সপ্তম অধ্যায় – সম্পদের ভবিষ্যৎ (বিজয়ী ও বিজেতা)

সপ্তম অধ্যায় – সম্পদের ভবিষ্যৎ (বিজয়ী ও বিজেতা)

পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, কোনো বড় সাম্রাজ্যের উত্থান পতন নির্ভর করতে তার সৈনাবাহিনীর শক্তি ও বুদ্ধিমত্তার ওপর! রোমান সাম্রাজ্যের বড় বড় জেনারেলরা মঙ্গল ও মন্দিরের পূজারী ছিলো, যুদ্ধ দেবতার পূজা করত কোন সেনা অভিযান শুরু করার ক্ষেত্রে। থোর আবিষ্কারের ও জয়ের কিংবদন্তি ভাইকিংসকে বীরত্বপূর্ণ লড়াইয়ে উৎসাহিত করতে। প্রাচীন লোকজন বিশাল বিশাল মন্দির এবং স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করত তাদের দেবতা ও যুদ্ধের বিজয়কে উৎসর্গ করে। কিন্তু আমরা যখন প্রকৃতপক্ষে কোনো সভ্যতায় উত্থান বা পতনকে বিশ্লেষণ করি, তখন আমরা আলাদা বিষয় খুঁজে পাই।

যদি তুমি একজন এলিয়েন হয়ে থাকো যে মঙ্গল থেকে পৃথিবীতে এসেছ ১৫০০ শতকে তাহলে দেখবে কোন সভ্যতাটি সত্যিকারার্থে পৃথিবীকে সমস্ত সভ্যতার চেয়ে বেশি নিয়ন্ত্রণ করেছে যা উত্তর খুবই সহজ ইউরোপীয়রা, বাকি মোটামুটি সবগুলোর থেকে।

প্রাচ্যে আমরা চীন সভ্যতাকে দেখি যেটি হাজার বছর টিকেছিল। চীনাদের দ্বারা অনেক কিছু আবিষ্কার হয়েছে যা অপ্রতিদ্বন্দি যেমন- কাগজ, প্রিটিং প্রেস, গান পাউডার, কম্পাস ইত্যাদি। এটির বিজ্ঞানীরা ছিল পৃথিবীর সেরা বিজ্ঞানী। এটির সরকার ঐক্যবদ্ধ এবং শান্তিতে বিশ্বাসী ছিল।

দক্ষিণে, আমরা অটোম্যান সাম্রাজ্যের দেখা পাই যেটি ইউরোপের ওপর ছড়িয়ে পড়েছিল এই মহান মুসলাম সভ্যতাটি আবিষ্কার করেছিল- আজকের গণিত। আলোক বিজ্ঞান এবং পদার্থ বিজ্ঞানের প্রভূত অবদান রেখেছে, গ্রহ সমূহেরও নামকরণ করেছে। শিল্প সাহিত্য ও বিজ্ঞান বেশ সমৃদ্ধ হয়েছিল তখন। এদের সেনাবাহিনীর কোন শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল না। ইস্তাবুল ছিল বিজ্ঞানের অন্যতম শিক্ষা কেন্দ্র তারপরে যে চিত্রটি দেখা যায় ইউরোপের দুর্দশাগ্রস্থ দেশগুলো যারা ধর্মীয় মৌলবাদে বিভক্ত হয়ে পড়েছিল, জাদু চর্চা এবং লুটপাটে ব্যস্ত ছিল। পশ্চিম ইউরোপ, যেখানে রোমান সভ্যতার পতনের পর হাজার বছর ধরে অবনমিত হয়েছে। এটি এতো নিম্নমুখী হয়েছিল যে তাদের প্রযুক্তিগত সহায়তা আমদানি করতে হতো। এটি একটি মধ্যযুগীয় কৃষ্ণগহ্বর। রোমান সমাজের সকল জ্ঞান-বিজ্ঞান হারিয়ে যায় ধর্মীয় ভ্রান্ত মতাদর্শ দ্বারা। বিরোধী মত বা বিদ্রোহীদের প্রায়শ নির্যাতন, নিপীড়ন করা হতো। ইউরোপের শহর রাষ্ট্রগুলো একে অপরের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত ছিল।

সুতরাং, কী ঘটেছিল?

চীনা ও অটোমান সাম্রাজ্য প্রায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে ৫০০ বছর এগিয়ে গিয়েছিল সেখানে ইউরোপ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত বিষয়ে তখন চিন্তা শুরু করে।

১৪০৫ সালের দিকে, চীনের সম্রাট ইরোঙ্গেল বিশ্ব ভ্রমান্ড খুঁজে দেখতে বিশাল নৌ-জাহাজের আদেশ দেন যা বিশ্ব কোনো দিন দেখেনি। (কলম্বাসের নৌজাহাজটি ছিল তিনটি কুঠুরিযুক্ত একটি বড় ডেকের একটি জাহাজ।

সাতটি বিশাল অভিযান চালানো হয়েছিল যার প্রতিটি তার পূর্বের অভিযানের চেয়ে বড় ছিল। এই বহরটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া সমুদ্র উপকূলে ধরে আফ্রিকা মাদাগাস্কার এবং এথেন্স ছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছে ছিল। এ বহরটি প্রচুর পণ্যদ্রব্য, সুস্বাদু খাবার এবং বিদেশি প্রাণী পৃথিবীর বিভিন্ন পূরবর্তী এসব অঞ্চল থেকে সংগ্রহ করেছিল। উল্লেখযোগ্য একটি হলো আফ্রিকার রাজবংশের চিড়িয়াখানায় প্রাচীন জিরাফগুলো।

তবে চীনের শাসকেরাও হতাশ হয়েছিল। তাদের সেখানে কি সবকিছু আছে কিনা তা ভেবে? কোন সেনাবাহিনী আছে কি যারা চীনের বিরুদ্ধে লড়তে পারে? পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে আরও বিভিন্ন বৈদেশিক খাবার ও প্রচুর প্রাণী আছে কিনা যা তারা সংগ্রহ করতে পারে? আগ্রহ হারিয়ে ফেলে তাদের পরবর্তী শাসকেরা নৌবাহিনী ধ্বংস করে এবং এমনকি জ্বালিয়ে দেয়। চীন নিজেরাই বাইরের বিশ্ব থেকে নিজেদের একঘরে করে ফেলে, চুপচাপ পৃথিবী যেমন এগিয়ে চলে।

অনুরূপ ভাবনা অটোমান সাম্রাজ্যেরও পতন ঘটায়। তারা মনে করত পৃথিবীর বেশিরভাগ জায়গা তাদের বিজয় করা হয়ে গেছে। অটোমান সভ্যতা অন্তর্মুখী হয়ে যায়। ধর্মীয় মৌলবাদ এবং বিভক্তি সভ্যতার রূপ নেয়। মাহাথির মোহাম্মদ যিনি মালেয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ইসলামিক সভ্যতার পতনের কারণ মুসলাম পন্ডিতদের জ্ঞান অর্জন কমে যাওয়া এবং কেবলমাত্র কোরআন দ্বারা প্রাপ্ত ধর্মীয় জ্ঞানকে প্রধান্য দেওয়া এবং অন্যসব ধরনের জ্ঞান অর্জন প্রক্রিয়াকে অনৈসালামিক ভাবা। যার ফলে, মুসলমানেরা বিজ্ঞান, গণিত, চিকিৎসা এবং অন্যান্য সাধারণ জাগতিক বিষয়সমূহ পড়া বাদ দেয়। তারা ইসলামিক শিক্ষা ও ব্যাখ্যা নিয়ে বিতর্ক করার পরিবর্তে ইসলামিক অনুশাসন ও কঠোরতা নিয়ে বিতর্ক করত যা ঐক্যবদ্ধ মুসলিম উম্মাহকে ভেঙে দিয়ে অসংখ্য গোষ্ঠী, উপগোষ্ঠী এবং অনৈক্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি করে।”

উল্টো ইউরোপে তখন বিশাল সচেতনতা সৃষ্টি হয়। বাণিজ্য চিন্তা নতুন বিপ্লবী ধারণা নিয়ে আসে যা গুটেনবার্গস প্রিন্টিং প্রেসের মাধ্যমে ত্বরান্বিত। চার্চগুলোর শক্তি দুর্বল হতে শুরু করে যা হাজার বছর ধরে আধিপত্য বিস্তার করেছিল। ধীরে ধীরে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বাইবেলের অস্পষ্ট বিষয়গুলো নিউটনের পদার্থবিজ্ঞান, ডাল্টনের রসায়ন এবং অন্যান্যদের তত্ত্বের আলোকে ব্যাখ্যা শুরু করে। ইয়েলের ইতিহাসবিদ পল কেনেডি আরও একটি বিষয় উল্লেখ করেছেন- আবহাওয়া বিজ্ঞান ইউরোপের উত্থান : ইউরোপের সমশক্তির রাষ্ট্রগুলো তখন যুদ্ধে লিপ্ত যখন কেউই পারেনি কোনো মহাদেশ নিয়ন্ত্রণ করতে, এক রাষ্ট্র আরেক রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ব্যস্ত ছিল, তখন ইউরোপ বিজ্ঞান ও প্রকৌশলে অর্থায়ন শুরু করে বিশাল আঞ্চলিক উচ্চাভিলাষ নিয়ে। বিজ্ঞান কেবল অ্যাকাডেমিক বিষয় নয়, বরং নতুন অস্ত্রশস্ত্র এবং নতুন সম্পদ তৈরির রাস্তাও বটে।

দ্রুতই ইউরোপে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়ন চীন এবং অটোম্যান সভ্যতাকে ধ্বংস করে। মুসলীম সভ্যতা, যা প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মধ্যে বাণিজ্যের সমৃদ্ধ প্রবেশ পথ ছিল— ইউরোপের নাবিকেরা নতুন বিশ্ব খুঁজতে থাকে বিশেষত আফ্রিকা অঞ্চলে, মধ্যপ্রাচ্যকে এড়িয়ে গিয়ে। এবং চীন দেখতে পায় ইউরোপ তাদের ঘিরে ফেলে তাদের চাইনিজ উদ্ভাবন গান পাউডার এবং কম্পাস দিয়ে ইউরোপীয় গানবোট দ্বারা।

(কী ঘটেছিল, এই প্রশ্নের উত্তর খুবই সহজ। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়ন ঘটেছিল। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিই হলো উন্নতির ইঞ্জিন অবশ্য, একজন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে উপেক্ষা করতে পারে যদি সে নিজের ক্ষতি চায়। তুমি কোন ধর্মীয় গ্রন্থ পাঠ করে পৃথিীর এগিয়ে যাওয়া থামাতে পারবে? না-এটিকে স্থির রাখতে পারবে না। যদি তুমি সর্বক্ষেত্রে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে আয়ত্ত না করো তবুও তোমার প্রতিযোগিতা ঠিকই করবে।

চারটি বল আয়ত্ত্বে নেয়া

তবে ঠিক কী করে অন্ধকার ঘোড়ার পিঠ থেকে নেমে ইউরোপীয় সভ্যতা চীন ও অটোম্যানদের ছাড়িয়ে গিয়েছিল? এখানে সামাজিক ও প্রযুক্তিগত দুটো দিকই উল্লেখযোগ্য কারণ।

১৫০০ বছর পরে, যখন কেউ বিশ্ব ইতিহাস পর্যালোচনা করে, দেখতে পারবে ইউরোপ তার অগ্রগতি অর্জনের জন্য অধীর আগ্রহে ছিল, গোত্রসংঘাত কমিয়ে এনে, ব্যবসায়ী শ্রেণি সৃষ্টি করে, এবং পুনর্জাগরণের স্পন্দিত বাতাস কাজে লাগিয়ে। পদার্থবিদেরা অবশ্য এই অগ্রগতিকে দেখেন চারটি মৌলিক বলের দৃষ্টিভঙ্গিতে। এই চারটি মৌলিক বল যা আমাদের চারপাশের সব বিষয়কে ব্যাখ্যা করতে পারে— মেশিন, রকেট, এবং বোম থেকে নক্ষত্র এবং মহাবিশ্ব সহ। সামাজিক অবস্থা পরিবর্তনের এই মঞ্চটি তৈরি করতে হবে চারটি বল দ্বারা। এই বলগুলোর আয়ত্ত্বকরণ অবশেষে তাদের বিশ্বশক্তির দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যায়।

প্রথম বলটি হলো— মহাকর্ষ, যা আমাদের ভূ-পৃষ্ঠে অবস্থান করতে সহায়তা করে। সূর্যের বিস্ফোরণ থেকে রক্ষা করে এবং সৌরজগৎকে একত্রিত করে রাখে স্থিতিশীলভাবে। দ্বিতীয় বলটি হলো— তড়িৎ চৌম্বকীয় বল। যেটি শহরগুলোকে আলোকিত করে। ডায়নামোর ইঞ্জিনগুলোর শক্তির যোগান দেয় এবং আমাদের লেজার ও কম্পিউটার শক্তি সরবরাহ করে। তৃতীয় ও চতুর্থ বলটি হলো-দূর্বল এবং সবল নিউক্লিয়ার বল- যা নিউক্লিয়াসে পরমাণুকে সংহত করে রাখে, সূর্যের গ্রহ নক্ষত্রকে আলোকিত করে এবং সূর্যের মাঝে নিউক্লিয়াস আগুন প্রজ্বলিত করে। এই চারটি বলই ইউরোপে আবিষ্কৃত হয়।

যখনই পদার্থবিদদের দ্বারা এর যেকোনো বল বোঝা সম্ভব হয়েছে— মানব সভ্যতা পরিবর্তিত হয়েছে, এবং ইউরোপ সুন্দরভাবেই সেই নতুন জ্ঞানকে আয়ত্তে নিয়েছে। যখন নিউটন চাঁদের দিকে তাকিয়ে ছিলেন এবং একটি আপেল পড়তে দেখল তখন তিনি নিজেকে জিজ্ঞাসা করলেন- একটি প্রশ্ন-যা পুরো মানব সভ্যতাকে ইতিহাসকে চিরদিনের জন্য বদলে দিল: “যদি একটি আপেল পড়তে পারে তবে কেন একটি চাঁদ পড়ে না!

যখন তার বয়স মাত্র ২৩ বছর তখন এমন চিন্তা, একটা চমৎকার অন্তদৃষ্টির ব্যাপার, তিনি বুঝতে পারলেন— একটি বল- যা আপেলকে ভুপৃষ্ঠে নিয়ে এলো তা-ই গ্রহ এবং ধুমকেতুকে স্বর্গ থেকে সৃষ্টির কারণ। এটি তাকে তার সদ্য উদ্ভাবিত গণিত, ক্যালকুলাস এ প্রয়োগ করতে উদ্ভূত করে। গ্রহ- উপগ্রহের গতিপথ আঁকতে এবং মহাবিশ্বের গতি বুঝতে প্রথমত সহায়তা করে। ১৬৪৭ সালে তার মাস্টার পিস, প্রিন্সিপিয়া, লিখিত হয়েছে এবং মানব ইতিহাসের সবচেয়ে প্রভাব বিস্তারকারী বই হিসেবে র‍্যাংকিং করা হয়ে থাকে।

আরও গুরুত্বপূর্ণ, নিউটন ভাবনার জন্য নতুন বিষয় উপস্থাপন করেছেন, তা হলো বলবিদ্যা- যা গতিশীল বস্তুর উপর বলের প্রভাব আলোচনা করে। আমরা এখন আর প্রেতাত্মা, রাক্ষস ও ভূতের ছদ্মবেশের অধীন নই বরং বস্তুর গতি পরিমাপের জন্য এদের প্রভাব ক্ষুণ্ণ করে সুসজ্ঞায়িত বলের মাধ্যমে গতি পরিমাপ এবং ক্ষমতা জানতে পারি। এটি নিউটনীয় বলবিদ্যার সূচিত করেছে যার মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা মেশিনগুলোর আচারণ নির্ভুলভাবে ধারণা দিতে পারে। এটি স্টিম ইঞ্জিন আবিষ্কারের পথ উন্মুক্ত করেছিল এবং পরিবহন ব্যবস্থার সূত্রপাত করেছিল। এটি বাষ্পচালিত যন্ত্রপাতির সিস্টেমকে পরিবর্তন করে- বোল্ট থেকে বোল্ট, লিভার থেকে লিভার- নিউটনের সূত্রানুসারে। সুতরাং নিউটনের মহাকর্ষ সূত্রগুলো ইউরোপের শিল্পবিপ্লবের পথ প্রশস্ত করেছিল।

এরপর ১৮০০ সালে আবার ইউরোপ, মাইকেল ফ্যারাডে, জেমস ক্লার্ক, ম্যাক্সওয়েল এবং অন্যরা দ্বিতীয় মৌলিক বলটি আয়ত্তে নেয়- তড়িৎ চৌম্বকত্ত্ব, যা পরবর্তী বিপ্লব ঘটাতে সহায়তা করে। যখন থমাস আলভা এডিসন জেনারেট আবিষ্কার করে মানহাটানের কার্ল স্ট্রিট স্টেশনে এবং পৃথিবীর বুকে প্রথম কোনো রাস্তাকে বিদ্যুৎ আলোকিত করে, তিনি পুরো গ্রহের জন্য বিদ্যুয়ানের পথ খুলে দেন। আজ মহাকাশ থেকে, আমরা পৃথিবীকে রাতে দেখতে পারি। সবগুলো মহাদেশকে জ্বলজ্বল করতে দেখি। পৃথিবী থেকে মহাকাশ পর্যন্ত যেকেউ যেকোনো এলিয়েন সহজেই বুঝতে পারে পৃথিবী তড়িৎ চুম্বকতত্ত্বকে আয়ত্ত করেছে ভালোভাবেই। আমরা এর উপর আমাদের নির্ভরশীলতাকে অস্বীকার করতে পারি না- যেকোনো সময়ে বিদ্যুৎ বিপর্যয় ঘটতে পারে। এক মুহূর্তেই আমরা ১০০ বছর পিছনে ছিটকে পড়ব ক্রেডিট কার্ড, কম্পিউটার, লাইট, এলিভেটর, টিভি, রেডিও, ইন্টারনেট, মোটর ইত্যাদি ছাড়া। সর্বশেষ, নিউক্লিয়ার বল, সেটি ইউরোপীয়দের দ্বারা আয়ত্ত করা হয়েছে যা আমাদের চারপাশের সবকিছু পরিবর্তন করে দেয়। আমরা মহাবিশ্বের গোপন রহস্যই শুধু উন্মোচন করতে পারি না, গ্রহনক্ষত্রের আলোশক্তির উৎস বুঝতে পারি তা নয়, বরং আমরা অন্তর্নিহিত বিশ্বও উন্মোচন করতে পারি যেমন চিকিৎসা বিজ্ঞানের জ্ঞান ব্যবহার করে এমআরআই, সিএটি এবং পিইটি স্ক্যান, রেডিও থেরাপি, এবং নিউক্লিয়ার মেডিসিন বুঝতে পারি। কারণ নিউক্লিয়ার বল বিশাল শক্তি যা পরমাণুর মাঝে লুকায়িত তা নিয়ন্ত্রণ করে। নিউক্লিয়ার বল মানবতার ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে পারে- এভাবে আমরা এমনকি ফিউশন প্রক্রিয়ার অসীম শক্তি ব্যবহার করে উন্নতি লাভ করব অথবা নিউক্লিয়ার যুদ্ধে সমুলে মারা যাব।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *