কলহান্তরিতা
কলহান্তরিতা ।। ধানশী ।।
আসিয়া নাগর, সমুখে দাঁড়াইল,
গলে পীতবাস লৈয়া।
সোচান্দ বদনে, ফিরি না চাহলি,
তো বড়ি নিঠুর মায়্যা।।
সো শ্যাম নাগর, জগত দুর্ল্লভ,
কিসের অভাব তার।
তোমাহেন কত, কুলবতী সতী,
দাসী হইয়াছে যা’র।
তার চূড়া মেনে, সুখেতে থাকুক,
তাহে ময়ুরের পাখা।
তোমা হেন কত, কুলবতী সতী,
দুয়ারে পাইবে দেখা।।
অভিমানী হৈয়া, মোরে না কহিয়া,
তেজলি আপন সুখে।
আপনার শেল, যতনে আপনি,
হানিলি আপন বুকে।।
মনের আগুণে, মরহ পুড়িয়া,
নিভাইবা আর কিসে?
শ্যাম জলধর, আর না মিলিবে,
কহে দ্বিজ চণ্ডীদাসে।।
——————-
তো বড়ি নিঠুর মায়্যা – তুই বড়ই নিঠুর মেয়ে। তেজলি – ত্যাগ করিলি।
কলহান্তরিতা :—
“মান অন্তে প্রিয়ের বিচ্ছেদে যে সূচন।
অনুতাপে সেই কলহান্তরিতার লক্ষণ।।”
—ভক্তমাল
কলহান্তরিতা ।। বিভাস ।।
উহাঁর নাম করো না নামে মোর নাহি কাজ।
উনি করেছেন ধর্ম্ম নষ্ট ভুবন ভরি লাজ।।
উনি নাটের গুরু সই উনি নাটের গুরু।
উনি করেছেন কুলের বাহির নাচাইয়া ভুরু।।
এনে চন্দ্র হাতে দিল যখন ছিল উহাঁর কাজ।
এখন উহাঁর অনেক হলো আমরা পেলাম লাজ।।
কহে বড়ু চণ্ডীদাস বাশুলী আদেশে।
উহাঁর সনে লেহ করে তনু হইল শেষে।।*
——————-
লেহ – পিরীত।
* হস্তলিখিত প্রাচীন গ্রন্থ।