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আমি অন্যায় এবং অত্যাচারের কাছে মাথা নোয়াতে শিখিনি। এবং সেই কারণেই জীবনকেও পণ করতে হয়েছিলো। কিন্তু আপনার প্রেম প্রীতি ও সহৃদয়তা আমাকে অভিভূত করেছে। আমার বিশ্বাস প্রেম দিয়ে দুঃসাধ্য সাধন করা যায়। আজ আপনাকে আমি খুশি মনে ঐ চর্মপত্র পাঠ করে দিচ্ছি। এই একটি মাত্র দলিল সঙ্গে করে আমি একদিন মানুষের অগম্য সাদ্দাত ইবন আদাতের শহর ছেড়ে চলে আসতে পেরেছিলাম। আজ পর্যন্ত সে শহরে কোনও জনমানব যেতে পারেনি।

সুলতান বৃদ্ধের হাতে চুম্বন এঁকে দিয়ে বললেন, আপনি আমার পিতৃসম, যদি কিছু মনে না করেন এই চর্মপত্রের পাণ্ডুলিপি এবং ঐ আজব শহর সম্বন্ধে যা জানেন বলুন, আমার খুব শুনতে ইচ্ছে হচ্ছে।

বৃদ্ধ বললো, সে এক বিরাট কাহিনী, মালিক। যাই হোক বলছি শুনুন :

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *